প্রেম, ভালোবাসা নামের এখনকার সম্পর্কগুলো আজকাল খুবই সস্তা, যেন হুটহাট করেই হয়ে যায়। যত্রতত্র প্রথম দেখা, মোবাইলে অপরিচিত কারও হঠাৎ মিস কল, ফেসবুকে কিংবা ম্যাসেঞ্জারে অপরিচিত মেসেজ, এইসব দেখেই শুরু হয়। যদিও পরে নিদারুণ বাস্তবতা, মানসিকতার দ্বন্দ্ব, সামাজিক ও পারিবারিক প্রেক্ষাপটের অশান্তি, অর্থনৈতিক সমস্যায় এইসব সর্ম্পক, ভালোবাসার ঘরের দেয়াল ভেঙ্গে হলেও লেজ তুলে পালায়। কারণ আর যাই থাক, এতে কোন কমিটমেন্ট থাকে না। আর বিয়ের আগে সব উজাড় করে দেওয়া এইসব আধুনিকা’রাও জানে না আদৌ সেই ছেলেটির সাথেই সংসার পাততে পারবে কিনা? কিংবা এই ছেলেটিই পরে তাকে গ্রহন করবে কী? যদি তা না হয় তাহলে ওর ভবিষ্যত কী? পূর্ণিমার ঝকমকে চাঁদ নাকি ঘোর নিকষ অমাবস্যা?
এইসব ঠুনকো প্রেমের অনেক গল্পেরই পরের কাহিনী সবারই জানা। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সেগুলি পাওয়া যায় ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, ইমো কিংবা কিছু রগরগে নিষিদ্ধ ওয়েবসাইটে। ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পরে দূর থেকে দূরান্তে! এইসব মেয়েরা না চাইতেও বিভিন্ন নিষিদ্ধ সাইটে এ্যাড কিংবা নোংরা সব পোস্টের নায়িকা হয়ে যায়!
আজকাল মর্ডান জেনারেশনের ছেলেমেয়েরা ফেসিয়াল টিস্যু পেপার চেন্জ করার মতো BF / GF চেন্জ করে। দুধ থেকে সরটা খেয়ে, ছেলেরা মোবাইল নম্বর চেঞ্জ করে ভাগে আর মেয়েরা যখন টের পায় তখন শুরু করে দিনরাত হাউমাউ করে কাঁদা। আর সেই ছেলেটা যদি নূন্যতম আইটি এক্সপার্টও হয়, তাহলে তো আরও চমৎকার! এক হাজার টাকার মোবাইলেও আজকাল HD ক্যামেরা পাওয়া যায়। “মজাই মজা” শেষ হয়ে গেলে এইসব হারামী ছেলেরা ব্যস্ত হয় পরে অন্যকোন মেয়ে নিয়ে আর সারাদেশের মানুষ ব্যাপক বিনোদনের ফ্রি ফ্রি সুযোগ পায় ইন্টারনেটে। মোবাইল কম্পানিগুলিতে ভালো করে খোঁজ নিয়ে দেখুন, মোবাইলের ডাটা প্যাকগুলি সব শেষ কী দেখে! আর কেন বা বা মধ্যরাতে মোবাইলগুলি অন্ধকারে জ্বল জ্বল করে?
১।
এসব মেয়েরা যে আজন্ম বেকুব তা তারা তাদের কার্যকলাপ দিয়েই প্রতিনিয়ত প্রমাণ করে। সারাজীবন নিত্য নতুন স্ট্যাইলে সর্ট কাপড় পরে ঘুরে বেড়ানো এইসব মেয়েরা অল্প কিছুদিন পরেই দেখা যায় আপাদমস্তক নাক মুখ ঢেকে সবসময় বাইরে যেতে। লুকিয়ে চলাফেরা করার সর্বোচ্চ চেষ্টার পরেও যদি এইসব পরিস্থিত না সামলাতে পারে, তাহলে অবশেষে নিজের গলায় নিজেরই ওড়না পেঁচিয়ে, গলায় ফাঁস লাগিয়ে শেষবারের মতো নিজেকে আস্ত বেকুব প্রমাণ দিয়ে দৈনিক সংবাদপত্রিকাগুলির প্রথম পাতায় রগরগে নিউজ হয়ে যায়।
এইসব বদের হাড্ডি ছেলেরা যদি জামা কাপড় বদলানোর মতো নিত্য নতুন নারী সঙ্গী বা আধুনিকা গার্লফ্রেন্ড পেয়ে যায় সবার অগোচরেই, তবে সে কেন একটা মেয়েকে মোহরানা দিয়ে সম্মানের সাথে ঘরে তুলে স্ত্রীর মর্যাদা দিবে! এদের কাছে নারী যদি বিয়ে ছাড়া এতটাই সহজলভ্য হয়, তাহলে ঐ ছেলেদের কী দরকার বিয়ে নামের সারাজীবনের রেস্পনন্সিবিলিটির ঝামেলায় নিজেকে জড়ানোর! মোহরানা টাকা দেয়ার নামে উটকো ঝামেলায় জড়ানোর? নিকাহ আরবি শব্দ এর একটা অর্থ হয় ইহসান করা, আরেকটা অর্থ হয় সুরক্ষিত দুর্গ নির্মাণ। বিয়ে সেই দুর্গ বলেই হয়তো ইসলামে বিয়ের আরবি প্রতি শব্দটা নিকাহ। আর এই ইহসান থেকেই সূচনা হয় অধিকারবোধ এবং অধিকার আদায়ের।
এইসব মেয়েদের কাছে খুব জানতে ইচ্ছে করেঃ
# মেয়ে, যখন ছেলেবন্ধু তোমার কাছে তোমার হট পিক চায় তখন কী মনে থাকে না কাকে কী জিনিস দিতে যাচ্ছো? এর ভবিষ্যৎ পরিনতি কী হতে পারে? শেষ পর্যন্ত সেগুলি কোথায় জায়গা করে নেবে?
# মেয়ে, যখন তোমার ছেলেবন্ধুর সাথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নির্জনে একাকী সময় কাটাও, তখন কী একবারের জন্যও মনে থাকে না তুমি নিজের সম্মান কোথায় নামিয়ে এভাবে নিজেকে এভাবে উন্মুক্ত করছো?
# মেয়ে, যখন তোমার ছেলেবন্ধু তোমার জামার ভিতর ইচ্ছেমতো হাত দেয় তখন কী মনে থাকে না কার সম্পদ তুমি কাকে যথেচ্ছা ব্যবহার করতে দিচ্ছো?
# মেয়ে, যখন তোমার ছেলেবন্ধুর সাথে অমুকের/তমুকের ফ্ল্যাটে গিয়ে দুইটা দেহ এক করে শুয়ে থাকো, তখন কী একবারের জন্যও মনে হয় না এত নাম মাত্র মূল্যেই নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছো?
হয়তো শেষ পর্যন্ত এই ছেলেবন্ধুর সাথে তোমার বিয়ে হলোই না, অনেক কারনেই সেটা নাও হতে পারে। তখন কেন আবার সমস্ত অপবাদ ইনিয়ে বিনিয়ে ছেলেটাকে দিচ্ছো? থানায় যেয়ে কেস দাও, সাংবাদিকদের কাছে যেয়ে কান্নাকাটি করো? ছেলেটা নির্দোষ অবশ্যই নয়, প্রশ্নই উঠে না, কিন্তু তুমি সুযোগ না দিলে এইসব কী হতে পারত? “মজাই মজা” কী শুধু ছেলেটা পেয়েছে, তুমি পাওনি? না পেলে, কী জন্য এভাবে নিজের শরীর বিনামূল্যে দিনের পর দিন বিলিয়ে দিয়ে এসেছ? ছেলেটা যেমন একটু সুখের জন্য তোমাকে চেয়েছে, ঠিক তেমনি তুমিও তো চেয়েছো সে সুখের ভাগীদার হতে। এটা কী ভুল কিছু? আর সেই সুখের ভাগীদার হতে, খুব সহজে নিজেকে শিয়াল কুকুরের মতো জানোয়ারগুলির খাবার বানালে নিজেকে? আরে, নিজের ভালো তো একটা পাগলেও বুঝে!
কখনও কী একবারও ভেবে দেখেছ, যাকে সবকিছু “চাহিবা মাত্র দিতে বাধ্য থাকিব” ভেবে দিয়ে দিলে, তার সাথে যদি তোমার বিয়ে না হয়, তখন ভবিষ্যতে পরের জনকে কী উত্তর দিবে? গভীর আবেগে ভেসে যেয়ে যেসব HD ভিডিওতে পোজ দেও, শেষ পর্যন্ত সেগুলি কোথায় জায়গা করে নেবে? আমরা ঢেকে রাখা খাদ্যদ্রব্য সব সময় নিরাপদ মনে করি। কারণ তার ভিতরটা জীবাণুমুক্ত থাকে। আর খোলা জিনিসে মশা, মাছি আর পোকামাকড় এসে ভীড় করে।
# নিজেকে এভাবে উন্মুক্ত করে মশা মাছির খাবার হতে কী এতই ভালো লাগে?
এত্ত বড় ভালোবাসা, যেই ভালোবাসার স্ট্যাটাস ফেসবুকে দিতে দিতে আংগুল পর্যন্ত ব্যথা করে ফেলতে, সুপার এফএনএফে কথা বলতে বলতে সারারাত কাটিয়ে দিতে, সেই সুপার ডুপার ভালোবাসা দিয়ে যাকে বেঁধে রাখতে পারনি-
# ছোট্ট একটা শরীর দিয়ে কীভাবে সেটা সম্ভব?
ঈদের চাঁদ দেখলে আমরা যতটা খুশি হই, ততটা খুশি ঈদের দিনেও হই না। কারন ঈদের দিন মানে ঈদ শেষ, কীন্তু আর চাঁদ দেখা মানে কাল ঈদ। পার্থক্যটা কী আর ভেঙ্গে বললাম না!
# যে তোমার সাথে বিয়ের আগেই তোমার সবকিছু পেয়ে গেছে, তার আবার কী দরকার তোমাকে বিয়ে করার?
দোকানে ঢুকে কিছু কিনতে চাইলে সবাই দোকানে মেলে দেয়া স্যাম্পলটা বেশ নেড়েচেড়ে ভালোভাবে দেখে নেয়, কেনার সময় কিন্তু নেয় শোকেসের ভিতরের প্রোডাক্টের ইন্ট্যাক্ট প্যাকেট। আজকালের এইসব মেয়েদের কান্ডকারখানা দেখলে মনে হয় সবাই যেন ইন্ট্যাক্ট প্যাকেট থেকে বের হয়ে এসে প্রকাশ্যে মেলে দেয়া স্যাম্পল হবার প্রতিযোগিতায় নেমে গেছে....
মধু খাওয়া শিখিয়ে, ভ্রমরের ডানা গজিয়ে দিয়ে, এই সব মেয়েরা আশা করে, ভ্রমর এক ফুলেই, এক স্বাদের মধু খেয়েই সন্তুষ্ট থাকবে….…হায়, কী বিচিত্র এদের আশা!
২।
জঘন্য পাপি এইসব ছেলেগুলি কিন্তু এলিয়েন নয়, ধুমকেতু কিংবা উল্কায় চড়ে আমাদের মাঝে এসে উদয় হয় নি। এরা আমাদের নষ্ট সমাজেরই বাই-প্রোডাক্ট। দিনের পর দিন, বাবা’মা নামের কিছু কুলাঙ্গার মানুষের প্রশয় পেয়েই আজ এতদূর এসে পৌছিয়েছে। অবাক হবার কিছু নেই। মাটিতে যেই চারা লাগাবেন গাছে তো সেই ফলই হবে। এইসব ছেলেরা একদিনে হুট করেই এত বড় বেয়াদপ হয় নি। অনেক বাবামা'র কাছে এটাই স্মার্টনেস, এটাই সোসাল স্ট্যাটাস, যেয়ে দেখুন গর্ব করে সবার কাছে বলে বেড়ায়! এইসব বেজন্মা ছেলেদের কাছে প্রেম ভালোবাসা হচ্ছে 'খাই খাই' খেলা। খাওয়া দাওয়া শেষ তো খেলাও শেষ। আর যদি বাপের সেইরকম পাত্তি থাকে, তো এদের আর পায় কে?
এইসব ছেলেদের কাছে খুব জানতে ইচ্ছে করেঃ
# ছেলে, এইভাবে যে এক একটা মেয়ে’কে নষ্ট করে ফেলে দিয়ে চলে যাচ্ছ, তোমার বোনও তো এইভাবেই ভিক্টিম হতে পারে! নিজের বোনের এই অসহায় অবস্থার কথা কী কখনও চিন্তা করেছ?
# ছেলে, এইভাবে প্রেমের নামে একটা মেয়ের সতীত্ব নষ্ট করে দিচ্ছ, কীভাবে তুমি নিশ্চিত হবে একদিন যখন তুমি বিয়ে করবে, কেমন লাগবে যখন দেখবে তোমার স্ত্রীও তো এইরকম একটা ভিক্টিম? তখন ?
# ছেলে, “মজাই মজা” শেষ হবার পর যখন HD মুভি ক্লীপগুলি ইন্টারনেটে ছেড়ে দিচ্ছ, তখন আরেকটা ছেলে যে তোমার মতই তোমার বোনের বা কোন রিলেটিভের সাথে একই কাজ করছে না কীভাবে নিশ্চিত হচ্ছো?
# ছেলে, এইসব অসহায় মেয়েদের বোবা কান্না তোমাকে স্পর্শ না করলেও যখন হুট করে একদিন বাসায় ফিরে দেখবে তোমার বোন বা রিলেটিভ সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে, তখন কী নিজের বাবা মা’র বোবা কান্না তোমাকে স্পর্শ করবে?
এইসব ছেলেরা ভুলে যায় এই পৃথিবীতে সব পাপেরই একদিন শাস্তি পেতে হয়। এরা মনে করে এই সব ফূর্তিফার্তা করে নিশ্চিন্তে সারাজীবন পার করে দিতে পারবে। এই জঘন্য পাপের শাস্তি কী শুধু এদের উপরই আসবে? পরবর্তিতে এদের নিজের পরিবারের অন্যকারও উপরও হতে পারে না?
৩।
এইযুগের ছেলেমেয়েরা বর্তমানে ভালোবাসা জিনিসটাকে ভয়ংকর নোংরামিতে পরিণত করে ফেলেছে। ভালোবাসার মধ্যে সেক্স ঢুকিয়ে একে নোংরা আর কর্দজ বানিয়ে ফেলেছে। এদের কাছে ভালোবাসা অর্থই হলো পার্কের আড়ালে নোংরামি করা, ফোনে সেক্স চ্যাট করা আর অমুকের ফ্ল্যাটে গিয়ে নিজেদের শরীরে নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করা। প্রেম আজ আর পবিত্র নেই। সাহিত্যে লেখা প্ল্যাটনিক প্রেম এইদেশে অনেক আগেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এখন কার ছেলেমেয়েরা এটার নতুন একটা ভার্শন বের করেছে, যেটা শুধুই ডেটিং, সেক্স, কীস, চ্যাট সেক্স, ফোনসেক্স আর বিভিন্ন ফ্ল্যাটের মাঝে সীমাবদ্ধ। কিছু কিছু প্লেগার্ল দেখা যায় তারা ফোনসেক্স বা লিভ টুগেদারের ক্ষেত্রে ছেলেদের চাইতে এগিয়ে এগ্রেসিভ। নামমাত্র প্রেম করে দুইদিনের মাথায় অমুক, তমুখ, সন্তু, রিন্টুর ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে সেক্স আদান প্রদানই এইযুগের ছেলেমেয়ের কাছে অত্যাধুনিক ফ্যাশন, ভালোবাসার নতুন দেয়া ডেফিনেশন আর এক্সাম্পল। লিভ টুগেদার, আর সেক্স করতে রাজি না হলে খ্যাত আখ্যা দিয়ে সাথে সাথেই ব্রেক-আপ। এদের ভালবাসায় এখন নেই কোন আন্তরিকতা, বিশ্বাস ও হৃদয়ের টান। সোসাল মিডিয়াতেই মাত্র কয়েকদিন আগে লিভ টুগেদার বিষয়ক এক পোস্টে একটা মেয়ের কমেন্ট পরে মাথা ঘুরে গেল - "প্রেম করলে বয়ফ্রেন্ডের সাথে সেক্স হতেই পারে, এটা ব্যভিচার কীভাবে হবে”? আর তাকে সমর্থন করে আরও কিছু মেয়ের কমেন্ট আর দিলাম না। এইসব কমেন্টই প্রমাণ করে ওভারস্মার্ট আর আধুনিকতার নামে এইসব মেয়েরা দামি গিফটের বিনিময়ে বয়ফ্রেন্ডের সাথে যেয়ে রুমডেটে সেক্স করে, তাকে স্যাটিসফাই করে নিজের জীবন'কে ধন্য করে।
পরিশেষঃ
এই উন্মাদনা, অশ্লীলতা ও নোংরামি কেন? যুবক যুবতিরা কেনই বা এভাবে উচ্ছনে যাচ্ছে? উত্তর, একেবারেই পরিষ্কার। যে জাতি ধর্ম থেকে যতো দূরে থাকবে বা ধর্মকে একেবারেই পাশ কাটিয়ে চলার চেষ্টা করবে এবং অহেতুক কথিত আধুনিকতার দোহাই দিয়ে ধর্মীয় জীবনযাপনকে তুচ্ছ ও সেকেলে বলে জানবে, সে জাতির এভাবে নৈতিক পদস্খলন, সর্বশেষে জাতীয় পদস্খলন অনিবার্য। ইউরোপ আর আমেরিকা এ বিষফল ভোগ করতে শুরু করেছে অনেক আগে থেকেই। সেখানে এখন পারিবারিক বন্ধন নেই। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নেই বিশ্বাস ও আস্থা। পিতামাতা সন্তানকে এবং সন্তানও পিতামাতাকে বিশ্বাস করে না।
সালাহউদ্দিন আইয়ুবী বলেছিলেন, ‘কোনো দেশকে যদি ধ্বংস করতে হয় তাহলে সেদেশের যুবক-যুবতিদের মধ্যে অশ্লীলতা ও নোংরামি ছড়িয়ে দিলেই যথেষ্ট।’ তাঁর এ কথার যথার্থতা আজ আমরা হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করতে পারছি। আজ আমরা নৈতিকতার দিক দিয়ে চরমভাবে ধ্বংসের মুখে। বিভিন্ন দিবসে, অনুষ্ঠানে, কনসার্টে সহ বিভিন্ন জায়গায় যুবক-যুবতিদের নির্লজ্জ উন্মাদনা ও বেহায়াপনা আমাদের দেশীয় কৃষ্টি-কালচারকে চরমভাবে ক্ষুন্ন করছে।
ক্ষয়িষ্ণু এই সমাজের যে ভয়ংকর অবক্ষয়ের চিত্র উপরে তুলে ধরলাম তা হয়তো অনেকেই জানেন। সবারই চোখের সামনে এইসব ঘটনাগুলি ঘটছে, কিন্তু আপনি গভীরভাবে ভাবছেন না। বিবেকের দরজা খুলে আপনি উপলব্ধি করছেন না। আসলে একটি সমাজ যখন অবক্ষয়ের দিকে দ্রুত ধাবিত হয় তখনই, যখন সমাজের মানুষগুলোর বিবেকের সামনে মোটা কালো পর্দা ঝুলে যায়। একসময়ের বিবেকবান মানুষগুলো ধীরে ধীরে বিবেকহীনতার পরিচয় দেয়। এই সমাজ ও এই প্রজন্ম আমার, আপনার। ডিশের লাইনে যা দেখেন সেটা সত্য নয়। এই দেহজ প্রেমের নামে নোংরামি ও কদর্যতায় পুরো সমাজ যখন সয়লাব হয়ে যাবে, পুরোপুরি প্লাবিত হয়ে যাবে, তখন আপনার ভবিষ্যত প্রজন্ম কী মুক্ত থাকতে পারবে?
কবি ফররুখ আহমেদ বলেছিলেন, “রাত পোহাবার কত দেরী, পাঞ্জেরী?”
কবি’কে বলতে ইচ্ছে করছে, রাত আর পোহাবে না পাঞ্জেরী যদি আমরা না জাগি।
এই দেশে কোনদিনও হ্যামিলনের বাঁশীওয়ালার মতো কেউ আসবে না,
যত দিন পর্যন্ত আমরা নিজেরা ভালো না হচ্ছি।
সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইল।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, জানুয়ারী ২০২০
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:২২