একদিন আমার জন্যে ক্লাস ফাঁকি দিবে কেমন?সেদিন দুজন মিলে ঢাকা শহরের সব করবী ফুল কুড়াবো।শুধুই করবী।এর মাঝে নয়নতারা চোখে পড়ে গেলে সেগুলো নেয়ার বায়না করো না আবার।
নয়নতারা কুড়ানোর জন্যে, গাছ থেকে পাড়ার জন্যে আমরা আরেক দিন বের হবো।সেদিনও তোমাকে ক্লাস কামাই দিতে হবে।তুমি দিতে না চাইলেও।তোমার ক্যাম্পাসের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবো।জোর করে তোমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যাবো।তবে তার আগে করবী কুড়াতে বের হবো আমরা।
জানো তো,ঢাকা শহরে না সব হলুদ করবী, রক্তকরবীটা একেবারেই পাওয়া যায় না।কিন্তু আমার যে রক্তকরবীটাই বেশি ভালো লাগে!
করোনার সময় আমি নতুন করে রবীন্দ্রনাথের রক্তকরবী টা পড়েছি।ইউটিউবে শুনেছি।দেখেছি।সে থেকে মনে হয় শহরে সব করবীফুল এনে তোমায় দেই।ভালো কথা রক্তকরবী পড়েছো তুমি?আমার কাছে সেটার একটা পকেট বই রয়েছে।চাইলে তোমায় সেটা ধার দিতে পারি।পড়ে কিন্তু ফেরত দিতে হবে।
জানো,আমি না রক্তকরবী নাটকটা সরাসরি স্টেজে দেখি নি এখনো।একদিন শিল্পকলায় সেটা দেখতে যাবো কেমন? সেদিন তুমি শাড়ি পড়ে এসো।আমিও না হয় পুরোনো রঙ জ্বলা পাঞ্জাবীটা আয়রন করে পড়লাম।সেদিন শাড়ির সাথে মিলিয়ে টিপ পড়ো।কালো টিপ-ই যে পড়তে হবে এমন ধরা বাধা কোনো নিয়ম নেই।তবে হাতে চুড়ি পড়ো না।আমিই শাড়ীর সাথে ম্যাচিং করে চুড়ি কিনে পড়িয়ে দিবো।
জানোই তো আমার পকেটের অবস্থা।টিপ-চুড়ি-আলতার বেশি কিছু দেয়ার মুরদ আমার নেই।কখনো হবে বলেও মনে হয় না।যে কথা বলছিলাম,মাঝেমধ্যে শুধু আমার জন্যে ক্লাস ফাঁকি দিও? শুধু আমার জন্যে?(কাল্পনিক)
পুনশ্চ-
রক্তকরবী নাটকে কিশোর নন্দিনীর জন্যে অনেক খুঁজেপেতে একজায়গায় জঞ্জালের পেছনে একটা রক্তকরবী ফুলের গাছ পায়।সেখান থেকেই ফুলে এনে দেয় কিশোর,নন্দিনীকে।কিশোর হলো শ্রমিক,মাটি খোদাই করে সোনা আহরণ করে।সারাক্ষণ থাকে সার্ভিলেন্সে।নন্দিনী, কিশোর কে বলে গাছটা কোথায় দেখিয়ে দিতে, পরের বার যেন সে নিজেই ফুল নিয়ে আসতে পারে।তবে কিশোরকে আর ঝুঁকি নিয়ে ফুল আনতে হবে না।কিশোর বলে,না ওসব চলবে না।যতো ঝুঁকিই থাকুক।আমি নিজের হাতে তোমায় রক্তকরবী এনে দিবো।তবেই আমার প্রাণ জুড়াবে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ৯:২৫