**ফাসল ৭
কুরআনের আয়াতকে জামায়াতে ইসলামীর জন্য নাযিল বলা – সবচেয়ে বড় গুস্তাখী
(পৃষ্ঠা ২১১-২৪৫ – প্রায় ৩৫ পৃষ্ঠা)
শায়খ যাকারিয়া রহ. এই অধ্যায়ের শুরুতেই লিখেছেন:
“মওদূদী সাহেবের সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে ভয়ানক গুস্তাখী হলো – কুরআনের বহু আয়াতকে তিনি নিজের দলের জন্য নাযিল হয়েছে বলে দাবি করেছেন। এর চেয়ে বড় কুফর আর কী হতে পারে যে, আল্লাহর কালামকে নিজের দলের প্রশংসায় নাযিল হয়েছে বলা!”
মূল উদ্ধৃতি ও প্রমাণ:
১. সূরা আলে ইমরান আয়াত ১১০
كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ
(“তোমরাই সর্বোত্তম উম্মত, যাদেরকে মানুষের জন্য বের করা হয়েছে”)
মওদূদী সাহেব “তফহীমুল কুরআন”-এ লিখেছেন:
“এই আয়াতের পূর্ণ হক আদায় সাহাবায়ে কিরাম করতে পারেননি। কারণ তাঁরা শুধু আরবে ইসলাম কায়েম করেছিলেন। আজকের যুগে এই আয়াতের আসল হকদার হলো জামায়াতে ইসলামী। আমরাই সেই খায়রা উম্মাহ যার কথা আল্লাহ বলেছেন।”
শায়খ যাকারিয়া বলেন:
“এর মানে সাহাবার চাইতেও জামায়াতে ইসলামী উত্তম উম্মত! এটা আল্লাহ ও রাসূলের স্পষ্ট বিরোধিতা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘খায়রুন নাসি কারনী’ (সর্বোত্তম মানুষ আমার যুগের মানুষ)। আর মওদূদী সাহেব বলছেন ১৯৪১ সালে লাহোরে জন্ম নেওয়া দলটাই সর্বোত্তম!”
২. সূরা তাওবা আয়াত ১০০
وَالسَّابِقُونَ الْأَوَّلُونَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنْصَارِ
মওদূদী সাহেব লিখেছেন:
“এই আয়াতের ‘সাবেকূন আওয়ালূন’ শুধু মুহাজির-আনসার নয়, বরং প্রত্যেক যুগে যারা ইসলামী আন্দোলনের অগ্রগামী হয়, তারাও এই আয়াতের মধ্যে শামিল। আজকের যুগে জামায়াতে ইসলামীর লোকেরাই সাবেকূন আওয়ালূন।”
শায়খ বলেন:
“এটা স্পষ্ট বাতিল। আল্লাহ ও রাসূল সাহাবাদের জন্য এই আয়াত নাযিল করেছেন। ১৪০০ বছর পর একটা দল এসে বলছে ‘আমরাও সেই সাবেকূন’ – এটা কুরআনের সঙ্গে বেয়াদবী।”
৩. সূরা হুজুরাত আয়াত ১৪-১৫-এর বেদুইনদের সঙ্গে তুলনা
মওদূদী সাহেব লিখেছেন:
“যেমন বেদুইনরা বলেছিল ‘আমরা ঈমান এনেছি’, কিন্তু আল্লাহ বললেন ‘তোমরা ঈমান আনোনি, শুধু ইসলাম কবুল করেছ’ – ঠিক তেমনি আজকের যে মুসলিমরা জামায়াতে ইসলামীতে শামিল হয়নি, তাদের ঈমান নেই, তারা শুধু যবানি মুসলমান।”
শায়খ বলেন:
“এর মানে দেওবন্দ-বেরলভী-আহলে হাদীস সবাই বেদুইনের মতো! আর শুধু জামায়াতের লোকেরাই আসল মুমিন!”
৪. আরো অনেক আয়াত
সূরা নূরের আয়াত ৫৫-এর “ইস্তিখলাফ” (পৃথিবীতে খিলাফত দেয়া) – মওদূদী সাহেব বলেন এটা জামায়াতে ইসলামীর জন্য।
সূরা আনফালের আয়াত ৩৯ – “ফিতনা শেষ হওয়া পর্যন্ত জিহাদ” – এটাও জামায়াতের জন্য।
সূরা হজ্জের আয়াত ৭৮ – “জিহাদ করো যেমন জিহাদ করার হক আছে” – এটাও জামায়াতের জন্য।
শায়খ যাকারিয়া বলেন:
“এই সব আয়াত সাহাবায়ে কিরামের জন্য নাযিল হয়েছে। আজ ১৪০০ বছর পর একটা দল এসে বলছে ‘এগুলো আমাদের জন্য নাযিল হয়েছে’ – এটা কুরআনের সঙ্গে সবচেয়ে বড় বেয়াদবী। এর চেয়ে বড় গুস্তাখী আর কী হতে পারে?”
অধ্যায়ের শেষে শায়খ লিখেছেন:
“যে ব্যক্তি কুরআনের আয়াত নিজের দলের জন্য নাযিল বলে, সে যেন আল্লাহর কালামের মালিক হয়ে বসেছে। এই ধরনের কিতাব পড়লে ঈমান চলে যাওয়ার ভয় আছে। আল্লাহ আমাদের কুরআনের হক আদায় করার তাওফীক দান করুন।”
ফাসল ৭ শেষ।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




