প্রসঙ্গ- বিলেতে বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রীদের অবস্থান
(স্থানীয় একটি পত্রিকায় এই লেখাটি পড়ে ভালো লাগলো, তাই ব্লগের অগণিত পাঠক পাঠিকাদের জন্য তুলে দিলাম। চৌধুরী হাফিজ আহমদ সাহেবের লিখা কলাম মাঝেমধ্যে বিভিন্ন পত্রিকাতে পড়ে থাকি। বরাবরই দেখেছি উনি সময়ের সাথে মিল রেখে বাস্তবধর্মী কলাম লিখে থাকেন। আশা রাখি এই লেখাটি আপনাদের ভালো লাগবে)
_____________________________________________
সৃষ্টির মধ্যে মানুষ আলাদা, মানুষের মধ্যে এই পার্থক্য হবার মূল কারণ হল- মানুষ শিক্ষা অর্জন করতে পারে এবং এই শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে পারে সর্বত্র। শিক্ষা অর্জন করার জন্য সবাই উৎসাহ দেন। এমন কোন দেশ বা জাতি নেই যেখানে শিক্ষা নেই। প্রায় সব ধর্মেই শিক্ষা দিতে এবং নিতে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আল কোরআনে তো শিক্ষাকে সর্বোচ্চ স্থান দেওয়া হয়েছে। জগত শ্রেষ্ঠ এবং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহা মানব হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সঃ) এর কাছে প্রথম ওহী নিয়ে এসেছিলেন হযরত জিব্রাইল পড়ুন শব্দ নিয়ে। এবং এই মহামানব শিক্ষাকে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, কর্ম নির্বিশেষে উপড়ে স্থান দিয়েছেন এবং বলেছেন শিক্ষার জন্য প্রয়োজন হলে দেশান্তরী হও। পৃথিবীতে একমাত্র শিক্ষাই দিতে পারে সব কলুষিত মিটিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে। যে যেখানেই বাস করি না কেন যে ভাষাতেই কথা বলি না কেন শিক্ষা ব্যতিত উন্নতি অগ্রগতি আশা করতে পারি না। ভাষার কোন হিসেব নেই। এমন কি জীব জন্তুরও ভাষা আছে। ভাষাবিহীন কিছু আছে জীবের মধ্যে মনে হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না। ভাষাই হচ্ছে শিক্ষা অর্জনের মাধ্যেম তা মানতে হবে। শিক্ষার জন্য মানুষের করতে হয় প্রচুর পরিশ্রম। এমন কি খাদ্যের বিনিময়েও শিক্ষা অর্জন করতে হচ্ছে আফ্রিকা, এশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। শরীরের ঘাম অশ্র“র মতো ঝরে পড়ে শিক্ষা অর্জন করতে। বিশ্বের বরন্য মনিষী এবং তুখোর চিন্তাবিদ হিসেবে গ্রহণযোগ্য জাতি ধর্ম নির্বিশেষে হযরত ইমাম গাজ্জালী (রঃ) এর ভাষ্য মতে শিক্ষা এমন এক আলো যা চরম কষ্ট এবং পরিশ্রম ব্যাতিত অর্জন করা সম্ভব নয়। শিক্ষার জন্য অনেক দেশ থেকে আত্বীয় প্রিয়জন রেখে বিদেশী হতে হয়েছে। যেখানে শিক্ষা সেখানেই আলো। যেখানেই শিক্ষা সেখানেই উন্নতি অগ্রগতি, মর্যাদা, সংহতি ও শান্তি। শিক্ষা ব্যাতিরেকে কোন জাতি সমৃদ্ধ হয়েছে তা মোটেই পাওয়া যাবে না। তাই শিক্ষা অর্জনে শুরু হয় চারিদিকে ছুটাছুটি। সেই ধারাবাহিকতা এখনো অব্যহত রয়েছে। বৃটের হচ্ছে বর্তমানে বহুধর্ম বহুবর্ম সহ বহুমাত্রিক সভ্যতা সংস্কৃতির কেন্দ্রস্থল। আমি ১৯৮৮ সালে এই দেশে এসে দেখছি শিক্ষাঙ্গনে মালেয়েশীয় ছাত্রদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। কিছুদিন পরে দেখলাম চীনা ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি এবং সমান তালে উপস্থিতি ছিলো আফ্রিকা এবং আরবীয় ছাত্র ছাত্রীদের। কম দেখেছি বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি। তখন আমার তরুণ মনে আফসোস করত, আহারে বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রীরা যদি আসতে পারত তা হলে কতই না ভালো হত। মনে মনেই আমি চাইতাম যে ভাবেই পারুক আসুক, আসলে পরে অন্যদের মতো লেখাপড়া করতে পারবে এবং কাজও করতে পারবে। বন্ধুরা যারা আগ্রহ দেখাতো তাদের সবাইকে সাহায্য করার চেষ্ঠা করতাম। আমার অবস্থা অবস্থান এবং সামর্থ আমার প্রবল আগ্রহের সাথে সঙ্গতাপূর্ণ ছিলনা যদিও। সেই থেকে আজ দীর্ঘদিনের ব্যবধানে লন্ডন এবং বার্মিংহামসহ আশে পাশে দেখেছি বাংলাদেশী ছাত্রদের সরব উপস্থিতি। বাংলাভাষার কল কাকলী শুনতে পাই পরিচিত এলাকায়। বাংলাদেশের মানুষের চাহিদার সাথে সঙ্গতাপূর্ন নয় তবুও ছাত্ররা মনে সাহস সঞ্চয় করে শিক্ষার জন্য পাড়ি দিয়েছে সমুদ্র মহাসমুদ্র। কষ্ট হবে তবুও বুকভরা আশা নিয়ে এসেছে ঞ্জান ভান্ডারসহ জীবনের একটি গতিপথ তৈরী করতে। কিন্তু বিধি বাম ইংল্যান্ডের আর্থ সামাজিক অবস্থা খুবই করুন ইতিহাসের মধ্যে এই সর্বপ্রথম গ্রেট বৃটেন এত নিদারুন অর্থনৈতিক মান্দার ধকল সইতে হচ্ছে। লোকেরা চাকুরি হারাচ্ছে শত শত প্রায় প্রত্যেক সপ্তাহ। ব্যবসায় ধস, তাই বড় বড় কোম্পানী থেকে নিয়ে কর্নার সপ বাধ্য হয়ে বন্ধ করতে হচ্ছে। আবার অনেকে লোক ছাটাই করেছেন। যেখানে পাঁচজন লোক কাজ করত সেখানে তিন জন দিয়ে কোনমতে কাজ চালানো হচ্ছে। সরকারি ভাতা পাওয়া ও এখন অতটা সহজ নয়। দ্রব্য মূল্যেও উধ্বগতি মানুষদের প্রায় দিশেহারা করে তুলছে। এর উপড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার কারণে শীতের তীব্রতা ও তুষারপাতের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত। এমতা অবস্থায় যে ছাত্ররা আসতেছে তাদের আশায় প্রচন্ড ঝাকুনি দিয়েছে। ছাত্রদের সাধারণ হিসেব নিকেষ ছিলো কাজ করবো পড়ব। যদি না পারি তা হলে পার্টটাইম কাজ করব।কিন্তু বৃটেনে মান্দাবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের অনেকের আশা ও স্বপ্নকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে।আশাহত ছাত্রদের অবস্থা দেখে আমার খুশীর ঝলককে হতাশার বরফে পরিণত করে ফেলেছে। যে সব ছাত্র-ছাত্রীরা এসেছে তাদের অবস্থা ও অবস্থান খুবই শোচনীয়। আমার সংস্পর্শে যারা এসেছে তাদেরকে আমি সাধ্যমত সাহায্য করেছি। যাদের সাহায্য করতে পারছি না তাদেরকে পরামর্শ দিতেই এই লিখনীর অবতারনা। আমার অবস্থান বার্মিংহামে। যে সব ছাত্ররা বার্মিংহামে এসেছে ওরা লন্ডনের চাইতে বেশ ভালো অবস্থানে আছে। আর কিছু হোক না হোক সপ্তাহে দু’দিন কাজ জুটতেছে। কিন্তু যত সমস্যা হচ্ছে প্রেট বৃটেনের রাজধানী লন্ডনেই। লন্ডনে যারা রয়েছেন তাদের বলব এদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো- মফস্ফলের অনেক জায়গা আছে যেখানে দু'দিন কাজ করার সুযোগ রয়েছে। সপ্তাহের যে দুদিন কলেজ যেতে হয় সেখান থেকেই যাওয়া আসা করা যাবে। ন্যাশনাল এক্সপ্রেস কোচ সার্ভিসে ফান ফেয়ার নামে খুবই নাম মাত্র মূল্যে এমন কি মাত্র এক পাউন্ডে লন্ডন থেকে বার্মিংহাম, কভেন্ট্রি, লেষ্টার, ম্যানচেষ্টার, লিভারপুলসহ প্রায় ত্রিশটি শহরে যাতায়াত করা যায়। লন্ডনে মানবেতর জীবনযাপন না করে মফস্ফল শহরগুলোতে ছড়িয়ে পড়াই বুদ্ধিমানের কাজ। দ্বীতিয়ত- শুধু বাংলাদেশী ব্যবসা নয়, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ইংরেজ হোক বা ইন্ডিয়ান হোক তাদের কাছে কাজের জন্য যাওয়া যায়। ভাষাগত সমস্যা হলেও কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা হয় না। তৃত্বীয়ত- যাদের ইংরেজী ভাষার ভালো দখল রয়েছে তারা ঘরে ঘরে গিয়ে টিউশনি করতে পারে। এদেশে কমবেশি সবাই টিউটার চায়। কিন্ত বিনিময় পারিশ্রামিক সহনীয় থাকা চাই। সপ্তাহে তিন বা চারটা টিউশানি করলে মোটামোটি খরচপাতি করা যায়। চতুর্থ- বিভিন্ন এডভাইস সেন্টার, লকেল লাইব্রেরী, কমিউনিটি সেন্টারের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। পঞ্চমত-টেলিফোন থেকে নিয়ে ধুমপানসহ নিঃপ্রয়োজন ব্যয় কমাতে হবে। ষস্টত- ইচ্ছায় হোক অনিচ্ছায় হোক সব সময় অপরাধ প্রবনতা থেকে দূরে থাকতে হবে। অনেকেই হতাশায় পড়ে ব্যংক জালিয়াতি, চুরি এবং অন্যান্য অবৈধ পন্য বিত্রি“সহ ফোনের সীম কার্ড নিয়ে প্রতারনায় জড়িয়ে পড়া কম্পিউটার হ্যাকিং অন্যের ইনফরমেশন বা নাম নিয়ে সাময়িক সুবিধা আদায় করে। রেষ্টুরেন্টের মাল অন্যেত্র সরিয়ে পড়ে বিক্রি করা। মেয়েদের ভুলিয়ে নিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করা। যা নয় কিংবা যাদের পরিবার পরিজন বাংলাদেশে যা নয় তা বানিয়ে বলা এই সব সম্পূর্নভাবে পরিহার করে পড়াশুনাকেই প্রাধান্য দিতে হবে। অন্যতায় উপরেল্লেখিত অপরাধে জড়িয়ে যাহারা বর্তমানে জেলের ভাত খাচ্ছে, তারা জীবনের সব আশায় পানি ঢেলে সর্বনাশ করেছে তাদের পরিণতি ভোগ করতে হবে।সপ্তমত- লকেল স্পোটস কাব বা জিমসহ আর্ট সেন্টারে থিয়েটার স্কাউটস এর সাথে নিজেকে জড়াতে হবে। সপ্তাহে দু এক ঘন্টা খেলাধূলার মাধ্যেমে শরীর চর্চা করা যাবে এবং নিজের প্রতিভা বিকাশ করা যাবে। খেলাধুলায় মাতওয়ারা না হয়ে স্বাভাবিক অংশ নিলে শুধু শরীর স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় না অর্থনৈতিক ভাবেও উপকৃত হওয়া যাবে। এ দেশে খেলাধুলার মান যেমন উন্নত তেমনি সুযোগ সুবিধাও রয়েছে প্রচুর। প্রায় প্রত্যেকটি শহরে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে কলেজ ভিত্ত্বিক ফ্রি স্পোর্টস সুবিধা রয়েছে যা সহজেই ব্যবহার করা যায়। প্রায় বিনামূল্য দেশে যে সব সুযোগ সুবিধা সহজ লভ্য নয় সেগুলো এই দেশে বিদ্যমান প্রয়োজন শুধু কাজে লাগানো। বাংলাদেশী হিসাবে আমার বাংলাদেশীদের প্রতি টান প্রচুর। যেমনটি ভালো আমি আমার জন্য চাই, তেমনি ভালো আমি প্রতিটি বাংলাদেশী নর নারীদের জন্য চাই। প্রত্যেকটি নাগরিক যেন উন্নত থেকে উন্নতর জীবন যাপন করে শিা দীায় আর্থসামাজিক, সংস্কৃতি সব দিক দিয়ে তাই চাই। অষ্টমত- বিলেতের মতো দেশে পাপ না চাইতেই পাওয়া যায়-এতো খেলামেলা মেলামেশা, বহু জাত বহুবর্ন বহু ধর্ম সেখানে সবাই যার যার মতো করে স্বাধীন। এমন এক আজব গনতন্ত্র যেখানে কেউ চিৎকার করতে বাঁধা দিলে হৈ চৈ পড়ে যায়। আবার কারো আওয়াজে যদি কারো নিদ্রা ভঙ্গ হয় তা হলে ও বিপদ। মিথ্যা প্রপাগান্ডার সীমা নেই। মিথ্যা ছড়িয়ে দেওয়া ও সহজ বেশ। সেখানে চরিত্র ঠিক রাখা খুব কষ্ট করই নয় বেশ দুরুহ বটে। তাই নামায নিয়মিত পড়া চাই। নামায এক দিকে চরিত্র ঠিক রাখতে সাহায্য করে অপর দিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখে এবং রুটিন ঠিক করে চলা যায়। সর্বোপরি উন্নত চরিত্র গঠনসহ পাপ কার্য্য এবং লোভ লালসা থেকে বিরত রাখে। তাই মুসলমানদের সমসজিদের সাথে সম্পর্ক রাখাটা ভালো। অনেক মসজিদে থাকা খাওয়ার অর্থ্যাৎ নাগরিক সুবিধা রয়েছে। মসজিদগুলো বিপদে অনেককেই আশ্রয় সাহায্য করে থাকে। যে কোন সমস্যা নিয়ে মসজিদেও ইমাম সাহেব কিংবা মসজিদ কর্তৃপরে সাথে প্রয়োজনে আলাপ আলোচনা করলে অবশ্যই একটা সমাধান পাওয়া যায়। অন্যান্য ধর্মালম্বীরা তাদের স্ব-স্ব উপসানলয়ের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারেন। এই ভাবে কাছাকাছি থাকলে একে অপরের সাথে যোগাযোগসহ এক অন্যের প্রতি সাহায্য সহযোগীতা করাও সম্ভব। যদিও আঞ্চলিকতার গন্ডিতে আবদ্ধ অনেকেই, তবুও বলব কে কোন অঞ্চলের তা অন্তত বিদেশে না দেখাটাই ভালো। এমনিতেই দেশে গেলে আমাদের বলে বিদেশী এবং বিদেশ আমরা সবাই দেশী বলেই বলে থাকি। নবমত- বিভিন্ন চ্যারিটি সংস্থা আছে যাহারা ছাত্রদের স্কলারশীপ দিয়ে থাকে। আবার অনেকেই আছেন ছাত্রদের এককালীন অনুদান দেয়। আবার কিছু কিছু সংস্থা আছে ছাত্রদের লোন দেয় তাদের পড়শুনার মার্কের উপর নির্ভর করে। যাদের ইন্টারনেটে ঘাটাঘাটি করার অভ্যাস আছে তাদের অবশ্যই জানা আছে কি করে লিষ্ট পেতে হয়। তাদের কাছে লিখতে হবে এককর পর এক সি,ভি সহ বিদেশী ছাত্রদের যদিও অনেকে সাড়া দেয় না। কিন্তু যার যার আর্থ-সামাজিক অবস্থার বিশদ বর্ণনা লিখে বিনীত অনুরোধ জানালে অনেকে সংস্থাই এগিয়ে আসে। তবে এসব করতে হবে আমাদের সহযোগী মনোভাব নিয়ে। অনেকেই আছে এ দেশে এসে তার বর্নবাদী মনোভাব প্রকাশ করে- যেখানে বহুজাতি রয়েছে সেখানে বর্নবাদী মনোভাব একটি অপরাধ এবং পিছিয়ে পড়ার লন। এইসব মন মানসিকতা পরিহার করে মিলে মিশে চলার মত মন মানসিকতা প্রকাশ করলে তির চেয়ে লাভই হয় বেশী। কারো কষ্টে সাহায্যোর হাত বাড়ালে, কারো বিপদে সাহায্য সান্তনা দিলে নিজের উপকার হবে বৈ অপকার হয় না। দশমত- যে কারণে আসা সেই কারণের প্রতি অবিচল থাকা চাই। পড়তে আসা যেহেতু উদ্দেশ্যে তাই সেই উদ্দেশ্যে পূরণে সচেষ্ট হতে হবে। নিয়্যতের উপড় নির্ভর করে সবকিছুই। পড়াশুনার মতো মহৎ নিয়ত করে এসে যদি টু-পাইস কামাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে তা হলে জীবনটাই বিনাশ হয়ে যাবে। পথচ্যুত হলে আবার লাইনে উঠা প্রায় অসম্ভব, মানুষের জীবনের সময়টা খুবই মূল্যবান। আজকের ছাত্রদের প্রতি আমার যে শ্রদ্ধা ও সহযোগীতা মনোভাব তা বিশ বছর আগে আমি পাইনি। পেলে হয়ত আমার অবস্থান আরো উন্নত হতো। তাই কোন ভাবেই হেলা করে সময় নষ্ট করা যাবে না। কাজের প্রতি মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়ায় অবহেলা করলে আগামীতে গোটা জীবনটাই আপে করে কাটাতে হবে। তখন সেই আফসোসের সাথী কেউ হবে না। কাজ করে যে টাকা অর্জন হবে সে সবের অংশীদার হবেন অনেকেই।কিন্তু যে সময় গেল শ্রম দিল, কষ্ট করল তাহার অংশীদার কেউ হতে চাইবে না মোটেই। সে জন্য উপোষ করে হোক উদ্দেশ্যে সাধনে ব্রত হতে হবে। দুনিয়ার প্রাচুর্য্যরে সাথে নিজেকে জড়ালে হঠ্যৎ নিজেকে আবিষ্কার করবে আস্তাকুড়ে। তাই যে সব ছাত্রছাত্রীরা পড়ার নাম করে এদেশে এসেছে তাদের কষ্ট স্বীকার করে পড়াশুনা করাই উচিত। উন্নত জীবনের একমাত্র মাধ্যমই হচ্ছে লেখাপড়া, লেখাপড়া করলে ঞ্জান অর্জন করা যায়। ফুলটাইম না হোক পার্ট টাইম করে ও কোর্স সম্পন্ন করাটা জরুরী। এবার আসা যাক বিলেতবাসী প্রসঙ্গে- বৃটেনে প্রবাসীরা এমন কোন দুর্যোগ নেই যেখানে সাহায্যের হাত প্রসারিত করেন নি। স্বাধীনতা যুদ্ধ, দুভি, দুর্যোগ, বিপদ আপদে সব সময়ই জোড়ালো ভূমিকা নিয়েছেন। বিলেত প্রবাসীর প্রশংসা প্রায় সর্বত্র শোনা যায়। উদার মনোভাবের জন্য বিলেত প্রবাসী বাংলাদেশিরা পরিচয় দিয়েছেন তার বহু প্রমান ও বিদ্যমান। গ্রেট বৃটেনের মতো দেশে কমিউনিটিকে এভাবে সুসংহত করে রাখা সহজ নয়। তবুও নেতৃবৃন্দ তা রেখেছেন। আগের মত পরিস্থিতি ভিন্ন, কিন্তু কমিউনিটির অবস্থান তো নড়বড়ে নয়। তাই ছাত্রদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আশা উচিত এবং জরুরী ছাত্রদের সহযোগীতায় এগিয়ে আসতে পারে। বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ, যুক্তরাজ্যে বি এন পি, জামায়াতে ইসলামী, যুক্তরাজ্য প্রেটার নোয়াখালী এসোসিয়েশন,চিটাগাং সমিতি, গ্রেটার সিলেট কাউন্সিল, বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন, বৃহত্তর ঢাকা সমিতি, বালাগঞ্জ এডুকেশন ট্রাষ্ট, বিত্র“পুর সোসাইটিসহ অন্যান্য এলাকাভিত্তিক সংগঠন যারা অনেকেই সময় ব্যয় করে কষ্ট স্বীকার করে দেশে যেয়ে স্কুল কলেজ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান করেন। অনেক সংগঠনের ফান্ডে লাখ লাখ টাকা জমা রয়েছে, সময়াভাবে অনেক নেতৃবৃন্দ দেশে গিয়ে বৃত্তি প্রদান করতে পারছেন না, তাদের জন্য এই এক মোম সুযোগ যে সব ছাত্ররা এদেশে রয়েছে এবং কষ্ট করছে নানাভাবে তাদেরকে বৃত্ত্বি দিলে লাভ হবে। যাহারা এখানে পড়বে কৃতঞ্জতা সরূপ ওরা সংগঠনে সাহায্যে করবে আগামীতে। এবং সময় ব্যয় করে কষ্ট করে বিমানের ভাড়া দিয়ে যেতে হবে না। এ সব সংঘঠনের উদ্দেশ্যে ও মূলত সাহায্যে করা, তাই যেহেতু বাড়ীতেই সাহায্যপ্রাথী উপস্থিত সেখানে সাহায্যে সহযোগীতা করাটাই শ্রেয়। তাই শুভ কাজে বিলম্ব করতে নেই। আসুন সবাই মিলে শিক্ষার্থীদের সহযোগীতা করি। শিক্ষার মতো মহৎ কাজে যদি আমরা তাদের সাহায্যে সহযোগীতা করি তা হলে অবশ্যই এর প্রতিদান পাব। শিক্ষাই হচ্চে জাতীর মেরুদণ্ড এবং শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। আমি ছাত্রছাত্রীদের থেকে হতাশ হবো না এবং সেই শিক্ষার স্রোতধারা তাহারা অব্যহত রাখবেন বলে মনে প্রানে বিশ্বাস করি। শিক্ষাই হোক আমাদের হাতিয়ার। আমরা যেন শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে পাড়ি বিশ্বময়, সেই কামনায়।
বিনীত
চৌধুরী হাফিজ আহমদ
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ৮:৪৩