somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মান্ধতার বিচার কার কাছে চাইব, এর প্রতিকার কে করবে? ★★★

০৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমাদের একটি স্বেচ্ছাসেবামূলক সংগঠন আছে। এটার নাম বৃত্ত ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। উক্ত সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি অনেকদিন থেকেই দায়িত্ব পালন করে আসছি। মূলত আমরা স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভিন্ন শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করি থাকি। বাচ্চাদের স্কিল ডেভেলপমেন্ট নিয়েও সেমিনার সিম্পোজিয়াম করি। এছাড়া গরিব অসহায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ দিয়ে সহযোগিতা করি।
যাক আলোচনা সেটা নয়, আলোচনা হচ্ছে গত মাসে আমরা আমাদের এই সংগঠনের নিয়মিত আয়োজন আন্তঃ ইউনিয়ন স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতার তৃতীয় সিজন আয়োজন করেছি। ফাইনালে দুটি স্কুলের মাঝে যে বিতর্ক প্রতিযোগিতাটি হয়েছিল সেটার বিষয়বস্তু ছিল “দন্ডবিধিতে মৃত্যুদণ্ড থাকা অনুচিত” বিষয়টি আমি আয়োজক কমিটির কাছে উপস্থাপন করি এবং সবাই এটা গ্রহণ করে। উক্ত বিষয়বস্তু নিয়ে যথেষ্ট তর্ক-বিতর্ক করার এলিমেন্ট আছে বলেই এটা বিষয় হিসবে নির্ধারিত হয়।
যাইহোক দুই ইউনিয়নের দুটি স্বনামধন্য স্কুল ফাইনালে অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হয় বশিকপুর স্কুল এন্ড কলেজ নামের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তারা উক্ত বিষয়বস্তুর পক্ষে ছিল। এতটুকু পর্যন্ত ঠিকই ছিল, সমস্যা শুরু হয়েছে যখন আমরা অনুষ্ঠানের বিভিন্ন কার্যকলাপের ছবি এবং বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা শুরু করি। তখনই এলাকার কিছু মোল্লা এটা নিয়ে ঘোর আপত্তি তোলা শুরু করে। তাদের যুক্তি হল আমরা ইসলাম বিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি এবং আমাদের ভিতর কোন গভীর ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে। ইসলামে যেখানে দন্ডবিধিতে মৃত্যুদণ্ড বিধান আছে সেখানে আমরা কোন যুক্তিতে দন্ডবিধিতে মৃত্যুদণ্ড থাকা অনুচিত এই বিষয়টা নিয়ে বিতর্ক আয়োজন করি!

এলাকায় আমাদের কিছু হেটার্স আছে যারা এই সুযোগে তাদের সাথে হালে বাতাস দিতে থাকে। অবস্থা পুরোপরি বেগতিক হয়ে যাচ্ছে। একটা পর্যায়ে বাকি সবাইকে বাদ রেখে আমাকেই কঠিনভাবে দোষী করা হয়। ফেসবুকে ফেইক আইডি থেকে আবার কেউ কেউ সরাসরিও হুমকি-ধমকি দিতে থাকে এবং সর্বশেষ আমার ফ্যামিলি মেম্বারদের কাছেও অভিযোগ জানাতে শুরু করে।
আমি অবশ্য নির্বিকার ছিলাম, কারণ এদের আচরণের সম্পর্কে আমার ধারণা অনেক আগে থেকেই ছিল। এরা কখনোই জ্ঞানের চর্চা করার পক্ষে ছিল না, ওদের জ্ঞান বলতে শুধুই ইসলামী জ্ঞান বুঝায়। এর বাইরে কেউ কিছু করতে গেলে তাদেরকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য নানারকম ঘৃণ্য কাজ করে। কিন্তু সর্বশেষ যখন পরিবারের কাছে অভিযোগ অনবরত যেতে থাকে, এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথি ও বিচারকদেরকেও সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হেনস্থা করা শুরু করে তখন আমি হতাশ হয়ে পড়ি।

যাইহোক, জল যখন অনেক দূর গড়িয়ে গিয়েছে তখন তারা প্রস্তাব দিয়েছে আমরা যদি আমাদের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা না চাই তাহলে তারা তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নিবে। এলাকাবাসীকে এক করে আমাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে এবং আমাদেরকে বৃত্তের ভিতরেই ঢুকিয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়। অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক কমিটিতে যারা ছিল তারাও হতাশ হয়ে যেতে থাকলো এবং সর্বশেষ আমি সিদ্ধান্ত দিলাম ভুল স্বীকার করে একটি পোস্ট দেওয়ার জন্য এবং সেটি দেওয়া হলে তারা কিছুটা শান্ত হয়। তারপরেও জানিনা ঈদের সময় বাড়িতে গেলে এটা নিয়ে আবার কোনো কিছু ঘটে কিনা আল্লাহই ভাল জানেন!
আমি, বৃত্ত ফাউন্ডেশন এবং বিতর্ক আয়োজনের আহ্বায়ক কমিটি পরাজিত হলাম!
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:২০
৩৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×