পঞ্চম অধ্যায় – ফাসল ৪
সাহাবায়ে কিরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম-এর শানে সবচেয়ে ভয়ানক গুস্তাখী
(পৃষ্ঠা ৯৯-১৪৫ – প্রায় ৪৭ পৃষ্ঠা। কিতাবের সবচেয়ে দীর্ঘ ও সবচেয়ে কঠিন অধ্যায়)
শায়খ যাকারিয়া রহ. এখানে লিখেছেন:
“নবীদের পর যাদের শানে গুস্তাখী করা সবচেয়ে বড় কুফর, তাঁরা হলেন সাহাবায়ে কিরাম। কারণ আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেরা তাঁদের প্রশংসা করেছেন। আর মওদূদী সাহেবের কলম থেকে যা বেরিয়েছে তা শুনলে কোনো মুমিনের দিল ফেটে যায়।”
নিচে সবচেয়ে বড় বড় গুস্তাখানা উদ্ধৃতি (মওদূদী সাহেবের নিজের লেখা থেকে):
১. সাহাবারা পৃথিবীর বেশিরভাগ অংশে ইসলাম পৌঁছাতে পারেননি
“তফহীমুল কুরআন” (সূরা আলে ইমরান ১১০ আয়াতের তাফসীরে):
“যে উম্মতকে আল্লাহ ‘খায়রা উম্মাহ’ বলেছেন, সেটি হলো সাহাবায়ে কিরামের উম্মত। কিন্তু তারা শুধু আরব উপদ্বীপ আর তার আশপাশের কিছু অঞ্চলে ইসলাম কায়েম করতে পেরেছিল। পৃথিবীর বাকি অংশে তারা তা করতে পারেননি। আজকের যুগে আমরা (জামায়াতে ইসলামী) সেই কাজ করছি।”
শায়খ যাকারিয়া বলেন:
“এর মানে সাহাবারা কুরআনের আয়াতের পূর্ণ হক আদায় করতে পারেননি। আর জামায়াতে ইসলামী তা করছে। অর্থাৎ আমরা সাহাবা থেকে উত্তম! এটা স্পষ্ট কুফর।”
২. হযরত উমর রা. জিহাদ বন্ধ করে দিয়েছিলেন
“তফহীমুল কুরআন” ও “জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ”তে:
“হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ফার্স জয় করার পর আর জিহাদ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন: ‘আমি চাই না আরবের বাইরে আরবী বংশের বিস্তার হোক।’”
শায়খ বলেন:
“এটা একেবারে বানোয়াট। হযরত উমর রা. কখনো এ কথা বলেননি। এটা সাহাবীর শানে মিথ্যা অপবাদ।”
৩. সাহাবাদের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছে ক্ষমতার লোভে
“খিলাফত ও মুলূকিয়াত” কিতাবে:
“সাহাবাদের মধ্যে যে দলাদলি ও যুদ্ধ হয়েছে, তার মূলে ছিল ক্ষমতার লোভ ও আরবী কবীলাগত পুরানো আদব।”
শায়খ বলেন:
“আহলুস সুন্নাহর আক্বীদা হলো: সাহাবাদের মধ্যে যা হয়েছে তা ইজতিহাদী ভুল থেকে। ক্ষমতার লোভ থেকে নয়। এভাবে বলা সাহাবার প্রতি স্পষ্ট গুস্তাখী।”
৪. হযরত উসমান ও আলী রা.-এর যুগকে “মুলূকিয়াত” (রাজতন্ত্র) বলা
“খিলাফত ও মুলূকিয়াত” কিতাবে মওদূদী সাহেব পুরো বই জুড়ে বলেছেন:
“হযরত আবু বকর ও উমর রা.-এর পর খিলাফত শেষ। হযরত উসমান রা.-এর যুগ থেকে মুলূকিয়াত শুরু।”
শায়খ যাকারিয়া বলেন:
“আহলুস সুন্নাহর ইজমা হলো: খিলাফতে রাশিদা চার খলিফার। হযরত উসমান ও আলী রা.-কেও খলীফায়ে রাশিদ বলা হয়। মওদূদী সাহেব এঁদের যুগকে রাজতন্ত্র বলে তাঁদের শানে গুস্তাখী করেছেন।”
৫. সাহাবারা “আংশিক সফল” ছিলেন
“তফহীমুল কুরআন” ও বিভিন্ন খুতবায়:
“সাহাবারা যা করেছেন তা শুধু আরবের মধ্যে সীমাবদ্ধ। পুরো দুনিয়ায় ইসলাম কায়েম করার কাজ তারা শেষ করতে পারেননি।”
শায়খ বলেন:
“সাহাবারা যা করেছেন তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে ও তত্ত্বাবধানে। তাঁদের কাজকে ‘আংশিক’ বা ‘অসম্পূর্ণ’ বলা রাসূলুল্লাহর যুগকেই অসম্পূর্ণ বলা।”
অধ্যায়ের শেষে শায়খ লিখেছেন:
“যে ব্যক্তি সাহাবায়ে কিরামের শানে এমন কথা বলে, তার সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক রাখা যায় না। এই কিতাবগুলো পড়া থেকে যুবকদের বাঁচানো ফরয। আল্লাহ আমাদের সাহাবার মহব্বত দান করুন।”
ফাসল ৪ শেষ।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




