**ফাসল ৮
মুহাদ্দিসীন, ফুকাহায়ে কিরাম ও বুযুর্গানে দ্বীনের প্রতি অসম্মান ও স্পষ্ট বেয়াদবী
(পৃষ্ঠা ২৪৬-২৭৫ – প্রায় ৩০ পৃষ্ঠা)
শায়খ যাকারিয়া রহ. এই অধ্যায়ে অত্যন্ত বেদনার সাথে লিখেছেন:
“যে ব্যক্তি ইমাম বুখারী, ইমাম মুসলিম, ইমাম আবু হানীফা, ইমাম শাফেয়ী, ইমাম আহমদ, হাকীমুল উম্মত থানভী রহ., শায়খুল ইসলাম হুসাইন আহমদ মাদানী রহ. – এঁদের মতো উম্মতের মহান বুযুর্গদের গালি দেয় ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে, তার দিলে আহলুস সুন্নাহর মহব্বতই নেই।”
মওদূদী সাহেব ও জামায়াতের লেখকদের সবচেয়ে বড় বড় গুস্তাখানা বাক্য:
১. পুরো উলামায়ে সালাফকে “জাহেল” ও “অন্ধ অনুসরণকারী” বলা
মওদূদী সাহেব লিখেছেন (“তানকীহাত”, “রসাইল ও মাসাইল”):
“আজ পর্যন্ত যত মুফতি-মুহাদ্দিস-ফকীহ হয়েছেন, তাঁরা সবাই ছিলেন তাকলীদের গোলাম। তাবেদার। তাঁদের কোনো নিজস্ব বুদ্ধি ছিল না। আজকের যুগে তাঁদের ফতোয়া আর ফিকহ চলবে না।”
শায়খ বলেন:
“এর মানে ইমাম আবু হানীফা, ইমাম বুখারী, ইমাম তিরমিযী, ইবনে তাইমিয়া, ইমাম নববী রহ. সবাই জাহেল! আর ১৯৪১ সালে মওদূদী সাহেব এসে সঠিক ইসলাম বোঝালেন!”
২. দেওবন্দের বুযুর্গদের নামের প্রতি স্পষ্ট গালি
জামায়াতের পত্রিকা “তরজুমানুল কুরআন” ও মওদূদী সাহেবের খুতবায় বার বার বলা হয়েছে:
“দেওবন্দ-সাহারানপুরের মৌলবীরা ব্রিটিশের দালাল, কংগ্রেসের গোলাম, তারা কাফিরদের সঙ্গে মিলে মিশে থাকে। এরা জাহেল, গ্রাম্য মোল্লা, ইসলামের আসল কাজ বোঝে না।”
শায়খ যাকারিয়া বলেন:
“যে লোক মাওলানা কাসিম নানোতভী, মাওলানা রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী, হাকীমুল উম্মত থানভী, শায়খুল হিন্দ মাহমূদ হাসান দেওবন্দী রহ.-দের গালি দেয়, তার মুখে ইসলাম শোভা পায় না।”
৩. ইমাম গাযযালী রহ.-কে “ভ্রান্ত” বলা
মওদূদী সাহেব লিখেছেন:
“ইমাম গাযযালী রহ. তাসাওউফের নামে যা লিখেছেন তা ভ্রান্তি ও গোমরাহী। তাঁর ইহইয়া উলূমুদ্দীন আজকের যুগে চলার যোগ্য নয়।”
শায়খ বলেন:
“ইমাম গাযযালীকে উম্মতের মুজাদ্দিদ বলা হয়। তাঁর ইহইয়া পড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ হিদায়াত পেয়েছে। আর মওদূদী সাহেব এক কলমে তা ভ্রান্তি বলে দিলেন!”
৪. হযরত মুজাদ্দিদ আলফে সানী রহ.-কে “সংকীর্ণ মনের” বলা
মওদূদী সাহেব লিখেছেন:
“মুজাদ্দিদ আলফে সানী রহ. ছিলেন খুব সংকীর্ণ মনের লোক। তিনি শুধু কিছু বিদআত দূর করেছেন, কিন্তু ইসলামের আসল কাজ বোঝেননি।”
শায়খ বলেন:
“যাকে শাহ ওয়ালিউল্লাহ রহ. ‘কুতবে আযম’ বলেছেন, তাঁকে সংকীর্ণ মনের বলা কত বড় গুস্তাখী!”
৫. সবচেয়ে কঠিন বাক্য
“তানকীহাত” কিতাবে মওদূদী সাহেব লিখেছেন:
“আজ পর্যন্ত যত আলেম হয়েছেন, তাঁরা সবাই ছিলেন পুরানো যুগের লোক। তাঁরা আধুনিক সমস্যা বোঝেননি। আজকের যুগের জন্য নতুন আলেম দরকার।”
শায়খ বলেন:
“এর মানে ১৪০০ বছরের উম্মত জাহেল ছিল, আর ১৯০৩ সালে জন্ম নেওয়া একজন লোক এসে সবাইকে শেখাবেন!”
অধ্যায়ের শেষে শায়খ লিখেছেন:
“যে ব্যক্তি উম্মতের বুযুর্গদের গালি দেয়, তার নিজের দ্বীনই বিপদে।
আমাদের আক্বীদা হলো:
اَللّٰهُمَّ ارْحَمْ مَنْ تَقَدَّمَ مِنْهُمْ وَمَنْ تَأَخَّرَ
“হে আল্লাহ! যারা আগে গেছেন আর যারা পরে আসবেন – সবাইকে রহম করুন।”
আর মওদূদী সাহেব আগের সবাইকে গালি দিয়ে শুধু নিজেকে বড় বানাতে চান। এটা ইবলিসের পথ।”
ফাসল ৮ শেষ।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




