somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি পারভার্ট হইলে আপনি নপুংশক নিশ্চয়!

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নাম দেখিয়া আৎখা চেতিয়া উঠিলেন নাকি মশাই? তার মানে আপনি লেখাটি পড়িবার জন্য ক্লিক মারিয়াছেন। যাক্ আমার উদ্দেশ্য সফল। তবে কথা কি, বিষয়টাই যখন আপত্তিকর (আমার মতে) নামটা কিছু অশ্লীল হইলই না হয়! কি বলেন? খেক খেক...B-)B-)B-)

ঘটনা হইলো, আজকাল ছোট ছোট কন্যা শিশু দেখিলেও আমার শরীর জাগিয়া ওঠে গো দাদা...। ছোট হইলে কি হইবে...শরীর তো সেইরাম দেখাইতেছে, কাঁপাইতেছে :-*। গালি দিলেন নাকি আবার! ধুর সত্যি বলিলেও দোষ। X((

আমি কি করিবো বলেন, আজকাল টিভিতে ছোট ছোট মেয়েরা চিকনী চামেলী কিংবা শিলা কি জাওয়ানীর সাথে যেইরুপে নিজেদের জাহির করিতেছে তাতে আর সামলাইবার মন চাহে না। অধিকাংশ টিভি চ্যানেলেই দেখা যায় তথাকথিত এক ধরণের ড্যান্স কম্পিটিশন থাকে। এদের মধ্যে অধিকাংশই হিন্দি আর কোলকাতার বাংলা চ্যানেলও আছে। দেশীয় টিভির কথায় পরে আসিতেছি। সেথায় বড়দের সাথে ছোটরাও অংশ নিয়া থাকে। মানে শরীর দেখাইতে বয়স কোন বাধা নয়...শরীর থাকিলেই হইলো আর কি! ছোট বড় সকলেই কাপল হিসেবে নাচিয়া থাকে। বলাবাহুল্য সেখানে কোন শিশুতোষ কোন নাচ থাকে না। প্রায় সবই যৌন আবেদনপূর্ণ স্বল্প পোশাকের উদ্দাম নৃত্য। :!> :!> এইসকল শিশুদের আইডল নাকি আবার প্রভুদবা, রেমো ফার্ন্দাদেজ !!

৫-১২ বা তারও সামান্যকিছু বেশী বয়েসী শিশুরা ঠিক বড়দের অনুকরণে নাচিয়া থাকে। বিভিন্ন আবেদনপূর্ণ অঙ্গভঙ্গী করিতে থাকে। কেননা, তাকে তো বড়দের সাথে কম্পিট করিয়াই জিতিতে হইবে! :| :| ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা উদ্দামভাবে একে অপরের শরীর হাতাইয়া নাচিয়া যাইতেছে। 'বিচারক' বাহবা দিতেছেন, দর্শক শিশ দিতেছে, টিভি দর্শক ক্ষুদেবার্তায় ভাসাইয়া দিতেছে। পিচ্চি পিচ্চি পোলাপান যারা ঠিকমত হাঁটিতেও পারে না তারা শরীর ঝাঁকাইয়া যাইতেছে। মুখে বোল না ফুটিলেও গলা ফাটাইয়া আইটেম সং গাইতে ওস্তাদ হইয়া উঠিয়াছে। অনেক সময় আবার গ্রুপ ড্যান্স থাকে। সেখানে বড়দের পিছে পিছে ঠিক বড়দের মত করিয়াই শিশুদেরকেও শরীর বাঁকাইয়া ধরিতে হয়। বাহ বাহ কি সুন্দর।

কি? আমাকে আবার গাইল পাড়িলেন যে !ধুর !!

তবে শুনুন, বাংলাদেশে এর ব্যপকতা এতটা প্রকট না হইলেও হালকা শুরু হইয়াছে। ক্ষুদে গানরাজ নামক পোগ্রামটি আমাদের দেশে ব্যপক জনপ্রিয়। আমাদের বাসায় সবাই এইটা গোগ্রাসে গিলিয়া থাকে। অনেকদিন আগে হঠাৎ শুনলাম চার কি পাঁচ বছরের এক বালিকা শিশু গাহিতেছে "খাইরুল লো তর লম্বা মাথার কেশ চিরুল দাঁতের হাসি দিয়া পাগল করলি দেশ..."। শুনিয়া সবাই সাধু সাধু করিতে লাগিলো। কেবল আমি পারভার্ট একটু থতমত খাইয়া গেলাম :-& :-& এইটুকুন শিশুর মুখে এইগান কতখানি শোভা পায়? হয়তো ইহা তেমন কিছু নয়। মনে রাখিতে হইবে, শুরুতে কোন কিছুই ব্যাপক থাকে না। বড়দের গান গাইয়া কেন গো বাপু তোমায় জিতিতে হইবে?

প্রাগঐতিহাসিক যুগে, বিলুপ্তপ্রায় বিটিভি নামক চ্যানেলে একখানা প্রোগ্রাম হইতো 'নতুন কুঁড়ি' নামে। ইহা ছিল জাতীয় পর্যায়ের একখানা ট্যালেন্ট হান্ট ইভেন্ট। কি অবাক হইলেন? সেখানে ক-শাখায় শিশুরা আর খ-শাখায় কিশোর কিশোরীরা বয়স উপযোগী গান গাইতো, নাচ পরিবেশন করিত। আহা কি সুন্দর দিন কাটাইতাম...!!! তখন ছোটরা ছোটদের মতই আচরণ করিত। শৈশব কাটিয়া যাইতো শিশুতোষ বিষয় ঘাঁটাইয়াই। তাহাদের শৈশব তাহাদেরই ছিল।

কিন্তু যুগ পাল্টাইয়াছে। সদ্য কিশোরীরাও হন্সিকা মুতোওয়ানীর মত ইম্প্লান্ট করিয়া দেহের খামতি কমাইতে চায়। কিন্তু এতে আমার কি...সে তো ভারতের। কিন্তু বলচি দাদা, আমারা তো ভারতকেই গিলিয়া খাইতেছি। অন্ততঃ এইসব ক্ষেত্রে আমরা পিছাইয়া নাই গো। এদেশের অনেক তরুনী মায়েরা নিজেও বিশাল ফাঁড়াওয়ালা কামিজের সাথে লেগিংস পরিয়া উরু দেখানোর পাশাপাশি নিজের শিশুকন্যাকেও কি প্রচ্ছন্নভাবে প্রভাবিত করেন না?

আমাদের পুঁজিবাদী সমাজের প্রধানতম বৈশিষ্ট্য হইলো এর ভোগবাদী প্রবণতা। এখানে সবাই ক্রেতা আর সকল কিছুই পণ্য। নারী পণ্য হইয়াছে বহুকাল আগেই। আর এখন শিশুরাও পণ্য হইতেছে। যে জিনিষ তের বছর বয়সে ব্যবহার্য তাহা যদি দশ বছরে গছাইয়া দেওয়া যায় তবে তো আখেরে পুঁজিবাদেরই লাভ। শিশুকে আর শিশু বানাইয়া রাখা যাইবে না। তাকেও তরুনী বানাইতে হইবে। আমার মত পারভার্টের চোখে কাম্য করিয়া তুলিতে হইবে। তবেই তো সমাজে ট্রানজাকশন বাড়িবে। অর্থনীতি শক্ত হইয়া দাঁড়াইয়া যাইবে!!

এই যে এতক্ষণ ধরিয়া আপনার গাইল খাইলাম...এইবার শেষ কথা বলি। একখানা প্রোগ্রাম হইতে জানিতে পারিলাম, প্রতি দুইজন শিশুতে একজন অতিশৈশবে যৌন নিপীড়নের শিকার। এবং অধিকাংশই ঘরের লোকেদের দ্বারা। এরা ঘরের কোনে লুকাইয়া থাকে। সুযোগ পাইলেই লুফিয়া লয়। প্রতিটি মানুষের মাঝেই এই বিকৃতি লুকাইয়া থাকে। কিন্তু এখন শিশুদের দিয়াই এইটা টানিয়া বাহির করিয়া নিয়া আসিতেছে। যেই ব্যক্তি আগে শিশুদের শিশুই মনে করিতো, সেও এখন বুঝিয়া গিয়ছে তারও দেহ আছে এবং তা নিপীড়নযোগ্য। আর তাই এই প্রবণতা আগের হইতে বহুগুনে বাড়িয়াছে এবং বাড়িতেই থাকিবে।


তবে কি করিবেন? সতর্ক থাকুন। এবং শিশুদেরকে শিশুদের মতই থাকিতে দিন। হিন্দি চ্যানেলের বিলাসে সে যেন নিজেকে বয়ঃপ্রাপ্ত ভাবিয়া না বসে, সেদিকে নজর দিন। আপনার শিশু আপনাকেই অনুকরণ করে। তাকে উপযুক্ত হইতে দিন এবং ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। জোর করিয়া কিলাইয়া কাঁঠাল পাকাইবার চেষ্টা না করিলেই কি নয়? আপনার শিশুর নিরাপদ শৈশব নিশ্চিত করুন।


আগামীতে এ বিষয়ে আরও পোস্ট দেব। আপাততঃ এইখানার জন্যে আপনাদের তিরষ্কার হজম করিয়া লই।:P:P দাদার কি মাথা ঠান্ডা হইয়াছে?
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৩৩
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×