somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কৃষ্ণ সাগর ঘিরে রাশিয়ার কৃষ্ণগহ্বরীয় রাজনীতি! ( পর্ব ১ )

১২ ই মে, ২০২১ রাত ১১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাশিয়ার জন্য কৃষ্ণ সাগর এত গুরুত্বপূর্ণ কেন!

ইউক্রেন - রাশিয়ার সীমান্তবর্তী সংঘাত নিয়ে বর্তমানে উত্তপ্ত কৃষ্ণ সাগরের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি। তবে শুধুমাত্র ইউক্রেন নয়, কৃষ্ণ সাগরের অন্যান্য দেশগুলো ঘিরেও উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছে রাশিয়া। কৃষ্ণ সাগর ঘিরে রাশিয়ার এই যুদ্ধংদেহী মনোভাবের প্রতিফলন শুধু এই শতাব্দীতে নয়, বিগত কয়েক শত বছর ধরেই কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়া তার আধিপত্য কায়েমে মরিয়া ছিলো।

কৃষ্ণ সাগর কেনো রাশিয়ার জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ তা নিয়ে এই পর্বে আলোচনা করা হলো।

১.

পূর্ব ইউরোপীয় এবং ককেশাসীয় দেশগুলোর একমাত্র সামুদ্রিক পথ হলো কৃষ্ণ সাগর। প্রায় চারদিকে ভূমি বেষ্টিত হলেও বসফরাস প্রণালী ও দার্দানেলিস প্রণালীর ( প্রণালীদ্বয় একসাথে তুর্কী প্রণালী নামে পরিচিত ) মাধ্যমে ভূমধ্যসাগরের সাথে সংযোগ ঘটা এই কৃষ্ণ সাগরের তীরে পূর্ব ইউরোপের এবং ককেশাসের ৭ টি দেশ রয়েছে।

তুরস্ক, জর্জিয়া, ইউক্রেন, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া, মলদোভার পাশাপাশি এই সাগরের তীরবর্তী আরেকটি দেশ হলো রাশিয়া। বিশ্ব পরাশক্তি রাশিয়া কৃষ্ণ সাগরের উপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে তৎপর সেই মধ্যযুগ থেকে। আয়তনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়ার রয়েছে ১২ টি সাগরের সাথে সংযোগ। কিন্তু রাশিয়ার জনবহুল, কৃষি সমৃদ্ধ দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চল থেকে বাণিজ্যের জন্য সুবিধাজনক একমাত্র জলপথ হলো কৃষ্ণ সাগর!

২…

রাশিয়ার জন্য কি কৃষ্ণ সাগরের কার্যকর বিকল্প রয়েছে?

ক) বাল্টিক সাগরঃ

কৃষ্ণ সাগরের পাড়ে অবস্থিত রাশিয়ার অবশ্য আরো কিছুটা উত্তরে বাল্টিক সাগরের সাথে সংযোগ রয়েছে।

→ কিন্তু বাল্টিক সাগর শীতকালে মাঝেমধ্যে বরফে আচ্ছাদিত থাকে।

→ এছাড়াও বাল্টিক সাগরকে তিন দিক দিয়ে ঘিরে রেখেছে ইউরোপীয় দেশগুলো। ফলে সংকট মুহূর্তে বাল্টিক সাগর বন্ধ করে রাশিয়াকে চেপে ধরতে সক্ষম ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশসমূহ।

→ এছাড়াও বাল্টিক সাগর থেকে রাশিয়ার জনবহুল, কৃষি সমৃদ্ধ প্রদেশগুলোর দূরত্ব মোটামুটি বেশি, ফলে এই রুট বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক না।

আর তাই রাশিয়ার জন্য কৃষ্ণসাগরের বিকল্প বাল্টিক সাগর কখনো হতে পারে না।

খ) আর্কটিক সাগরঃ

রাশিয়ার পুরো উত্তর উপকূল জুড়ে এই সাগরটি রয়েছে। কিন্তু এই সাগরটি বছরের প্রায় সময় বরফে আচ্ছাদিত থাকে। পাশাপাশি এটি রাশিয়ার জনবহুল এবং কৃষিবহুল এলাকা থেকেও বহু দূরে অবস্থিত।

তাই এই সাগরটিও রাশিয়ার বাণিজ্যপথের জন্য ভালো রুট নয়।

গ) প্রশান্ত মহাসাগরঃ

রাশিয়ার পূর্ব উপকূলে প্রশান্ত মহাসাগর অবস্থিত হলেও এই সাগর ব্যবহার করে রাশিয়ার পক্ষে ন্যূনতম বাণিজ্য সম্পাদন করা সম্ভব নয়।

→ কারণ এই সাগরটি বিশাল রাশিয়ার একদম এক প্রান্তে অবস্থিত আর রাশিয়ার জনবহুল প্রদেশগুলো ঠিক অপর প্রান্তে অবস্থিত। আর রাশিয়ার জনবহুল প্রদেশ এবং এই সাগরের মাঝে রয়েছে সুবিশাল সাইবেরিয়ার বরফ আচ্ছাদিত ভূখন্ড।

অতএব বলা যাচ্ছে, চারদিকে এত এত সাগর থাকলেও একমাত্র কৃষ্ণ সাগরই রাশিয়াকে সমুদ্রপথে বিশ্ব বাণিজ্যে কার্যকরীভাবে যুক্ত করতে সক্ষম।

৩…

কৃষ্ণ সাগর পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর একমাত্র সাগর!

পূর্ব ইউরোপীয় রাষ্ট্র ইউক্রেন, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া,জর্জিয়া, মলদোভার তো একমাত্র সমুদ্র পথই হলো কৃষ্ণ সাগর। এছাড়াও আরো কিছু বলকান রাষ্ট্র দানিয়ুব নদীর মাধ্যমে কৃষ্ণ সাগরের মাধ্যমে সমুদ্র রুটে বাণিজ্য করতে পারে।

কৃষ্ণ সাগরের সাথে সবচেয়ে বেশি উপকূলীয় সীমারেখা রয়েছে তুরস্কের! তবে তুরস্ক তার বাণিজ্যের জন্য শুধুমাত্র কৃষ্ণ সাগরের উপর নির্ভরশীল নয়। কারণ তুরস্কের সাথে কৃষ্ণ সাগর ছাড়াও ভূমধ্যসাগর, এজিয়ান সাগরেরও বিরাট সীমারেখা রয়েছে। কিন্তু তুরস্কের জন্য কৃষ্ণ সাগর কৌশলগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ!

কেননা তুরস্কের ঐতিহাসিক প্রতিপক্ষ হলো রাশিয়া। আর এই রাশিয়ার সমুদ্রগামী বাণিজ্যিের একমাত্র পথ হলো কৃষ্ণ সাগর। এই কৃষ্ণ সাগর চারদিক থেকে ভূ বেষ্টিত, শুধুমাত্র বসফরাস এবং দার্দেনেলিস প্রণালীর মাধ্যমে সে অন্যান্য সাগরের সাথে যুক্ত হয়েছে। এই প্রণালীদ্বয়ের নিয়ন্ত্রণ রাখার মাধ্যমে তুরস্ক কর্তৃক রাশিয়াকে কিছুটা কৌশলগত চাপ দেওয়া সম্ভব।

কৃষ্ণ সাগর থেকে বের হওয়ার পথ তুরস্কে থাকায় কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী দেশগুলো তুরস্কের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করে চলে। যেমনঃ কৃষ্ণসাগরীয় দেশ ইউক্রেন এবং জর্জিয়া তুরস্কের সবরকম সংকটে পাশে থাকে।

৪…

পঞ্চদশ হতে বিংশ শতাব্দীর মধ্যে তুরস্ক (উসমানীয়) ও রুশ সাম্রাজ্যের মধ্যে সম্পর্ক ছিলো দা-কুমড়া টাইপ। ককেশাস, বলকান, ক্রিমিয়ায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ডজনের উপর যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলো তৎকালীন উসমানীয়(তুরস্ক) সাম্রাজ্য এবং রুশ সাম্রাজ্য।

উসমানীয় সাম্রাজ্যের স্বর্ণযুগে সম্পূর্ণ কৃষ্ণ সাগর এবং তৎসংলগ্ন উপকূল সমূহ উসমানীয়দের নিয়ন্ত্রণে ছিলো। কৃষ্ণ সাগরে স্বাধীনভাবে বাণিজ্য করার কোনো উপায় ছিলো না রুশদের। সপ্তদশ শতকের শেষদিকে কয়েকটি যুদ্ধে উসমানীয়দের বিপক্ষে জিতার পরে কৃষ্ণ সাগরের তীরে যৎসামান্য ভূখণ্ড রুশদের নিয়ন্ত্রণে আসে। কৃষ্ণ সাগরের উপর সীমিত আকারে রুশরা অধিকার লাভ করে।

কৃষ্ণ সাগরের উপর আরো বেশি নিয়ন্ত্রণ লাভ করার জন্য এরপর অষ্টাদশ এবং উনবিংশ শতাব্দীতে উসমানীয়দের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে রুশরা। বিংশ শতাব্দীর আগেই কৃষ্ণ সাগরের দক্ষিণ উপকূল ছাড়া বাকি অংশটা থেকে উসমানীয়দের বিতাড়িত করতে সক্ষম হয় রুশরা। কৃষ্ণ সাগরের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রক হিসেবে নিজেদের কে গড়ে তোলে পিটার দ্য গ্রেট, সম্রাজ্ঞী ক্যাথরিনের রাশিয়া।

কিন্তু এরপরেও উসমানীয়দের ( এবং উসমানীয়দের উত্তরসূরী আধুনিক তুর্কী রাষ্ট্রের ) হাতে রুশদের কাবু করার একটা মোক্ষম অস্ত্র ছিলো। আর তা হলো বসফরাস প্রণালি বন্ধ করে দিয়ে কৃষ্ণ সাগর কে অবরুদ্ধ করে রাশিয়ার সবরকম বাণিজ্য থামিয়ে দেওয়া। অপরদিকে, তুর্কীদের উপর নির্ভর করে থাকতে হবে এমন চিন্তা কখনোই ছিলো না রুশদের।

রুশরা বারবারই তুর্কী প্রণালীদ্বয়ের নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়েছিলো উসমানীয় (তুরস্ক) দের থেকে। কৃষ্ণ সাগর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিতে হলে দরকার বসফরাস এবং দাদেনেলিস প্রণালির নিয়ন্ত্রণ। আর তাই রুশরা বসফরাস প্রণালির নগরী ইস্তাম্বুল (কনস্টান্টিনোপল) দখল করতে চেয়েছিলো বারে বারে। কিন্তু কখনোই সফলকাম হয়নি রুশরা।

ইস্তামুল নগরী রক্ষা করতে সক্ষম হলেও অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী বেশিরভাগ অঞ্চল (ক্রিমিয়া, মলদোভা ও ককেশাস) রুশ ভাল্লুকের নিকট ছেড়ে দিতে হয় উসমানীয় তুর্কীদের। অথচ ক্রিমিয়া ও ককেশাস মুসলিম ও তুর্কীক অধ্যুষিত অঞ্চল ছিলো। তারপরেও রুশদের প্রচন্ড আক্রমণে ককেশাস ও ক্রিমিয়া হতে অস্তমিত হয় উসমানীয় সূর্য।

৫…

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর মোটামুটি তুরস্ক এবং রাশিয়ার ( তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন) সীমানা একটা স্থিতাবস্থার মধ্যে আসে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুরস্ক পরাজিত পক্ষে এবং রাশিয়া বিজয়ী পক্ষে ছিলো। রাশিয়া তখন স্বাভাবিকভাবেই তার বহুদিনের আকাঙ্ক্ষার ইস্তাম্বুল নগরী দখল করার দাবি তোলে।

কিন্তু অন্যান্য ইউরোপীয় শক্তি রাশিয়ার এই দাবি প্রত্যাখান করে নিজেদের স্বার্থে ইস্তাম্বুল কে তুরস্কের অধীনেই রাখে। বসফরাস এবং দার্দেনেলিস প্রণালির নিয়ন্ত্রণ লুজেন চুক্তির মাধ্যমে আন্তর্জাতিকীকরণ করা হয়। এতে করে তুরস্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কারণ প্রণালীদ্বয়ের মালিকানা তার হাতছাড়া হয়।

কিন্তু ১৯৩৬ সালের মনটেক্স প্রোটোকলে এই প্রণালীদ্বয়ের মালিকানা আবার তুরস্কের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তবে তুরস্ককে এই প্রণালীদ্বয় থেকে কোনোরকম ট্যাক্স নেওয়ার অধিকার প্রদান করা হয়নি। তুরস্ক শুধুমাত্র যুদ্ধকালীন সময়ে সামরিক জাহাজগুলোর চলাচল বন্ধ করতে পারবে এই প্রণালী দিয়ে।

অর্থাৎ সবসময় বাণিজ্যিক জাহাজ এই প্রণালী দিয়ে বিনা বাঁধায় চলতে পারবে এবং যুদ্ধকালীন সময় ছাড়া বাকি সময় সামরিক জাহাজ ও বিনা বাঁধায় চলতে পারবে তুর্কী প্রণালীদ্বয়ের মধ্য দিয়ে। তুরস্কের জন্য এই প্রটোকলটি মন্দের ভালো ছিলো অন্তত লুজান চুক্তির তুলনায়।

★ রাশিয়া মেনে নিতে পারেনি মনটেক্স প্রোটোকল!

যুদ্ধকালীন সময়ে বসফরাস এবং দার্দানেলিস প্রণালীতে সামরিক যান নিয়ন্ত্রণের অধিকার তুরস্ক পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয় এই প্রণালীদ্বয় সবচেয়ে বেশি ব্যবহারকারী দেশ রাশিয়া।

স্পষ্টতই তুরস্কের এই যৎসামান্য অধিকার ফিরে পাওয়াতে সোভিয়েত ইউনিয়নের ( আজকের রাশিয়া) সামরিক উচ্চাভিলাস কিছুটা থমকে যায়। অবস্থা তখন এমনই দাঁড়ায় যে, রাশিয়া যদি কখনো যুদ্ধ ঘোষণা করতে চায়, তবে তাকে অনেকাংশেই নির্ভর করতে হবে তুরস্কের উপর।

তুরস্কের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে এবং কৃষ্ণ সাগরের উপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরপরই ইস্তাম্বুল দখলের পরিকল্পনা গ্রহণ করে রাশিয়া ( তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন)। রাশিয়া থেকে এমন হুমকি পাওয়ার পর তটস্থ হয়ে পড়ে তুর্কী সরকার। আর তাই আধুনিক তুর্কী রাষ্ট্র তার নিরপেক্ষ এবং যুদ্ধ বিরোধী ইমেজ পরিত্যাগ করে ১৯৫০ এর দশকে যোগদান করে ন্যাটো'তে। এতে করে রাশিয়ার ( তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন ) ইস্তাম্বুল অভিযানের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়।

৬…

নয়া সংকট!

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের আগ পর্যন্ত তুরস্ক সর্বদাই মার্কিন ব্লকে ছিলো শুধুমাত্র রাশিয়ার হাতকে তার প্রণালিদ্বয়কে রক্ষা করার জন্য। ১৯৯০ এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হলো।

দুই প্রণালীর উপর আপাতত রাশিয়ার দৃষ্টি না থাকলেও তুরস্ক ও রাশিয়ার সম্পর্ক আজো পর্যন্ত আস্থার পর্যায়ে পৌঁছাতে সক্ষম হয়নি। দেশ দুইটি অবশ্য কোনো সীমানা সংশ্লিষ্ট অথবা কৃষ্ণ সাগর কে নিয়ে বিরোধে জড়ায়নি। তুরস্ক ও রাশিয়ার বিরোধের কারণ হিসেবে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে দেশ দুইটির স্বার্থ। সিরিয়া, লিবিয়ায় পরষ্পর বিপরীতমুখী অবস্থানে থাকায় রাশিয়া এবং তুরস্ক মাঝেমধ্যে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। অবশ্য স্মার্ট দুই রাষ্ট্রপতির কল্যাণে দেশ দুইটির কূটনৈতিক সম্পর্কে প্রকাশ্যে অবনতি ঘটেনি।

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী সোভিয়েত ভূখন্ডের উত্তরাধিকারী হয় চারটি দেশ।
রাশিয়া, ইউক্রেন, মলদোভা এবং জর্জিয়া। রাশিয়ার সাথে বাকি তিনটি রাষ্ট্র গত ত্রিশ বছরে স্বার্থগত কারণে বারেবারে যুদ্ধে জড়িয়েছে। আর তাই বর্তমানে রাশিয়ার সাথে ইউক্রেন, মলদোভা এবং জর্জিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক একদম তলানিতে।

★ পক্ষ - প্রতিপক্ষ!

বর্তমানে কৃষ্ণ সাগরীয় তিনটি দেশ

→ ইউক্রেন ;
→ জর্জিয়া ;
→ মলদোভা;

এর সাথে বিরোধ রয়েছে রাশিয়ার।

আবার রাশিয়া এবং তুরস্কের মধ্যে কৌশলগত বন্ধুত্ব রয়েছে আমেরিকার চাপ মোকাবিলার ক্ষেত্রে। কিন্তু নিজস্ব সার্কেলে এসে রাশিয়া এবং তুরস্ক সবসময় দ্বন্ধিক অবস্থান গ্রহণ করে। আর তাই জর্জিয়া, ইউক্রেন এবং মলদোভার মিত্র দেশ হিসেবে নিজেদের রেখেছে তুরস্ক!

কিন্তু রাশিয়ার সাথে ইউক্রেন বা জর্জিয়ার সংকট মুহূর্তে কি তুরস্ক রাশিয়ার বিপক্ষে কখনো অবস্থান নিয়েছে? উত্তরঃ না।

বস্তুত তুরস্ক কখনোই কৃষ্ণ সাগররীয় অন্যান্য দেশগুলোর সাথে রাশিয়ার সংকট মুহূর্তে রাশিয়ার বিপক্ষে সরাসরি অবস্থান নিবে না। কারণ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক রণক্ষেত্রে তুরস্ক ও রাশিয়া কৌশলগত বন্ধুত্ব গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি লিবিয়া, সিরিয়ায় তুরস্কের ভূমিকার বিপরীতে আমেরিকা, ফ্রান্সের হুমকি ঠেকাতে রাশিয়ার সাহায্য সর্বাগ্রে দরকার তুরস্কের। অর্থাৎ কৃষ্ণ সাগরীয় সংকটে তুরস্ক ভারসাম্য পূর্ণ ভূমিকা রাখতে চাইবে বিবদমান দুই পক্ষের দিকে।

কৃষ্ণসাগরীয় সংকটে তাই রাশিয়া - ইউক্রেন, রাশিয়া - মলদোভা, রাশিয়া - জর্জিয়ার সাথে আরেকটি নাম অবশ্যই ঘুরেফিরে আসে। আর তা হলো তুরস্ক!

( চলবে )

সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০২১ রাত ১১:৫০
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×