শিক্ষিত পাবলিক যে ব্যাক্তি বিদ্ধেষ কিংবা ব্যাক্তি প্রেমের কল্যানে কতটা ক্যাচাল করতে পারে তা ব্লগে না আসলে কোনদিনই জানতে পারতামনা।মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে আসি শুধু জ্ঞানী মানুষগুলো কিভাবে নির্বোধের মত লড়তে পারে সেটা দেখতে।
জাফর স্যার তারে নাক্কা হিন্দী গানে মাতাল হয়ে মিনিট খানেক নেচেছে সেটার জন্য একদল উপাধী দিয়েছে লুল আর যারা উপাধী দিয়েছে জাফর স্যারের ভক্তরা তাগোরে দিছে রাজাকার ( যেভাবে ব্লগে কথায় কথায় রাজাকার উপাধী দেওয়া হয় সেভাবে আগামী প্রজম্ম রাজাকার অর্থ কি এই কামড়া কামড়ি করবে ।)কারু কারু কমেন্টে যেমন ব্যাক্তি বিদ্ধেষ আছে তেমনি কারু কারু কমেন্টে জাফর স্যারের পক্ষ নিতে গিয়া দাদাপ্রেমও ফুটে উঠেছে।হিন্দী সংস্কৃতির আগ্রাসনে যে আমাদের দেশীয় সংস্কৃতি যে রসাতলে যাচ্ছে সেটা নিয়া কারু মাথা ব্যাথা নাই।সুযোগ পাইছি জাফর মিয়ারে একহাত লইয়া লয় অপরদিকে সুযোগ পাইছি যারা জাফর স্যার আর তারে নাক্কা সংস্কৃতির বিরোধী তাগোরে রাজাকার কইয়া দৌড়ানি দেয় তাইলেই সব ঠিক হইয়া যাইব।মুল সমস্য নিয়া কারু মাথা ব্যাথা নাই
একুশে টেলিভিশন ঈদের অনুষ্টানের জন্য রাভিনারে আনে ২০১০কে স্বাগত জানাতে অভিজিতরে আনে,বাংলাভিশন গুলশান এভিনিউ সিরিয়ালে হিন্দী সিরিয়ালের বাথরুমের কমেড থেকে বাসর ঘরের বিছানার চাদর সবখানেই নকল করে ,চ্যানেল আই হিন্দীকে কটাক্ষ করতে ঈদ নাটকে হিন্দী সিরিয়াল অনুকরন করে কটাক্ষ করে তখন আমগো কিচ্ছু হয়না ।যখন জাফর স্যার করে তখন আমগো লাগে আবার জাফর স্যার যে বাংলা প্রেমের সাগরে ভাসার নুমুনা দেখায় বিভিন্ন অনুষ্টানে কিন্তু রাইতে গোপনে ঠিকই হিন্দী চঠুল গানের সুরে নাচে সেটা কইলে জাফর প্রেমীগো লাগে ।মারহাবা এই না হলে দেশপ্রেম।শুক্রবারের দিন আসেন সবাই হালুয়া খাইতে খাইতে নিচের লেখাটা পড়ি ।পইড়া যদি মাথার ঘিলু গুলারে কাজে লাগাইতে পারেন তাইলে আইজকাই বাসার ডিশলাইনে অপারেশন কইরা সব তারেনাক্কা চ্যানেলে আবজর্নায় ফেলবেন আর তা যদি না পারেন তাইলে এভাবে কাইজ্জা কইরা রাজাকার শব্দের মানেটাই পাল্টে ফেইলেন না।
দুপুর থেকে গভীর রাতে টিভির রিমোট নারীর হাতে
কিরে বান্দর কি করছিস?
-দেখতেই তো পাচ্ছিস টম এন্ড জেরীর বাদরাঁমী দেখছি।
-বাদরাঁমী দেখে দেখে যে গ্রেট বান্দর হচ্ছিস সেটা তোর শত্রুও অস্বীকার করবেনা।
-কাকের মত কাঁ কাঁ না করে যে কাজে এসেছিস তা সেরে যে পথে এসেছিস সে পথে রাস্তা মাপতে মাপতে বাসায় যা।
-রিমোট মেরা হাত মে দে কে আমি যে পথে এসেছি সে পথে গিয়ে তুই রাস্তা মেপে দেখ মে নে কিতনা পা হেঁটে এসেছি।আমি ততক্ষন সিরিয়াল দেখি।আর শোন,যাওয়ার সময় একটা বস্তাও নিয়ে যাস।রাস্তা মাপতে মাপতে যত কাগজ সামনে পাবি সেগুলো বস্তায় ভরিস।কাগজ বিক্রি করে টাকা আমাকে দিস।তোর টাকাই বাদাম খানেমে বহুত মজা আতা হ্যায়।
-আজব কাহিনীতে ভরা যে সিরিয়ালগুলোতে হাত থেকে চায়ের কাপ পড়ে ভেঙে যেতে ৫মিনিট লাগে তা তোদের বাসায় গিয়ে দেখ।
-দেখ হিন্দী সিরিয়াল নিয়ে ৬৯মার্কা কমেন্ট করলে মাথার চুল একটাও থাকবে না।
-একশবার,হাজারবার করব।তোদের হিন্দী সিরিয়ালের অভিনেত্রীদের মুখে সাত সকালে যে মেকআপের আস্তর থাকে সন্ধ্যার সময়ও একই রকম মেকআপের আস্তর ...আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই খালাত বোনটা মাথার চুল টেনে ধরতেই রিমোট দিয়ে দিলাম।
রিমোট দখলে নিতে আজকালকার নারীরা আমার মত অগনিত অভাগা পুরুষদের কেউ চুল ছেঁেড়,কেউ কিল-গুসি দেয়।সেদিন এক পাড়াত ভাই আফসোস করে জানাল,ভাবীর সিরিয়াল দেখার কারণে কোনদিনই রাতের খবর দেখতে পারেনা তাই রিমোট লুকিয়ে রাখায় ভাবী উনাকে একদিন না খাইয়ে রেখেছে।বছর সাতেক আগেও মা,চাচী,খালা,বোন,পাড়াত-খালাত-মামাত বোন আর ভাবীরা দুপুরে খাওয়া সেরে হয় ঘুমাত না হয় কয়েকজন মিলে সুখ-দুখের কথা বলত।কিন্তু আজকালকার
মা,চাচী,খালা,বোন,ভাবীরা দুপুরে রিমোট দখলে নেয় আর রিমোটের দখল ছাড়ে গভীর রাতে।টিভির সামনে বসে কি দেখে আজকালকার আধুনিক নারীরা?বাপ-বেটির টেলিভিশন বিটিভি না বেলা বিস্কুট টিভি ওরফে বিবিস?ডিসকভারি,ন্যাশনাল জিওগ্রাফি,এনিমেল প্লানেট নাকি কিডস চ্যানেল?নিও স্পোর্টস নাকি স্টার স্পোর্টস?প্রিয় পাঠক আপনাদের উওর যে ‘না’ তাতে এ অধমের কোন সন্দেহ নেই।তাহলে কি দেখছে?আপনারা যে মনে মনে বলছেন স্টার প্লাস,সাহারা ওয়ান,সনি,এনডিটিভি ইমেজিং তাতে আমার কোন সন্দেহ নেই।
মুক্ত আকাশ সংস্কৃতির এ যুগে পাশ্ববর্তী দেশের বিনোদনওয়ালারা আমাদের দেশীয় চ্যানেলগুলোকে তাদের ড্রয়িংরুমে প্রবেশ করতে না দিলেও আমাদের দেশের সুশীল(?)বিনোদনওয়ালারা পাশ্ববর্তী দেশের চ্যানেলগুলোকে সাদরে আমাদের ড্রয়িংরুমের নিয়ে এসেছে।ড্রয়িংরুমে প্রবেশের সুযোগ পেয়েই আমাদের নারীদের মনের গভীরে প্রবেশ করেছে সিরিয়ালের উর্বশী,শর্বশী,কুমুকম,মেনকা,পার্বতীরা।পুরুষ সারাদিন পরিশ্রম করে মাস শেষে বেতন নিয়ে আসে আর সে টাকা থেকে ডিশ সংযোগের বিল দিয়ে আমাদের নারীরা একদিকে শিখছে বউ শাশুড়ীকে,শাশুড়ী বউকে,ননদ ভাবীকে,ভাবী ননদকে কিভাবে সাইজ করে;স্বামীকে কি করে দৌড়ের উপর রাখা যায়;কিভাবে স্বামী তালাক দেওয়ার পর দেবরকে বিয়ে করে সংসারে আগুন জ্বালাতে হয়।।অপর দিকে নারীরা গিলছে কি করে সিরিয়ালের নায়িকা ২স্বামীকে ম্যানেজ করছে আর পরকীয়ার রগরগে দৃশ্য।আগে নারীদের আড্ডায় নিজেদের সাংসারিক আলাপ হত আর এখন হয় সিরিয়ালের উর্বশী,পার্বতী,কুমকুমদের ভার্চুয়াল পরিবারের সমস্যা;আগে চলত ইংরেজী বলার প্রতিযোগিতা আর এখন চলে হিন্দী বলার প্রতিযোগিতা। যে কাহিনী দিয়ে এক পর্বের নাটকও হবে না সে কাহিনীকে লম্বা লম্বা করে করে কয়েক’শ পর্ব বানিয়েও সে কাহিনীকে আরো কয়েক’শ পর্ব লম্বা করতে পূর্নজম্ন করে ছাগলামী করা হয়।
সেদিন মেঝ খালার বাসায় গিয়ে টিভির রুমের দরজায় দাঁড়িয়ে দেখি সোফায় বসে টিভির দিকে থাকিয়ে খালাত ভাই মামুনের বউ মিলা ভাবী আর কাজের বুয়া কাঁদছে।কাজের বুয়া চোখের পানি মুছতে মুছতে খালাকে বলল,'এত সুন্দর বউডারে তালাক দিয়া দিল?’দৌড়ে গিয়ে ভাবীর পাশে বসে বললাম,মামুন ভাই তোমাকে তালাক দিল?
-আরে বুদ্ধ আমাকে না?সিরিয়ালে।দেখছনা সুন্দরী সেক্রেটারির প্রেমে পড়ে কিতনা সুইট বউটাকে তালাক দিয়ে দিল।মনে মনে বললাম,সারাজীবন যেন এমন বুদ্ধই থাকি।
সব কথার শেষ কথা জাফর স্যাররে মত বুদ্ধিজীবগো তারে নাক্কা নাচ যতটা না ক্ষতি করছে তার চাইতে কোটিগুন বেশী ক্ষতি করছে আপনার বাসার ক্যাবল সংযোগটি ।
মুল ফিচার
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১:০৮