আমাদের জন্য ভালোবাসা রাখতে জায়গা করে দিচ্ছে ভারত। তাই আমাদের পানি না দিয়ে জায়গা তৈরীর কাজ করছে. কি বলেন?
চুক্তি অনুযায়ী পানি দিতে বাংলাদেশের তাগিদ কোনোভাবেই আমলে নিচ্ছে না ভারত। চুক্তিটির ইন্ডিকেটিভ সিডিউল অনুযায়ী প্রাপ্য হিস্যা না পাওয়ায় এরই মধ্যে বাংলাদেশ নয়াদিল্লির কাছে দু’বার প্রতিবাদ জানিয়েছে। কিন্তু তাতেও কোনো ফল হচ্ছে না।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে গঙ্গার পানি বণ্টন পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম শেষে দিল্লিতে দু’দেশের যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে বাংলাদেশ লিখিতভাবে চুক্তি অনুযায়ী পানি কম পাওয়ার প্রতিবাদ জানায়। ভারতকে তাগিদ দেয়া হয় চুক্তির সিডিউল অনুযায়ী পানি নিশ্চিত করতে। এর পরে ফেব্রুয়ারির ১৯ তারিখে ঢাকায় যৌথ নদী কমিশনের সভায় গঙ্গার পানি বণ্টন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত বৈঠকেও বাংলাদেশ ভারতকে চুক্তির ইন্ডিকেটিভ সিডিউল অনুযায়ী গঙ্গার পানি নিশ্চিতের তাগিদ দেয়। দু’দেশের যৌথ নদী কমিশনের পক্ষ থেকে এই পানি বণ্টন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হয়। তবে ভারত কোনো সাড়া না দিয়ে দফায় দফায় পানি কম দিয়ে চলেছে।
১ জানুয়ারি হতে পানি বণ্টন কার্যক্রম শুরু হয়েছে দু’দেশের মধ্যে। এ পর্যন্ত ৬টি কিস্তি পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ভারত এক্ষেত্রে চুক্তির সংলগ্নি-১ এর বণ্টন ফর্মুলাটি মানলেও ইন্ডিকেটিভ সিডিউল অনুযায়ী পানি নিশ্চিত করছে না। ৬টি কিস্তিতে বাংলাদেশ পাওয়ার কথা ছিল মোট ২,৯৩,৬২১ কিউসেক পানি। কিন্তু পেয়েছে ২,১,০৬০৭ কিউসেক। অর্থাত্ বাংলাদেশকে ৬টি কিস্তিতে প্রায় ৮৩,০১৪ কিউসেক পানি কম দিয়েছে ভারত।
বণ্টন কার্যক্রমের হিসাবে, বছরের শুরুতে বাংলাদেশ প্রায় ২১ হাজার কিউসেক পানি কম পায়। জানুয়ারির দ্বিতীয় কিস্তিতে বাংলাদেশ কম পায় ২০,৪৬৯ কিউসেক। অপরদিকে একই মাসে তৃতীয় কিস্তিতে ১৫,১০৬ কিউসেক পানি কম পেয়েছে। চতুর্থ কিস্তিতে কম পায় ১০,০৫৭ কিউসেক। পঞ্চম কিস্তিতে ৮৮০৫ কিউসেক পানি কম পায়। ষষ্ঠ কিস্তিতে বাংলাদেশ ৬৬৯৪ কিউসেক পানি কম পেয়েছে। ভারত চুক্তির সংলগ্নি-১ মেনে চললেও কৌশলে চুক্তির সংলগ্নি-২ এর ইন্ডিকেটিভ সিডিউলটি অমান্য করছে। তবে চুক্তি অনুয়ায়ী ভারত তার ন্যায্য হিস্যা সব সময়ই বুঝে নেয়। ভাগাভাগি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ভারত পেয়েছে প্রতিটি কিস্তিতে ৪০ হাজার কিউসেক। বাকিগুলোতেও নিজের সঠিক হিস্যা তারা বুঝে নিয়েছে। ভারত তার হিস্যা বুঝে নিয়ে তাদের গঙ্গা অববাহিকায় ব্যাপকভাবে সেচ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশে গঙ্গা নদীর অববাহিকা এলাকায় সেচ কাজে বিপর্যয় দেখা দেয় প্রতিবার। এতে গঙ্গার পানিনির্ভর আববাহিকা এলাকায় কাঙ্ক্ষিত কৃষি উত্পাদনও হয় না।
জানা গেছে, চলতি মাসে নয়াদিল্লিতে জেআরসি মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকের অন্যতম এজেন্ডা হচ্ছে গঙ্গার পানি বণ্টন। কারণ, মার্চ মাস থেকে মে পর্যন্ত প্রচণ্ড পানি সঙ্কটে থাকে বাংলাদেশ। পানি না পাওয়ায় ঠিকমতো সেচকাজ চালাতে পারে না বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। আবার মে’র পরে পানি ছেড়ে দিলে বন্যায় প্লাবিত হয় বিরাট এলাকা। কারণ নদীর পানির প্রবাহ ঠিক না থাকায় এর তলদেশ প্রতি বছরই ভরাট হয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, এবারের জেআরসি বৈঠকে বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



