
নির্বাচন, গণতন্ত্র, মানবধিকার এসব নিয়ে আমেরিকা সারা বিশ্বেই সব সময় সরব থাকে। বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে তারা বেশ কিছু স্টেটমেন্ট দিয়েছে এবং নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয় তার জন্য সরকার থেকে শুরু করে একেবারে ছোট ছোট দলগুলোর সাথেও তাদের মতবিনিময় করেছে। এছাড়াও সর্বশেষ নির্বাচন যদি সুষ্ঠু না হয় তখন এর সাথে জড়িত মানুষদের তাদের ভিসা নীতির আওতায় আনবে। গত কয়েক মাসে আমেরিকার পদক্ষেপগুলি তাদের স্টেটমেন্ট গুলিতে সত্যিকার অর্থেই আমি আপত্তিজনক কিছুই দেখছি না। আমার কাছে তাদের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে খুবই মিস আন্ডারস্টুড একজন মানুষ মনে হচ্ছে। বেচারা কি বলতে চাচ্ছে তা মনে হয় আমাদের সরকার ও বিরোধীদল কেউই ঠিকভাবে বুঝতে পারছেনা অথবা বুঝতে চাচ্ছেনা।
ফিটার হাস ও আমেরিকার অবস্থান একেবারে সিম্পল, আগামী নির্বাচনটি হতে হবে সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ। নির্বাচনের সময় দাঙ্গা হাঙ্গামা করা যাবে না, ভোটদানে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না, মানুষকে ভোট দিতে নিরুৎসাহিত করা যাবে না, মানুষ যেন নিজের ভোট নিজে দিতে পারে তার জন্য সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া। এগুলি তো তেমন জটিল কিছু কথা না, খুবই সহজ এবং সিম্পল বিষয়। এসব বুঝতে আমাদের রাজনীতিবিদদের এত কষ্ট হচ্ছে কেনো!
আসলে সমস্যা হচ্ছে শেখ হাসিনা এসব স্টেটমেন্ট থেকে বুঝতে পারছেন আমেরিকা উনাকে সরাতে চাচ্ছে, উনাকে উনার স্টাইলে নির্বাচন করতে দিতে চাচ্ছেন না! আবার বিএনপি বুঝতেছে পিটার হাস এসব হালকা কথাবার্তা দিয়ে সরকারকে আরো সুযোগ করে দিচ্ছে, তারা সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বড় ধরনের প্রেশার দিচ্ছে না! আমেরিকা যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কিছু বলবেনা, এটা আবার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের মাথায় ঢোকে না। কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকার সিস্টেম সংবিধান থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে!
বেশ কয়েক মাস আগে এই আমেরিকান রাষ্ট্রদূত পেটের হাস একটি অনুষ্ঠানে এসেছিলেন সম্ভবত চ্যানেল আইয়ের। সেখানে তাকে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে আমাদের সংবিধানে আরো কিছু বিষয় যুক্ত করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করার কথা বলা হয়েছিল। উত্তরে সে নারীর ক্ষমতায়নের সুযোগ সুবিধা ভালো দিক গুলি নিয়ে এবং আমেরিকা এসব কিভাবে ডিল করে সেটা নিয়ে বিস্তারিত বলেছে। এরপর বলেছে সংবিধান এমেন্ডমেন্ট করার জন্য সরকারকে তারা আসলে কিছু বলতে পারবেনা। এটা একান্তই সরকারের বিষয়, তাদের এখানে কিছু বলার নেই। এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার এ বিষয়টির ক্ষেত্রেও তো তাদের সেই প্রিন্সিপাল কাজ করার কথা। যার জন্য আমরা দেখতে পাচ্ছি এ বিষয়টি নিয়ে তাদের কোন টু শব্দও নেই!
আসলে আমেরিকা এ পর্যন্ত আমাদের নির্বাচন নিয়ে যতগুলি কথা বলেছে কোন কথাই আপনি তাদের ভুল ধরতে পারবেন না। গণতন্ত্রের জন্য এসব সিস্টেম অবশ্যই যে কোন দেশ নিজেদের স্বার্থে তৈরি করে নিতে হবে। আমাদের সরকার, শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের তাদের কথা গুলি বুঝেও না বুঝার ভান করছে। বিএনপি তাদের কথাগুলি কিছুটা বুঝলেও পুরোপুরি বোঝেনি! অথবা তারা নিজেরাও জানে তারা যদি শেখ হাসিনার জায়গায় থাকতো পিটার হাসের কথাগুলি তাদের কাছেও বিরক্তকর মনে হতো!
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০২৩ ভোর ৪:৪৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




