লিডার আগামীকাল ও পরশু (বুধ ওবৃহস্পতিবার) হরতালের ডাক দিলেন যে উপলক্ষ কি? তুই নেতাগোর সাথে নেকামি করতাছিস? জানিস না কেন হরতাল ডাকা হইছে? কোন কারণ ছাড়া এমনি এমনি তো আর আমরা হরতাল ডাকি না। কিন্তু সব কারণ তো আর কওন যায় না। বিএনপি’র এক কর্মী এভাবেই দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে প্রশ্ন করেছিল। তবে নেতা পরিস্কার উত্তর দিলেন না। আর এ কথা শুনেই কর্মী বেজায় খুশী। লিডার যহন কইছেন তহন তো আর মিছামিছি কোন কারণে হরতাল দেওন হইছে না। ভালই হইছে...।
এবার ওইকর্মী বলতে শুরু করলো, লিডার আপিন কি শুইনছেন এই হরতাল নিয়ে কানাগোসা শুরু হইছে। কানাগোসা- সেটা আবার কি? আরে ওই আলোচনা-সমালোচনা আর কি। আলোচনা তো হবেই, আলোচনা তো ভাল জিনিষ। আলোচনা হওয়ার জন্যই তো আমরা হরতাল ডাকছি। কিন্তু লিডার এই আলোচনা তো সেই আলোচনা না, এই আলোচনায় চৌদ্দ গোষ্ঠি উদ্ধার কইরতাছে আমাগোর। সেটা আবার কি রকম? ওই যে আপনারা ২৭ মার্চ হরতাল ডাক দিছেন, সঙ্গে আবার আরেকদিন বোনাস। লোকজন তো কইতাছে আমরা নাকি দেশের স্বাধীনতার উপর শেষ পেরেকটা মাইরাদিছি।
তুই তো দেখি বুঝে ফেলছিস, সাবধান কাউকে বলিস না। এদেশের মানুষগুলো বোকা, তোর মত বুদ্ধিমান না। কিন্তু কি কন লিডার- মফিজের চায়ের দোকানে বইসা চা খাইতাছিলাম। এসময় এলাকার লোকজন বলাবলি কইরতাছিল যে, আমরা নাকি সব সময় কইয়া থাকি একাত্তর সালের ২৭ মার্চে স্বাধীনতার ঘোষণা নাকি মোগোর নেতা জিয়াউর রহমান দিছে। আর আমরাই এবার হেই দিনে হরতাল ডাক দিছি নেতার নামে উৎসর্গ কইরা। এইটা যাতে লোকে না বুঝে তার জইন্য একদিন বাড়িয়ে ২৮ তারিখও হরতাল ডাকছি।
এবার নেতার জবাব- তুই ঠিকই বলছিস...। কিন্তু লোকজন তো মহাফাজি, অবশ্য যারা এসব কথা বলছে তারা তো সবাই নাস্তিকের দল। তবে জেনে রাখিস, নেতা তো নিজ থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিছে না। ওই যে কয় না তাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু তার পক্ষে ঘোষণা দিছে। নেতার নিজের পক্ষ থেকে দিলে তো আর আমরা হরতাল ডাকতে পারতাম না। তাছাড়া আমি তো আবার রাজাকারের পোলা। ওইসব স্বাধীনতা-টাধীনতায় নাই...। ম্যাডাম তো আমারে এ জন্যই ভারপ্রাপ্ত বানাইছে। তাছাড়া আমি তো এখন জামায়াতের বিএনপি শাখার ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল। আমাগোর দোস্ত মুজাহীদ মিয়া জেলে যাওয়ায় আমাকে বাড়তি দায়িত্বও তো পালন করতে হচ্ছে। একের ভিতর দুই আর কি...।
তো লিডার, তাইলে সইত্য কথা হইতাছে গিয়া আমাগোর নেতা স্বাধীনতার ঘোষণা দিছে না...তাই তো। তুই দেখি সব বুঝে ফেলছিস। এরকম কর্মীই তো আমরা চাই। কিন্তু লিডার যেইভাবে লোকজন জাগছে আর আওয়াজ দিতাছে তাতে তো এবার আর রক্ষা হইবার নাই। কারণ ওই যে শাহবাগে প্রজন্ম চত্বর থেকে মানুষরে বিশেষ কইরা তরুণ-যুবকদের উস্কাইয়া দিতাছে আমাদের বিরুদ্ধে তাতে তো আমাদের আর পালানোর পথ থাকবে না। ওই সব নিয়া ভাবিস না। ওইগুলারে তো ম্যাডাম ডোজ দিছে।
আচ্ছা লিডার আরেকটা প্রশ্নের উত্তর দেন তো। কি সেটা? না, মানে ম্যাডাম যে বগুড়ায় যাইয়া কইল সেনাবাহিনী সময় মত দায়িত্ব পালন করবো। তারা নিরব থাকব না। ম্যাডামের হেই কথার অর্থ বুঝবার পাইরলাম না। আরে বোকা, ম্যাডাম ক্ষমতায় থাকতে কত আরামেই না ছিল। ম্যাডামের দুই ছেলে কত টাকা পয়সা কামাইছে। একজন করছে খাম্বার ব্যবসা, আরেকজন লঞ্চের ব্যবসা। তারপর হাওয়া ভবন থেকে কত ভাবে কামাই করছে আমাদের যুবরাজ। এসব টাকা বিদেশ পাঠাইছিল। কিন্তু বর্তমান হাসিনা সরকার সেসব টাকা-পয়সা ফেরত নিয়া আসতেছে। এখন ম্যাডাম আর তার দুই পুত্র চলবে কিভাবে। তাই ম্যাডাম চাচ্ছে ক্ষমতায় যাইতে না পারলে দেশে একটা বিশৃংখলা তৈরি কইরা সেনাবাহিনীকে ক্ষমতায় আনতে। তাহলে আর হাসিনার সরকার দেশ শাসন করতে পারবে না। এছাড়া সেনাবাহিনী আসলে ম্যাডামরে খাতির করবো।
কিন্তু লিডার, দেশের মানুষ তো বলাবলি কইরতাছে এই বইলা যে, আমাগোর ম্যাডামের মাথা নাকি একেবারে গেছে গা...। দূর এসব কথায় কান দিস না। ম্যাডাম যা বলতেছে সেটা আমাদের সবার জন্যই বলতেছে। এ নিয়ে লোকজন কি বললো তা শুনার দরকার নাই। মনে রাখবি, যদি হাসিনা সরকারকে নামাইতে পারি তাহলে আমাদের দোস্তরা যারা একাত্তরে দেশের মানুষ হত্যায় সক্রিয় সহযোগিতা করেছিল, এখন জেলে আছে তাদের ফুলের মালা দিয়ে আবার বরণ করে এনে মন্ত্রী বানাবো। হা...হা...হা...ঠিকই কইতাছেন লিডার। কিন্তু হেই দিন আর বোধ হয় আইবো না...।