somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চরম কিছু কথা। /:) প্রসঙ্গঃ এই যুগের আপলোড জেনারেশন ও ধর্ষিত মূল্যবোধ(প্রথম পর্ব)

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১২:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২১ শতাব্দীর এই যুগে একটা দিনও আমাদের প্রযুক্তি বিহীন কল্পনা করা অসম্ভব। সকালে ঘুমটাই ভাঙ্গে মোবাইল ফোন এর অ্যালার্ম এর শব্দে। তারপর সারাদিন মোবাইল , কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাব, এমপিথ্রি প্লেয়ার, লাইট, ফ্যান, এসি, টেলিভিশন, ইত্যাদি সবই প্রযুক্তির কল্যাণ বা আশীর্বাদও আমরা বলতে পারি। যা আমাদের জীবন যাত্রার মানের উন্নতিতে যথেষ্ট ভুমিকা রেখেছে। আমাদের প্রাত্যহিক জীবন যাত্রায় নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। তারপরও আমরা তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে অনেক পিছিয়ে আছি। আমাদের এখনও লোডশেডিং এর অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু উন্নত বিশ্বে তাও নেই। জীবন যাত্রা কত সহজ হয়ে গিয়েছে। আজ কোন কিছু জানতে চাইলে শুধু মাত্র জাদুর বাক্সটার সামনে বসে SEARCH বাটনে চাপ দিলেই দুনিয়ার তথ্যভাণ্ডার আপনার সামনে হাজির হবে। আগে একটা শব্দের অর্থ খুজতে বই এর পর বই ঘেঁটে ফেলতে হত, আর এখন কত সহজ।

ইন্টারনেট, গুগল, ফেসবুক, টুইটার জ্ঞানের অভাব নেই। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি ঠিকই কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটছে। এক এক করে বলি।

বাংলাদেশে প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ হচ্ছে মোবাইল ফোন। ৯০ এর দশকে বাংলাদেশে প্রথম এই মোবাইল ফোনের আগমন ঘটে। প্যাসিফিক টেলিকম সিটিসেল ব্র্যান্ডে প্রথম মোবাইল বাজারজাত করে। তখন ওই ফোন ব্যবহার সাধারন মানুষের নাগালের বাইরে ছিল। প্রায় দের লক্ষ টাকা করে একটি ফোন বিক্রি হত এবং কল রেট ও ছিল প্রায় ১৫ টাকা প্রতি মিনিট। তখন উচ্চবিত্ত লোকজন তাদের বিত্ত প্রকাশ করার জন্য এটা ব্যবহার করত।

কিন্তু এই মোবাইল ফোনের বিপ্লব ঘটে ২০০৫ সালে যখন সেবা টেলিকম তাদের বাংলালিংক ব্র্যান্ডে প্রথম মোবাইল ছাড়ে এবং সস্তা কল রেট অফার করে। তাদের এই বাজারিকরন পদ্ধতি বৈপ্লবিক হিসেবে প্রমানিত হয়। সকল স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে যায় এই ফোন। উন্নত হয় যোগাযোগ বাবস্থা। জীবন যাত্রায় আনে পরিবর্তন।

এই পরিবর্তন কিছু ভাল এবং কিছু খারাপ হিসেবে আমাদের সমাজকে প্রভাবিত করছে।

কিন্তু আমার দেখা মতে ভাল থেকে খারাপের পরিমান টাই বেশি মনে হচ্ছে। সংঘটিত অপরাধ বেড়ে গেছে। এবং সবচেয়ে জঘন্য যেটি, সেটি হল যুবসমাজের অবক্ষয়। আমি বলবো এখানে অধিক মুনাফা লাভ এর আশায় কিছু কোম্পানি এই অবক্ষয়কে আরও উদ্বুদ্ধ করছে অধিক সস্তা কল রেট আর বোনাস অফার করে। আর মানুষের মধ্যে একটা প্রবনতা আছে যে তারা খারাপটি কে আগে গ্রহন করে,বিশেষ করে যুবসমাজের মধ্যে।

একটি কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র বা ছাত্রী সে দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১২ ঘণ্টাই যদি ফোন নিয়ে কাটায় তাহলে সে টার বাকি কাজ গুলো করবে কখন। সারা রাত ধরে কথা বলা,সারাদিন ক্ষুদে বার্তা আদান প্রদান, এগুলি বর্তমান যুবসমাজের একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে, বরং এটা যে করে না সে ব্যাকডেটএড, খ্যাত ইত্যাদি ইত্যাদি।

কিন্তু তারা আদৌ বুঝতে পারছে না যে তারা আসলে তাদের মূল্যবান সময় গুলা নষ্ট করছে, যে সময়ে সে তার ভবিষ্যতের জন্য কিছু করতে পারত।

এই গেলো একটা দিক এবং আর একটা দিক হচ্ছে হাই টেক ফোন, ভিডিও ফ্যাসিলিটি এবং পর্নোগ্রাফির ছড়াছড়ি। প্রেম করছে,অন্তরঙ্গ মুহূর্ত গুলো ভিডিও করছে এবং পরে সেই ভিডিও গুলো বন্ধুদের দেখাচ্ছে, ইন্টারনেটে শেয়ার করছে। কত নিচু মানুষিকতার পরিচয় এটা। এবার আসি ইন্টারনেট প্রসঙ্গে, ইন্টারনেট বিশ্বের দরজা, তথ্য ভাণ্ডার।

একসময় সাইবার ক্যাফে গুলি খুব জনপ্রিয় ছিল। তখন এরকম ঘরে ঘরে ইন্টারনেটও ছিল না। আর প্রথমেই সাইবার ক্যাফে গুলি ছিল পর্ণগ্রাফির আখড়া। এলাকার মাস্তানরা সাইবার ক্যাফে চালাত। আজব যাদের শিক্ষা জ্ঞানই নেই আর প্রযুক্তি জ্ঞান তো দুরের কথা তারা চালাত প্রযুক্তির সবচেয়ে জটিলতম সংস্করণ।

তারমানে গোঁড়া থেকেই পচন ধরে গেছে। এখন বাড়ি তে বাড়ি ইন্টারনেট হলে কি হবে ওই পচা গোঁড়া নিয়েই তো আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

বর্তমানে ফেসবুক খুব জনপ্রিয়। সামাজিক যোগাযোগের পাশাপাশি নতুন বন্ধু তৈরিতেও ফেসবুকের জনপ্রিয়তা আকাশ ছোঁয়া। কিন্তু এখানেও অশ্লীলতার ছড়াছড়ি। নগ্ন অর্ধনগ্ন মেয়েদের ছবি তে ভরপুর। বর্তমানে ফেসবুকে পেজ টা ব্যাপক জনপ্রিয়। এর মধ্যে কিছু আছে ১৮+ পেজ, যেগুলির জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি, অশ্লীল জোকস এবং অর্ধনগ্ন ছবিতে ভরপুর পেজ গুলির জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী।

আবার এই পেজ গুলির মধ্যেই অশ্লীল ছবি পোস্ট করে বলা হচ্ছে একে জুতা মারুন, লাইক দিন( এক লাইক=১০ জুতার বাড়ী)। অভিনব পন্থা অশ্লীলতা ফেরি করার।
তো আমরা যুবসমাজ কোন দিকে যাচ্ছি।

এই যুবসমাজের অধিকাংশই এক ফোন দুই ইন্টারনেটে অশ্লীলতায় আশক্ত। সব কথার শেষ কথা একটাই, আজ আমরা আমাদের বিবেক ও মূল্যবোধকে গনধর্ষণ করে আস্তাকুরে ফেলে দিয়ে, অন্ধকার পথের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। দেখা যাক কতটুকু টিকে থাকতে পারি।
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×