somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটা সমাজ যেখানে সবাই নগ্ন থাকবে

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ঘুম থেকে উঠলেন। গায়ের উপর থেকে কাঁথাটা সরালেন। আস্তে আস্তে করে বিছানা ছেড়ে নেমে বাথরুমে গেলেন। অফিসে যাবার জন্যে রেডি হতে হবে। ওহঃ রেডি হবার মতো তেমন কিছুই নেই। হাত মুখ ধুয়ে একটা ব্যাগ কাধে নিয়ে বের হয়ে গেলেই হলো। সেই ব্যাগে ল্যাপটপ, মোবাইল, পার্স। আর কোন পোষাকের বালাই নেই। কারন আপনি তো নগ্ন। একবার ভাবুন তো? আপনার আমার চারপাশে পোষাক উঠে গেছে। আমরা সবাই নগ্ন যাতায়াত করছি। আমরা সবাই তো্ মোটামুটি জানিই যে নগ্নতা মানে অশ্লীলতা নয়। অতএব এই চিন্তাও অশ্লীল নয়। অতএব চিন্তা করুন, মানব সভ্যতা গড়ে উঠেছে কিন্তু সেখানে কোন পোষাক ব্যাপারটি নেই। কেমন হয়?
হুট করেই বলার দরকার নেই। কারন হুট করে বলাও যাবে না। আমরা যেমন করে ভাববো ব্যাপারটা আসলে তা হবে না। কারন আমরা চিন্তা করবো এখন আমার চারপাশের পোষাক পড়া সমাজটা নগ্ন হয়ে যাচ্ছে। সেই চিন্তা যথেষ্ট অশ্লীল। কিন্তু যদি এমন হতো, মানুষ পোষাক কি জিনিষ সেটাই জানে না তাহলে?
প্রকৃতির অন্যান্য সন্তানদের থেকে মানুষের অনেকগুলো ভিন্নতার একটি হচ্ছে এই পোষাক। এই সৃষ্টিজগতে একমাত্র এই মানুষই চিন্তা করলো তার পোষাক লাগবে। সে নির্ধারন করলো তার শরীরের কিছু “লজ্জাস্থান”। এবং সে ঐ স্থান গুলো ঢেকে রাখতে শুরু করলো। তৈরী হলো মানব সভ্যতার আরেক অবিচ্ছেদ্য অংশ পোশাক।
অবশ্য এই পোশাক পেয়েছে বিভিন্ন সঙ্গা, আকার আর নিয়মের খোলস। নারী-পুরুষের ভিন্নতা তৈরী হলো পোষাকে। জাত-ধর্ম আর সংস্কৃতি দিলো নতুন প্রলেপ। পোষাকহীনতাকে সমাজ বললো অসভ্যতা। আর প্রায় পোষাকহীনতাকে নাম দিলো আধুনিকতা! আমরা মেনে নিলাম। আমাদের সভ্যতা, সংস্কৃতি বেড়ে উঠলো পোষাকের সাথে। আমাদের অর্থনীতি জড়িয়ে পড়লো অতঃপ্রত ভাবে।
এমনই এক অবস্থায় যদি আপনাকে বলা হয় পোষাকহীন সমাজের কথা চোখ বন্ধ করে কল্পনা করতে তাহলে কি করবেন? আমাদের তৈরীপোষাকশিল্প মালিকরা নাহয় আমাকে তেড়ে মারতে আসবেন। আপনি চোখ বন্ধ করে ভাবতে থাকুন। মনে রাথবেন, এমন একটা সমাজ যেটা পোষাক কি সেটাই জানে না।
এই চিন্তায় আমরা পশুপাখিদের সাহায্য নিতে পারি। লজ্জা পাবার ব্রাপারটা আসলে তখন একটা নতুন রুপ পাবে। পুরুষ ও নারীর সম্পর্ক একটা অন্যধরনের রুপ পেলেও পেতে পার্ তবে সংকোচ জিনিষটা উঠে যাবে বলেই আমার ধারনা। পরিবার একেবারেই থাকবেনা সেটা বলা যায় না। বরং আমরা দেখি পশুপাখিরা ঠিকই পরিবার গঠন করে বসবাস করছে। তাদের বাচ্চা-কাচ্চা হচ্ছে। বাবা মা তাদের দ্বায়িত্ব পালন করছে। এবং এ ক্ষেত্রে কোন সমস্যা পোষাকহীনতা হচ্ছে না। অবশ্য মনুষ্য সমাজের আশেপাশে থাকা বিড়াল এবং কুকুর জাতি আমাদের এই ধারণায় কিছুটা ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে। তবে পাল্টা যুক্তি হিসেবে এটাও বলা যায় আজকাল মানুষের সমাজে বিবাহবিচ্ছেদ খুব একটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু কোনদিন কি কোথাও শুনেছেন যে একটা মহিলা গরিলা কোন পুরুষ গরিলাকে ডিভোর্স দিয়েছে? আমি শুনিনি। অতএব এই লিভটুগেদারের যুগে পোষাক হীনতা পরিবার ভাঙ্গার কোন কারন নাও হতে পারে।
সমাজে কি ধর্ষন থাকবে? নাকি এই নিয়ে কেউ মাথা ঘামাবে না? এই নিয়ে তো অবশ্যই একটা অন্যরকম চিন্তা ভাবনা তখন চালু থাকবে। তবে আমাদের দৃষ্টি ভঙ্গির যে একটা আমুল পার্থক্য থাকতো এই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।আমাদের চলাচল, সংস্কৃতি অন্যভাবে লেখা হতো। যৌনতা সমাজকে এখনকার চেয়ে আরও ভয়াবহ ভাবে নিয়ন্ত্রন করতো কিনা বলা যায় না। তবে এটা আমার মনে হয়, সভ্যতার অগ্রগতি কিছুটা বাধাপ্রাপ্ত হতো। কারন তখন যৌনতা হয়ত এখনকার চেয়ে বেশী গুরুত্ব না পেলেও বেশী সময় নিতো। চিন্তার প্রসারতা বাধাপ্রাপ্ত করার জন্য নগ্নতা একটা কারন হতে পারতো।
ন্যাচারালিজম বা নুডিজম সম্পর্কে অনেক কিছুই লেখা আছে। তাদের উদ্দেশ্য ইচ্ছা বর্তমান অবস্থা থেকে প্রকৃতির কাছে প্রকৃতির মতো করে ফিরে যাওয়া। আমি এই ব্যাপারে তেমন কিছুই জানি না তবে তাদের চেষ্টা কতটুকু সফল হবে তা সময়ই বলে দিবে। তবে আমি মনে করি, প্রত্যেকের নগ্নতাকে অনুভব করার জন্য একান্ত গোপনে কিছুসময় নগ্ন খাকা উচিত। নিজেকে একেবারে মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায় নিয়ে যেতে পারলে ভালো হয়। অথবা মনে করা যেতে পারে আমি এই সভ্যতার এক আদিম মানুষ। আমার পোষাক নেই। আমার আশেপাশে কারোরই পোষাক নেই। আমাকে ঢাকতে পারবে না কিছুই।
অশালীন চিন্তা বাদ দিয়ে একেবারে মনের গভীর থেকে এই অবস্থায় নিজেকে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।
কেমন লাগবে আপনার??
লজ্জা লাগবে খুব????

পোষাক দিয়ে শরীর ঢাকুন, মনের ভন্ডামীগুলো না।
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×