somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সব টা চিরকুটে....

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেয়েটার ঠোঁট বারবার কেঁপে কেঁপে উঠছে।দুই পাশের গাল গুলোও সরে যাচ্ছে এদিক ওদিক।অনেকটা কান্না করলে যে ভাব টা আসে,সেই ভাবটা।আমার দেখতে বেশ ভালোই লাগছে।

_ ভাইয়া!!

_ বলো।
আর তুমি ইজি হয়ে দাঁড়াও,আমি তোমাকে এখানে মারতে আসি নি।

_ তাহলে আমাকে কেনো ডেকেছেন?

_ ডেকেছি জরিমানা নিতে।

মেয়েটা সত্যি একটু অবাকই হলো মনে হয়।হা হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।মনে হচ্ছে এই মাত্র সে দুনিয়ার মাটিতে পা রেখে ঘাস দেখতে পাচ্ছে।

_এই মেয়ে।

_জ্বী,

_ জ্বী কী!!কিচ্ছু জানো না নাকি?

_ কই না তো।কী জানবো?

_ বারান্দায় কয়টা গাছ তোমার?

_ জ্বী ভাইয়া, একটা।

_ একটা !!একটা গাছে কয় বালতি পানি ঢালা লাগে?

_ আমি তো বালতি তে করে পানি দিই না।আর আপনি এভাবে বলবেন না, আমি ওকে চামচে করে পানি খাইয়ে দিই।

_ চামছ দিয়ে খাইয়ে দাও মানে!গাছের মুখ আছে?

_ আরে নাহ।চামচে করে পানি দেই আর কী!

_ ওও।তাহলে আমার বারান্দায় প্রতিদিন সমুদ্র দেখি কেনো?.

কথাটার উত্তর না দিয়ে আবারো চুপ হয়ে গেছে।এতক্ষণ বেশ ভালো ভাবেই ফ্রি হয়ে কথা বলছিলো।এই কথাটা শুনে আবারো ভয় পাওয়া শুরু হয়েছে।তার মানে এর ভেতর নিশ্চই কিছু না কিছু আছে।জানতেই হবে ব্যপার টা কী_ _ _

_ কী হলো,বলছো না যে!বারান্দায় এত পানি আসে কোত্থেকে?

_ আমি কীভাবে জানবো বলেন,!

_ না জানলে জরিমানা দাও।

_ কিসের জরিমানা?সামান্য পানি ঢালার জন্য জরিমানা দিতে হবে?

_ তুমি শুধু পানি ঢালো নি,আরো কি কি মেশানো ছিলো ওখানে।

_ তো তাতে কী হয়েছে?

_ তোমার তো কিছু হয় নি।হয়েছে তো আমার জামা কাপড়ের।বারান্দায় যতগুলো শার্ট রেখে আসছি,সবটায় দাগ লেগে গেছে।

_ আচ্ছা, আপনি একটু দাঁড়ান।আমি আসছি একটু।

_ যাবা যাবা।আমার জরিমানা টা দিয়ে তারপর যাবা।

_ হ্যা তাই দিবো।

মেয়েটা চলে যাচ্ছে।আর আমি তার যাওয়া দেখতে লাগলাম।তার চলে যাওয়ার মধ্যে কেমন একটা চঞ্চলতা দেখতে পাচ্ছি।মনে হচ্ছে কাউকে কিছু এক্ষুনি দিতে যাবে,না হলে অনেক দেরি হয়ে যাবে।

কিছুক্ষণ পর আবার আসলো সে।আমার হাতে একটা প্যাকেট ধরিয়ে দিয়ে দৌড়ে চলে গেছে আবার।
কী হতে পারে এখানে?
অনেকগুলো ফুল,
একটা জামা,
নাকি একটা বই?
এগুলো ভাবতে ভাবতেই প্যাকেট টা খুললাম।

নাহ, ভেতরে একটা নীল শার্ট।
সাথে একটা চিরকুট।
তাহলে কী ও জেনে শুনেই সব কিছু করেছে?সব কিছু কেমন তাড়াতাড়ি হয়ে যাচ্ছে। আচ্ছা, চিরকুট টা পড়া যাক।

____
চিরকুট__

শুনুন,
আমি প্রতিদিন ফুল গাছ টায় একটু পানি দিতাম।আর বাকী গুলো আপনার বারান্দায় ফেলে দিতাম ইচ্ছা করে।

সুযোগে ছিলাম একটা নীল জামার।কাল দেখা মাত্র আর লোভ সামলাতে পারি নি।পানির সাথে কাদা মেখে ওটাতে ফেলে দাগ লাগিয়ে দিয়েছি।

জানতাম আপনি এটার জন্য আমাকে অবশ্যই ধরবেন।কারণ নীল জামাটি আপনার অনেক প্রীয় ছিলো।আর আমি আপনার সাথে কথা বলার জন্য আপনাকে পেয়ে যাবো।

কী করবো বলেন!আপনাকে পাওয়ার জন্য অনেক লোভ হয়।হ্যা,এটাকে লোভ ই বলতে হবে।হোক না সেটা আপনার প্রীয় জিনিসগুলোকে ভেংগেচুরে।

আপনিও হয়তো আমার জন্য সেগুলোকে অপ্রীয় বলে ভাংবেন শত বার।

আসছি.. .. .. .
কাল বিকেল ৪ টায় অপেক্ষা করবো।নীল শার্ট আর আরো একটি চিরকুটের জন্য।
_____

আমি একটু হতবাক হয়ে আছি।মেয়েটাকে যতটা গাধা মনে করতাম,ততটা গাধা ও না।

আমি আরো একবার চিরকুট টা পড়ে নিলাম।আরো একবার,আরো একবার।যতবারই পড়ছি, সাথে একটা করে সিগারেট জ্বলছে।

নাহ।আজ অনেকগুলো সিগারেট খেয়ে নিবো।একসাথে অনেকগুলো।

কারণ আমি জানি,কাল থেকে সে আমাকে আর এগুলো খেতে দিবে না।
বলা চলে, সে আমাকে আর আমারই হতে দিবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৮
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×