somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ মিথিলা কাহিনী ৩ - তালাক-আল-রাজী (শেষ পর্ব)

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



চার
উকিল রফিক সাহেব বেশ ধৈর্য্য নিয়েই রাশেদের সাথে কথা বলছেন। কেসের পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে গিয়েছে। প্রায় তিনমাস ধরে রাশেদ কোনভাবেই নিপা’কে রিমনের সাথে দেখা করতে দিচ্ছে না। কিছুদিন আগে রফিক সাহেব ফোন করে রিমন’কে দেখার ব্যাপারে নিপা ম্যাডামের সাথে কথা বলার জন্য অনুরোধ করার পর পুরোপুরি উল্টো ঘটনা ঘটিয়েছে রাশেদ, রিমন’কে লুকিয়ে ঢাকার বাইরে কোন এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে এসেছে। ফলাফল যা হবার, তাই ঘটছে। নিপা ম্যাডামের উকিল ফারজানা কবির হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেছে বাচ্চা’কে মায়ের হেফাজতে নেয়ার জন্য। গত পরশুদিন দুপুরে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে আগামী সপ্তাহে বাচ্চা সহ রাশেদ’কে আদালতে হাজির হতেই হবে।
কিন্তু রাশেদ কিছুতে রাজি না বাচ্চা আদালতে নিয়ে যাবার জন্য।
-নিপা এভাবে না বলে চলে যাবার কারণে সব সমস্যা শুরু হয়েছে। স্কুল থেকে আমার কাছে রিমনের অদ্ভুত কিছু আচরণের জন্য কমপ্লেইনও এসেছে। আদালতে নিয়ে গেলে নিপা’কে দেখে ওর সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে।
-কিন্তু তাই বলে তো আপনি মায়ের কাছ থেকে এতটুকু বাচ্চাকে আলাদা করে রেখে দিতে পারেন না?
-অবশ্যই পারি। বাচ্চা আমি ওকে কিছুতেই দিবো না। আমি পত্রিকাতে পড়েছি মুসলিম পারিবারিক আইন অনুসারে, আমি হচ্ছে বাচ্চার একমাত্র আইনগত অভিভাবক। আমি জীবিত এবং সক্ষম থাকা অবস্থায় রিমনের অভিভাবক আর কেউ হতে পারবে না।
রফিক সাহেব ইতঃস্তত করলেন, কথা একেবারে ভুল বলেনি রাশেদ। কিন্তু এর সাথে যে আরো কিছু আছে!
-আপনি অভিভাবক ঠিক আছে কিন্তু নিপা ম্যাডামের মা হিসেবে হেফাজতকারীর অধিকার আইনসিদ্ধ এবং মায়ের অধিকার সর্বাগ্রে স্বীকৃত। আদালতের আদেশ ছাড়া সন্তানের হেফাজতকারীর অধিকার থেকে মা’কে কোনমতেই বঞ্চিত করা যাবে না। বাচ্চা জোরপূর্বক দেখা করতে না দিয়ে এবং লুকিয়ে রেখে আপনি ভয়ংকর অপরাধ করেছেন। আমি নিপা ম্যাডামের উকিল হলে এতদিনে আপনার বিরুদ্ধে অপহরনের মামলা দিয়ে দিতাম।
-আমাদের কি কিছুই করার নেই এখন? কোনভাবেই বাচ্চা নেয়া আটকাতে পারবো না আমরা?
রফিক সাহেবের কী যেন একটা মনে পড়তেই কেসের ফাইল খুলে একটা তথ্য বের করার চেষ্টা করতে লাগলেন।
-রাশেদ সাহেব, বাচ্চার বয়স এখন কত? একচুয়ালটা বলবেন।
-সাড়ে নয়বছর।

সাথে সাথেই হাসি ফুটে উঠলো উকিলের মুখে। ডির্ভোস ক্ষেত্রে সন্তান যদি ছেলে হয়, ঐ সন্তান মুসলিম আইন অনুযায়ী তার সাতবছর বয়স পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তার মায়ের নিকট থাকবে এবং সাতবছর বয়সের পর থেকে তার বাবার নিকট থাকবে। আইনী প্যাঁচ একটা দেয়াই যায়।
-ঠিক আছে, বাচ্চা নেয়া মনে হয় আটকানো যাবে কিন্তু মা’কে দেখা করতে দিতেই হবে। রাজি আছেন?

চরম অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিপা’কে দেখা করতে দিতে রাজি হলো রাশেদ।

পাঁচ
উকিলের কাছ থেকে কেসের বর্তমান অবস্থার সবকিছু শুনে রাশেদ রীতিমতো হতভম্ব! ঘটনা যে এদিকে যাবে সেটা ও কল্পনাও করেনি! অবিশ্বাস্যের মতো শোনালো সবকিছু।
-মিথিলা ম্যাডাম রাজি হয়েছে আদালতে সাক্ষ্য দিতে?
-হ্যাঁ। কিছুক্ষণ পরেই উনি সাক্ষ্য দিবেন। কেন উনাকে কি আপনি চেনেন?
-জী উনার সাথে আমার একদিন কথা হয়েছিল। রিমন’কে অনেক আদর করেন উনি। খুবই সিনসিয়ার টিচার।
-তাহলে তো আরো ভালো, রিমনের জন্য যেটা ভালো সেটাই বলবেন উনি। চলুন এজলাসে যাই.........

মিথিলা বেশ বড় করে কয়েকটা নিঃশ্বাস নিলো। এখানে আসার কোন ইচ্ছেই ওর ছিল না। কিন্তু কিছুদিন আগে রিমনের কাছ থেকে শোনা কথাগুলিই ওকে এখানে আজকে টেনে নিয়ে এসেছে। ডির্ভোস কার্যকর হলে সন্তান কার নিকট থাকবে সেটা নিয়ে শুরু হয় চরম বিড়ম্বনা, কোন সন্তান থাকলে সে হয়ে পরে আরো অসহায়। ডির্ভোস যেকোন সন্তানের সুষ্ঠুভাবে বেড়ে ওঠার জন্য অন্তরায়। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ডির্ভোস হলে সন্তান’কে পাবার জন্য বাবা মায়ের যতটা না ভালোবাসা কাজ করে, তারচেয়ে কয়েকগুন বেশি কাজ করে নিজেদের মধ্যে জিদ, হার না মানার জিদ। আর এই জিদের বলি হয় এদের অবুঝ সন্তানরা!

বিচারকের অনুমতি নিয়ে বাদী পক্ষের মহিলা উকিল মিথিলা’কে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলো।
মিথিলা নিজের পরিচয় দেবার পরেই কিছু সাধারণ প্রশ্নের পর উকিল সরাসরি আসল বিষয়ে চলে আসলেনঃ
-রিমনের বর্তমান অবস্থা কিরকম সেটা আমাদের বলুন?
-রিমনের বর্তমান মানসিক অবস্থা মোটেও ভালো না। গত কয়েকমাস ধরে ক্রমাগত এই অবস্থার অবনতি ঘটছে। তবে বাচ্চাটার এই দুরাবস্থা মোটেও একদিনে হয়নি। রিমন আমাকে সরাসরি বলেছে ওকে বাসায় কেউ সময় দিত না। নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করতে করতে বাচ্চাটা একেবারেই চরম ইন্ট্রোভার্ট হয়ে গেছে। কারো সাথে কিছু সহজে শেয়ার করতে চায় না। ইদানিং প্রচুর মিথ্যাকথা বলা শিখেছে। বানিয়ে বানিয়ে আজগুবী সব কাহিনী বলে।
-এর জন্য আপনি কাকে দায়ী মনে করছেন?
-বাবা মা দুইজনই সমানভাবে দায়ী। সন্তান শুধু জন্ম দিলেই বাবা মা হওয়া যায় না, এই চরম সত্যটা রিমনের বাবা কিংবা মা কেউ মনে হয় জানে না।

রফিক সাহেব মুখ ঘুরিয়ে তাকিয়ে দেখেন রাশেদ এবং নিপা দুইজনই চেয়ারে নড়েচড়ে বসলো। চোখে মুখে নিদারুন অস্বস্তি। দুইজনই মাথা নীচু করে ফেললো।
-রিমনের বাবা এবং মা দুইজনই স্বার্থপরের মতো শুধু নিজেদের স্বার্থটাই দেখে গেছে। বাচ্চাটা কিভাবে একা একা বাসায় দিন কাটাতো কেউ খেয়াল করতো না। আমার কাছে বাবা মা দুইজনের নামেই অভিযোগ করেছে রিমন। এরা দুইজনই সকালবেলা বাসা থেকে বের হয়ে যেত, ফিরতো রাতেরবেলা। সারাদিন রিমন বাসায় বন্দী অবস্থায় দিন কাটাতো। কিছুদিন পর পরই একে অপরকে দায়ী করে বাসায় তুমুল ঝগড়া করতো এরা। রিমন বাসায় একা একা খারাপ লাগার কথা বললেও কেউ গ্রাহ্য করতো না। ক্রমাগত এইসব অবহেলা বাচ্চাটার মানসিক বিকাশ চরমভাবে বাধাগ্রস্থ করেছে।

বিচারক সাহেব এতক্ষণ খুব মনোযোগ দিয়ে সবকিছু শুনছিলেন। এবার সরাসরি প্রশ্ন করলেনঃ
-বাচ্চাটার অবস্থা কতটুক খারাপ বলে আপনার কাছে মনে হচ্ছে?
-খুবই খারাপ। ফার্স্ট টার্ম পরীক্ষায় রিমন সব বিষয়ে ফেল করেছে। ছয়টা সাবজেক্টের মাঝে তিনটাতে শূণ্য পেয়েছে, অংক তার মাঝে একটা। পরীক্ষার পর থেকে তো আর স্কুলেই আসছে না। আমি দুইজন গার্জিয়ানকেই ডেকেছিলাম। এরা দুইজন একে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন। আমি খুবই বিরক্ত। এরা যখন সন্তান’কে সময়ই দিতে পারবে না, লালন পালন করতে পারবে না, তখন জন্ম দিয়েছেন কেন? এখন এরা আবার আলাদা হতে চাচ্ছে বাচ্চাটার সাড়ে সর্বনাশ করার জন্য।

বিচারক নিপা এবং রাশেদের দিকে একদৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন। তবে মুখে কিছুই বললেন না। পরবর্তি আধাঘন্টা ধরে দুইপক্ষের উকিলের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে মিথিলা একইভাবেই উত্তর দিয়ে গেল।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিচারক রিমন’কে কালকেঈ উনার এজলাসে সকালবেলা উপস্থিত করার জন্য নির্দেশ দিলেন।

ছয়
পরেরদিন সকালবেলা শুনানির শুরুতেই রিমনের বক্তব্য শুনতে চাইলো মহামান্য আদালত। দুই উকিলকেই বসে থাকতে বলে বিচারক নিজেই রিমনকে বিভিন্ন ছোট ছোট প্রশ্ন করে অনেক কিছু জানতে চাইলেন। এক পর্যায়ে বিচারক জানতে চাইলেন রিমন কেন বাসা থেকে পালিয়ে যেত চাইতো?
প্রতি-উত্তরে রিমন বললোঃ
-শুধু আব্বুর কাছে থাকতে আমার ভালো লাগে না। আমি পালিয়ে আম্মুর কাছে চলে যেতে চাইতাম। আম্মুর জন্য আমার অনেক কষ্ট হয়। আমি বাসায় একা একা আম্মুর জন্য অনেক কান্না করি। কিন্তু আব্বুকে দেখতে দেই না, দেখলে আব্বুও কষ্ট পাবে। আমি আব্বু আম্মু কাউকেই কষ্ট দিতে চাই না।

বিচারক সাহেব মায়ের উকিলের দিকে তাকিয়ে বললোঃ
-বাচ্চাটা মাকে দেখতে পায়না কতদিন ধরে? কতদিন ধরে এভাবে বাচ্চাটাকে আটকে রেখেছে এর বাবা?
-প্রায় চারমাস। আমরা অনেকবার রিকোয়েস্ট করেছি। রাশেদ সাহেব কোন কথাই শুনতে চান না।

বিরক্তকর একটা দৃষ্টিতে রাশেদ এবং বিবাদী পক্ষের উকিলের দিকে তাকিয়ে রইলেন বিচারক। ডির্ভোসের কেসগুলির সাথে বিশ্রী কিছু বিষয় জড়িত থাকলেও চারমাস ধরে এত ছোট বাচ্চাকে মায়ের কাছে যেতে না দেয়া ভালোভাবে নিলেন না বিচারক। বিবাদী পক্ষের উকিলকে এই কাজের কারণ ব্যাখ্যা করতে নির্দেশ দিলেন। উকিল রফিক সাহেবের কথাবার্তা বিচারক সাহেবের মোটেও পছন্দ হলো না। শুনানির একপর্যায়ে উনি সরাসরি রিমন’কে জিজ্ঞেস করলেনঃ
-রিমন তুমি কার কাছে থাকতে চাও? বাবা না মা? ভয় পাবার কোন কারণ নেই। তুমি যেটা চাইবে সেটাই হবে। সাহস করে শুধু একবার আমাকে বলো। আমি তোমার সব ইচ্ছে পূরণ করে দেবো।

এজলাসে দাঁড়িয়ে রিমন বড় বড় চোখে একবার মায়ের দিকে, আরেকবার বাবার দিকে তাকাচ্ছে। ওকে যে এই প্রশ্ন করা হবে সেটা মিথিলা ম্যাডাম আগেই বলে দিয়েছিল। কী বলতে হবে সেটাও ম্যাডামের সাথে আলোচনা করে ঠিক করে রেখেছিল রিমন। জোরে তাই চিৎকার করে রিমন বলে উঠলোঃ
-আমি আব্বু আম্মু দুইজনের সাথেই থাকতে চাই। আব্বু আম্মুকে একসাথে দেখতে চাই। স্যার আপনি আমার আব্বু আম্মুকে আগের মতো একসাথে করে দিন। আমার আর কিচ্ছু দরকার নেই।

রিমন মাথা ঘুরিয়ে বাবার দিকে ফিরে বললোঃ
-আব্বু আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
এরপর রিমন মায়ের দিকে ফিরে বললোঃ
-আম্মু আমি তোমাকেও অনেক ভালোবাসি। আমি তোমাকে অনেক মিস করি আম্মু।

অশ্রুসজল চোখে নিপা বিচারকের কাছে অনুমতি চাইলেন এজলাসে বাচ্চার কাছে যাবার। সাথে সাথেই অনুমতি মিলে গেল। প্রায় দৌড়ে যেয়ে নিপা রিমন’কে শক্ত করে বুকের মাঝে জড়িয়ে হাউমাউ করে উচ্চস্বরে কেঁদে উঠলো। রিমনও নিজের দুইহাতে শক্ত করে মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করলো। কাঁদতে কাঁদতেই একপর্যায়ে রিমন মায়ের কাঁধের উপর থেকে গলা উঁচু করে বাবার দিকে ফিরে বললোঃ
-আব্বু, আব্বু তুমিও আসো। আমাদের কাছে আসো। প্লীজ আব্বু আসো, আসো প্লীজ।
রিমন সামনের দিকে বাড়ানো দুইহাত দিয়ে বাবা’কে ব্যাকুলভাবে ডাকছে। রিমনের এই ব্যাকুল আবেদন উপেক্ষা করা রাশেদের পক্ষে সম্ভব হলো না। নিজের সমস্ত ইতঃস্ততা কাটিয়ে গুটি গুটি পায়ে নিপা এবং রিমনের পাশে যেয়ে দাঁড়ালো। রিমন হাত বাড়িয়ে বাবার হাত ধরে টেনে নিজের আরো কাছে টেনে নিয়ে আসলো। ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকা নিপা ওর গাঁ ঘেষে দাঁড়িয়ে থাকা রাশেদের দিকে ঝট করে মুখ তুলে তাঁকিয়ে মাথা নীচু করে ফেললো। রিমন ওর ছোট ছোট হাত দিয়ে মায়ের মুখ বাবার দিকে ফিরিয়ে ধরে বললোঃ
-আম্মু তুমি আব্বুকে স্যরি বলো।

এরপর বাবার ডানহাত দুইহাত দিয়ে শক্ত করে ধরে মায়ের গায়ের সাথে লাগিয়ে বললোঃ
-আব্বু তুমিও আম্মুকে স্যরি বলো।

নিপা রাশেদ কেউ আর সহ্য করতে পারলো না। তিনজনই একে অপরকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো। বাবা-মা-সন্তানের একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কান্নার দৃশ্য দেখে মুহুর্তেই আদালতের এজলাসে এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হলো। আইন আদালত সবকিছুই যেন সহসাই বিবেকের উপস্থিতিতে লজ্জা পেয়ে পালিয়ে গেল। রিমনের চোখের জলের আবেগে ভেসে গেলে নিপা রাশেদের এতদিনের সব মান অভিমান অভিযোগ। নিপা, রাশেদ এবং রিমনের কান্নার রেশ যেন ছড়িয়ে পরলো সবার মাঝেই, আদালতের আনাচে-কানাচে।

বাদী বিবাদী দুইজন উকিলই হাত দিয়ে চোখের জল বারবার মুছে ফেলছেন। আবেগে আপ্লুত সবার চোখেই ছল ছল জল।

স্বয়ং বিচারপতি টিস্যু পেপার দিয়ে কিছুক্ষণ পর পর চোখের জল মুছে ফেলছেন। আদালতের ভেতরে পিন পতনের নিরবতা।

থমকে গেল এজলাস...................................

অল্প কিছুক্ষণ পরেই বিচারক ভারী গলায় ঘোষনা করলেনঃ
-আমি এই তালাক-আল-রাজীর কেস এখনই ডিসমিস করে দিলাম। আপনার দুইজন বাচ্চাটাকে নিয়ে এখনই নিজের সংসারে ফিরে যান। আপনাদের লজ্জা পাওয়া উচিৎ। যেই ভালোবাসা বাচ্চাটার পাবার কথা, সে পাইনি। বরং উলটো বাচ্চাটাই ভালোবাসা দিয়ে আপনাদের আজ এক করে দিলো। সন্তান হলো বাবা মায়ের মাঝে সর্ম্পকের সেতুবন্ধন। বাচ্চাটা প্রকাশ্যেই আমাদের সবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে সেটাই দেখিয়ে দিয়ে গেল.......................

কিছুক্ষণ পরে,
রিমনের দুইহাত রাশেদ এবং নিপা দুইজন ধরে মৃদুপায়ে আদালত কক্ষ থেকে বের হয়ে আসছে।

ঠিক এদের পিছনেই বের হয়ে আসছেন হাস্যউজ্জ্বল দুইপক্ষের আইনজীবী।

সম্ভবত আইনী লড়াইয়ে এই প্রথমবার এরা দুইজন কেসে না জিতেও, জেতার চেয়ে কয়েকগুন বেশি খুশি হয়েছেন!

পাদটিকাঃ তালাক-আল-রাজী অর্থ হচ্ছে প্রত্যাহার যোগ্য তালাক।
পূনশ্চঃ দৈনিক পত্রিকাতে প্রকাশিত ছোট্ট করে প্রকাশিত একটা সত্যঘটনা অবলম্বনে এটা লেখা। গল্প লেখার জন্য স্থান-কাল-পাত্র কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে। এই ঘটনা'টা আমার হৃদয়ে অনেক গভীরে জায়গা করে নিয়েছিল।

সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইল।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, ফেব্রুয়ারী ২০২১

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৩৮
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×