প্রিয় শখ
---শুনছ প্রিয়া, কালই যাচ্ছি আমরা।
---কী বলছ প্রিয়, কালই? উফ কী যে মজা হবে। শুনেছি দেশটা নাকি খুব সুন্দর।
---হুম অনেক সুন্দর। চারিদিকে শুধু সবুজের হাতছানি। এঁকেবেঁকে কত যে নদী বয়ে যায়। হাইল আর হাওরে ভরপুর। পাখিদের কলতানে মুখর।
---আমিও তো তাই শুনেছি। তাই তো এত অধির হয়ে আছি। সেখানকার মানুষও নাকি খুব ভালো। খুবই মায়াময়? তাদের হৃদয় নাকি খুব বিশাল? ওরা নাকি খুব অতিথি বৎসল? মনটা নাকি একেবারে সোনা দিয়ে গড়া?
---তাই তো শুনলাম। কিন্তু তুমি বড্ড বেশি বকছ। এত বকবক করতে পারো না তুমি!
----কী করব বল। আমার যে আর তর সইছে না গো। কখন সে দেশে যাবো। মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াবো এসবই কেবল মাথায় ঘুরছে। শোন, আমরা অনেক ঘুরবো, অনেক মজা করবো। তুমি কিন্তু বাঁধা দিতে পারবে না একটুও। তুমি বড় বেশি বুড়োটে হয়ে যাচ্ছ আজকাল। বড় বেশি খবরদারি করো তুমি! সবকিছুতেই তোমার কেবল বাঁধা। এবার বেড়াতে গেলে এসব একদম চলবে না বলে দিলাম।
---একটুও বাঁধা দেবো না, প্রিয়তমা। শুধুই ঘোরাঘুরি আর ভালবাসা বাসি।
অবশেষে তারা পাড়ি জমালো সবুজের দেশ, নদীর দেশ, পাখির দেশ, হাওরের দেশে বাংলাদেশে। সোনার সে দেশ কী যে সুন্দর। এমন মায়া ভরা দেশ তারা আর দেখেনি। তারা মনের আনন্দে এখানে সেখানে ঘুরে বেড়ায়। মনের আনন্দে নাচে, গান গায় আর মন ভরে ভালবাসায়।
---ইশ কী যে সুন্দর! মনটাই ভাল হয়ে যায়। চল জলে নামি, প্রিয়।
--- চলো প্রিয়া।
দুজনে জলে নামে। মন ভরে গোসল করে। জলের ভেতর ঝাঁপাঝাঁপি আর খুনসুটিতে মেতে ওঠে দুজন। তারপর ক্লান্ত হয়ে তীরে এসে বসে। হঠাৎ ঠুস করে একটি শব্দ। পাশে বসা প্রিয়ার দেহখানি লুটিয়ে পড়ে বালিতে। সাথি তার ভয়ে দূরে পালিয়ে যায়। দূর থেকে তাকিয়ে দেখে প্রিয়ার নিথর শরীরটা হেসে হেসে তুলে নিয়ে যাচ্ছে কেউ। অতিথি বৎসল কোন এক বাঙালী। অদূরে সাথি অতিথি পাখিটা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয় সজল নয়নে তার প্রিয়ার ঝুলন্ত নিথর শরীরটার দিকে।
রচনাকাল - ০১/০৪/২০১৭
(ঠাকুর মাহমুদ ভাইয়ের "ক্রোচড" ( Click This Link) গল্পটি পড়ে নিজের লেখা এই গল্পটা পোস্ট করার ইচ্ছা জাগলো)
©নিভৃতা
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০২