somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

" “ ‘Everybody’s Fine’ বাবা-সন্তানরের সম্পর্কের যে মুভিটি মনকে নাড়া দিলো ”"

২৩ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ১২:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুভিটি দেখামাত্রই ভেবে রেখেছিলাম এটি নিয়ে অবশ্যই লিখবো। মনকে নাড়া দিয়ে গেলো মুভিটি। মুভিটি কিন্তু বেশ তারকাবহুল। Robert De Niro, Drew Barrymore, Kate Beckinsale, Sam Rockwell আছে এটির অভিনয়ের তালিকায়। পরিচালক হলেন Kirk Jones। বাবা-সন্তান এর মাঝে সম্পর্ক নিয়ে মুভিটির কাহিনী। মনটা বেশ খারাপই হয়ে গিয়েছিলো মুভিটি দেখার সময়। আমার মতে Robert De Niro খুব ভাল অভিনয় করেছেন মুভিটিতে। কিছু কিছু দৃশ্যে উনার অভিনয় আসলেই মনকে নাড়া দিয়ে যায়। একজন নি:সঙ্গ পিতার চরিত্রটি তিনি খুব সুন্দরভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন। মুভিটির IMDB রেটিং হলো 7.2/10। কিন্তু আমি এটিকে দিবো 8/10। অনেকের কাছে মুভিটি দেখার পর বেশীই মনে হতে পারে। কিন্তু এটা আমার পুরোপুরি নিজের রেটিং। কোন অতি নাটকীয়তা নয় কোন অতি অভিনয় নয়। খুব সাধাসিধে মুভি। কিন্তু অসাধারণ। মুভিটি বাসার সবাই মিলে দেখতে পারেন।

কাহিনী সংক্ষেপ : Frank Goode একজন রিটায়ার্ড নি:সঙ্গ মানুষ। কিছুদিন আগে তার wife মারা গেছে। Frank এর ৪জন ছেলেমেয়ে। সবাই নানা শহরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। বছরে ছুটির দিনগুলোতেই কেবল সন্তানদের মুখ দেখতে পায় Frank। কিন্তু সবসময় তার মন সন্তানদের জন্য ব্যাকুল হয়ে থাকে। মুভির প্রথমেই দেখবো হলিডেতে Frank এর সব ছেলেমেয়ের বেড়াতে আসার কথা। Frank অনেক খুশি মনে সব আয়োজন একলা করতে থাকে। নতুন গ্রীল মেশিন কিনে, দামী wine কিনে, বাসা সুন্দর করে সাজায়। কিন্তু শেষ সময়ে এসে সবাই একে একে আসতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। মনটা খুব খারাপই হয়ে যায় Frank এর। কিন্তু পরে আমার ঠিক করে সন্তানরা আসতে পারবে না তো কি হয়েছে ? সে সবার বাসাতেই যাবে, সবাইকে একটা সারপ্রাইজ দিবে এবং ক্রিসমাসের জন্য সবাইকে কার্ড দিয়ে আসবে। Frank আবার plane এ চড়তে অনেক ভয় পায়। তাই ট্রেনে-বাসে করেই সে রওনা দেয়। প্রথমেই যায় ছেলে David এর বাসায়। কিন্তু তাকে বাসায় পায় না। সারারাত বাসার বাইরে বসে অপেক্ষা করে তার জন্য। শেষে কার্ডটি তার দরজার নিচে দিয়ে রওনা দেয় মেয়ে Amy এর বাসায়। সেখানে গিয়ে অনেকদিন পর মেয়ে ও নাতিকে দেখে অনেক ভাল লাগে Frank এর। কিন্তু একদিন না যেতেই ব্যস্ততার নানা অজুহাত দেখিয়ে পরেরদিনই Frank কে চলে যেতে বলে Amy। কি আর করা ? সেখান থেকে রওনা দেয় আরেক ছেলে Robert এর কাছে। কিন্তু Robert ও যে অনেক ব্যস্ত। ব্যস্ততার নানা কথা বলেও সেও বাবাকে চলে যেতে বলে অন্য মেয়ে Rosie কাছে। Rosie তার বাবাকে খুব ভালোভাবেই গ্রহন করে। কিন্তু মেয়ের কিছু সমস্যার কথা জেনে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় Frank। ভ্রমনে অনেক ক্লান্ত থাকার কারণে plane চড়েই ফিরে যাবার কথা ভাবে Frank। কিন্তু plane এর মাঝেই হার্ট এটার্ক হয় Frank এর। মুভির এই পর্যন্ত এসে Frank এর ছেলেমেয়ের উপর আমার এমন রাগ হয়েছিলো তা বলার মতো না। যেই বাবা তোমাদের এত ভালবাসেন.....কিছু সময়ের জন্য তোমাদের কাছে পেলেই যিনি এত খুশি থাকেন তাকে কেন এভাবে দূরে ঠেলে দিচ্ছো তোমরা ? কিন্তু হাসপাতালেই সব সত্য জানা যায়। এক ভয়াবহ সত্য বাবার কাছ থেকে লুকানোর জন্যই সবাই এমন আচরণ করছে। সবাই বাবাকে খুব ভালোবাসে। কেউ চায়না কোন কারণে বাবা কষ্ট পাক। কিন্তু সেই সত্যটি বলার সাহস যে কারো নেই। সবাই জানে এই সত্য বাবা কখনোই মেনে নিতে পারবে না। কি ছিলো সেই সত্য ? এটা আমি বলবো না। এটা মুভিটি দেখেই জেনে নিয়েন।
মুভিটির শেষের কিছু অংশ আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। ক্রিসমাসের সময় সবাই বাবার সাথে থাকতে এসেছে। শেষ দৃশ্যই ছিলো রাতে সবাই এক টেবিলে বসে অনেক আনন্দের মাঝেই ডিনার করছে।

মুভিটির একটি কথা বলতেই হবে। সন্তানদের কাছে যাওয়ার সময় ট্রেন-বাস এ ভ্রমনের সময়, হোটেলে থাকা, একলা একলা খাওয়া এই জায়গাগুলোতে Robert De Niro এর অভিনয় আসলেই অসাধারণ লেগেছে।

অনেকে হয়তো মুভিটি দেখে আমার এই প্রশংসাকে বাড়াবাড়ি বলে নিতে পারেন। আসলে বাবাকে নিয়ে মুভিগুলো আমাকে সবসময় নাড়া দিয়ে যায়। তাই আমার কাছে এই মুভিগুলোর জন্য থাকে বাড়তি প্রশংসা।

সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৩২
১৩টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×