৭ম পর্ব
নির্বাচনী ইশতেহার(যে আইন বিধি-বিধান আমরা রাজনৈতিক দল/সংসদকে দিয়ে করাতে চাই)
সরকারী চাকুরীবিধী ও নিয়োগ
১. সব ধরনের সরকারী/ বেসরকারী চাকুরীর বিজ্ঞাপনে ব্যাংকড্রাফট/ পে-অর্ডার চাওয়া বন্ধ করা। বেকার মানুষের কাছে ব্যাংকড্রাফট/ পে-অর্ডার চাওয়া কতটা যৌতিক? নিয়োগের খরচ তোলার জন্য নিয়োগ পাওয়া অনভিজ্ঞ ব্যাক্তিদের ৩/৬ মাস পর্যন্ত হাফ/সিকি বেতন প্রদান করা যেতে পারে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মত, সরকারি চাকুরী করতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের(বিসিএস সহ) যোগ্যতা যাচাই পূর্বক বিভিন্ন ক্যাটাগরীতে ডাটাবেজ তৈরি করা।যাতে প্রয়োজন হলেই দ্রুত গতিতে নিয়োগদেওয়া যায়। সরকার নির্ধারিত অবসর বয়সসীমার(৫০বছর) আগ পর্যন্ত সরকারী/ বেসরকারী সব চাকুরীতে আবেদনের সুযোগ থাকতে হবে। দুর্নীতি বন্ধে ও চাকুরীর পর্যাপ্ততা বাড়াতে পুলিশ বাহিনীতে,প্রশাসনিক পদের সরকারী চাকুরীতে শুধুমাত্র চুক্তি ভিত্তিক বা অস্থায়ী নিয়োগ চালু রাখা।
২. প্রথম শ্রেণীর ক্যাডার চাকুরীতে, উপজাতীয় এবং জেলা কোটা ব্যতীত সব ধরনের কোটা বাতিল করা। উপজাতীয় কোটা আগামী ৫/১০/২০ বছর পর্যন্ত অব্যাহত রাখা। মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের সন্তানদের পর্যাপ্ত অর্থ সহযোগীতা দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু প্রথম শ্রেণীর ক্যাডার চাকুরীতে তাদের অযোগ্যতা গ্রহণযোগ্য নয়। প্রথম শ্রেণীর ক্যাডার চাকুরীতে বেতন হতে হবে প্রাইভেট ব্যাংকগুলোর সমতূল্য অফিসারদের গড় বেতনের সমান অথবা ভালো ব্যাবস্থাপনা বিদ্যমান এরকম দেশের মাথাপিছু আয় ও সরকারি কর্মচারিদের গড় বেতন-ভাতার অনুপাত বিবেচনা করা যেতে পারে। বেতন-ভাতা কম হওয়া যদি দূর্নীতির প্রধান কারণ হয় তাহলে আমাদের চেয়ে দরিদ্র নেপাল আমাদের চেয়ে কম দূর্নীতিগ্রস্ত কিভাবে?
৩. রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত/ঈদের সময় দায়িত্ব পালনকারী প্রত্যেক সরকরি কর্মচারীকে(ডাক্তার, নার্স ও পুলিশ,..... ) প্রতি রাতের জন্য প্রতিদিনের বেতনের সমান বা সমানের বেশি; অতিরিক্ত ভাতা প্রদান করা। ঈদের সময় দায়িত্ব পালনের জন্য প্রতিদিনের বেতনের সমান বা সমানের বেশি; অতিরিক্ত ভাতা প্রদান করা। ঝুকি ভাতা ও ঈদ বোনাস কর্মকর্তা-করমচারী সবার ক্ষেত্রে সমান করা। নারী সরকরি কর্মচারীদের জন্য পার্ট-টাইম কাজের সুযোগ রাখা যাতে তারা চাইলে পরিবারকে যথেষ্ট সময় দিতে পারে। জনসংখ্যা বৃ্ধির দেশে বেতন-সহ মাতৃত্ব কালীন ছুটি কতটুকু যুক্তিযুক্ত?
৪. প্রত্যেক সরকরি কর্মচারীকে অফিস চলাকালীন সময়ে বড় অক্ষরের আইডি কার্ড প্রদর্শন এবং ওয়েবসাইটে ID সহ প্রোফাইল থাকা বাধ্যতামূলক করা । সরকারি অফিস প্রধানদের নেমপ্লেটে,সরাসরি পাবলিককে সেবা দেয় এরকম স্টাফের ডেস্কপ্লেটে ও নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাজে বড় অক্ষরে আইডি নম্বর থাকা বাধ্যতামূলক করা। যাতে ক্ষুব্ধ কোন নাগরিক কোন সরকারী কর্মচারীর উপর অসন্তুষ্ট হলে, ঐ কর্মচারীর বা তার অফিস প্রধানের আইডি নম্বর,মোবাইল নম্বর,NID...ইত্যাদি নির্দিষ্ট সার্ভারে(দুদকের)(বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরিক্ষার রেজিষ্টেশনের মত অথবা মোবাইলে F&F করার মত) পাঠাতে পারবে; এটা দিয়ে প্রবণতা বিশ্লেষণ করার জন্য। সরকারী কর্মচারী নয় এমন সন্দেহভাজন ব্যাক্তির ক্ষেত্রে মোবাইল নম্বর,NID...ইত্যাদি পাঠালে হবে।
৫. মোবাইল অপারেটর,প্রাইভেট ব্যাংকগুলোর মত আন্তরিক সেবা(মানুষের সাথে খারাপ ব্যাবহার বা সেবা দিতে না চাওয়ার প্রবণতা প্রমাণিত হলে ১/২/... সপ্তাহ বাধ্যতামূলক সম্পূর্ণ বেতন ছাড়া ছুটিতে পাঠানো বা বাধ্যতামূলকভাবে মধ্যপ্রাচ্যে উট-দুম্বা চরাতে পাঠানো) দেওয়ার জন্য সরকার তার সব কর্মচারীকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেবে। সরকারী পদ ব্যাবহার করে যে কোন পরিমাণ অবৈধ আর্থিক অর্জনের সাথে যুক্ত সরকরি কর্মচারীকে,সরকার বরখাস্ত(প্রবাসী শ্রমিক ও গার্মেন্টস মালিক-শ্রমিকদের কষ্টার্জিত ডলার এবং কোম্পানী গুলোতে সপ্তাহে ৫০- ৭০ ঘন্টা কাজ করা লোকের আয়করের টাকা দিয়ে সরকার অর্কমণ্য/ঘুষখোর লোক পুষতে পারবে না।) করবে। সেনাবাহিনীর নিয়োগ/অব্যাহতি(যেমন যথেষ্ট সক্ষ্যমতা না থাকলে ৫/১০ বছরে অব্যাহতি) প্রক্রিয় অনুসরণ করতে হবে। তাদের সব ধরনের বিশেষ আইনী সুরক্ষা বাতিল করা। কোন কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা হলে মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঐ কর্মচারীকে বদলি না করা । সব সরকারী কর্মচারীর অফিসে উপস্থিতী এবং আসা-যাওয়ার সময় মনিটর করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা।
৬. সরকারী কর্মচারী ও তাদের পরিবারের ঘোষিত ব্যাংক হিসাবে সংঘঠিত সন্দেহজনক লেনদেন নজরদারী করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় তথ্যভান্ডার/ সফট্ওয়্যার তৈরি করবে। প্রতি বছর সরকারী কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সম্পদের হিসাব দুদকে জমা দিতে হবে।
৭.সরকারী কর্মচারীরা/বিচারক/সাংবিধানিক পদধারী বাংলাদেশে বসবাস করে তার কোন সন্তান কে বিদেশে স্নাতক বা তার নিচের শ্রেণীতে পড়াশুনা করাতে পারবে না অথবা কারো স্বামী/স্ত্রী বা সন্তানের বিদেশি নাগরিকত্ব থাকে তাহলে ঐ ব্যাক্তি ঐসব পদে থাকতে পারবে না। সরকারী কর্মচারীরা জনগণকে দেয়া সেবা বন্ধ করে যে কয়দিন আন্দোলন করবে সে কয়দিনের বেতন-ভাতা চলতি মাস থেকে কেটে রাখা।
৮. ঔপনিবেশিক মানসিকতার পুলিশ বাহিনীকে এমনভাবে পূর্ণগঠন করা যাতে নতুন নিয়োগ করা পুলিশ সদস্যরা পূরাতনদের সাথে মিশতে না পারে। পুলিশ বাহিনীকে বেসরকারী ব্যাবস্থাপনায় ছেড়ে দেওয়া যায় কিনা সেটা ও বিবেচনা করতে হবে। থানা পুলিশের প্রত্যেক সদস্যের পোশাকের সাথে ক্যামেরা লাগানো থাকবে,দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে ঐ সদস্যের অবস্থান ও মানুষের সাথে তার সেবা বিষয়ক কথোপকথন রেকর্ড করার জন্য।
এতে সদস্য হওয়ার ঠিকানা:https://www.facebook.com/groups/304183119755619
৬তম পর্বের জন্য : Click This Link
চলবে........
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৫০