টানা দুই সপ্তাহধরে পর্যায়ক্রমিক ধর্মঘট পালনের কানাডার সরকারি ডাক বিতরনকারী প্রতিষ্ঠান ‘কানাডা পোষ্ট’ দেশব্যাপী তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। দাবি দাওয়া আদায়ে ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনায় কোনো ধরনের অগ্রগতি না হওয়ায় গত বুধবার থেকে তারা ডাক বিতরনসহ সকল ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।
সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, গত দুই সপ্তাহের পর্যায়ক্রমিক ধর্মঘটের ফলে এই পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ১০০ মিলয়িন ডলার রাজস্ব আয় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সারাদেশের প্রায় ৫০ হাজার ডাককর্মী এই ধর্মঘটে যোগ দিয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানটির একজন মুখপাত্র মিডিয়াকে জানিয়েছেন।
প্রতিষ্ঠানটির ওই মুখপাত্র মিডিয়াকে বলেন,’এটি একটি কঠিন সিদ্ধান্ত। কিন্তু এই সময়ের জন্যে এটিই সঠিক সিদ্ধান্ত।‘তিনি বলেন,’আমরা করদাতা জনগনের উপর বোঝা হয়ে উঠতে চাই না। তাই প্রতিষ্ঠানটিকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে এই মুহুর্তে ধর্মঘটই হচ্ছে একমাত্র সঠিক উপায়। সত্যিই বলতে কি অনেকগুলো ইস্যূতেই আমরা সমঝোতা থেকে অনেক দুরে এবং আলোচনার টেবিলে কার্যকর কোনো সমাদানের ঈঙ্গিতও আমরা দেখতে পাচ্ছি না।‘
জানা গেছে, টানা ৭ মাসের ব্যর্থ সমঝোতা আলোচনার পর দুই সপ্তাহ আগে কানাডা পোষ্ট এর কর্মীরা পর্যায়ক্রমিক ধর্মঘট শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটির ইতিহাসে ১৪ বছর পর কর্মীরা এইভাবে ধর্মঘটের ডাক দিলেন। কানাডা পোষ্ট কর্মীরা তাদের চার বছরের চুক্তির প্রথম বছরে ৩.৩ শতাংশ এবং পরবর্তী প্রতিবছর ২. শতাংশ হারে বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেনদরবার করছিলেন। অসুস্থতাজনিত ছুটির সুবিধা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিস্তর মতপার্থক্য রয়েছে। কানাডা পোষ্ট কর্মীরা বর্তমানের ‘অসুস্থজনিত ছুটি’ জমানোর বদলে স্বল্পমেয়াদের কর্ম অক্ষমতা সুবিধা (শর্ট টার্ম ডিসএবিলিটি) দাবি করছে।
কর্তৃপক্ষ অবশ্য বছরে ১.৯ শতাংশ হারে বেতন বাড়ানোয় সম্মতি দিয়েছে। একই সঙ্গে নতুন যোগ দেওয়া কর্মীদের ঘন্টায় ১৮ ডলার করে মজুরি দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। নতুন এবং বর্তমান কর্মীদের বেতন সর্বোচ্চ ২৬ ডলার পর্যন্ত করার ব্যাপারেও কর্তৃপক্ষ সম্মতি দিচ্ছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০০৬ সাল থেকে ডাকের পরিমান ১৭ শতাংশ কমে যাওয়া সত্ত্বেও কানাডা পোষ্ট কর্মীরা বেনিফিট পেনশন প্ল্যান এবং ৭ সপ্তাহ পর্যন্ত ছুটি সুবিধা ভোগ করছেন।
ফেডারেল শ্রম মন্ত্রী লিসা রেইট সিবিসি কে বলেছেন, পর্যয়ক্রমিক ধর্মঘট অনেক গ্রাহককেই ডাকসেবা থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গেছে। দুই পক্ষ দীর্ঘ আলোচনায়ও কোনো ধরনের সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারায় তিনি ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
সূত্র: নতুনদেশ ডটকম
http://notundesh.com/shirshokhobor_news1.html