somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কি বলবো। আমিতো নির্বাক!

১২ ই জুলাই, ২০০৮ সকাল ১০:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সূএ: প্রথম আলো।
লিংক: Click This Link
জামায়াতের এ সমস্ত নেতারা পিস কমিটির (শান্তি কমিটি) সদস্য ছিল। যারা রাজাকার, আলবদর ছিল তারা গণহত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ করেছে। এখনই তাদের বিচার করতে হবে। আমার বিবেচনায়, তাদের এখনই ফাঁসি দিতে হবে।...’
তাঁর বক্তব্য শেষ হয়নি। সাংবাদিকেরা তাঁর নামটিও জানার সুযোগ পাননি। এর আগেই বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের ক্যামেরার সামনে থেকে বর্ষীয়ান এ মুক্তিযোদ্ধাকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। একজন তাঁর পিঠে লাথি বসিয়ে দেয়।
গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ’-এর প্রতিনিধি সম্মেলনে এ ঘটনা ঘটে। জামায়াতের উদ্যোগে গড়া সংগঠনটির গতকালের সম্মেলনে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে ছাত্রশিবিরের কর্মীরা। তাদের হাতেই লাঞ্ছিত হন ওই মুক্তিযোদ্ধা। তারা একুশে টেলিভিশনের প্রতিবেদক সাজেদ রোমেলকেও প্রায় এক ঘণ্টা আটকে রাখে।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আবদুর রবের কাছে মুক্তিযোদ্ধা লাঞ্ছনা ও সাংবাদিককে আটকে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রথমে তিনি দাবি করেন, এমন কিছু হতেই পারে না। নির্যাতনের ছবি টেলিভিশনের ক্যামেরায় ধারণ করা আছে জানালে তিনি মুহুর্তেই সুর পাল্টে বলেন, ‘এসব সাবোটাজ (অন্তর্ঘাতমূলক কাজ)। আমাদের সংগঠনের লোকেরা এসব করতে পারে না।’
সংগঠনটির জাতীয় সম্মেলনের প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছির হোসেন। জামায়াত-সংশ্লিষ্টদের অনুষ্ঠানে আসার বিষয়ে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসবের কিছুই তিনি জানেন না।
তবে আলোচনা অনুষ্ঠানে জে আর মোদাচ্ছির বলেছেন, এখন স্বাধীনতার চেতনার নাম দিয়ে জাতিকে বিভাজন না করে সুন্দর দেশ গড়ার জন্য কাজ করতে হবে।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান বলেন, গত ২৬ মার্চ ভারতীয় জেনারেলকে এনে স্বাধীনতার চেতনার অবমাননা করা হয়েছে।
বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) ফজলুর রহমান বলেন, ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদ ও ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করতে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া এখন সময়ের দাবি।
উইং কমান্ডার (অব.) হামিদুল্লাহ খান বলেন, কতিপয় সেক্টর কমান্ডার জাতিকে বিভ্রান্ত করে দেশবাসীকে অপমানিত করার জন্য কথিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের হুমকি দিয়েছেন। সম্মেলনে কয়েকজন বক্তা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাওয়ায় মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডারদের শাস্তি দাবি করেছেন।
ঢাকার বাইরে থেকে আসা মুক্তিযোদ্ধারা এসব বক্তব্য শুনে হতভম্ব হয়ে পড়েন। পাবনা থেকে আসা মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন ক্ষুব্ধ হয়ে সম্মেলনকক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারা যেসব মন্তব্য করেছে, সেগুলো মোটেও ভালো লাগেনি। এ কারণে আমি অনুষ্ঠান থেকে বের হয়ে এসেছি। এসব অসহনীয় বক্তব্য। এরা বলে, সেক্টর কমান্ডারদের বিচার হতে হবে। এরা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা কথা বলেছে। কিন্তু আমরা তো আওয়ামী লীগের ডাকে মুক্তিযুদ্ধ করেছি।’
জামায়াত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মুক্তিযোদ্ধা সংগঠন তৈরি ও জাতীয় সম্মেলন করাকে ভন্ডামি আখ্যা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সামরিক নেতারা প্রথম আলোকে বলেন, যারা যুদ্ধের সময় এ দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে গণহত্যা, লুন্ঠন ও ধর্ষণে সহায়তা করেছে, এখন তারা মুক্তিযোদ্ধা সাজার চেষ্টা করছে। তারা দেশের সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতারিত করার চেষ্টা করছে। এদের প্রতি ঘৃণা ছাড়া আর কিছুই থাকতে পারে না।
মুক্তিযুদ্ধের উপপ্রধান সেনাপতি এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সভ্য দেশে বাস করছি, এখানে এসব অসভ্যতা চলতে পারে না। এদের ব্যাপারে কী করা যায় আমরা শিগগিরই বসে সিদ্ধান্ত নেব।’
৮ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরীও বলেছেন, ‘ওরা যা-ই বলুক না কেন, মানুষের কাছে এসবের কোনো মূল্য নেই। মানুষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়।’
গত ২৬ জানুয়ারি ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ’ গঠন করা হয়। প্রথমে এ/১১ শ্যামলী হাউজিং, আদাবরে একটি বাড়িতে ও পরের মাসে ১১৬/২ নয়াপল্টনে (জামান কনস্ট্রাকশন ভবনের দোতলায়) জামায়াতের পল্টন থানা শাখার সাবেক আমির এ টি এম সিরাজুল হকের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে এর কেন্দ্রীয় কার্যালয় স্থাপন করা হয়। সেখানকার পল্টন মানবশিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের একটি কক্ষ সাবলেট (ভাড়াটের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া) নিয়ে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। এ টি এম সিরাজুল হক ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু করলে এ সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে। ফোরাম যে দলগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনছে, এগুলোর অন্যতম হচ্ছে জামায়াত। ফোরামের আন্দোলনকে বিতর্কিত করার মানসে ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ’ নামে এ সংগঠন গড়ে তোলা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গত ২২ মার্চ রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ও ২৬ মার্চ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নেওয়ায় সেক্টর কমান্ডারদের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছিল জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ। গতকালের সম্মেলনেও একই ধরনের বক্তব্য দেওয়া হয়।
পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রকৌশলী মোসলেম উদ্দিনের সভাপতিত্বে গতকালের সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক রেজোয়ান সিদ্দিকী, নিউ নেশন-এর সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন গাজী, সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবীর প্রমুখ।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×