
প্রতিবারই আমাদের দেশে জাতীয় নির্বাচন আসলে গণতন্ত্র নিয়ে খুব বেশি আলোচনা হয়। দেশে গণতন্ত্র আছে নাকি স্বৈরতন্ত্র চলছে এগুলি নিয়ে তর্ক বিতর্ক চলতে থাকে। নির্বাচন সঠিকভাবে হয়না, প্রসেস ঠিক নেই, নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করতে সক্ষম নয়, সরকার দলীয় লোকজন নির্বাচনের ফলাফলকে বিভিন্ন ভাবে ম্যানুফুলেট করে! এই ধরনের হাজার রকমের অভিযোগ উঠে।
তবে সবচেয়ে মজার বিষয় বিভিন্ন ধরনের আলোচনা সমালোচনায় আমাদের রাজনীতিবিদরা একটি কথা বলে, আমেরিকা তাদের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে ১০০ বছরের বেশি সময় নিয়েছে, বৃটেনেরও তাই! যারা যারা গণতন্ত্র আজকের এই সুদৃঢ় অবস্থানে নিয়ে এসেছে তাদের দীর্ঘ রাজনৈতিক চর্চার ইতিহাস আছে। তারা একদিনে তাদের দেশে এই ধরনের সুন্দর একটি গণতান্ত্রিক কাঠামো তৈরি করেনি। সময়ের পরিক্রমায় ধীরে ধীরে তাদের গণতান্ত্রিক কাঠামো মজবুত হয়েছে। শুনতে খুবই সুন্দর যুক্তি হলেও যুক্তিটি যে কতটা হাস্যকর সেটা একটু চিন্তা করলেই বুঝা যায়।
টমাস আলভা এডিসন টেকসই বৈদ্যুতিক বাল্ব আবিষ্কার করার জন্য তিন বছর সময় নিয়েছে। এখন কেউ যদি বলে ভালো একটি বৈদ্যুতিক বাল্ব বানানোর জন্য তার তিন বছর সময় লাগবে, তখন কেমন শোনা যাবে! আসলে আপনার সামনে যখন কোনো এক্সাম্পল না থাকে তখন আপনি সেটা কার্যকর করতে, আবিষ্কার করতে কিংবা তৈরি করতে দীর্ঘ সময় নিবেন। কিন্তু যখন আপনার সামনে এক্সাম্পল থাকবে, সেটা কিভাবে গড়ে উঠেছে, কিভাবে কাজ করে এই সবগুলি আপনার সামনে থাকবে তখন আপনি দ্রুততম সময় সেটা করতে পারবেন। আমেরিকায়, বৃটেনে কিভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেটার প্যাটার্ন যখন আপনার চোখের সামনে থাকে, তখন আপনি কেনো এত দীর্ঘ সময় নিবেন! আসলে এসব কথাবার্তা হলো নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার একটি অজুহাত মাত্র। সদিচ্ছা এবং যোগ্যতা না থাকলে ১০০ বছর কেনো ৫০০ বছরও সম্ভব হবেনা।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়ে দিয়েছেন সেটা অনেকাংশে সঠিক নির্বাচনী ব্যবস্থা। সমস্যা হচ্ছে উনার দলীয় লোকজনরা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করে, নির্বাচনকে সুষ্ঠু হতে দেয়না, যার জন্য উনার নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। উনি যদি উনার নিজের দলের লোকজনকে কন্ট্রোল করতে পারেন তাহলে এই নির্বাচনী ব্যবস্থার মধ্যেই একটি চমৎকার নির্বাচন করা সম্ভব। তবে উনি অযোগ্য লোকদের নমিনেশন দেওয়ার কারণে তারা ভোট টোটের জন্য অপেক্ষা করতে চায়না, তারা নিজেদের জয় নিজেরাই নিশ্চিত করতে চায়। এটার জন্য অবশ্য শেখ হাসিনাকে এককভাবে দায়ী করা যায়না। বেগম জিয়া ও তারেক জিয়া এর জন্য সমানভাবে দায়ী। শুধুমাত্র শেখ হাসিনাকে দায়ী করলে উনার প্রতি অবিচার করা হবে। কারণ আমাদের প্রতিটি নির্বাচনী প্রসেসকে সবচেয়ে বেশি ভায়োলেট ও পলিউট করেছে বিএনপি।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:০৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




