somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাঁচ হাজার টাকার প্রেমের গল্প

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‘আপনি ঝরনা না!’
‘হ্যা! তো? আপনি কি চেনেন আমাকে?’
‘চিনবোনা কেন। আপনি হয়তো আমাকে চিনে থাকবেন! আমার নাম তপু!’
‘তপু! তপু...! স্যারী চিনতে পারতেছিনা।‘
‘এখনো চিনেননি! আমার আরেকটা নাম আছে। সেটা বললে হয়তো চিনতে পারবেন। রাডার। বুয়েটে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে একসাথে ছিলাম আমরা। প্রতিদিন বিকেলে টিএসসিতে আড্ডা দিতাম।আপনিতো অনেক ভাল গান গাইতেন।আমার আরেকটা ফ্রেন্ড আছে,ওকে চিনে থাকবেন।খুব ভাল গিটারিস্ট ছিল সে।অপু নাম তার।‘
‘ও...আচ্ছা!আচ্ছা! এবার চিনতে পেরেছি। গানতো আপনিও ভাল গাইতেন। আপনার বন্ধুটি গিটার বাজাতো আর আপনি গলা ছেড়ে গাণ গাইতেন। আমার মনে আছে সেটা।‘
‘মনেতো ছিলনা। তবে অনেক কষ্ট হয়েছে মনে করিয়ে দিতে।‘
‘হিঃ! হিঃ! হিঃ! তপুর কথা শুনে ঝরনা হাসে।’
‘স্যারী! স্যারী! আসলে অনেক দিন পর হঠাত দেখাতো! তাই একটু...’
‘অনেকদিন পর...??? কিযে বলেন আপনি। মাত্র ৪বছরকে আপনি অনেকদিন বললেন। আমারতো মনে হচ্ছেনা যে চার বছর পর আপনার সাথে আমার দেখা। তাছাড়া আমরাকি এক সাথে কম ছিলাম নাকি। পাঁচ পাঁচটা বৎসর। এতদিনের স্মৃতিকি ভোলা যায়…!’
তপুর কথা শুনে ঝরনা আনমনা হয়ে যায়। স্মৃতির পাতায় হাতড়িয়ে একটার পর একটা ঘটনা মনে করতে থাকে সে। বিশেষ করে অপুর কথা। ছেলেটা কতইনা ভালবাসতো তাকে। পুরো পাগলের মত। আচ্ছা ওকে হারিয়ে সেকি কোন ভুল করেছে নাকি?

‘কে এটা? আপনার মেয়ে নাকি?!’
তপুর কথা শুনে সম্বতি ফিরে পায় সে। মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, ‘হ্যা আমার মেয়ে।‘
‘খুব সুইট তো! “সেরকম সুইট এন্ড কিউট!”’
তপুর ছন্দোচ্ছল কথা শুনে ঝরনা হাসে। ছেলেটা আগের মত রয়ে গেছে।
‘কি নাম ওর?’
“স্বর্ণা”।
‘বাহ! মায়ের নামের সাথে মিলতো! যেমন অবয়বের মিল তেমন নাম। তা মাতো ঝরনা হয়ে এসেছিলো আবার ঝরনা হয়ে চলেই গিয়েছিলো। মেয়ে কি করবে? সে সত্যিকারের স্বর্ণা হয়ে থাকবেতো!’
তপুর কথা শুনে ঝরনা বুকটা ছ্যাত করে ওঠে। মাথার উপর আবার ঘুরবাক খেতে থাকে ভার্সিটি লাইফের স্মৃতি। এই মুহুরতে অপুর কথা ভিষন মনে পড়ছে তার। অপুর কথা জিজ্ঞাসা করতে গিয়ে আর করলোনা।

‘তা তুমি কি করতেছ এখানে? ঘুরতে এসেছ বুঝি।‘
‘ঘুরতে? না ঠিক তা না। আসলে এখানে আমাদের ব্যাবসা। ঐযে তুমি যে জুয়েলারী থেকে বের হয়েছ,ঐটা অপুর। অপু আর আমি দুজনে এই বিজনেসটা দাড় করিয়েছি।আমাদের আরেকটা শোরুম আছে। সিঙ্গাপুরে। অপু সেখানেই থাকে আর আমি এখানে।মাঝে মধ্যে অপশ্য স্হান পরিপরতন হয়।‘
আর কথা বলতে গিয়ে বলতে পারেনা অপু। ঝরনা পিছনে দিকে তাকিয়ে দেখে তার স্বামী হন্দদস্ত হয়ে তপুর দোকান থেকে বের হয়ে আসতেছে। এক তরুনী ঝরনা স্বামীকে বোঝাতে চেষ্টা করতেছে। কিছূই বুঝতে চায়না ঝরনার স্বামী খসরু পারভেজ। মেয়েটার কথা উত্তেজিত হয়ে বলতে থাকে, ‘পাঁচ হাজারটাকে তুমি মাত্র বলতেছ। এই পাঁচহাজারের সাথে আর কত যোগ করতে হবে জান!এক লাখটাকাকে কি মনে করেছ তুমি।কত কষ্ট করে এই টাকা জমিয়েছি আমি। খেয়ে না খেয়ে এটাকি একবারও ভেবে দেখেছিলে?’
ভাই বোনের ঝগড়া থামানোর জন্য এগিয়ে যায় ঝরনা।

‘আহহা...! এমন করতেছ কেন তূমি?ওকি এটাকে পাঁচ হাজার বলেছে নাকি? ও বলেছে আর পাঁচ হাজার সংযুক্ত করতে।‘
ঝরনার কথা শুনে আর রেগে যায় খসরু পারভেজ। অকথ্যা ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে তাকে। ‘মাগির বাচ্চা,মাগি! ননদের দালালী করনা! এতই যখন দরদ ওর জন্য,তাইলে বাপের বাড়ী থেকে টাকা এনে দেয়না ওরে।বিয়ের সময়তো বাপের বাড়ি থেকে কিছুই এনে দেছ নাই। এই বলে সে হন হন করে চলে যেতে থাকে।‘
স্বামীর এহেন আচরনে হতবাক হয়ে যায় স্বর্ণা। তপুর সামনে লজ্জায় কিছুই বলতে পারেনা। ননদকে সাথে নিয়ে মাথা নীচু করে স্হান ত্যাগ করতে থাকে সে।তার পিছনে পড়ে থাকে Opu & Topu-Golden Bar & Diamond World নামক আন্তজাতিক মানের বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং দামী জুয়েলারী শোরুমটি।
পুরো ঘটনাটি নীরবে পর্যবেক্ষণ করে সে। ঝরনাকে কিছু বলতে গিয়ে কেন যেন বলতে পারেনা। নিজের আলিশান শোরুমের সামনে দাঁড়িয়ে কি যেন ভাবতে থাকে সে। চার বছর আগের ঘটনাগুলো এক এক করে মনে পড়তে থাকে তার। তার কানে বাজতে থাকে ছবির হাটে অপুকে বলে যাওয়া ঝরনার শেষ কথা।

“আমার ডিমান্ড অনেক বেশী। অনেক বড় লোকের ছেলেরা আমার জন্য পাগল। একটু ইঙ্গিত দিলেই সবাই চলে আসবে। সো তোমার মত মাসে পাঁচহাজার টাকার কামাই করা টিউশনি মাস্টার আমার পোষাবেনা। তুমি অন্য কাউকে দেখ।“

১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×