আজকে যে নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে বিএনপি'র নেতা-কর্মীরা কান্নাকাটি করছে এই নির্বাচন ব্যবস্থাকে সবচেয়ে বেশি ম্যানুপুলেটেড, ভায়োলেট, পুলিউটেড, ডিস্ট্ররয়েড করেছে বিএনপি। সর্বপ্রথম দলটির প্রতিষ্ঠাতা মেজর জিয়া রাজি থাকলে ১ চাপুন, রাজি না থাকলেও ১ চাপুন মার্কা নির্বাচন করে নির্বাচনকে হাসি তামাশার বিষয় বানিয়েছে। ঐ নির্বাচনের মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা নির্বাচনীয় সিস্টেমকে আধমরা করেছেন। ওই সময়টুকুতেই আমাদের রাজনীতিতে সরকারি আমলাদের প্রবেশ সবচেয়ে বেশি হয়। এছাড়াও স্বাধীনতা বিরোধীরা রাজনীতিতে একটা স্পেস পায়। যারা বাংলাদেশ চায়নি তারাই বাংলাদেশে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা গুলি ভোগ করতে থাকে সবচেয়ে বেশি। মেজর জিয়া তার জীবদ্দশায় আর নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ঠিক করতে পারেননি। জগাখিচুড়ী মার্কা একটা ব্যবস্থাকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের মোড়ক লাগিয়ে বিএনপি'র লোকজন এখনো গর্ভবোধ করে।
বহু চড়াই উৎরাই পার করে আবারও মেজর জিয়ার দল বিএনপি ক্ষমতায় আসে। ক্ষমতায় এসে নির্বাচন ব্যবস্থাকে আরো কার্যকর করার সুযোগ থাকলেও তা করেনি। তখনো নির্বাচিত সরকারের হাতে নির্বাচন করার সুযোগ থাকে। এখন যেমনটি আছে। কিন্তু তখনও এটার অপব্যবহার প্রথম করে বেগম জিয়ার দল। মাগুরার একটি উপনির্বাচনে যে পরিমাণ কারচুপি হয়েছে তাতে নির্বাচিত সরকারের হাতে নির্বাচন পরিচালনা করার আর কোন সুযোগ থাকলো না। নির্বাচিত সরকারের হাতে নির্বাচন পরিচালনা করার যে সুযোগ ছিল এই মাগুরার উপ-নির্বাচনে অনিয়মের জন্য সে সুযোগ আর রইল না। বিএনপি'র নেতাকর্মীদের মধ্যে এখনো অনেকেই স্বীকার করে মাগুরার নির্বাচনটি বাংলাদেশের নির্বাচনে ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়। এই মাগুরার উপ-নির্বাচনটি বিএনপির জন্য একটা আদিপাপ, যার ফল এখনো এই দলটি ভোগ করছে। আর এই জন্যই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা অনির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন পরিচালনা করার প্রয়োজন পড়ে। আর এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই সর্বপ্রথম আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র ৯৬ সালের ক্ষমতাসীন সরকারই শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করে। যাইহোক আওয়ামীলীগের আন্দোলনের ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে সিস্টেম চালু হয়েছিল সেটাকেও নষ্ট করে বিএনপি। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে তত্ত্বাবধায়ক সিস্টেম রেখে কিভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় তার অপকৌশল বের করার চেষ্টা করে। ১ কোটি ভুয়া ভোটার, নির্বাচন কমিশনার আজিজ এবং বিচারপতিদের মধ্যে গন্ডগোল লাগিয়ে সর্বশেষ রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হতে চাওয়া! এই সবকিছু মিলিয়ে এই সিস্টেমটাকেও নষ্ট করে দেয় বিএনপি। যারজন্য সৃষ্টি হয় ওয়ান ইলেভেনের মত ঘটনা।
এখন দেখা যাচ্ছে পরপর তিনবার বিএনপি প্রতিষ্ঠিত নির্বাচনী ব্যবস্থাকে নষ্ট করেছে। নির্বাচনী ব্যবস্থাকে নষ্ট না করে যদি বিএনপি সেখানে আরো কিছু বিষয় যোগ করে কার্যকর করার চেষ্টা করত সেটা জাতির জন্য ভালো হতো। বিএনপি'র এই ধরনের কর্মকাণ্ডের ফলে আওয়ামীলীগ জাতির উপর এখন জিন্দাবাদের ভূতের মত চেপে বসেছে!
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:৩৩