নির্বাচনী ইশতেহার(যে আইন বিধি-বিধান আমরা রাজনৈতিক দল/সংসদকে দিয়ে করাতে চাই)-----৯ম পর্ব
************ শিক্ষ্যা*********
১. পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির ক্ষেত্রে উপজাতীয় কোটা ব্যতীত সব ধরনের কোটা বাতিল করা। উপজাতীয় কোটার মেয়াদউত্তীর্ণ হওয়ার সময় বেঁধে দেওয়া। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট কোন শিক্ষ্যার্থীকে বহিষ্কার করলে ঐ শিক্ষ্যার্থীর শুধুমাত্র UGC তে আপীল আবেদন করতে পারবে, ঐ শিক্ষ্যার্থীর ছাত্রত্ব ফিরে পাওয়ার বিষয়ে প্রচলিত আদালত কোন মামলা নিবে না।
২. পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা করে, বিদেশে আজীবনের জন্য পাড়ী দেওয়া/বিদেশী নাগরিকত্ব নেওয়া ব্যাক্তিদের(যারা আয়/যোগ্যতা অনুযায়ী যথেষ্ট রেমিটস্ন পাঠায় না বা দেশের জন্য প্রত্যক্ষ/পরোক্ষ কোন অবদান ও নেই) কাছ থেকে তাদের পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়/কলেজে পড়াকালীন খরচ(অন্তত চলতি খরচ ) হওয়া পাবলিকের অর্থ তুলে আনার জন্য প্রয়োজনীয় আইন(USA Foreign Account Tax Compliance Act (FATCA) এর মতো) প্রণয়ন করা। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র রাজনীতি নাই, কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র রাজনীতি(জনগণের কষ্টার্জিত অর্থের অপব্যাবহার নয় কি?) থাকার কারণ খুজে বের করে তার প্রতিকার করা।
৩.বয়স বাড়ার সাথে বা ডিগ্রী থাকা স্বাপেক্ষে অধ্যাপক হওয়ার প্রথা বাতিল করা। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ব্যাস্তবতায় সুনির্দিষ্ট সংখ্যক গবেষণা(গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ রাখা) পত্র থাকলে কেবল অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার প্রথা চালু করা(রাজনৈতিক দলের দালালী করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা), প্রতি বিভাগের বিদায়ী শিক্ষার্থীদের দিয়ে ঐ বিভাগের শিক্ষকদের রেটিং করানো এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে তাদের মতামত নেওয়া । তিনটি সমন্বিত শর্তে গবেষক/অধ্যাপক/শিক্ষকদের(সর্বোচ্চ ৫-১০% শিক্ষক) বেতন-ভাতা স্বাভাবিকের চেয়ে ২/৩ গুন করা যেতে পারে; ১. ছাত্রদের কাছে ভালো রেটিং পাওয়া, ২. ঐ শিক্ষক যে বিশ্ববিদ্যালয়/কলেজের তার আর্ন্তজাতিক অবস্থান, ৩. গবেষণার পত্রের জন্য । ঢাকার বাইরে একটি আধুনিক কেন্দ্রীয় গবেষণাগার(Bell or AT&T Labs এর মতো) স্থাপন করা।
৪. বিদেশী ডিগ্রীর ক্ষেত্রে রেটিং -এ ৫০০ এর মধ্যে থাকা বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী শুধুমাত্র মুল্যায়ন করা।
৫. ইংরেজীর পাশাপাশি অন্যান্য ভাষার(ম্যান্ডারিণ [পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি মানুষ এ ভাষায় কথা বলে ],ফ্রেস্ন,আরবি,স্প্যানিশ,পর্তুগীজ,রুশ) উপর অনার্স কোর্স চালু করা। এতে এসব ভাষাভাষী দেশের(বিশেষ করে চায়না) সঙ্গে অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক-শিক্ষ্যার সম্পর্ক জোরদার করা সহজ হবে।এক বিভাগে শুধু এক বিদিশী ভাষার শিক্ষ্যা চালু করা যেতে পারে যেমন ঢাকা বিভাগ:ম্যান্ডারিণ, খুলনা:আরবি,.... । অথবা শুধু বিজ্ঞানের শিক্ষ্যার্থীদের জন্য ইংরেজী শিক্ষ্যা বাধ্যতামূলক(নবম শ্রেণী থেকে) করে বাকীদের অন্য ভাষা শিখতে উৎসাহ দেওয়া । গণহারে ইংরেজী শেখার Cost-Benefit হিসাব করতে হবে, এমনতো নয় যে ব্রীটিশ রাণী ইংরেজী জানলে বিনা ভিসায় তার দেশে যেতে দেয়।মনে রাখা দরকার এক সময় আমাদের শাসক ছিল ফার্সি ভাষীরা তখন আমরা ইংরেজীর জায়গায় ফার্সি শিখতাম।
৬.UGC বর্তমান/ভবিষৎ বাজার চাহিদা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কোন বিষয়ে ছাত্র সংখ্যা বাড়ানো(১০/১৫ বছর আগে গার্মেন্টস/বস্ত্র খাতে যথেষ্ট উচ্চ শিক্ষ্যীত জনবল তৈরির উদ্যোগ নিলে আজ এখাতে এতো বিদেশি দরকার হতো না)/কমানোর(কোন-কোন বিষয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রীধারীর সংখ্যা বর্তমান প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি) বা বিষয় বিলোপের/সংযোজনের পরামর্শ দিবে।এ ধরনের পরিকল্পনার জন্য ব্যাবসায়ী/উদ্যোক্তাদের পরামর্শ নেওয়া। উচ্চ শিক্ষ্যার Cost-Benefit বিষয়ে সম্প্রতি ইরান কিছু নীতিমালা তৈরি করেছে সেটা বিবেচনা করা যেতে পারে।
৭. বড় জেলায় কারিগরী শিক্ষ্যা প্রতিষ্ঠান গড়ার ক্ষেত্রে যেন এই বিষয়গুলোর উপর কমপক্ষে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে যেমন:গাড়ি চালানো/মেরামত, চুলকাটা,কাঠের কাজ,রাজমিস্ত্রী,সুস্বাদু/পুষ্টিকর রান্না,কৃষি ও মৎস্য,গার্মেন্টস,ইলেকট্রিক/ইলেকট্রনিক্স পণ্য মেরামত,কৃষি/শিল্প যন্ত্রপাতি মেরামত,ক্লিনিং/স্যানিটেশন,জাহাজের নাবিক তৈরি,...।এর সাথে বিদেশে কোন বিশেষ চাহিদার ক্ষেত্রে ঐ দেশের ভাষা শিক্ষ্যার বিষয়টি বিবেচনা করা। কওমী মাদ্রাসা ও মানবিক বিভাগে পড়া ছাত্রদের এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষ্যা নেওয়া বাধ্যতামূলক করা।ন
৮. সংখ্যাগরিষ্ঠ বি.সি.এস বাছাই/প্রথম শ্রেণীর ক্যাডারেরা কেন self motivated/pro-active/ analytical/creative/logical না তার কারণ খুজে বের করা এবং এটা দুর করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া। বি.সি.এস এর প্রাথমিক বাছাইয়ের জন্য GRE এর মত পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে।
৯. সব ধরনের অকারিগরি বিষয়ের ব্যাচেলর ডিগ্রীর মেয়াদ ৩ বছর হতে পারে। সরকারী অব্যাবস্থাপনার কারণে কোন ব্যাক্তি সরকার নির্ধারিত ৩/৪ বছর বয়সের মধ্যে ব্যাচেলর ডিগ্রী সম্পন্ন করতে না পারলে,ঐ ব্যাক্তিকে সরকার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে। ইংরেজীতে অনার্স ও মাষ্টার্সের কারিকুলামে ফ্রিল্যাস্নিং বিষয়ে ব্যাবহারিক শিক্ষ্যা বাধ্যতামূলক করা।
১০. প্রাইমারী স্কুল/মাদ্রাসা গুলোতে জ্ঞান অর্জনের চেয়ে নৈতিকতা,আচার-আচরণ,ভদ্রতা ,শিষ্টাচার,ভূল করলে দায় নিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা,পরিষ্কার-পরিছন্নতা,পরিশ্রম বা ব্যাবসায়িক ঝুকি ছাড়া আয়করার সম্মানজনক কোন পথ নেই......ইত্যাদি হাতে-কলমে শেখানোর উপর বেশি জোর দেওয়া উচিত। ইংরেজী শেখার বাড়তি বোঝাও এখান থেকে তুলে দেওয়া উচিত।
১১.ব্যাচেলর ডিগ্রী পেতে হলে একজন শিক্ষার্থীকে কমপক্ষে ৫০০ ঘন্টা (রাজনৈতিক দল ও তার লেজুড়ি ভিত্তিক সংগঠনে ব্যতীত) সামাজিক সেবা/স্বেচ্ছা শ্রম দিতে হবে।
এতে সদস্য হওয়ার ঠিকানা:https://www.facebook.com/groups/304183119755619/
৮তম পর্বের জন্য : Click This Link
চলবে........
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৪২