আমরা গ্রামে যে এলাকায় বসবাস করি সেখানে বিএনপি সমর্থকদের সংখ্যা বেশি। আমার ফেসবুকেও বন্ধু তালিকার অধিকাংশই বিএনপি সমর্থক। গত কয়েকদিন থেকে অনেকেই দেখছি একটি ফর্ম নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছে, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে উচ্ছ্বাসের সাথে বলে যাচ্ছে তারা সরকারের প্রশাসনের লোকজনদের তালিকা করছে! এতদিন পুলিশ তালিকা করে তাদের জেলের মধ্যে ঢুকিয়েছে এবার সময় হয়েছে তাদের তালিকা করার। তালিকার মধ্যে দেখলাম বিএনপি কর্মীদেরকে যেসব পুলিশ অফিসার ধরে নিয়ে গেছে, মামলা করেছে, মামলা লিখেছে, সার্কেল এসপি, ওসি সবার নাম সংগ্রহ করা হচ্ছে! তাদেরকে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে, বিচার করা হবে, এই হচ্ছে বিএনপির রাজনৈতিক ব্রেইন!
আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতা আসার জন্য, টিকে থাকার জন্য সরকারের প্রশাসনকে ব্যবহার করেছে, এটা অসত্য নয়। সাথে সাথে প্রশাসনের অনেক লোকজন অতি উৎসাহী হয়েও আওয়ামীলীগ সরকারকে সহযোগিতা করেছে। এই সহযোগিতা করতে গিয়ে তারা আইনগত কিছু সমস্যা তৈরি করেছে যার জন্য তাদের মধ্যে কিছুটা ভয় কাজ করার কথা। এখন বিএনপি তাদের সে ভয়কে আরো বহু গুনে বাড়িয়ে দিয়েছে এসব তালিক বানানোর নামে। এবার বলুন তারা কি কোন ভাবে আগামী নির্বাচনে নিরপেক্ষ থাকবে? বিএনপি প্রশাসনের সাথে এরকম বৈরী সম্পর্ক তৈরি করে কি রাজনৈতিক সুবিধা আদায় করবে আমার বোধগম্য হচ্ছে না! আমার তো মনে হচ্ছে প্রশাসনের কিছু লোকজন এখন বিএনপি ঠেকাও মনোভাবে আরো কঠোর হবে! বিএনপি যেন ক্ষমতায় না আসতে পারে, তাদের বিচার যেন না করতে পারে, তার জন্য তারা সব চেষ্টাই করবে।
দেখুন, তৃতীয় বিশ্বের রাজনীতিতে ক্ষমতার বাইরে থাকলে সরকার দলীয় লোকজন ও প্রশাসন থেকে বিভিন্নভাবে হেনস্তার শিকার হতে হয়। এগুলিকে মোকাবেলা করেই রাজনীতি করতে হয়। ক্ষমতা না গিয়েই যদি প্রশাসনের লোকজনের বিচার করার কথা বলে তাহলে আমাদের গ্রামের বাসায় যেটা বলে মুরগি হয়ে শিয়ালকে ঠোকর মারতে যাওয়া! বিএনপির হয়েছে সে অবস্থা। বিএনপি যদি ক্ষমতায় যায় তাহলে তারা তাদের নেতাকর্মীদের উপর যে অবিচার করা হয়েছে সেগুলি বের করা কি খুব কঠিন কিছু হবে? প্রশাসনের ভিতরেই তারা অনেক লোকজনকে পাবে যারা তখন তাদেরকে সেই তালিকা সরবরাহ করবে! ক্ষমতা যাওয়ার আগেই এসপি, ডিসি, ওসিদের বিচার করতে চাওয়া মানে হল নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারা নয়, নিজের মাথায় নিজে কুড়াল মারা!
সেনানিবাসের বাসা থেকে বেগম জিয়াকে যখন বের করে দেওয়া হলো তখন বেগম জিয়া বলেছিল তিনি তাদেরকে দেখে নেবেন! আজ পর্যন্ত বিএনপির সাথে সেনাবাহিনীর সাথে সম্পর্কের জোড়া লাগেনি। কিছু কথা, ব্যথা মনের ভিতর রেখে দিতে হয়, এজন্যই বলা হয় সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ ফোঁড়।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০২৩ বিকাল ৫:০৪