somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নির্বাক স্বপ্ন
চিন্তা প্রসবের বেদনা মগজব্যাপী স্থায়ী হওয়ার আগেই কলম ধরতে হতো। মাথার মধ্যে জমে থাকা ভয়ংকর সব চিন্তাগুলোকে পরিণতি দেয়া মত শব্দ কোনো কালেই ছিল না।তারপরও সেই সব গল্প লেখতেই হতো,যেগুলো লেখার পর শান্তিতে ঘুমানো যায়।

অভাজনের জ্যোতির্ঘন

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১.
ছোটবেলায় হুমায়ুন আজাদ পড়ি নি বলে আমার খুব আফসোস হয়।যখন আমি সিক্স কি সেভেনে পড়ি তখন থেকেই আমাদের ঘরে হূমায়ুন আজাদের কবিতাসমগ্র আর কিশোরসমগ্র ছিল।সেই স্কুল পালানো অবাধ্য সময়ে মুহাম্মদ জাফর ইকবাল আর কমিক্স বই নিয়ে এতোটা মত্ত ছিলাম যে আলাদা করে হূমায়ুন আজাদ পড়ার আর ফুরসত পাই নি।এমনিতেও আমি ছিলাম পড়াশুনা না করা দুষ্ট ছেলেদের দলে।

২.
সচেতন ভাবে হূমায়ুন আজাদের লেখা পড়ি বন্ধু দেবজিতের বদৌলতে।দেবজিত তখন ঢাবিতে বাংলায় পড়তো।ওদের ফার্স্ট ইয়ারে হুমায়ুন আজাদের 'বহুমাত্রিক জ্যোর্তিঘন' ( নামটা ভুলও হতে পারে।অনেক দিন আগে পড়া) নামের একটা প্রবন্ধ ছিল।আমি সেটা এক বসায় পড়েছিলাম।তার লেখা যেন মুক্তোর মতন! সেই বয়সে লেখাটা খুব নাড়া দিয়েছিল।এভাবেও উত্তম পুরুষে প্রবন্ধ লেখা যায়?ভালো কথা, 'উত্তমপুরুষ' নামে রশীদ করিমের একটা চমৎকার উপন্যাস রয়েছে।যারা পড়েন নি,পড়ে নিয়েন।পিডিএফ এভেইএবেল।

৩.
আমি পুরোদমে হুমায়ুন আজাদ পড়া শুরু করি ২০১৬-১৭ সালের দিকে।'নারী' বইটার পিডিএফ আমার সেই সময়েই পড়া।মাঝের এতোগুলো বছর কেন পড়ি নি, আমি নিজেও জানি না।কৈশোরে দাদাকে হূমায়ন আজাদের কবিতার বই নাড়াচাড়া করতে দেখলেও নিজে খুব একটা পড়ি নি।আমি তখন কবিতা বলতে বুঝতাম শুধু ছড়া কে,মা যেটা আমায় পড়ে শুনাতো।পরে বড়ো হয়ে হুমায়ুন আজাদের কবিতা টুকটাক পড়েছি।এমনিতেও কবিতা তো আর এক বসায় শেষ করার বিষয় না।

৪.
হূমায়ন আজাদ অদ্ভুত স্পর্ধা নিয়ে কবিতা লিখতেন, গদ্য ও।কলম দিয়ে সব ভেঙে চুরমার করে দিতে তিনি।তিনি ছিলেন কাউকে পরোয়া না করা এক কঠোর সাহিত্য সমলোচক।বিতর্ক হবে জেনেও তিনি সাহসী সব স্টেটমেন্ট দিতেন, কলাম লেখতেন।আলোচনায় থাকার জন্যে এসব করতেন কি না জানি না, তবে নিজের বয়ান কে জাস্টিফাই করার মতন তীক্ষ্ণ যুক্তিবোধ তার ছিলেন।

৫.
গত দুই দিন ধরে রসিয়ে রসিয়ে তার 'আততায়ীদের সঙ্গে কথোপকথন' নামের একটা সাক্ষাৎকারে বই পড়ছি।বইয়ের প্রতি ছত্রে তার প্রবল আত্ম বিশ্বাস ধরা পড়ে।মুগ্ধ হয়ে শুধু পড়েই যাচ্ছি।দু তিন মাস আগেও আমি যখন রোগশয্যায় নরসিংদী পড়ে আছি তখন মামার বুক শেল্ফ থেকে দ্বিতীয় বারের মতন পড়েছিলাম ' আমার অবিশ্বাস'।বড়ো হওয়ার পর একাডেমি পারপাস ছাড়া কোন বই ই একাধিক আমি একাধিক বার পড়ি না।মামার বুক শেল্ফে আরো বই ছিল।অরুন্ধতী রায়ের 'গড অফ স্মল থিংস' বইটাও।সেটা আমার পড়াও ছিল না।সেটা না ধরে আমি শুরু করলাম আগের পড়া একটা বই।কেন করেছিলাম সেই কাজ? হয়তো হূমায়ুন আজাদের পড়ে ফেলা লেখা দিয়ে আমি সাত আট বছর আগের 'আমি' খুঁজচ্ছিলাম।যে ধূমকেতুর মতন সবটা আকাশ গ্রাস করে নিতে চাইতো।

৬.
প্রায় ২০ বছর হতে চললো তিনি আমাদের মাঝে নেই।এই ফেসবুকের যুগে তিনি থাকলে কি করতেন, কি লেখতেন কল্পনা করার চেষ্টা করি।তবে খুব একটা সুবিধে করতে পারি না।আমি হূমায়ন আজাদ কে সেই ৮০-৯০ দশকের প্রবল প্রতাপশালী একজন প্রথা বিরোধী লেখক হিসাবে দেখতে পছন্দ করি।যিনি হয়তো মহা সমারোহে শ্যাডোর সামনে দিয়ে কলা ভবনের বাংলা ডিপার্টমেন্টে যাওয়ার পথে করবী ফুল গাছটার সামনে আনমনা হয়ে যেতো।আচ্ছা তখন কি তার নিজেকে 'রক্তকরবী' নাটকের পাতালপুরীর রাজা মনে করতেন?যিনি চেয়েও শৃঙ্খল ভাঙতে পারছেন না। কিংবা শুধুই দর্শক বনে থাকা অধ্যাপক?
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:০৯
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাইনারি চিন্তাভাবনা থেকে মুক্তি: পূর্ণাঙ্গ তুলনার ধারণা এবং এর গুরুত্ব

লিখেছেন মি. বিকেল, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৩০



সাধারণত নির্দিষ্ট কোন বস্তু যা শুধুমাত্র পৃথিবীতে একটি বিদ্যমান তার তুলনা কারো সাথে করা যায় না। সেটিকে তুলনা করে বলা যায় না যে, এটা খারাপ বা ভালো। তুলনা তখন আসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×