somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

'মন খারাপেরও একটা ব্যথা আছে। সে ব্যথার গায়ে হাত বুলিয়ে সারিয়ে নেবো, এমন সাধ্য আমার নেই'...

০১ লা মার্চ, ২০২১ রাত ১১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



অজস্র অবসর অন্তহীন ভুলের সামনাসামনি দাঁড় করিয়ে দেয় অবলীলায়। পৃথিবী যখন সকালের কফি কিংবা রাতের ঘুমে ডুবে যায়; আমি ফিরে যাই সেইসব দিনগুলোতে, যেখানে আমরা পরস্পরের কাছে খুঁজে পেয়েছিলাম স্বাচ্ছন্দ্য আর সুখ। তোমার সাথে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত আমার কাছে বরফের মতো জমে যাওয়া সোনালি সময়ের বিন্দু! যেমন বর্নিল, তেমনই মূল্যবান। মনের গহীন কোণে যেখানে সমস্ত অযাচিত অনুভুতিকে লুকিয়ে রাখি সেগুলো জীবনের একএকটি নিজস্ব মুহূর্ত।

তোমার কথা ভেবে অপেক্ষার প্রতিশব্দ হয়ে গেছি। নিজের জীবনে তুন্দ্রার মতো নির্জন হয়ে বেঁচে আছি। আমি স্বার্থের কাকের মত আচরণ করেছি, কোকিলের মতো চালাকি করেছি, অথচ আমার বাবুই পাখি হওয়ার কথা ছিলো। ভালোমানুষ হয়ে জন্ম নিতে হয় মিলি, ভালমানুষ কেউ হয়ে উঠতে পারেনা। আমার বর্তমান; জীবনান্দের কবিতার মতোন বিষাদময়। নদীভাঙ্গায় বাড়িঘর হারানোদের মত ভাগ্যবিড়ম্বিত। ব্যক্তিজীবনের নিঃসঙ্গতায়, অদ্ভত নির্ল্পিপ্ততায়, বাস্তবতার বেড়াজালে বন্দী। জমাট ব্যথার মত অসহ্য জীবনযাপন। সুপারনোভা যেমন আয়ুষ্কালের শেষপ্রান্তে এসে কষ্ণগহবরে রূপান্তরিত হয়; তেমনি নিদারুণ খরার একটা খটখটে জীবনে তুমি আমার নিজস্ব নিরবতা।

মিলি, আমরা নিখুঁত নই; অথচ আমাদের ভুলগুলি মারাত্মক নিখুঁত। অতীত নিয়ে আফসোস করতে গিয়ে আজকাল ঘরের সিলিং দেখি দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো। ভাবি 'ঘর ঘর করে মানুষ গলা শুকায়। একখানা ঘর আর কতখানিই বা আশ্রয় দেয় মানুষকে, যদি না ঘরের লোক আপন হয়!' কৈফিয়তহীন ভাবে তোমাকে ছেড়ে আসার পর এতটাই কষ্ট হয়েছিল যে কষ্টের আর কোনো বোধ ছিলো না। ঠিক কত মিলিমিটার বৃষ্টির পর আমার মন স্বাভাবিক হয়েছিল সে হিসাব আজ থাক। জীবনের হাজারো দাবি পার হয়ে গেলো। এখন বুঝি যার বেদনা যত মর্মান্তিক, তার সহনশীলতা তত বেশি। মধ্যবিত্ত ভুল জীবন, আর অনমনীয় বদ্ধমূল ধারনা নিয়ে বেড়ে ওঠা আমি এতগুলো বছর, খাল-বিল পার হবার পরে চিন্তা করে দেখলাম; কর্মে নয়, মানুষ বাঁচে দ্বিধায়।

তখনো স্বপ্নের সাথে সত্যের খাদ এতটা মেশে নাই। আমরা একে অন্যের নিকটে ছিলাম। নৈকট্যের একটা উষ্ণতা আছে। দৃষ্টির একটা তরঙ্গ আছে। একজন আর একজনকে লক্ষ করলে তার মধ্যে একটা আহবান এসে যায়। পুরোনো তোমাকে ভেবে মনের মধ্যে ধূলোঝড় হচ্ছে। তুমি আমার স্বর্বহারা দুঃখ, মানিসক বিলাসিতা। জানো তো, আলো কেবল পথ দেখায় না, পথ যে শেষ সেটাও দেখায়। মাটির হাড়ি আর সোনার কলস পাশাপাশি রাখতে নেই। মানসিক প্রাচুর্যে ভরা তুমি আমার সাথে একঘরে মানিয়ে হয়তো চলতে পারতে, তার বেশি কিছুই হতো না। একঘরে থাকলে মানুষের কত কদর্য রূপ যে বেরিয়ে আসে! প্রেমহীন দাম্পত্য জীবন যেমন হয় বরফ নয় অগ্নিরথ।

রোজ কাজ থেকে ফেরার পথে মনে মনে অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করি। অতি অকারণে আশা করি; একদিন কোথাও আমাদের দেখা হোক। সেদিন মুখোমুখি বসে জিজ্ঞেস করবো,’কেমন আছো মিলি?’। আমি চাই তোমার কষ্টগুলো ফুল হয়ে ফুটুক, বৃষ্টি হয়ে ভেজাক তোমায় যখনতখন। সমুদ্র পাড়ে জ্যোস্না স্নান করে তোমার রাত কাটুক। আকাশের মত অসীম হোক তোমার জগৎ। 'মন খারাপেরও একটা ব্যথা আছে মিলি। সে ব্যথার গায়ে হাত বুলিয়ে সারিয়ে নেবো, এমন সাধ্য আমার নেই।' বেঁচে আছি, যেভাবে মানুষ মৃত্যুর অভাবে বছরের পর বছর বেঁচে থাকে। তোমাকে সব বলবো, একদিন সময় করে এসো…


‘যাহাকে ভালোবাসি সে যদি ভালো না বাসে,
এমনকি ঘৃণাও করে তা বোধ করি সহ্য হয়!
কিন্তু যাহার ভালোবাসা পাইয়াছি
বলিয়া বিশ্বাস করিয়াছি, সেইখানে ভুল
ভাঙ্গিয়া যাওয়াটা সবচেয়ে নিদারুণ।
পূর্বেরটা ব্যথা দেয়।
কিন্তু শেষেরটা ব্যথাও দেয়, অপমানও করে।‘
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৪:২২
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×