মুক্তিযুদ্ধের আটচল্লিশ বছর পর, মেজর জিয়ার মৃত্যুর আটত্রিশ বছর পর এবং তারেক জিয়া বারো বছর পলাতক থেকে আবিষ্কার করেছে বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী জাতির জনক শহীদ জিয়াউর রহমান! তারেক জিয়ার বক্তব্য প্রচার-প্রচারণার উপর বাংলাদেশের আদালত অনেক আগেই নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। বেচারা এখন ফেসবুক লাইভ টাইভের মাধ্যমে তার বক্তব্যের প্রচার করছে। প্রচার করতে গিয়ে উল্টোপাল্টা বকে বিএনপি'র বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে।
জাতীয়তাবাদ বিশ্বের জন্য নতুন কিছু নয়, মেজর জিয়ার জন্মের বহু আগে থেকে বিশ্বে জাতীয়তাবাদের চর্চা হয়েছে। তাই জাতীয়তাবাদের জনক নয়, বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা বলা যেতে পারে। কিন্তু সেটাও সম্ভব না, মেজর জিয়ার আগেও মাওলানা ভাসানী জাতীয়তাবাদ নিয়ে প্রচুর সভা-সেমিনার করেছে, মানুষকে বুঝিয়েছে।জাতীয়তাবাদ কথাটি বাংলাদেশে প্রচলিত ছিল, মেজর জিয়া শুধু সেটাকে ঢাকঢোল পিটিয়ে মানুষের সামনে মুলা হিসেবে ঝুলিয়েছে।
সমাজবিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্পর্কে তারেক জিয়ার ন্যূনতম ধারণা থাকলে এধরনের ভুলভাল কথা বলতে পারতো না। তারেক জিয়া না হয় ভুল বলছে কিন্তু তার সামনে শতাধিক লোক কিভাবে ঠিক ঠিক করে হাততালি দেওয়া শুরু করে? জাতি হিসেবে এগুলো আমাদের অপরিপক্কতার নিদর্শন!
তারেক জিয়াসহ বিএনপি'র লোকজন শহীদ জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে মেনে থাকে, এটা পুরো ভুল কিছু নয়। শহীদ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের পাঠক, তবে একমাত্র পাঠক নয়। তাই শহীদ জিয়াকে বিএনপি'র লোকজন স্বাধীনতার ঘোষক বলাটা পুরোটা ভুল নয়। একজন সামরিক বাহিনীর উচ্চ পদস্থ অফিসার হিসেবে জিয়াউর রহমানের এই ঘোষণার প্রয়োজনীয়তা ও মূল্য কোন অংশেই কম ছিলো না।
যাই হোক তারেক জিয়ার এইভাবে উলটপালট কথা বলে নেতাকর্মী এবং দেশের জনগণের মাঝে ফোকাস হওয়ার চেষ্টা অপরিপক্ক রাজনৈতিক উদারন। এগুলির ফল তারেক জিয়ার জন্য এবং বিএনপি'র জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না। সময়ের সাথে সাথে রাজনীতি পরিবর্তন হয়, সে পরিবর্তিত রাজনীতির সাথে তারেক জিয়া ও বিএনপি নেতৃবৃন্দ নিজেদেরকে মেলে ধরতে পারছে না। এটা বিএনপি'র জন্য যেমন হতাশার তেমনি জাতির জন্যও।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫০