রংপুরে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার (এইচএসসি) উত্তরপত্রে নতুন করে লেখার সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলার মূল আসামি পরীক্ষক সুবোল চন্দ্রকে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
তবে গতকাল দুপুরে তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আরও ২৬১টি উত্তরপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হামিদুল হকের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গতকাল দুপুরে উপজেলা সদরে সুবোল চন্দ্রের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়িতে কেউ ছিলেন না। পুলিশ ঘরের তালা ভেঙে ভেতর থেকে ২৬১টি উত্তরপত্র উদ্ধার করে।
অভিযানের সময় দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উপসচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল ও উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক খ ম রফিকুল ইসলামসহ বোর্ডের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মোস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, সুবোল চন্দ্রকে এ বছর বোর্ড থেকে মোট ৪৫১টি উত্তরপত্র দেওয়া হয়েছিল মূল্যায়নের জন্য। এর মধ্যে ১০০ উত্তরপত্র তিনি এরই মধ্যে বোর্ডে জমা দিয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ভুরুঙ্গামারীর সোনাহাট ডিগ্রি কলেজের ইংরেজির প্রভাষক সুবল চন্দ্রকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারলে ওই ঘটনার সঙ্গে অন্য কোনো চক্রের হাত আছে কি না, জানা যাবে।
এসআই মুস্তাফিজুর আরও বলেন, জালিয়াতির ঘটনায় গত বুধবার গ্রেপ্তার হওয়া সাতজনের তিন দিনের রিমান্ড চেয়ে গত বৃহস্পতিবার আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আগামীকাল রোববার আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
গত বুধবার রাতে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বিনোদনকেন্দ্র ভিন্নজগতের পাশে একটি হোটেলের ফটক থেকে সোনাহাট ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক আশরাফুল আলমকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় তাঁর কাছ থেকে এইচএসসি ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের ৮৮টি উত্তরপত্র উদ্ধার করা হয়। তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ওই রাতেই আরেক কলেজ শিক্ষকসহ আরও ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় সুবোল চন্দ্র ও গ্রেপ্তার হওয়া সাতজনকে আসামি করে গত বৃহস্পতিবার গঙ্গাচড়া থানায় মামলা করেন এসআই মুস্তাফিজুর রহমান।
আশরাফুল আলম জানান, উত্তরপত্রে নতুন করে লেখার সুযোগ দেওয়ার জন্য প্রায় ১০০ পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে তাঁরা পাঁচ থেকে সাত হাজার করে টাকা নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে ওই পরীক্ষার্থীরা বিনোদনকেন্দ্র ভিন্নজগতে জড়ো হয়ে নিজ নিজ উত্তরপত্রে নতুন করে লিখবে, এমন কথা ছিল।
খোচা দিন