শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের 'জীবন-রহস্য' পড়ে জানলাম নবনীতা দেবসেনের লেখা পড়লে নাকি মনে হয়,মানুষটা সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছে।আমি ক্ষুদ্র পাঠক,এখনো নবনীতা তেমন করে পড়া হয় নি।তবে 'সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলা'র ব্যাপারটা খুব করে পেয়েছি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের গদ্যতে।মানুষটা কি সহজে লেখে যেতেন!এতো সহজে তো কথাও বলা যায় না।
এই ঢংয়ে লেখার জন্য সুনীল কে আমার এক এবং অদ্বিতীয় মনে হতো।এরপর হঠাৎ করেই ধুমকেতুর মতন আবিস্কার করলাম শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়কে।কথা বলার ঢং-এ যে লেখা যায় এটাতে শ্যামল বাবু যেন সুনীলকেও হার মানায়।মাহমুদুল হকের কথা আলাদা করে বলছি না,কারণ তার ভাষা একেবারেই অন্যরকম।সুনীল -শ্যামলের ভাষার সাথে যদি কাউকে মেলানো যায় সেটা হলো- সাগরময় ঘোষ এবং শিবরাম চক্রবর্তী।
যাই হোক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের অটোবায়োগ্রাফি 'জীবন-রহস্য'তে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কথা অংসখ্য বার এসেছে।মদে বেশি জল মেশানো থেকে শুরু করে ড্রাইভিং শেখা অব্দি।কিন্তু সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের আত্নজীবনী 'অর্ধেক জীবন'য়ে শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের কথা পড়েছি বলে মনে পড়ে না।সেখানে শ্যামল বাবুর কথা থাকলেও খুব বেশি হয়তো ছিল না, থাকলে তো মনে পড়তো।
ইদানীং আমার আত্নজীবনীমূলক বই বেশি পড়া হয়।আগে যখন টুকটাক 'সেল্ফ হেল্প' মোটিভেশনাল বই পড়তাম তখন হয়তো অতোটা অনুপ্রাণিত হতাম না,এইসব আত্মজীবনী মূলক বই পড়ে যতোটা হই।
আসলে কে কই থেকে কি পড়ে অনুপ্রেরণা পাবে, তা বলা মুশকিল।অপরাজিত,আরণ্যক,আদর্শ হিন্দু হোটেল পড়ে, আমি যে মনে কি পরিমান বল পেয়েছি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।উল্টো দিকে জগৎখ্যাত দ্যা ওল্ড ম্যান এন্ড দ্যা সী এবং আলকেমিস্ট পড়ে আমার বিরক্ত লেগেছে।
যাক আলাপে ইতি টানি এই বলে যে,সবার লেখাতেই একটা কমন বিষয় আছে- টিকে থাকা জরুরী,সব কিছু ফেস করা জরুরি।জীবন সাইকেলে প্যাডেল মারলে মেডেল আপনি পাবেন ই!
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২