somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যত শৈশব, গেল কৈ-সব?

২২ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বয়স বাড়ার সাথে সাথে গত বছরের ঘটনাগুলোও ভুলতে শুরু করেছি। টাইম লাইনে বছর ঘুরে কোনো ঘটনা ফিরে এসে মনে করিয়ে দিয়ে যায় যে অনেক কিছু মনে রাখতে ভুলে যাচ্ছি। তবে ছোটবেলা এখনও দিবালোকের মতো স্পষ্ট। বলা যায় এক হাজার আশি রেজুলেশোনের মুভির মতো সমস্ত কিছুই স্মৃতিতে জীবন্ত। ছেলে বেলার কথা বলতে বান্দরবানে থাকার সময়গুলো স্পষ্ট মনে আছে। শব্দ, দৃশ্য, ক্লাস রুম, আল ফারুকের চক ডাস্টার কিংবা বর্ষা কালের উত্তাল সাঙ্গু নদী কিংবা চাকমা পাহাড়, বৌদ্ধদের কেয়াং- সব। আমার বুঝতে শেখার দিনগুলো সেখানেই কেটেছিল। ক্লাস থ্রি, ফোর আর ফাইভের কিছু অংশ পড়েছিলাম সেখানে। এরপর আব্বার ট্রান্সফার সিলেটে। সিলেটের আলাপ আগেও করেছি। কিন্তু ছোটবেলায় বুঝতে শেখার দিনগুলো নিয়ে কিছু লিখিনি তেমন। আজ নিজের সেই সাত আট বছরের “শিহাব”কে নিয়ে লিখছি।


একজন শিশু বিজ্ঞানী এবং কেরোসিন কাহিনীঃ

বুদ্ধির ডালপালা গজানোর দিনে শুরুর দিকে আমি বিজ্ঞানী ছিলাম। ছিলাম দার্শনিক। এরিস্টটল হতে হতে মাঝে মাঝে আইনস্টাইন হয়ে যেতাম, কখনো বা গ্যালিলিও হতে হতে ভিঞ্চি হয়ে যেতাম। আমার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি কিংবা বুদ্ধির জাহাজ হবার দিন বান্দরবানের ছোট পাহাড় ঘেড়া ক্যান্টনমেন্টে কেটেছিল।
আল ফারুক ইন্সটিটিউটে পড়তাম। ক্লাস থ্রি তে থাকা কালীন আমি বিজ্ঞানী ছিলাম। নানান বৈজ্ঞানিক গবেষণায় নিজেকে নিয়জিত করেছিলাম সেই সময়েই।
যেমন আমি আবিষ্কার করেছিলাম সাঙ্গু নদীর ব্রিজের ওপর বৃষ্টির মাঝে দাঁড়িয়ে থেকে নিচের ছুটন্ত নদীর স্রোতের দিকে তাকালে মনে হবে- আমি যেন কোনো জাহাজের ডেকে দাঁড়িয়ে আছি। পায়ের নিচে ছুটন্ত সাগর! দমকে দমকে জাহাজের গায়ে সেই উম্মাত্ত ঢেউ বাড়ি খেয়ে ফেনা তৈরি করে হারিয়ে যাচ্ছে। এই গবেষণার নাম দিয়েছিলাম- “সাঙ্গু জাহাজ এবং মাথা ঘুরানি।”
আমি ছোট ছিলাম, সাত আট বছর বয়স। আমার কাছে তাই সাঙ্গু নদী ছিল না, সাগর ছিল। ব্রিজটা ছিল জাহাজ। মাথা ঘুরানি বিষয়টা হচ্ছে “ভ্রম” তৈরি করা। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলে চোখে ভ্রম তৈরি হত। মনে হত আমি ভেসে ভেসে যাচ্ছি সাগরের ঢেউয়ে।
পাশাপাশি আমি গ্রেগার জোহান মেন্ডেল হয়ে গিয়েছিলাম। তিনি বংশগতি বিদ্যার জনক ছিলেন, আমি ছিলাম শরবত বিদ্যার জনক। শিম পাতা, দূর্বা ঘাস, লাউ পাতা, চোট্টা পাতা- সব এনে এনে বাসায় টিনের বাটিতে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে থেতলে রস বের করে শরবত বানিয়ে চিনি দিয়ে গুলিয়ে খেয়ে দেখতাম। সে সময়ে আমার বিশ্বাস ছিল এই অসামান্য আরোক খেয়ে আমি বুঝি সুপারম্যান না হলেও কাছাকাছি পর্যায়ের শক্তিশালী কিছু একটা হয়ে যাব।



যদিও তেমন কিছু হইনি। তবে হাতুড়ি দিয়ে স্টিলের বাটি পিটিয়ে বাকা তোড়া করে ফেলায় আম্মার আদালতে অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছিলাম। আম্মা আমাকে উত্তম এবং অতি উত্তম দিয়ে ছেড়ে দিয়েছিলেন। এক সপ্তাহ বিছানায় উপুর হয়ে ঘুমাতে হয়েছিল। ওপরে সিলিং ফ্যান ছেড়ে দিয়ে, তাও বর্ষার ঠাণ্ডার দিনে। (পূর্বেও বলেছি আম্মার কাছে উত্তমের পর মধ্যম বলে কিছু ছিল না। যা কিছু ছিল, সবটাই উত্তম এবং অতি উত্তম।)
গবেষণার এই পর্যায়ে আমি লতা, পাতার রস খেয়ে শক্তি শালী হওয়ার চিন্তা বাদ দিয়ে কেরোসিন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলাম। পৃথিবীর তাবৎ পারফিউম, সেন্ট, বডি স্প্রে, আতর-লোশানের ঘ্রাণের চাইতেও কেরোসিনের গন্ধ আমার খুব ভাল লাগতে শুরু করল। এতই ভাল লাগত যে মনে হয় একটু খেয়ে দেখি। বার দুয়েক মুখে দিয়েও দেখেছি এক চামচ।
যাহোক, খাওয়া হয়নি। বাসায় কেরোসিন তেলের জারকিন ছিল। সে সময়ে বাসায় চার্জার লাইট ছিল না। মোম আর হারিকেনই ভরসা ছিল লোড শেডিং এর সময়। হারিকেনের তেল দেয়ার জন্যই বাসায় কেরোসিনের আগমন। তো সন্ধ্যার পর আব্বা যখন রোল কলে অফিসে চলে যেত, আম্মা নাক ডেকে ঘুমানো শুরু করতো, পাশাপাশি ডিডিও নাক ডেকে ঘুম। (মহিষের মতো এত ঘুমিয়েও আমার বোন কিভাবে ভাল রেজাল্ট করত সেটা একটা রহস্য আজও আমার কাছে।)
কেবল জেগে থাকা একমাত্র প্রাণি- আমি সারা বাসা ঘুরে বেড়াতাম তখন। তো কেরোসিন তেলে আগুন জ্বলার বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষা শুরু করে দেই কাল বিলম্ব না করে। কোনো এক বর্ষার সন্ধ্যায় আমি আমাদের সেই কেরসিনের জারকিনের ঢাকনাটা খুলে ঢাকনাটাকেই চিত করে বিশ ত্রিশ এমএল কেরোসিন ঢেলে ম্যাচ দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে পরীক্ষা করে দেখলাম- আগুন জ্বালানোর পর পানি ঢেলে দিলে নেভে কিনা।


পরীক্ষাটা একটু বেজুত অবস্থায় চলে গেল। মানে ঢাকনাটা আলাদা ভাবে মেঝেতে রেখে আগুন দেয়া মাত্র এক হাত সমান লক লকে আগুনের শিখা লাফিয়ে উঠতেই আমার আত্মারাম খাঁচা ছাড়া হবার জোগার! আমি আতকে উঠে দৌড়ে বাথরুমে গিয়ে মগে পানি এনে ঢেলে দিলাম সেই জ্বলন্ত ঢাকনায়। কিন্তু কিসের কি! আগুন থামার নামই নেই! ভক করে আগুনের একটা শিখা লাফিয়ে ঢাকনা সহ মেঝের ওপর উলটে গিয়ে পানির মাঝেই জ্বলতে শুরু করলো, প্লাস্টিকের ঢাকনা- থামা থামি নেই!
দেখতে দেখতে প্রায় চল্লিশ ভাগ ঢাকনাটা পুড়ে গলে গেল! তারপর গিয়ে আগুন নিভল!
আমি ততোক্ষণে ভয়ে চিমসি বা আমশি দুটোই মেরে গেছি। বহু কষ্টে আধাগলা ঢাকনাটা নিয়ে কেরোসিনের জারকিনে নিয়ে লাগালাম। সস্ত্বির কথা এই যে কারেন্ট তেমন একটা যাচ্ছে না বৃষ্টির দিন, ঠাণ্ডা বলে। হারিকেনও জ্বালাতে হচ্ছে না খুব একটা। তাই কেরোসিনের এই জারকিন কেউ খুঁজতে আসবে না। আমার গবেষণা কর্মকাণ্ড নিয়ে কেউ জানবে না আশা করা যায়। আমি সুন্দর করে জারকিনটা নিয়ে এক কোণায়, অনেকগুলো জিনিসপত্রের নিচে লুকিয়ে রাখলাম, বস্তা টস্তা দিয়েও ঢেকে দিলাম যেন কেউ খুঁজতে না আসে। আসার কথাও না অবশ্য। হারিকেনে তো তেল আছেই।
সেই আশাতেই ছিলাম।
কিন্তু কপালে শনি তার বলয় সহকারে, ৮২ টা উপগ্রহ এবং অসংখ্য গ্রহাণুপুঞ্জ নিয়েই প্রকট হয়েছিল।
রাত দশটার সময় বাসায় কলিং বেল বাজতেই একমাত্র জেগে থাকা প্রাণি হিসাবে আমি গিয়ে দরজা খুলে দেই। দেখি আব্বা ইয়া হোতকা একটা কাঁঠাল কিনে এনেছেন। আমাকে দেখেই দারাজ একটা হাসি দিয়ে বলল, “পুত্তর! ফরহাদ চৌধুরী! এই দেখো, কাঁঠাল কিনে আনছি! জ্যাক ফ্রুট। উত্তম ফল! জ্যাক ফ্রুট বানান কর তো?”
আমি আমতা আমতা করতে লাগলাম। এমনিতেই বানান জিনিসটায় আমি অতিশয় দূর্বল। (আমার যুক্তি হল যে জিনিস পড়ে উচ্চারণ করা যায়, সেটার আবার নিজস্ব সিদ্ধ বানান কেন থাকা লাগবে? কিন্তু আমার সেই মতবাদের সাথে সে যুগে আব্বা একমত হতে পারে নাই, বর্তমানে প্রুফ রিডাররা একমত হতে পারে না।) আব্বার মেজাজ ভাল ছিল সম্ভবত। কারণ আমার উত্তরের অপেক্ষা না করেই বলল, “আচ্ছা বানান বাদ দেও। আজকে রাতে ভাত খেয়ে সবাই কাঁঠালের কোয়া খাবো! পড়াশোনা শেষ করে নেও। আর চাইলে আজকে ভাত কম খাইতে পারো।” আব্বার বিশ্বাস ছিল ভাত হচ্ছে সকল শক্তির মূল। ঠিকমত ভাত না খেলে বুদ্ধি বাড়ে না।
ভাতের বদলে কাঁঠাল খাওয়া যাবে বিধায় আমি আনন্দিত মুখে বললাম, “আচ্ছা। আমিও কাঁঠাল খাব!” যদিও ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারিনি কি আসতে যাচ্ছে সামনে।
রাতে আব্বা কাঁঠাল ভেঙ্গে কাঁঠাল বাটিতে তুলে তুমুল খাওয়া দাওয়া করল আমাদের সবাইকে নিয়ে। সরষের তেল হাতে মাখিয়ে লবণ আর মাঝে মাঝে হালকা লবণ-গুড়া মরিচ নিয়ে কাঁঠাল মাখিয়ে খাচ্ছিলাম। মিষ্টি কাঁঠাল। তারপরেই হঠাৎ আব্বার খেয়াল হল, হাতে প্রচুর আঁঠা লেগে গেছে। তুলতে হবে। “বুঝলা রীতা আপা? কাঁঠালের আঁঠা ছুটাইতে এইসব সরিষার তেল, সাবানে হবে না। কেরোসিন লাগবে কেরোসিন! আঁঠা বাপ বাপ করে পালাবে!”
আমি সবে মাত্র মুখে একটা কাঁঠালের কোয়া দিয়েছিলাম। আব্বার কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে বিষম খেলাম। নাকে মুখে উঠে গেল! সম্ভব হলে কাঁঠালের বিচি নাক দিয়েই বেরিয়ে আসত!
“কেরোসিনের জারকিনটা কই রাখলাম জানি?” আব্বা আঁঠা হাতে অনিশ্চিত মুখ করে উঠে গেল।
আম্মা বলে দিল কোথায় থাকার কথা। আমি যদিও সরিয়ে রেখেছিলাম, কিন্তু তেমন কঠিন কোনো জায়গা না যে খুঁজে বের করা যাবে না। প্রমাদ গুণতে লাগলাম।
কারণ খানিক বাদেই আব্বার থম থমে গলা শুনলে পেলাম স্টোরের কাছ থেকে। “রীতা? কেরোসিনের ঢাকনাটা কেউ পুড়াইছে? আগুন লাগাইছে কে?”
ডিডি কিংবা আম্মা কোনো রকম দুশ্চিন্তা বা কৌতুহল দেখানোর বদলে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকাল দরজার কাছে কাঁঠাল মুখে দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা আমার দিকে। জবুথবু হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। কাঁঠালটা ফেলে দিব না গিলে ফেলবো বুঝতে পারলাম না।
ডাইনিং থেকে আব্বার মেঘাস্বর ভেসে এলো বজ্রনিনাদের মতো, “ফরহাদ চৌধুরী… বড় বেতটা সহ এইখানে হাজির হও তো!”
আব্বার স্পেশাল কিছু বেত ছিল হাইস্কুলের হেড মাস্টারের মত। জালি বেত, লম্বা কলমের বেত, বাঁশের বেত, রুলার- বিভিন্ন সাইজের। সবগুলোই আমার ওপরে ল্যাব টেস্ট করা হত। গিনিপিগ ছিলাম। আমার ওপরে ল্যাব টেস্ট হলেও ডিডির ওপর হত না, আপু (ডিডি) প্রত্যেকবার বেঁচে গেছে। যা কিছু যেত, আমার ওপর দিয়ে ল্যাব টেস্টের নামে বেতগুলোর পরীক্ষা হয়েছে এ যাবত। এমনকি ফিল্ড টেস্টেও আমার ওপর দিয়েই সব গেছে।
থম থমে মুখে বেত সহ আব্বার সামনে গিয়ে হাজির হলাম।
আব্বা শান্ত মুখে আঁঠা হাতে বেত নিয়ে জিজ্ঞেস করল, “মরার ইচ্ছা হইলে ছাদ থেকে ফাল দিবা। আগুনে পুড়ে নিজে সহ ঘর বাড়ি তো জ্বালানোর দরকার নাই! হাত দেখি?”
কাঁপা হাত বাড়িয়ে দিলাম আমি আব্বার বেতের নিচে। সাধারণত আব্বা মারার আগেই বাবা গো আম্মা গো করে গরুর মতো চেঁচানো শুরু করে দিতাম। তাতে লাভ হত, আব্বা ভাবত উচিত শিক্ষা হয়ে গেছে। মার কম দিত।
তবে আব্বার হাত থেকে ডিসকাউন্টেড মার খেয়েও সেবার খুব সুবিধা করতে পারিনি। কারণ বাসায় তিন দফায় মার খেতাম যেই যুগে। পানির ফিল্টারের মতো। আব্বা আমাকে বাস্পীভবন করলে আম্মা আমাকে এরপর পিটিয়ে ঘনীভবন করতো, মানে বাবা মা মিলে পাতন প্রকৃতি সম্পন্ন করত। আর ঊর্ধপাতন প্রকৃয়া পুরোটা আমার বোনের দ্বারা সম্পন্ন করা হতো।
সেই রাতে আব্বার মার খেয়ে আমি কাহিল থাকায় এই গবেষণার শাস্তি আমাকে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় কিস্তির মার খেতে হয়েছিল পরের দিন।



আমার আইন্সটাইন যুগের সেই সব কুরী ফ্যামেলি জাতীয় গবেষণা খুব বেশিদূর আগাতে পারিনি। পর্যাপ্ত পরিমাণ গবেষণার জন্য জিনিসপত্রের অভাবে, আর বিপুল পরিমাণ মাইরের প্রাদূর্ভাবে আমি বিজ্ঞানী টাইটেল ছোটবেলাতেই ছেড়ে দিয়েছিলাম। তিন দফার ইএময়াই সিস্টেমের মাইরের ভয়ে আমার বৈজ্ঞানিক প্রতিভা শুরুতেই হজম হয়ে গিয়েছিল। না হলে এতদিনে মঙ্গল গ্রহেও রকেট পাঠায় বসতাম!পরে আরেকদিন আমার বৈজ্ঞানিক গবেষণা নিয়ে আরো গল্প বলা যাবে।
আপাততঃ বড়লোক শিশুতে যাই।


বড়লোক শিশু এবং ঘড়ি উপাখ্যানঃ

স্কুলে ক্লাস ফোরে থাকতে আমার বন্ধু বান্ধবদের মধ্যে হাত ঘড়ি কেনার ধুম পড়ে গিয়েছিল। প্রায় সবাই’ই চামড়ার বেল্টওয়ালা কিংবা প্লাস্টিকের ডিজাইন করা ঘড়ি হাতে দিত। লিমন আর হাসান নামে দুটো ছেলের সাথে বসতাম আমি। ওদের দুজনেই ঘড়ি কিনেছিল একই ব্র্যাণ্ডের। কালো চামড়ার বেল্টের সোনালী ঘড়ি। কাঁটাওয়ালা। তাদের হাতে ঘড়ি থাকায় এবং আমার হাতে ঘড়ি না থাকায় তারা কিছুদিন সামনে বেঞ্চে গিয়ে বসেছিল। আমাকে বয়কট করে। কারণ আমার হাত ঘড়ি ছিল না। আমি মিশতে গেলেই লিমন আর হাসান নাক উঁচিয়ে আমার দিকে তাকাতো। হাতে ঘড়ি না থাকায় সেই যুগে নিজেকে বেশ গরীব গরীব মনে হত। তাছাড়া লিমন বা হাসান ছাড়াও ক্লাসের অনেকেই হাতে ঘড়ি নেই দেখে হাসাহাসি করতো আমাকে নিয়ে। যেটা আমার মোটেও পছন্দ হতো না। এক সময় দেখা গেল ক্লাসে হাত ঘড়ি ছাড়া ছেলে মেয়ে আছে মাত্র হাতে গোণা কয়েকজন মাত্র আমরা। বাকিরা সবাই ঘড়ি পরে। তো দল ভাগাভাগির মতো ব্যাপার হয়ে গেল। ঘড়িওয়ালা বড়লোক, ঘড়িছাড়া গরীব ছেলে মেয়ে। সে সময় এ অনুভূতিও হতো যে “স্কুলেই যাব না আর। ঘড়ি ছাড়া স্কুল করা সম্ভব না।"



অবশ্য বাসায় সেটা নিয়ে কিছুই বলতাম না। কাকতালীয় ভাবে আমার জন্মদিনে আব্বা আমাকে একটা বেশ ভাল, চামড়ার বেল্টওয়ালা সোনালী ঘড়ি কিনে দিল। যেই যুগের সাড়ে তিনশো টাকার ঘড়ি। আমার বোনকেও আব্বা এত দামী ঘড়ি দেয়নি কোনোদিন। সেটা নিয়ে ডিডি মোটামুটি ক্ষিপ্ত ছিল কিছুদিন।
দামী ঘড়ি পেয়ে স্কুলে আমার হাব ভাবই বদলে গেল এরপর। লিমন আর হাসান এসে পাশে বসার চেষ্টা করতে লাগলো। ক্লাসের অন্য ঘড়িওয়ালা ছেলে মেয়েরাও খাতির করার চেষ্টা করতে থাকলো। আর আমি নাক উঁচিয়ে চলা আরাম্ভ করলাম। লিমনদের বলে দিলাম, “এইটা অরিজিনাল বাঘের চামড়া দিয়ে বানানো বেল্ট। তোদেরটা গরু, ছাগলের চামড়া। কম দামী। আমারটা বেশি দামী।“ ভাবখানা এমন দেখানো শুরু করলাম “আমাকে স্যার ডাকবা।” এই টাইপের। শুধু তাই না, অনেকের ধারণা হতে পারে, আমি বুঝি ঘড়িহীনদের মাঝে গিয়ে নিজেকে রবিনহুড টাইপের মানবতা দেখবো শ্রেণি বিভেদ দূর করে দিয়ে- সেটাও ভুল। আমি খাটি বাঙ্গালী চরিত্রের পরিচয় দিলাম। ঘড়ি পাওয়ার পর ঘড়িহীনদের দিকে আমিও নাক সিটকানো ভঙ্গীতে তাকাতে শুরু করে দিলাম। যে কোনো কথা বলতে গেলেই হাতটা নেড়ে চেড়ে ঘড়ি দেখিয়ে দিতাম, কিংবা কথার মধ্যে যে কোনো প্রসঙ্গ থেকেই হোক নিজের ঘড়ির প্রশংসায় টেনে নিয়ে যেতাম।
যেমনঃ কথা বলছি বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে, আমি ঢলে ঢলে বলা শুরু করতাম, “আমি প্রায় সব অংক করে শেষ করে ফেলেছিলাম। কিন্তু জানিস, আমার না ঘড়ির দিকে একবারও চোখ পড়েনি। পড়লে ঠিক সব করে ফেলতাম। স্যার তার আগেই এসে নিয়ে গেছে। স্যার কিন্তু আমার থেকেই সময় জেনে নিজের ঘড়ি ঠিক করে নিয়েছিল শুরুতে!” মোটামুটি আষাঢ়ের গল্পের ফাল্গুন চৈত্র বানিয়ে দিতাম। মানে সেই বয়সেই আমার ফাকাফাকি শুরু! এই ঘড়ির একই জাতের অরিজিনাল কপি নাকি বিল ক্লিন্টন নামে এক ব্রিটিশ বিজনেসম্যানও পরে! খোদ বঙ্গবন্ধু এবং মহাত্মা গান্ধীও পরতো! চাপার এহেন ভোল্টেজই প্রমাণ দেয় আমি লেখক কীভাবে হলাম! যাহা নাই, তাহা বলাই লেখক ধর্ম!



যাহোক, নতুন ঘড়ির দেমাগে আমার পা মাটিতে পড়তো না। মাটির তিন চার বিঘত ওপর দিয়ে এন্টি গ্র্যাভিটেশনাল ফোর্সে আমি উড়ে উড়ে বেড়াতাম। ক্লাসে আমি ঢুকলেই ছেলে পেলেরা নড়ে নড়ে বসত যে দামী ঘড়িওয়ালা ছেলেটা ক্লাসে এসেছে। বেঞ্চে জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। নিজেকে এডমিরাল জেনারেল আলাদিন পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলাম। ঘড়িতে চুমা খাওয়া বাকি ছিল বলা যায়!
সম্মানের, অন্য ভাষায়- মাশল’ছ হায়ারার্কি অব নিডের চূড়ান্ত পর্যায়ে আমি উড়ছিলাম - সেই সময় আচমকা একদিন আমার ঘড়ি খানা হারিয়ে গেল।
হারিয়ে গেল মানে হারিয়েই গেল। আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। কোথায় হারিয়েছি সেটাও মাথার চুল ছিঁড়েও আর মনে করতে পারি না। ক্লাসের কেউ চুরি করেছে? কখন করল? কীভাবে করল? আমি তো হাত থেকেই খুলি না! অন্যদিকে বাসায় ডিডির সামনেও ঘড়ি নিয়ে কিছু বলাও যায় না। ঘড়ি হারিয়েছি বাসায় যদি একবার ডিডি টের পায়- গিয়ে কানে কান কথা লাগাবে আব্বা আম্মার, মাইর খেয়ে সোজা হবো আমি। তাই ডিডিকেও কিছু জানতে দিলাম না। কিছুদিন গোয়েন্দা প্রদোষ মিত্তির হয়ে আসল দোষীকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে থাকলাম।
হাতে ঘড়ি না থাকায় লিমনরা সরু চোখে তাকানো শুরু করল, “কীরে ফরহাদ? তোর হাতের ঘড়িটা গেল কই?”
ঘড়ি বেহাত হয়েছে- ব্যাপারটা ধামা চাপা দিতে হাত নেড়ে উড়িয়ে দিতাম, “আরে আমার বোনের স্কুলে নাকি কিসের ফাংশন আছে। ঘড়িটা পরে স্টেজে যাবে। তাই দিয়েছি। মুছে টুছে পরিষ্কার করে দিবে কাজ হলে।”
আস্বস্ত হতে পারত না ঘড়িয়াল কমিটি। সন্দিগ্ধ নজরে আমার দিকে তাকাতে লাগলো কদিন যেতেই। তাদের ঘড়ি কমিটির সর্দারের স্থান হারানোর সমূহ সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছিলাম পরিষ্কার।
তাই আরো ভালমতো গোয়েন্দাগীরী শুরু করলাম। পাশাপাশি নামাজ পড়াও ধরলাম। কে জানে, নামাজ পড়ে দোয়া করলে ঘড়ি ফিরেও পেতে পারি!
তবে আল্লাহ বোধহয় আমার ঘড়ি বিষয়ক ফাকাফাকি এবং ঘড়িহীনদের প্রতি দ্বিমুখী আচরণ আগেই দেখেছিলেন। তাই বিশেষ সাহায্য করলেন না এইবার। ব্যাপারখানা হল এই “আপনা মামলা, নিজে সামলা।”
আমি কিছু খুঁজে বের করার আগেই আমার ঘড়িখানা নিজে নিজেই উদয় হল একদিন। আমার আব্বা শুক্রবার মসজিদে যাবে, পাঞ্জাবি ইস্ত্রি করা নাই। সে জন্য নিজে ইস্ত্রি করার উদ্দেশ্যে আমাদের পুরনো ইস্ত্রির বক্সটা খুলে যেই বের করেছেন মেশিনটা- অমনি দেখতে পেলেন ভারী তিন কেজি ওজনের ইস্ত্রিটার নিচে আমার ঘড়ির নিরিহ ডেডবডিটা পরে আছে নিথর হয়ে। কাঁচ ভেঙ্গে চৌচির হয়ে গুড়া গুড়া, কথিত বাঘের চামড়ার বেল্টের ওপর ময়লা আর আঠালো কিছু পড়ে একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। ঘড়ি আর ঘড়ি নাই। পুরাকৃতি হয়ে আছে পাল বংশের।
আব্বা গর্জন করে ডাক দিল আমাকে, “ফরহাদ চৌধুরী! তোমার ঘড়িখানার এই অবস্থা করে চিপায় লুকায় রাখছো কেন?”
আমার বুকের খাঁচায় হৃদপিণ্ডটা ধড়াস করে উঠল। আমিও পাঞ্জাবি পরছিলাম। ঘড়ির কথা শোনামাত্র চিলের উড়াল দিয়ে আব্বার ঘরে গিয়ে হাজির হলাম। গিয়ে দেখি আমার ঘড়িটার এই অবস্থা। কাঁদবো, না আব্বাকে জবাব দিবো বুঝতে পারলাম না।
আব্বা চিবিয়ে চিবিয়ে বলল, “ঘড়ি কিনে দিলাম ভাল দেখে, সেটার এই অবস্থাই যখন করবা- নিছিলা ক্যান? ভাল জিনিস হজম হয় না- না? দাঁড়াও আজকে তোমারে দেখতেছি আমি!”
কানের পাশ দিয়ে ফাকা ফাকা বাতাস হচ্ছিল। সিনেমার দুঃখের সিনে যেমন ঝড়ো বাতাস হয়, বজ্রপাত হয়- আমি ভরা রৌদ্রের দুপুরে সেই দুঃখের শব্দ পাচ্ছিলাম।
এত শখ করে টাকা দিয়ে কিনে দেয়া ঘড়ির এই দশা করেছি দেখে আব্বা সেদিন মসজিদ থেকে ফিরে এসে আচ্ছামত ধোলাই দিয়ে দিল আমাকে। আমি শোকে দুঃখে প্রথমে লোহা হয়ে গেলাম। এরপর আসরের ওয়াক্তে আম্মা আমাকে দুপুরে ঘুমাইনা এই ছুতায় আরেক দফা ধোলাই দিয়ে দিল। আমি লৌহযুগেরও আগে ফিরে গেলাম। প্রস্তর যুগে। অধিক শোকে আমি গ্রানাইট হয়ে গেলাম।
ইএময়াই সিস্টেমের রেওয়াজ অনুযায়ি সন্ধ্যা নাগাদ ডিডির হাতেও ধোলাই খাওয়ার কথা। কিন্তু আশ্চর্য জনক ভাবে ডিডি আমাকে মারলো না সেদিন। এমনকি মারার ব্যাপারে কোনো রূপ আগ্রহই দেখাল না। কেমন যেন অনীহা দেখতে পেলাম।
সন্দেহ লাগতে শুরু করল রাত হতে হতে। আমার বোন তো এমন না! মাইরের বিষয়ে তার মধ্যে আমি কোনোদিন উদাসীনতা পাইনি। মাইরের ব্যাপারে সে বরাবরই উদার। সেবার তার আইলানার না মশকরা, মাশকারার বোতল দেয়ালে ছুড়ে মেরে খেলতে গিয়ে ভুল করে ভেঙ্গে ফেলে ঘর ভাসিয়ে দিয়েছিলাম কালি দিয়ে। লেপ, তোশক, আমার নিজের গেঞ্জি, দাঁত সব রঙ করে ফেলেছিলাম। যদিও আমি সব সামলে নিয়েছিলাম। নিজেই গেঞ্জি আর তোশকের অংশগুলো ভেজা কাপড় দিয়ে মুছেছিলাম। আম্মা তো মহাখুশি হয়ে গিয়েছিল ছেলে হঠাৎ ঘর মোছা শুরু করেছে, জামা কাপড় ধুচ্ছে দেখে। পরে আনন্দিত হয়ে আম্মা আমার মাথায় হাত বুলাতে এসেছিল। কিন্তু খুশির আতিসাহ্যে আমার হাসি মাখা মুখের সামনের দুই দাঁতে আইলানার কালি লেগে থাকতে দেখে বুঝে গিয়েছিল আসল ঘটনা। অতঃপর ধোলাই মারতে মারতে বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট থেকে বালাঘাটার বাজার পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিল। আর আমার বোন বাসায় ফিরে সেই মশকরা না মাশকারার দূর্যোগ বিদ্ধস্ত পরবর্তী শোককে শক্তিতে পরিণত করে পারমাণিক-অমানবিক আক্রমণ চালিয়েছিল; ঈগলের মতো নখ দ্বারা খামচে খুমচে দিয়ে। সেই ঘটনার পর এক মাস আমার গায়ে কোনো চামড়া ছিল না। আমি ছাল ছাড়াই বেঁচে ছিলাম। ছাল গজাতে সময় লেগেছিল একমাস। এই বাংলার কোনো ঘরে একটা বড় বোন থাকবে, এবং সেই ঘরের ছোট ভাইগুলোর ছাল সহী সালামতে থাকবে- এইটা অসম্ভব। এইটা কাল্পনিক ব্যাপার। সায়েন্স ফিকশন। ওয়েস্ট ওয়ার্ল্ড!
আমি সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় অবাক দৃষ্টিতে তাকাতে থাকলেও, সাড়ে সাতটায় সেই দৃষ্টি সন্দেহে পরিণত হল ডিডির ওপর। সাড়ে আটটায় সেই নজর ঘাঘু আসামীর দিকে দারোগা যেভাবে তাকায় সেভাবে তাকাতে লাগলাম। সাড়ে নয়টায় পেছনে হাত দিয়ে পায়চারী শুরু করে দিলাম ডিডির নিস্পৃহ ভাবের কারণ চিন্তা করতে করতে।
রাত সাড়ে দশটায় বিছানায় শোনার পর অন্ধকারে সন্দিগ্ধ গলায় মশারির ছাদের দিকে তাকিয়ে, দুই হাতের আঙ্গুল একটার ওপর একটা রেখে কলার মোচা বানিয়ে, ফেলুদার মতো ভারী গলায় জিজ্ঞেস করলাম, “তাহলে তুমিই আমার ঘড়ি লুকাইছো? হ্যাঁ? সব অংক তো মিলে যাচ্ছে খাপে খাপে!”
ডিডি কেবল সিনেমার রাজীবের মতো গলায় বলল, “তোমার কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। প্রমাণ নাই। হাত থেকে পড়ে গিয়ে ভেঙ্গে গিয়েছিল। তোমার কান্দা কাটির প্যানপ্যানানি থেকে বাঁচতে লুকায় রাখছিলাম। এখন ঘুমাও। নাইলে বাজায় দিবো অন্য মামলায়।”
আমি বজ্রাহতের মতো বাকি রাত মশারির ভেতর আপুর পাশে জেগে রইলাম। সে নাক ডেকে ঘুমালো। আমার দামী ঘড়ি বিনা অপরাধে, বিনা বিচারে মারা গেল। আমি প্রতিশোধ নিতে পারলাম না! প্রমাণ আসলেও নাই! তারওপর ডিডি মুরুব্বি গ্যাঙের মেম্বার। আমার কথা কেউ বিশ্বাস করবেও না।
হতাশ, ভগ্ন হৃদয়ে আমি ঘড়িহীন কলোনিতে ফেরত গেলাম। এরপর গরীব নির্যাতিত ঘড়িহীন কমিটির মেম্বার ছিলাম মোটামুটি পুরো ছাত্রজীবনই।
আবার কোনোদিন আরো কোনো গল্প হবে। আজ যাই।



অলঙ্করণ কৃতজ্ঞতাঃ মানিক-রতন (অনলাইন কার্টুন)
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০২০ দুপুর ২:৪২
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×