বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ক্ষেত্রে কোন দোষ নেই,দোষী নেই,শাস্তি নেই!
মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন জোট তৃতীয়বারের মতো রাষ্ট্রক্ষমতায় আছে। যে দেশে সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় উপাসনালয়ে ভাঙচুর দূরের কথা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অপরাধেই ডজন ডজন মামলা হয়, মন্ত্রীত্ব হারাতে হয়, বিহার হয় এমনকি বাধ্য হয়ে দেশ্য ত্যাগও করতে হয় সে দেশে সংখ্যালঘু জনগণের হাজার হাজার ধর্মীয় উপাসনালয় ভাঙচুর করলেও ধর্মীয় অনুভূতি অটুট থাকে এবং কোনো বিচার হয় না।
গত ৫ই জানুয়ারি ২০১৪ এর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন থেকে ৫ই ফেব্রুয়ারি ২০১৪ পর্যন্ত এক মাসে ২৩টি জেলায় ৪ জন সংখ্যালঘুকে হত্যা, ২ জন গৃহবধূকে পাশবিক নির্যাতন, ৪৫২টি সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, ২৪৬টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ২৬টি মন্দির-গির্জা-উপাসনালয়ে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ভাঙচুর ও হামলা চালানো হয়েছে।
এছাড়া, ২০১৪ সালের দুর্গা পূজাতেও প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের একিই ধারা অব্যহত ছিল ২০১৫ সালেও যে কারনে,
বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের বিভিন্ন শহরে একই দিনে সংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ৯ জানুয়ারি সাংবাদিক সম্মেলনে দেশগুলোর বিভিন্ন সংগঠন বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের লিখিত প্রতিবাদ জানান। এটি মূলত: সারা বিশ্বের বাংলাদেশী বংশদ্ভোত সংখ্যালঘুদের একটি সমন্বিত প্রয়াস। প্রেস বিবৃতিতে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সংবাদিক বন্ধুদের প্রতি বিশ্ব মিডিয়ার প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, ‘আপনারা আমাদের এই আর্জি আপনাদের মিডিয়ার মাধ্যমে সর্বত্র পৌঁছে দিন এবং সংখ্যালঘুদের জানমালের নিরাপত্তা দিতে সহযোগিতা করুন।’
২০০১ সালের নির্বাচনের পর দেশ ব্যাপী সংখ্যালঘু নারীদের উপর যে অত্যাচার হয় তার মধ্যে পূর্ণিমা নামটি আলোচিত। সাতজন মিলে এই বাচ্চা মেয়েকে ধর্ষণ করে। বাধ্য হয়ে মেয়ের মা’কে বলতে হয়-বাবারা তোমরা একজন একজন করে যাও। আমার মেয়েটা অনেক ছোট!
২০১৫ সালে বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার দলীয় সন্ত্রাসিরা লক্ষ্মী পূজা উদযাপন অপরাধে ফেনীতে তুলশী দাস নামের মায়ের পেটে লাথি মেরে গর্ভপাত ঘটায়।
এদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন করার জন্য কোন অজুহাতের দরকার হয় না তাই দেখা যাচ্ছে বারে বারে। দলী সংঘাত হোক আর আদর্শে সংঘাত হোক বা ক্ষমতার দ্বন্ধ হোক ঝড় যায় সংখ্যালঘুদের উপরই। রাষ্ট্র চাইলে যেকোন অন্যায় এর বিচার করে অপরাধ দমন সম্ভব হলেও সেই ১৯৪৭ সাল আজ অবধি রাজনীতির বলি হিসেবে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার, নিপীড়ন আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে সব সরকার আমলে একিই চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে যার কোন বিচার বাংলাদেশে নেই।
বিঃদ্রঃ গত ১১ই জানুয়ারি২০১৬ বাংলাদেশ প্রতিদিনের একটি খবরের শিরোনাম ছিল “২০ হাজার সংখ্যালঘু নির্যাতন -কারও শাস্তি হয়নি ১৩ বছরে” যেখানে বলা হয়েছিল,২০০১ সাল-পরবর্তী ১৩ বছরে দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ২০ সহস্রাধিক ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়াও বাহাত্তর-পরবর্তী বিভিন্ন হামলা-নির্যাতনের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৬ শতাধিক সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ। এর মধ্যে প্রায় ১২ হাজার পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। সংঘবদ্ধভাবে হামলা, নির্যাতন, লুটতরাজের ঘটনায় লক্ষাধিক সংখ্যালঘু সদস্য নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে বলে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের এক প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে।
তথ্যসুত্রঃ ইন্টারনেট।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪২