সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায়ের ১৬ সারমর্মঃ-
(১) জনগণ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মালিক, জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস, জনগণই একমাত্র সার্বভৌম;
(২) বাংলাদেশের সরকার মানুষের সরকার নহে, আইনের সরকার;
(৩) সংবিধান বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন, ইহা বাংলাদেশের সকল প্রতিষ্ঠান ও পদ সৃষ্টি করিয়াছে এবং প্রয়োজনীয় ক্ষমতা ও দায়িত্ব অর্পণ করিয়াছে;
(৪) জনগণের সার্বভৌমত্ব, প্রজাতন্ত্র, গণতন্ত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি এবং সংবিধানের মৌলিক কাঠামো;
(৫) গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় কোনো ধরনের ছেদ বাংলাদেশের সংবিধান অনুমোদন করে না;
(৬) সুপ্রিম কোর্ট ইহার বিচারিক রিভিউর ক্ষমতাবলে যেকোনো অসাংবিধানিক আইনকে অবৈধ ঘোষণা করিতে পারেন বা বাতিল করিতে পারেন;
(৭) কোনো মোকদ্দমার শুনানিকালে কোনো আইনের সাংবিধানিকতার প্রশ্ন উত্থাপিত হইলে সুপ্রিম কোর্ট সে সম্পর্কে নির্লিপ্ত থাকিতে পারেন না, আইনের প্রশ্নটি নিরসন করাই সুপ্রিম কোর্টের দায়িত্ব;
(৮) সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের অধীনে জাতীয় সংসদ সংবিধানের যেকোনো সংশোধন করিতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কিন্তু রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি ও সংবিধানের মৌলিক কাঠামো ক্ষুণ্ন বা খর্ব বা সংশোধন করিতে পারে না;
(৯) সংবিধান (ত্রয়োদশ সংশোধন) আইন, ১৯৯৬, বাংলাদেশ সংবিধান সংশোধন (amendment) করিয়াছে;
(১০) সংবিধান (ত্রয়োদশ সংশোধন) আইন, ১৯৯৬, রাষ্ট্রের ভিত্তি এবং সংবিধানের ইধংরপ structure-কে খর্ব করিয়াছে বিধায় উক্ত তর্কিত আইন অসাংবিধানিক ও অবৈধ, সুতরাং বাতিল হইবে;
(১১) বিশেষ প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ও কারণাধীনে কোনো আইন ভাবীসাপেক্ষভাবে (Prospectively) অবৈধ ঘোষণা বা বাতিল করা যাইতে পারে;
(১২) সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবার ক্ষেত্রে, জাতীয় সংসদের বিবেচনা (Discretion) অনুসারে, যুক্তিসংগত কাল (reasonable period) পূর্বে, যথা_৪২ দিন পূর্বে, সংসদ ভাঙ্গিয়া দেওয়া বাঞ্ছনীয় হইবে, তবে, নির্বাচন-পরবর্তী নূতন মন্ত্রিসভা কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত পূর্ববর্তী মন্ত্রিসভা সংক্ষিপ্ত আকার গ্রহণ করতঃ উক্ত সময়ের জন্য রাষ্ট্রের স্বাভাবিক ও সাধারণ কার্যক্রম পরিচালনা করিবে;
(১৩) সংবিধান (ত্রয়োদশ সংশোধন) আইন, ১৯৯৬, অসাংবিধানিক ও অবৈধ হইলেও জাতীয় সংসদ ইহার বিবেচনা (Discretion) ও সিদ্ধান্ত অনুসারে উপরে বর্ণিত নির্দেশাবলি সাপেক্ষে দশম ও একাদশ সাধারণ নির্বাচনকালীন সময়ে প্রয়োজনমতো নূতনভাবে ও আঙ্গিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে;
(১৪) সাধারণ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ হইতে নির্বাচনের ফল ঘোষণার তারিখ পর্যন্ত নির্বাচনের সহিত প্রত্যক্ষভাবে জড়িত এবং নির্বাচন কমিশনের বিবেচনা অনুসারে এমনকি পরোক্ষভাবে জড়িত, রাষ্ট্রের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে থাকিবে;
(১৫) বিদ্যমান সংবিধানের ৫৬(২) অনুচ্ছেদের শর্তের (Proviso) পরিবর্তে ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের ৫৬(৪) অনুচ্ছেদ গণতন্ত্রের স্বার্থে আনয়ন করা প্রয়োজন;
(১৬) ২০০৭ সালে দ্বিতীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ৯০ দিন মেয়াদ-পরবর্তী অতিরিক্ত প্রায় দুই বৎসর সময়কাল প্রশ্নবিদ্ধ বিধায় ওই অতিরিক্ত সময়কালের কার্যাবলি মার্জনা (condone) করা হইল।
সূত্রঃ দৈনিক কালের কণ্ঠ

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




