আগুনে পতঙ্গ হেন কে না ধ্বংস হয়
‘নারী রমণীয়া’ – ভ্রমে যেই না কাছে যায় (৪/৮২)
অন্তরেতে বিষময়, বাইরে মনোরম
কুচফলসম নারী, স্বভাবই এমন। (৪/৮৩)
এদের মনে যা থাকে আনে না তা জিভে
বলে না জিভে যা থাকে, রেখে দেয় তা চেপে।
যা বলে করে না কাজে, সদা বিপরীত
স্ত্রীলোকের এমনই বিচিত্র চরিত। (৪/৮৪)
এটা সেটা দিয়ে নয়, নয় তোষামোদে
লাঠি দিয়ে যদি মারো, অস্ত্র টুকরো করে ফেলো
তবু নারী বশ হবে না কিছুতে। (৪/৮৫)
মেয়েদের মনে সব শয়তানী কথা
থাক থাক কাজ নেই বলে
নিজের পেটের ছেলে
তাও তারা মেরে ফেলে। (৪/৮৬)
হিন্দু সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিশুপদেশমূলক গ্রন্থ ‘পঞ্চতন্ত্র’ এর চতুর্থ অধ্যায়ের ৮২, ৮৩, ৮৪, ৮৫ ও ৮৬ তম শ্লোকের বাংলা অনুবাদ এগুলো। শিশু কিশোরদের নীতিশিক্ষার জন্য পঞ্চতন্ত্র ভারতীয় সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি গ্রন্থ। ধারণা করা হয়, খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীর পরে কোন এক সময়ে আলোচিত এই গ্রন্থটি লেখা। মূল পঞ্চতন্ত্র হারিয়ে গেছে অনেক আগেই। তবে মূল পঞ্চতন্ত্র থেকে নেয়া বর্তমান পঞ্চতন্ত্রই আমাদের একমাত্র ভরসা। বর্তমানে বিষ্ণুশর্মার নামে প্রচলিত পঞ্চতন্ত্র সম্ভবত খ্রিস্টীয় নবম শতকের কোন এক সময় পরিপূর্ণ রূপ পায়।
পঞ্চতন্ত্রের পাঁচটি ভাগ – মিত্রভেদ, মিত্রলাভ, কাকোলুকীয়, লব্ধপ্রণাশ এবং অপরীক্ষিতকারক। গ্রন্থে উল্লেখ আছে, গ্রন্থ রচনাকালে লেখকদের মনে হয়েছে কাঁচা মাটির পাত্রে যেভাবেই দাগ দেয়া হোক সেই দাগ যেমন চিরস্থায়ী হয় তেমনই বাল্যকালে নীতির বীজ বপন করলে তা স্থায়ী হবে। তাই পঞ্চতন্ত্রের প্রত্যেক অধ্যায়ের বেশীর ভাগ পাতায় যখনই নারী বিষয় এসেছে তখনই উপরের শ্লোকগুলোর মতো বালকদের মনে নারীনীতি ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




