_large.jpg)
ঘুম থেকে উঠলেন। গায়ের উপর থেকে কাঁথাটা সরালেন। আস্তে আস্তে করে বিছানা ছেড়ে নেমে বাথরুমে গেলেন। অফিসে যাবার জন্যে রেডি হতে হবে। ওহঃ রেডি হবার মতো তেমন কিছুই নেই। হাত মুখ ধুয়ে একটা ব্যাগ কাধে নিয়ে বের হয়ে গেলেই হলো। সেই ব্যাগে ল্যাপটপ, মোবাইল, পার্স। আর কোন পোষাকের বালাই নেই। কারন আপনি তো নগ্ন। একবার ভাবুন তো? আপনার আমার চারপাশে পোষাক উঠে গেছে। আমরা সবাই নগ্ন যাতায়াত করছি। আমরা সবাই তো্ মোটামুটি জানিই যে নগ্নতা মানে অশ্লীলতা নয়। অতএব এই চিন্তাও অশ্লীল নয়। অতএব চিন্তা করুন, মানব সভ্যতা গড়ে উঠেছে কিন্তু সেখানে কোন পোষাক ব্যাপারটি নেই। কেমন হয়?
হুট করেই বলার দরকার নেই। কারন হুট করে বলাও যাবে না। আমরা যেমন করে ভাববো ব্যাপারটা আসলে তা হবে না। কারন আমরা চিন্তা করবো এখন আমার চারপাশের পোষাক পড়া সমাজটা নগ্ন হয়ে যাচ্ছে। সেই চিন্তা যথেষ্ট অশ্লীল। কিন্তু যদি এমন হতো, মানুষ পোষাক কি জিনিষ সেটাই জানে না তাহলে?
প্রকৃতির অন্যান্য সন্তানদের থেকে মানুষের অনেকগুলো ভিন্নতার একটি হচ্ছে এই পোষাক। এই সৃষ্টিজগতে একমাত্র এই মানুষই চিন্তা করলো তার পোষাক লাগবে। সে নির্ধারন করলো তার শরীরের কিছু “লজ্জাস্থান”। এবং সে ঐ স্থান গুলো ঢেকে রাখতে শুরু করলো। তৈরী হলো মানব সভ্যতার আরেক অবিচ্ছেদ্য অংশ পোশাক।
অবশ্য এই পোশাক পেয়েছে বিভিন্ন সঙ্গা, আকার আর নিয়মের খোলস। নারী-পুরুষের ভিন্নতা তৈরী হলো পোষাকে। জাত-ধর্ম আর সংস্কৃতি দিলো নতুন প্রলেপ। পোষাকহীনতাকে সমাজ বললো অসভ্যতা। আর প্রায় পোষাকহীনতাকে নাম দিলো আধুনিকতা! আমরা মেনে নিলাম। আমাদের সভ্যতা, সংস্কৃতি বেড়ে উঠলো পোষাকের সাথে। আমাদের অর্থনীতি জড়িয়ে পড়লো অতঃপ্রত ভাবে।
এমনই এক অবস্থায় যদি আপনাকে বলা হয় পোষাকহীন সমাজের কথা চোখ বন্ধ করে কল্পনা করতে তাহলে কি করবেন? আমাদের তৈরীপোষাকশিল্প মালিকরা নাহয় আমাকে তেড়ে মারতে আসবেন। আপনি চোখ বন্ধ করে ভাবতে থাকুন। মনে রাথবেন, এমন একটা সমাজ যেটা পোষাক কি সেটাই জানে না।
এই চিন্তায় আমরা পশুপাখিদের সাহায্য নিতে পারি। লজ্জা পাবার ব্রাপারটা আসলে তখন একটা নতুন রুপ পাবে। পুরুষ ও নারীর সম্পর্ক একটা অন্যধরনের রুপ পেলেও পেতে পার্ তবে সংকোচ জিনিষটা উঠে যাবে বলেই আমার ধারনা। পরিবার একেবারেই থাকবেনা সেটা বলা যায় না। বরং আমরা দেখি পশুপাখিরা ঠিকই পরিবার গঠন করে বসবাস করছে। তাদের বাচ্চা-কাচ্চা হচ্ছে। বাবা মা তাদের দ্বায়িত্ব পালন করছে। এবং এ ক্ষেত্রে কোন সমস্যা পোষাকহীনতা হচ্ছে না। অবশ্য মনুষ্য সমাজের আশেপাশে থাকা বিড়াল এবং কুকুর জাতি আমাদের এই ধারণায় কিছুটা ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে। তবে পাল্টা যুক্তি হিসেবে এটাও বলা যায় আজকাল মানুষের সমাজে বিবাহবিচ্ছেদ খুব একটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু কোনদিন কি কোথাও শুনেছেন যে একটা মহিলা গরিলা কোন পুরুষ গরিলাকে ডিভোর্স দিয়েছে? আমি শুনিনি। অতএব এই লিভটুগেদারের যুগে পোষাক হীনতা পরিবার ভাঙ্গার কোন কারন নাও হতে পারে।
সমাজে কি ধর্ষন থাকবে? নাকি এই নিয়ে কেউ মাথা ঘামাবে না? এই নিয়ে তো অবশ্যই একটা অন্যরকম চিন্তা ভাবনা তখন চালু থাকবে। তবে আমাদের দৃষ্টি ভঙ্গির যে একটা আমুল পার্থক্য থাকতো এই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।আমাদের চলাচল, সংস্কৃতি অন্যভাবে লেখা হতো। যৌনতা সমাজকে এখনকার চেয়ে আরও ভয়াবহ ভাবে নিয়ন্ত্রন করতো কিনা বলা যায় না। তবে এটা আমার মনে হয়, সভ্যতার অগ্রগতি কিছুটা বাধাপ্রাপ্ত হতো। কারন তখন যৌনতা হয়ত এখনকার চেয়ে বেশী গুরুত্ব না পেলেও বেশী সময় নিতো। চিন্তার প্রসারতা বাধাপ্রাপ্ত করার জন্য নগ্নতা একটা কারন হতে পারতো।
ন্যাচারালিজম বা নুডিজম সম্পর্কে অনেক কিছুই লেখা আছে। তাদের উদ্দেশ্য ইচ্ছা বর্তমান অবস্থা থেকে প্রকৃতির কাছে প্রকৃতির মতো করে ফিরে যাওয়া। আমি এই ব্যাপারে তেমন কিছুই জানি না তবে তাদের চেষ্টা কতটুকু সফল হবে তা সময়ই বলে দিবে। তবে আমি মনে করি, প্রত্যেকের নগ্নতাকে অনুভব করার জন্য একান্ত গোপনে কিছুসময় নগ্ন খাকা উচিত। নিজেকে একেবারে মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায় নিয়ে যেতে পারলে ভালো হয়। অথবা মনে করা যেতে পারে আমি এই সভ্যতার এক আদিম মানুষ। আমার পোষাক নেই। আমার আশেপাশে কারোরই পোষাক নেই। আমাকে ঢাকতে পারবে না কিছুই।
অশালীন চিন্তা বাদ দিয়ে একেবারে মনের গভীর থেকে এই অবস্থায় নিজেকে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।
কেমন লাগবে আপনার??
লজ্জা লাগবে খুব????
পোষাক দিয়ে শরীর ঢাকুন, মনের ভন্ডামীগুলো না।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




