"ক তে কাদের মোল্লা, তুই রাজাকার! তুই রাজাকার!!
ফাসি ফাসি ফাসি চাই,কাদের মোল্লার ফাসি চাই!"
অন্ধকারের রাস্তা দিয়ে হাটতেছি আর বিড় বিড় করে প্রজন্ম চত্বরের জ্বালাময়ী স্লোগানগুলো আউড়াইতেছি। পথে পাড়ার এক ভাগ্নীর সাথে দেখা।
'বিড় বিড় করে কি কইতেছেন,মামা?'
'এইত্তো কাদের মোল্লার ফাসির মন্ত্র পড়তেছি।'
'ফাসির মন্ত্র! এইটা আবার কি?'
'যে মন্ত্র পড়লে মনো যন্ত্রনা কাইট্টা যায়। আলিফ লায়লাতে দেখ নাই,মালিকা হামেদা আকড়া আকড়া কইরা মন্ত্র পড়তো, আর তার শত্রুরা পুইড়া কয়লা হইয়া যাইতো। এই কাদের মোল্লায় অনেক যন্ত্রনা দিছে আমারে। তাই তার লাইগা ফাসির মন্ত্র পড়তেছি।'
'আপনি কাদের মোল্লার ব্যাপারে ফাসির মন্ত্র পড়তেছেন!? ছিঃ,মামা! আপনি অনেক খারাপ!'
'ওমা খারাপ হবো কেন? তুমি কি চাওনা কাদের মোল্লার ফাসি হউক?'
ভাগ্নী কিছুই কয়না। নখে আচড় খুটতে খুটতে মাটিতে তাকায় থাকে। কতক্ষন পরে কয়,'না মামা মানে লোকটা বুড়া হয়ে গেছে তো! তাই একটু মায়া লাগতেছে।'
কথাটি শুনে যতটা না টাশকি খাইলাম তার চেয়ে বেশী ভয় পাইলাম।
আমার ঘরে আমারই আশেপাশে ছাগুদের প্রেতাত্মারা ঘুরে বেড়াইতেছে অথচ আমি জানিনা।
ভাগ্যিছ এখনই তাকে চিনে ফেলেছি। নইলে দেখা যেতো কোন এক সুযোগে ব্লেড দিয়ে আমার রগটা কেটে ফেলছে। কিংবা কাটা চামচ দিয়ে পুরো শরীরটা কিমা বানায় ফেলছে। ৭১এ এই পরিচিত-প্রতিবেশীরাই মুক্তিযোদ্ধাদের ধরিয়ে দিয়েছিল রাজাকারদের হাতে।
এই মেয়েটি কি জানেনা, আজ সে কাদের মোল্লার প্রতি সহানুভুতি দেখাচ্ছে। গতকালই তার মত হাজার মেয়েরা কাদের মোল্লারও কাছে সেই সহানুভুতির জন্য অনেক কাকুতি মিনতি করেছিল।