সমগ্র বাংলাদেশ খুব সম্প্রতি একটি ক্রিকেটিও ধাক্কা খেয়েছে। আমরা সবাই আশা করছি বাংলাদেশ এই ঝড় সামলে উঠে সোজা হয়ে দাড়াবে এবং আমাদের স্বপ্ন রক্ষায় লড়াই করবে। তবে আমার আজকের লেখাটি শুধু বাংলাদেশ নয় বরং পুরো ক্রিকেট নিয়ে নিজস্ব একটি অনুভুতি। আর সেটি হলো, আমি মনে করি, ক্রিকেটে কখনই অঘটন ঘটা সম্ভব নয়। অন্তত্য পক্ষে আমরা যেসব ঘটনাকে অঘটন বলে খাকি তা মোটেও অঘটন নয় বরং খুবই স্বাভাবিক ও সাধারন ঘটনা। ফ্লুক বা আপসেট এই শব্দগুলো ফুটবলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে। কিন্তু তা কখনও ক্রিকেটের সাথে যায় না। ব্যাখ্যায় যাবার আগে বলে নিই আমি কোন ক্রিকেট বোদ্ধা নই। আমি যা দেখি সেটা শুধু নিজের মত করে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি।
প্রথমেই বলি ক্রিকেট ফুটবলের মত কোন ভাগ্যের বা দুর্ঘটনার খেলা না। অনেক সময় ফুটবলে হুট করে এমন কিছু ঘটে যেতে পারে যার জন্যে কোন দল সেই ম্যাচ এ হেরে বসবে। পুরো ম্যাচ ভালো খেলেও একটা আত্মঘাতি গোল অথবা পা গলে কোন বল যদি বিপক্ষ দলের কেউ জালে জরায় এবং আপনি যদি সেই গোলটি পরিশোধ করতে না পারেন তাহলে আপনি হেরে যাবেন। অথবা শেষ মিনিটে ভাগ্যক্রমে একটি গোল করল আপনার প্রতিপক্ষ। আপনি কিছুই করতে পারবেন না।
কিন্তু ক্রিকেটে প্রেক্ষাপট ভিন্ন। যে জিতে তাকে খেলেই জিততে হয়। ভালো করতে হয় তার প্রতিপক্ষের চাইতে। হুট করে কিছু হবার কোন সম্ভবনা নেই।যদি ছয় বলে ছয়টি উইকেটও পড়ে তারও একটা কারন থাকে, বাস্তব ব্যাখ্যা থাকে, ওটাও অঘটন নয়।
উদাহরন দিচ্ছি। আমাদের দেশের ক্রিকেটের প্রথম ‘অঘটন’ ছিলো পাকিস্তান কে বিশ্বকাপে হারিয়ে দেয়া। সেইদিন পাকিস্তান আর বাংলাদেশের খেলায় এমন কিছুই ঘটেনি যেটার কারনে আমরা তাকে ফ্লুক বলব। বাংলাদেশ একই ব্যাট ও বল ( মানে যা পুরো বিশ্বকাপে ব্যাবহার হয়েছে!!) দিয়েই খেলেছে। পাকিস্তানের বোলাররা একই পিচে বল করেছে। তারা ঐদিন চোখের কোন সমস্যা নিয়ে মাঠে নামেনি বা ছেড়ে খেলেনি যে তারা ঠিক মত বল করেনি এই রকম অভিযোগ তোলা যায়। একই যায়গায় যদি অস্ট্রেলিয়া থাকত তাহলে তারা একই বল ই করত। এবং সেই একই রকম বলে বাংলাদেশ ২৩২ রান করে যা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং একটা স্কোর। বাংলাদেশ যেভাবে বল করেছে তাতেই অলৌকিক কিছু ছিলো না। বরং সেদিন আমাদের দেশের খেলোয়াররা যে রকম ফিল্ডিং করেছে সেরকম ফিল্ডিং চেইস করে ঐ টার্গেটে পৌছা যথেষ্ট কষ্টকর। তাহলে অঘটন ঘটল কোথায়?? এই কাজটা বাংলাদেশ না করে যদি ইন্ডিয়া করত তাহলে কি অঘটন হতো?? একই রকম বোলিং, ব্যাটিং, ফিল্ডিং করে অস্ট্রেরিয়া জিতলে কি কোন সমস্যা থাকতো?? তো??? অতএব সেটি অঘটন ছিলো না। সেটি একটি সাধারন ঘটনাই ছিলো। হ্যা, একটা নতুন দলের কাছ থেকে এই রকম জয় অনাকাঙ্খিত বটে, তবে তা কখনই ‘অঘটন” নয়। পুরো খেলাটায় ভালো না করলে, হুটহাট ভালো করে বাংলাদেশ কখনই জিততে পারতো না।
তাহলে প্রশ্ন হলো বাংলাদেশ জিতল কিভাবে? উত্তর টা আমার ‘ধারনা’ তাই অপরাধ ক্ষমা করবেন। আর সেই কারনটি হলো আত্মবিশ্বাস। ক্রিকেটে জেতার জন্যে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন আত্মবিশ্বাস। একই ভাবে অপর দলকে হারানোর সহজ উপায় হলো তাদের আত্মবিশ্বাস ভেঙ্গে দিতে হবে।
খেলার মাঠে খেলোয়াররা যদি বিশ্বাস করে যে তারা আজকে জিতবে তাহলে তাদের কেউ হারাতে পারে না। আয়ারল্যান্ডের সাখে বাংলাদেশের খেলাটাতে যেই একটা দুটো উইকেট শেষে এসে পড়া শুরু করলো তখনই বাংলাদেশের খেলোয়ারদের মনে দৃঢ়তা চলে আসলো তারা জিততে পারবে। আরও দুটো পড়ার পর আয়ারল্যান্ডের খেলোয়ারদের আত্মবিশ্বাস ভেঙ্গে গেলো যে তারা জিততে পারবে না। ব্যাস এরপর বাংলাদেশের জয় আটকানো যেতো না।
আবার উভয় দলের জয়ের প্রতি আত্ববিশ্বাস যদি সমান হয় তাহলে ম্যাচ ড্র হবে….যেমন ভারত ইংল্যান্ড ম্যাচ?!?!?!?!?!
তবে এই আত্মবিশ্বাস বেড়ে যদি ওভার কন্ফিডেন্সে রুপ নেয় তাহলে হার আসবে। যেমন ২০০৭ সালে বাংলাদেশের সাথে ভারতের ম্যাচ।
অতএব ক্রিকেটে কোর ‘অঘটন” ঘটে না। এইটা আমার আবিষ্কার….এইবার আমারে নো-বে(ই)ল প্রাইজ দেয়া হোওওওওওক

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




