somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডঃ ইয়াজ উদ্দিন ও ডঃ ফকরুদ্দীনের শাসনকালঃ

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
[img|http://s3.amazonaws.com/somewherein/pictures/nislam007best/10-2014/6b194672be36fa58b0c7e6f01818bd9f_tiny.jpegডঃ ইয়াজ উদ্দিন ও ডঃ ফকরুদ্দীনের শাসনকালঃ
২৮ অক্টোবর ডঃ ইয়াজ উদ্দিন আহম্মদ নিজেকে প্রধান উপদেষ্ঠা ঘোষনা করে ২৯ অক্টোবর শপথ ঘোষনা করেন। ৩১ অক্টোবর তিনি ১০ জন উপদেষ্ঠা নিয়ে বাংলাদেশের জন্য একটি অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের ঘোষনা দেন। তার উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্যবৃন্দ হলেন-
১. ডঃ আলী আকবর খান।
২. লেঃ জেঃ (অব:) হাসান মশহুদ চৌধুরী।
৩. বিচারপতি ফজলুর হক।
৪. সি.এম. সামি।
৫. এম আজিজুল হক।
৬. ধীরাজ কুমার নাথ।
৭. সুলতানা কামার।
৮. মাহ্বুবুর আলম।
৯. সুপিয়া রাহমান।
১০. ইয়াসমিন মুশের্দ।
উপদেষ্ঠা পরিষদ গঠনের অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই বি.এন.পির পক্ষপাত দুষ্টের কারনে প্রধান উপদেষ্ঠার সাথে অন্যন্য উপদেষ্ঠার মধ্যে দূরত্বের সৃষ্টি হয়। ২০০৬ সালের ১১ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্ঠার প্রতি আঙ্গুল নির্দেশ করে সর্বজন শ্রদ্ধেয় উপদেষ্ঠা ডঃ আলী আকবর খান, সি.এম সামি, সুলতানা কামাল এবং লেঃ জেঃ (অব:) হাসান মশহুদ চৌধুরী পদত্যাগ করেন। তাদের পদত্যাগের সাথে সাথে প্রধান উপদেষ্ঠা ডঃ ইয়াজ উদ্দিন আহম্মদ কাল বিলম্ব না করে কতিপয় বির্তকীতদের উপদেষ্ঠা নিয়োগ করলে জনমনে অসন্তোষ বৃদ্ধি পায়। ঠিক এই সময়টিতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বধীন ১৪ দলীয় জোট-প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নতুন ত্র“টিমুক্ত ভোটার তালিকা প্রনয়ন এবং বিভিন্ন প্রকার অসম্পূর্ন ইস্যু নিয়ে আন্দোলনের লক্ষ্যে সমমনা দলগুলোকে নিয়ে ‘মহাজোট’ গঠন করেন। মহাজোট গঠনে ডঃ কামাল হোসেন অসামান্য অবদান রাখেন। কর্নেল অলি আহম্মদ, ডাঃ বদরুদ্দোজা চৌধূরী, হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ প্রমুখ-নেতৃবৃন্দ দলবলসহ মহাজোটে যোগদান করেন। গঠনের পরপরই মহাজোট তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে একের পর এক হরতাল- অবরোধ দিতে থাকলে সরকার বাধ্য হয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এম,এ আজিজকে ছুটিতে পাঠিয়ে বিচারপতি মাহফুজুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করেন।
ডঃ ইয়াজউদ্দিন আহম্মদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার সুষ্ঠ ভোটার তালিকা প্রনয়ন না করেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করেন এবং একই সাথে নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রধান এইচ.এম এরশাদকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষনা করেন। ফলে মহাজোট এর তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং ৩রা জানুয়ারীর নির্বাচন বর্জনসহ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলনের সিদ্ধান্তে অটল থাকে। এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং প্রদান উপদেষ্ঠা যৌথভাবে দ্বিতীয় দফা তারিখ অনুসারে ২২ জানুয়ারী নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে তাদের দৃঢ় ও অনঢ় অভিমত ব্যাক্ত করেন। মহাজোটের নির্বাচন বর্জনের ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার অভিমত ব্যক্ত করে বলেন ‘তাদের এই নির্বাচন বর্জনের ঘোষনায় আমি হতাশ নই; বরং উল্লাসিত। সব সময় আমি উল্লাসিত থাকতে পছন্দ করি। ২২ জানুয়ারী নির্বাচন হবেই হবে’।
৪ জানুয়ারী মহাজোট নেতৃবৃন্দ এক সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষনা করেন ত্র“টিমুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন, প্রধান উপদেষ্ঠার পদত্যাগ ব্যতীত মহাজোট নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে না। মহাজোট নেত্রী শেখ হাছিনা ৫ জানুয়ারী সারা দেশে বিক্ষোভ এবং ৭ ও ৮ তারিখে পূর্বঘোষিত অবরোধ অব্যাহত রাখার ঘোষনা দেন। তিনি আরও বলেন ‘এর পর দাবি মানা না হলে, ডঃ ইয়াজ উদ্দিন আহম্মদ পদত্যাগ না করলে, বঙ্গভবন ঘেরাও কর্মসূচী দেওয়া হবে। এদিকে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সকল দলের অংশ গ্রহন নিশ্চিতের দাবি জানান। এইরুপ পরিস্থিতিতে গাজীপুরে এক দলীয় সম্মেলনে খালেদা জিয়া ‘দেশকে সংবিধান সংকট থেকে রক্ষা করার জন্য নির্বাচনকে সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেন।
এদিকে শেখ হাছিনাও মহাজোটের পক্ষ থেকে নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা করেন। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এইরুপ পরিস্থিতিতে ৫ জানুয়ারী গন-গ্রেফতার শুরু করেন। ৬ জানুয়ারী রাষ্ট্রপতি নির্ধারীত সময়েই নির্বাচনের ঘোষনা দিয়ে ব্যালট পেপার ছাপানোসহ সেনাবাহিনীর সহায়তায় তা সারা দেশব্যাপি পাঠানোর নির্দেশ দেন। ফলে সমগ্র দেশব্যাপী এক ভয়াবহ নৈরাজ্যের আশংঙ্খা দেখা দিলে এফ.বি.সি.সি আই দেশব্যাপী জরুরী অবস্থা ঘোষনার দাবি জানান। সরকারও গন-গ্রেফতারের অটল থাকেন। বি.এন.পির নেতৃত্বাধীন ৪দলীয় জোট এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট পরস্পর বিরুধী বক্তব্যসহ বিভিন্ন সমাবেশ, মিছিল, মিটিংয়ে একের অপরের প্রতি বিষাদাগার করতে থাকেন। ৭ জানুয়ারী আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ঢাকা অবরোধের ডাক দিলে দেশের অধিকাংশ জনগন তাদের সাথে একাত্ম ঘোষনা করে। ডঃ ইয়াজ উদ্দিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারও অবরোধের বিপক্ষে কঠোর অবস্থানের ঘোষনা দেন। এতদ্ব্য সত্যেও অবরোধে পুরো ঢাকা- সারাদেশ থেকে বিছিন্ন হয়ে পড়ে। মহল্লা মহল্লায় আওয়ামী লীগের কর্মীদের সাথে পুলিশের সংর্ঘষ শুরু হয়ে যায়। ৮ জানুয়ারী পরিস্থিতি মারাত্বক আকার ধারন করে। ফলে আন্দোলনরত জনতার উপর পুলিশ ব্যাপক লাটিচার্জ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। শহীদ নূর হোসেন চত্বরে মহাজোটের এক সমাবেশে তোফায়েল আহম্মদ, রাশেদ খান মেনন, নূরুল ইসলাম নাহিদ, হাসানুল হক ইনু, দীলিপ বড়ূয়াসহ অনেক নেতার উপর পুলিশ নির্বিচারে লার্ঠি চার্জ করে। এই রুপ পরিস্থিতিতে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের আান্ডার সেক্রেটারী নিকোলাস বার্নস প্রধান উপদেষ্ঠাকে সব দল নির্বাচনে অংশ গ্রহনে একটি অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের আহব্বান জানান। ৯ জানুয়ারী বেশ কিছু পশ্চিমাদেশ এক দরফা নির্বাচন এড়াতে সক্রিয় হয়ে উঠলেও সেনাবাহিনী পরোয়ানা ছাড়াই গন-গ্রেফতার চালিয়ে যায়।
১০ জানুয়ারী অবরোধ কর্মসূচীর শেষ দিনে পল্টনের এক বিশাল জনসভায় শেখ হাছিনা, ডঃ কামাল হোসেন, বদরুদ্দোজা চৌধূরী, কনের্ল (অব:)অলি আহাদ, এইচ. এম এরশাদ ঐক্যমতে ২২ জানুয়ারীর নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষনা দেন। সেই লক্ষ্যে ১৪, ১৫, ১৭, ও ১৮ই জানুয়ারী দেশ ব্যাপী সবার্ত্মক অবরোধ এবং ২১ ও ২২ জানুয়ারী দেশব্যাপী হরতালের ঘোষনা দেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও পরিস্থিতি আচর করে (এন.ডি.আই, কমনওয়েলথ ও ইইউ) এক যোগে নির্বাচন পর্যবেক্ষনের আস্বীকৃতি জানায়।
এই পরিস্থিতিতে কুমিল্লার চান্দিনায় এক জনসভায় বি.এন.পি তথা ৪দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্পষ্ট ঘোষানা করেন ‘যে কোন মূল্যে ২২ জানুয়ারী নির্বাচন হতে হবে। দেশের এইরুপ ভয়ন্কর পরিস্থিতিতে ও আন্তজার্তিক চাপের মুখে ১১ জানুয়ারী বিকেল সাড়ে চারটায় প্রধান উপদেষ্ঠা প্রফেসর ডঃ ইয়াজ উদ্দিন আহম্মদ প্রধান উপদেষ্ঠার পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং রাষ্ট্রপতি হিসাবে সমগ্রদেশে জরুরী অবস্থা জারি করেন। ১২ জানুয়ারী থেকে সগ্রমদেশ ব্যাপী জরুরী অধ্যাদেশ আইন কার্যকর হলে অন্যান্য উপদেষ্ঠাবৃন্দ পদত্যাগে বাধ্য হন।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফখরুদ্দীনের শাসনকাল একটি অবিস্মরনীয় অধ্যায়। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারী রোজ বৃহস্পতিবার বিকেল চারটায় জনাব ফখরুদ্দীন প্রধান উপদেস্ঠা হিসাবে শপথ ঘোষআ করেন। ইতিপূর্বে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভণরসহ জাতি সংঘের গুরুত্বপুর্ন পদে সফলতার সহিত দায়িত্ব পালনে অভিজ্ঞ ছিলেন।তার শপত গ্রহন অনুষ্ঠানে সাবেক উপদেষ্ঠা বিচারপতি হাবিবুর রহমান, লতিফুর রহমান, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাছিনাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। দুভার্গ্য জনক হলেও সত্য যে আমন্ত্রন থাকা সত্যেও বি.এন.পি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া উক্ত শপথ গ্রহন অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন। শপথ গ্রহনের পরপরই তিনি নির্বাচন কমিশনের গৃহিত নির্বাচন সংক্রান্ত সকল কার্যবলী স্থগিত ঘোষনা করেন। ১৩ই জানুয়ারী রাত ৮টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে ৫জন উপদেষ্ঠা শপত গ্রহন করেন। উপদেষ্ঠার স্বল্পতাহেতু পরবর্তিতে ১৬ জানুয়ারী আরও ২জন উপদেষ্ঠা নিয়োগ করা হয়। ডঃ ফখরুদ্দিনের নেতৃত্বাধীন উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্যগন হলেন-
১. ডঃ ফখরুদ্দিন আহম্মদ-প্রধান উপদেষ্ঠা।
২. ঊ্যারিষ্টার মঈনুল ইসলাম-আইন,বিচার, সংসদ বিষয়ক, গৃহায়ন ও পূর্তমন্ত্রণালয় এবং ভূমি ও তথ্য মন্ত্রণালয়।
৩. ডঃ এ.বি.এম মীর্জ্জা আজিজুল ইসলাম-অর্থও পরিকল্পনা, বানিজ্য, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
৪. মেজর জেনারেল (অব:) আব্দুল মতিন-যোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
৫. তপন চৌধূরী-বিদ্যুৎ, জ্বালানী খনিজ সম্পদ, খাদ্য দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা, বিজ্ঞান, তথ্য প্রযুক্তি, যুব ও সাংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
৬. গীতি আরা সাফিয়া চৌধুরী- শিল্প, প্রাথমিক ও গন-শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়।
৭. আইয়ুব কাদরী-শিক্ষা প্রাথমিক ও গন-শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক মন্ত্রনালয়।
৮. মেজর জেনারেল (অব:) ডা: এ.এস.এম মতিউর রহমান-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান, পানি সম্পদ, ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
৯. মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন, সমবায়, শ্রম ও কর্মসংস্থাপন মন্ত্রণালয়।
১০. ডঃ ইফতেখার আহম্মেদ চৌধূরী-পরলাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
১১. ডঃ চৌধূরী সাজ্জাদুল করিম-কৃষি মন্ত্রণালয়।
উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্যগনের মধ্যে ২০০৭ সালের ২৬ ডিসেম্বও ফ্রান্সে পাঠানোর উদ্দেশ্যে ঢাকা বিমা বন্দও থেকে পুরাকীর্তি চুরির নৈতিক দায় নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্ঠা আইয়ুব কাদরী পদত্যাগ করেন। ২০০৮ সালের ৮ জানুয়ারী আরও ৪ জন উপদেষ্ঠা পদত্যাগ করলে প্রধান উপদেষ্ঠা আরও পাচঁজন উপদেষ্ঠা মনোনয়ন করে রাষ্ট্রপতির দ্বারা অনুমোদন করেন। ১০ জানুয়ারী প্রধান উপদেষ্ঠা উপদেষ্ঠাদের দফতর পূর্নবন্টন করেন। তার নব-গঠিত উপদেষ্ঠা পরিষদএবং পূর্ন গঠিত দফতর হল-
১. ডঃ ফখরুদ্দিন আহম্মদ-প্রধান উপদেষ্ঠা।
২. ডঃ এ.বি.এম মীর্জ্জা আজিজুল ইসলাম-অর্থও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।
৩. মেজর জেনারেল (অব:) এম.এ মতিন- স্বরাষ্ট্র, নৌ-পরিবহন, ভূমি এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
৪. ডঃ ইফতেখার আহম্মেদ চৌধূরী-পরলাষ্ট্র প্রবাসী কল্যান, বৈদেশিক ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
৫. মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন, সমবায়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।
৬. ডঃ চৌধূরী সাজ্জাদুল করিম-কৃষি ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়।
৭. ডাঃ এ.এস.এম শওকত আলী-স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যান, খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়।
৮. এ.এফ হাসান আরিফ- আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
৯. মেজর (অব:) গোলাম কাদের-যোগাযোগ, গৃহায়ন ও পূর্ত মন্ত্রণালয়।
১০. রাশেদা কে. চৌধূরী-প্রাথমিক ও গন-শিক্ষা এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়।
১১. ডঃ হোসেন জিল্লুর রহমান-শিক্ষা ও বানিজ্য মন্ত্রনালয়।
প্রধান উপদেষ্ঠা ডঃ ফখরুদ্দীনের বিশেষ সহকারী-
১. রাজা দেবাশীষ রায়-পার্বত্য চট্রগ্রাম, পরিবেশ এবং বন মন্ত্রণালয়।
২.ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব:) এম.এ মালেক-ডাক,তার টেলিযোগাযোগ ও সমাজ কল্যান মন্ত্রণালয়।
৩. অধ্যাপক ম. তামিম- জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিবাগ এবং বিদ্যুৎ বিভাগ মন্ত্রনালয়।
৪. মাহ্বুব জামিল-বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পযৃটন শিল্প এবং যুবও ক্রিয়া মন্ত্রণালয়।
৫. মানিক লাল সমাদ্দার-মৎস্য পশু সম্পদ, বিজ্ঞান, তথ্য-প্রযুক্তি ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
২০০৮ সালের ১২ই জানুয়ারী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্ঠা ড: ফখরুদ্দিন আহম্মেদ রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সরকারের সংলাপ ঘোষনা করেন। সেই ধারাবাহিকতায় ২৪ ফের্রুয়ারী বিকল্পধারা, ওয়ার্কাস পার্টি, ও সাম্যবাদী দলের সাথে নির্বাচন কমিশনার সংলাপে বসেন। আলোচনায় এই সকল দল ডিসেম্বর নাগাদ নির্বাচনের দাবি তুলেন। ২৫শে ফ্রেরুয়ারী আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ও সিপিবির সাথে সংলাপ হয়। ২৮শে ফ্রেরুয়ারী কৃষক শ্রমিক জনতালীগ, ইসলামী ঐক্যজোট ও এলডিপির সাথে আলোচনায় বসলেও বি.এন.পি ৭ দফা দাবি তুলে নির্বাচনে আসতে অনিহা প্রকাশ করেন। সরকার ২০০৮ সালের ২৯শে নভেম্বও জাতীয় সংসদেও নির্বাচনী তফসিল ঘোষনা করেন। তারিখ অনুসাওে ১৮ ডিসেম্বও সংসদ নির্বাচন এবং ২৮ ডিসেম্বও উপজেলা নির্বাচনের তারিখ নির্ধারন করা হয়।
৩রা ডিসেম্বও বি.এন.পি তাদেও দাবি মেনে পুনরায় তফসিল ঘোষনার দাবি জানালেও শেখ হাছিনা দীর্ঘ পাচঁ মাস যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা শেষে দেশের মাটিতে এসেই সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষনা করেন ‘ নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তারিখেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘোষনার প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগকে সরকারের সাথে আতাতের অভিযোগ আনেন।
বি.এন.পির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সরকারকে ৪টি শর্ত দিয়ে তা মেনে নেওয়ার জন্য ৪৮ঘন্টা সময় বেধেঁ দেন। ১৮ নভেম্বও দুই নেত্রীকে সমঝোতায় আনয়নের লক্ষ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাদেও সাথে বৈঠক করেন। কিন্তু তাদেও সাথে এক্যমত না হলে ১৯ নভেম্বও নির্বাচন কমিশনার ১৮ই ডিসেম্বও সংসদ নির্বাচন এবং২৮ ডিসেম্বও উপজেলা নির্বাচনের তারিখে পূর্নবহাল রাখেন। ২০ডিসেম্বও হঠাৎ করেই বি.এন.পি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঘোষনা করেন যে ২৮শে ডিসেম্বও সংসদ নির্বাচন এবং উপজেলা নির্বাচন একমাস পিছিয়ে দিলে তারা নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে। ফলে ২৩ নভেম্বও নির্বাচন কমিশনার বাধ্য হয়ে পূর্নতফসিল ঘোষনা করেন। পূর্নতফসিল অনুসারে ২৯ ডিসেম্বর জাতীয সংসদ নির্বাচন এবং ২২জানুয়ারী উপজেলা নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করা হয়। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটও নির্বাচনের তারিখ মেনে নেন। ৩০ নভেম্বর সমগ্রদেশে মনোনয়ন দাখিল করা হয়। প্রধান উপদেষ্ঠা ড: ফখরুদ্দীন আহম্মদ কঠোর হস্তে বাংলাদেশের সমগ্র ব্যাংক গুলোকে ঋণ খেলাফিদেও চিহিৃত করতে আদেশ প্রদান করেন এবং তাদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষনা করা হয়। ৩রা ডিসেম্বও ঢাকার লালমাটিয়ার বাসায় কতিপয় দুবৃর্ত্ত কর্তৃক গনতন্ত্রী পার্টিও সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধা নূরুল ইসলাম স-পরিবারে নিহত হন। এই হত্যাকান্ডের পিছনে দুবৃর্ত্তায়নের রাজনীতি ও নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্য থাকলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার তার সিন্ধান্তে অটল থেকে দৃঢ়তার পরিচয় দেন।
৪ ডিসেম্বর মনোনয়ন বাছায়ের চূড়ান্ত পর্বে সারা দেশ থেকে ৫৫৭ জন প্রার্থীও মনোনয়ন পত্র বাতিল বলে ঘোষনা করা হয়। ৫ ডিসেম্বর থেকে বিল ও ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হয়। সারা দেশে আওয়ামী লীগ ও বি.এন.পি থেকে ঋণ ও বিল খেলাপির দায়ে ১২১জন প্রার্থীও মনোনয়ন বাতিল করা হয়। অজ্ঞাত কারনে শতাব্দির শ্রেষ্ঠ স্বৈরাশাসক ্এইচ.এম এরশাদকে নির্বাচনে যোগ্য ঘোষনা করা হলে তিনি একর পর এক আওয়ামী-বি.এন.পি দলের পক্ষে নিজ সুবিধা আদায়ে বিস্মকর বক্তব্য রাখার সুযোগ পান এবং সকল জলপনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে জোটবদ্ধ রাজনীতিকরনে মহাজোটে যোগ দেন। সর্বশেষ পরিক্রমায় সারা দেশে ১৫৯৭ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ গ্রহনের সুযোগ পান।
১২ই ডিসেম্বও থেকে মহাজোট ও চারদলীয় জোটের নির্বাচনী প্রচারনা শুরু হয়। নির্বাচনী ইস্তেহারে শেখ হাছিনার নেতৃত্বাধীন মহজোট ২১ দফা প্রতিশ্র“তি প্রদান করেন। বিশেষ কওে দ্রব্য মূল্যের হ্রাস ও দিন বদলের প্রচারনায় সমগ্রদেশে এক নতুন মাত্রা যোগ হয়। ১৩ ডিসেম্বর ‘দেশ বাচাঁও; মানুষ বাচাঁও ধ্বনি তুলে বি.এন.পির নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট নির্বাচনী ইস্তেহার ঘোষনা করেন। প্রকাশ্য রাজনৈতিক মঞ্চে শেখ হাছিনা –চারদলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দুনীর্তি ও জঙ্গীবাদের অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। অন্য দিকে বেগম খালেদা জিয়াও শেখ হাছিনাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাথে গোপন আতাতের অভিযোগ তুলেন। ২০ ডিসেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকার সারাদেশে একটি সুষ্ঠ অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ৫০,০০০ পঞ্চাশ হাজার সশ্রস্ত্র বাহিনী নিয়োগ করেন। এই সময় হঠাৎ করেই সারাদেশে বি.এনপির নেতৃত্ত্বাধীন চারদলীয় জোটের নির্বাচন বর্জনের রব উঠে। অপর দিকে শেখ হাছিনার বিরুদ্ধে দুনীর্তির মামলা দায়েরকারী আজম জে. চৌধূরী বিখ্যাত আওয়ামী ব্যবসায়ী নুর আলী এক জনসভায় শেখ হাছিনাকে একজন ভাল লোক বলে উল্লেখ্য করেন। তারা বলেন কতিপয় দুবৃর্ত্ত তাদেরকে মুত্যৃও ভয় দেখিয়ে শেখ হাছিনার বিরুদ্ধে মামলা করতে বাধ্য করেছে। আমরা এই জনসভায় ঘোষনা পূর্বক তার বিরুদ্ধে আমাদের দায়ের করা সকল মামলা তুলে নিলাম। ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী নেতৃত্বাধীন মহাজোট এক অবিশ্বাস্য সফলতা অর্জন করে। মহাজোটের নিন্কুশ সফলতার এই নির্বাচন ফলাফল বিশ্লেষনে এক অনন্য ইতিহাসÑ
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফলঃ
মহাজোট-২৬২
আওয়ামী লীগ-২৩০, জাতীয় পার্টি-২৭, জাসদ-৩, ওয়াকার্স পার্টি-২

চারদলীয় জোট-৩৩
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পার্টি-৩০, জামাতে ইসলামী-২, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-১

অন্যন্য প্রাপ্ত আসন-০৫
স্বতন্ত্র-৪, এল ডিপি-১

২০০৮ সালের নির্বাচনে দলওয়ারী প্রাপ্ত ভোটের তুলনাঃ
আওয়ামী লীগ-৪৯.০২%
বাাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পার্টি-৩২.৭৪%
জাতীয় পার্টি-৬.৬৫%
জামাতে ইসলামী-৪.৫৫%
স্বতন্ত্র ওঅবশিষ্ঠরা-৭.০৪%
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনটি ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ন। বিশেষ আইনের এই নির্বাচনে বিশ্বেও বিভিন্ন দেশ নির্বাচনী পযবেক্ষনে ব্যাপক উৎসাহী ছিলেন এবং নির্বাচন পরবর্তী এক প্রতিক্রিয়ায় তারা এই নির্বাচনকে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠ নির্বাচন বলে আখ্যা দেন।( চলেব--)



সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১:১৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×