somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শেষ বিচার। কেয়ামতের ময়দানে অবিনশ্বর এবং নির্বোধ রাহি ।। ১ ।। /:) 8-|

১৯ শে জুন, ২০১২ রাত ১০:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শেষ বিচারের দিন। কেয়ামতের ময়দানে দাড়াইয়া রাহি এদিক ওদিক চাহিতেছে। দেখিতেছে কাহারো কান্না আবার কাহারো হাসি। আচমকা অবিনশ্বর কহিলেন রাহি! এইবার তোমার পালা! আপনার পালা শুনিয়া রাহি টের পাহিল গলা শুকাইয়া কাঠ প্রায়। টেনশনে পড়িলে রাহির গলা শুকাইয়া যায়। রাহি মনে মনে ভাবিল পৃথিবীতে টেনশনে পড়িলে তো সিগারেট খাইয়া আপনাকে নিয়ন্ত্রন করিতাম কিন্ত এখন...

সম্ভিত ফিরিয়া আসিল অবিনশ্বরের ডাকে। অবিনশ্বর কহিলেন কোন ব্র্যান্ডের সিগারেট খাইবা?
বেহুশের ঠেলায় রাহি কহিল বেনসন! বেনসন হইলে ভাল হয়।
সহসা রাহি দেখিল শুন্যে ভাসিয়া একটা বেনসন এবং লাইটার তাঁহার সামনে চলিয়া আসিতেছে। রাহি তখন বিস্মিত হইবার বোধশক্তিও হারাইয়া ফেলিয়াছে। বেনসন ধরাইয়া দুই তিন টান দিয়া রাহি আপনার মধ্যে কনফিডেন্স খুজিয়া পাহিল।
অবিনশ্বর কহিলেন তো শুরু করা যাক্‌।
রাহি কহিল হে অবিনশ্বর শুরু করুন।
বলো, কি আনিয়াছ মোর জন্য?
কিছুই আনি নাই! কারন মোর জন্ম হইয়াছে নরকে যাইবার জন্য।
কেন আন নাই? কেন মাথা নত কর নাই আমারি তরে?
চোখে অভিমান নিয়া রাহি কহিল কেন নত করিব! কারন আমি ঘৃণা করিতাম ধর্মের কান্ডারীদিগকে। উহার জন্য কত মালাউন, কাফির ট্যাগ খাইলাম! কেন নত করিব! যখন আমার মা বোনের সম্ভ্রম লুণ্ঠনকারীরা চলিয়া যাইবে স্বর্গে। আর আমি রাহি তখন মাথা ঠুকিয়া সেই স্বর্গ প্রার্থনা করিব!!
বিস্মিত সুরে অবিনশ্বর কহিলেন কান্ডারী মতলব আজম, সাঈদিগং এর কথা বলিতেছ?
রাহি কহিল হা।
অবিনশ্বর মেজাজ খারাপ করিয়া কহিলেন কেহ কি বলিয়াছে যে উহারা স্বর্গে যাইবে?
তাঁহারা যদি ভোটের বিনিময়ে স্বর্গপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা দেয়। তাহলে নিজে যাইবে না কেন!

অবিনশ্বর রাগে দাঁত কিড়মিড় করিয়া ডাক দিলেন জিবরাঈল! জিবরাঈল! ডাক শুনিয়া জিবরাঈল তড়িঘড়ি করিয়া অবিনশ্বরের সামনে উপস্থিত হইলেন। কহিলেন কি করিতে হইবে অবিনশ্বর? অবিনশ্বর রাহিকে ইশারা করিয়া কহিলেন উহাকে নরকের স্পেশাল সেলে লইয়া যাও। চারিপাশ অবলোকন করাইয়া আবার মোর সামনে উপস্থিত করিও।

কয়েক সেকন্ডের মধ্যেই আসমানি হেলিকপ্টার চলিয়া আসিল এবং রাহি ও জিবরাঈলকে লইয়া নরকে যাত্রা করিল। নরকের স্পেশাল সেলে গিয়া রাহি দেখিল সাঈদি সাহেবকে নগ্ন করিয়া বিশেষ অঙ্গে দমাদম বাড়ি দেওয়া হইতেছে! আজম, নিজামীর অবস্থাও সিরিয়াস। এইসব দেখিয়া রাহি হো হো করিয়া হাসিয়া জিজ্ঞাস করিল কাশেম কই? কাশেম? ভাইলোগ শাস্তিই বা কেন পাহিতেছে? সাঈদির বিশেষ অঙ্গের দিকে ইশারা করিয়া জিবরাঈল কহিলেন গলদ ইস্তেমাল! গণিমতের মাল বলিয়া ব্যভিচার এবং নরহত্যার শাস্তি পাহিতেছে বদমাইশগুলা! কাশেম কোনো চিপায় টিপায় রহিয়াছে আরকি। রাহি হাসিতেই থাকিল। হাসিতে হাসিতেই আপনার পরিণতি ভাবিয়া বিষাদের সমুদ্রে ভেলা ভাসাইল......

***

দ্বিতীয়বারের মত রাহি দাড়াইয়া আছে অবিনশ্বরের সামনে। দাড়াইয়া আছে মৃতপ্রায় বৃক্ষের মত। দাড়াইয়া আছে যেন এক নিস্তব্ধতার প্রলয়ের মধ্যে। অসহ্য নিরবতা ভাঙ্গিয়া অবিনশ্বর কহিলেন রায় কি বলিতেই হইবে?
বিষাদগ্রস্থ রাহি কহিল হে অবিনশ্বর! বলিতে হইবে না। জানি যাইতে হইবে নরক বাসে!
এক রাশ ঘৃণার প্রকাশ ঘটাইয়া অবিনশ্বর কহিলেন হে মোর উত্তম সৃষ্টির নিকৃষ্ট উদাহারন! যাও!
হতাশার সমুদ্রে হাবুডুবু খাইতে খাইতে রাহি কহিল হে অবিনশ্বর! যাইতেছি! যাইবার পূর্বে তব এ অধম দুইটি জিনিস চাহে আপনার নিকট। দিবে কি?
প্রসন্নচিত্তে অবিনশ্বর কহিলেন দিব। চাহো!
অধম একটি ৫৬'' টিভি চাহে!! ফ্লাট হইলে ভালো হয়। আর...
ব্যাঙ্গাত্মক সুরে অবিনশ্বর কহিলেন আর?
বত্রিশ দাঁত বাহির করিয়া রাহি কহিল বদমাইশগুলারে কি ট্রিটমেন্ট দেওয়া হইতেছে তাঁহা দেখিতে চাহি! সরাসরি সম্প্রচার!!

***

নরকে অসংখ্য সেলের মাঝারে একটি অদ্ভুদ সেল রহিয়াছে। যেখান হইতে আর্তনাদ, গগণবিদারী চিৎকার এবং কান্নার পাশাপাশি মাঝে মাঝে অট্টহাসির শব্দ শুনা যায়। সাত আসমানের সমস্ত রহস্যের উদঘাটন হইয়াছে। এই রহস্যের উদঘাটন হয় নাই। কিছু রহস্যের উদঘাটন না হওয়াই ভালো।



শেষ বিচার। কেয়ামতের ময়দানে অবিনশ্বর এবং নির্বোধ রাহি ।। ২ ।।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০১২ রাত ৩:৩১
৬১টি মন্তব্য ৬১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×