গত কিছুদিন আগে ঘুরতে বেরিয়েছিলাম ওসাকার অলিগলিতে...। খুবই মজার ছিল সেই ঘুরাঘুরি। সঙ্গে অভিগ্গতার ঝুলিটাও কিছুটা মোটা হয়েছিলো। আজ আপনাদের সাথে তারই কিছু শেয়ার করবো। ভুল করে সেদিন সঙ্গে ক্যামেরাটা নেয়া হয়নি। কিন্তু গাড়ীতে উঠার পরই মনে হলো, আপনাদের সাথে এই ঘুরাঘুরিটা শেয়ার না করাটা অন্যায় হবে...। তাই বেছে নিলাম মোবাইলের ক্যামেরাটা। তাই ছবিগুলোর কোয়ালিটি হয়তো খুব একটা ভালো হবে না। তো শুরু করছি...
ওসাকার রাস্তায় আপনি বের হলেই প্রথমে যে বিষয়টা আপনার নজর কাড়বে তা হলো ল্যান্ডস্ক্যপ। প্রতিটি রাস্তা, বাড়ী এত সুন্দর করে সাজানো, না দেখলে বোঝা যাবে না। রাস্তার মোড়ে বা পাশে সারাবছরই পাবেন এই রকম কিছু ফুল...
কি বাড়ী, কি অফিস যেখানেই একটুকরো মাটি সেখানেই সবুজ...
রাস্তার পাশের প্রতিটি সেন্টিমিটার জায়গা প্লান করে ব্যবহার করা হয় সবুজের জন্য...
বিশেষ করে অফিসগুলো এত সুন্দর করে সাজানো হয়...
পার্কিং স্পট ও এর ব্যতিক্রম নয়...
ছোট বাচ্চাদের ইস্কুলের বাহিরেরটা এমন, আর ভেতরটাও কল্পনার মতো করে সাজানো থাকে...
তারপরও ডাল মে কুছ কালা হ্যায়... না ভুল বললাম, পলিথিন হ্যায়...
যে কোন কনস্ট্রাকশন কাজ চললে তা অবশ্যই কয়েকস্তরের নিরাপত্তা বেস্টনী দিয়ে ঘেরা থাকবেই...
সবচেয়ে আশ্চর্য লাগে, রাস্তাঘাটে কোথাও একটুকরো কাগজও পরে থাকতে দেখবেন না এত ঘনবসতিপূর্ণ একটা শহরে...
জাপানীজরা আধুনিকতার পাশাপাশি নিজেদের ঐতিহ্যকে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দেয়, তার এক প্রমাণ "চিনচিন দেনশা" (কিন্তু ভুলেও জাপানীজদের সামনে চিনচিন কথাটা উচ্চারণ করবেন না... এইটার একটা খারাপ মানে আছে...)। অনেকটা ভারতের ট্রামের মত এই ট্রেন-এ মাত্র একটি কামরা থাকে...
আরেকটা চিনচিন দেনশা...
এই এলাকাটা রেড লাইট এরিয়া...
ঐ এলাকায় ঢুকার গলিটার মুখ... ক্যামেরা তখনও সচল...
হঠাৎ সঙ্গী রোমেল ভাই তাড়াতাড়ি ক্যামেরা বন্ধ করতে বললেন, কারণ জায়গাটা ছবি তোলার জন্য নিরাপদ নয়... তবুও তুললাম কয়েকটা...
পিছনের বাড়ীগুলোই সেই পন্যের দোকান... (পন্য বলছি বলে আবার আমাকে দোষ দিবেন না। কারণ জাপানীজ যারা এই পেশায় নিয়োজিত, তারা যতক্ষণ এই পেশায় থাকে ততক্ষণ তারা নিজেকে পন্য হিসাবেই বলতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করে। ডিউটি শেষ হওয়া মাত্র সে সমাজের আর দশটা মানুষের মত মানুষ। তাকে তখন আর অন্যদের থেকে আলাদা করার কোন অবকাশ নেই, কেউ করার চেস্টাও করে না... এখানটাতেই মূল বিষয়বস্তুটা আলাদা...)
সেই এলাকাটার উপর থেকে তোলা ছবি... (জায়গাটা সত্যিই বিপদজনক, কারণ এই জায়গাটা হোমলেস ও মাফিয়াদের আখড়া। যদিও বাইরে থেকে বোঝার কোন উপায় নেই...)
এরপর গিয়েছিলাম ওসাকা প্রবাসী রোমেল ভাইয়ের বাসায়। সিম্মি আপা আর রোমেল ভাইয়ের বাসাটা একটা মিউজিয়ামের মতো। তার কিছু উদাহরণ...
টিপিক্যাল জাপানীজ বাড়ীর পাশাপাশি বসবাসের জন্য নির্মিত সুউচ্চ অট্টালিকা...
অনেক ঘুরাঘুরির পর এককাপ কফির খোঁজে আমরা গিয়েছিলাম সুপারমলে...
এইবার ফেরার পালা... ফেরার পথে ওসাকার টুইন টাওয়ার... (উপরের অংশটুকুতে রয়েছে রেস্তোরা... খুব ইচ্ছা একবার ওখানে খাওয়ার, আপনারা কে কে সঙ্গে যেতে চান আওয়াজ দিয়েন...)
ম্যাক-এও ইচ্ছা আছে... আওয়াজ দিয়েন...
অবশেষে, এইটা দেখে কেন যেন রাজউক ভবনের কথা মনে পরলো...
ফিরছি আর মনে মনে গুন গুন করছি... জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো... এমন করে আকুল করে আমায় তুমি ডাকো...
ভালো থাকবেন সবাই...
(কৃতগ্গতা স্বীকার: সিম্মি আপা ও রোমেল ভাই... তবে, ঘোরাঘুরি বা উনাদের বাসার ছবি তুলতে দেয়ার জন্য না... কফি খাওয়ানোর জন্য......)