
অন্তর্ধান রহস্য, একটি রম্য কথন !!
নূর মোহাম্মদ নূরু
বিশাল বিত্ত বৈভবের মালিক এক আমেরিকান জমিদার কন্যা। রূপে গুনে অনন্যা। টাকা পয়সা ধন দৌলত আর বিশাল যায়গা জমিনের একচ্ছত্র অধিপতি। যেমন ছিলো তার রূপ তার অধিক ছিলো অহংকার। আর সে কারণে তার রূপে মুগ্ধ যুবকেরা পুড়ত পতঙ্গের মত কিন্তু তিনি তাতে ভ্রুক্ষেপও করতেন না। এই পতঙ্গের মাঝে তার দেশী যুবক ছাড়াও কিছু বিদেশীরাও ছিলো এমন কি আমাদের দেশের চাঁ অদ্যাক্ষরের একজন গাজীও ছিলেন। সে কথায় পরে আসছি!
নদীর পানি আর মেয়েদের রূপ কখনোই এক জায়গায় স্থির থাকেনা। নদীর আছে জোয়ার ভাটা আর নারীর রূপের পতন। ধন দৌলত আর অনন্য রূপে রূপবতী আমেরিকান সেই রূপসীর রূপে ভাটা শুরু হলো। নদীর জোয়ার আর যৌবন বালির বাঁধে কি টিকানো যায়? তিনি চিন্তিত হয়ে পরলেন সামনের দিনগুলোর কথা ভেবে। কে দেখভাল করবে তার এই বিশাল সম্পত্তি! বিপদে কে হবে তার সহায়!
সামনের অনাগত অন্ধকার দিনের কথা চিন্তা করে তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন বিয়ে করার। যেম ন ভাবা তেমন কাজ। তিনি স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিলেন, "বিশাল সম্পত্তির একমাত্র মালিক ৭০ বছরের অশিতিপর বিগতা যৌবনা সুন্দরীর মালিক হতে আগ্রহীরা রাজকন্যা ও রাজ্য পেতে বিলম্ব না করে যোগাযোগ করো"।
সম্পদের লালশায় অনেকেই তার দারস্থ হলো কিন্তু বিগতা যৌবনার ধনসম্পদের জালে তাদের ফাঁসানো গেলোনা। ভগ্ন মনোরথ হয়ে, যখন তিনি প্রায় হাল ছেড়ে দিচ্ছিলেন তখন দেবদূত হয়ে তার দরজায় কড়া নাড়লেন আমদের চাঁ অদ্যাক্ষরের সেই গাজী, যার কথা আগেই বলেছিলাম। ভদ্র মহিলা সুযোগের হাত ছাড়া না করে গাজী সাবকে কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিলেন এবং তড়িঘড়ি করে ওই দিনই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন। আত্মীয়, বন্ধু বান্ধব নিয়ে বিশাল আয়োজনে খানা পিনা, নাচ গানের পর এবার ফুল শয্যার পালা। রাত গভীর থেকে গভীরতর হলো। সব নীরব নিস্তব্ধ! যথা নিয়মে রাতের পরে ভোর হয়। নতুন সকাল কিন্তু গাজী সাবের ঘুম আর ভাংগে না! ডাক্তার ডাকা হলো, তিনি আসলেন, দেখলেন, সব বুঝলেন। গাজী সাব আর নাই! ব্যথায় বাথাতুর হলেন তার নব পরীনিতা। কিন্তু বিধির বিধান লংঘন করার উপায়তো নেই। তবে তার মতো অনেকেই বুঝতে পারছিলেন না তার মৃত্যু রহস্য। তার মৃত্যু সনদ চাইলেন ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার গাজী সাবের মৃত্যুর কারণ হিসেবে মৃত্যু সনদে লিখলেনঃ
"The patient has died drinking expired milk"
ডাক্তারের কাছ থেকে মৃত্যু সনদ পাবার পরে গোপনীতার সাথে এক অজানা স্থানে তার শেষ কৃত্য সম্পাদন করা হলো। যেহেতু গাজীসাব ছিলেন ভীন দেশী মানে বাংলাদেশী। কোন অহেতুক ঝামেলা ও বিড়ম্বনা এড়ানোর জন্য এই সাবধানতা অবলম্বন করা। সেই থেকে বাংগালী পাড়ায় আর দেখা যায় নি চাঁ অদ্যাক্ষরের গাজীকে। তার বন্ধু মহলে তাকে নিয়ে অনেক স্মৃতিচারণ হয়, মাতম হয় কিন্তু তিনি যে তিমিরে সেই তিমিরেই আছেন অদ্যাবধি। তার নিখোঁজের খবর পেয়ে তার সহদর গোল্ড গাজী এখানে আসেন গাজীর সন্ধানে কিন্তু তার লাশ দূরে থাকুক তার লাশের কংকালটিরও হদিস করতে পারেন নাই অদ্যাবধি। বিদেশ বিভূইয়ে এভাবে পতন হলো একটি নিখাদ বাংগালী নক্ষত্রের। আমরা চাঁ-গাজীর অকাল প্রায়ণে গভীর ভাবে শোকাহত!৷
প্রশ্ন? গাজী সাব কত দিন আগের দুধ পান করে ছিলেন?
বিঃঃদ্রঃ মোবাইল থেকে লেখা তাই অনিচ্ছাকৃ ভাবে অনেক আবশ্যিক যুক্ত অক্ষর বাদ দিতে হলো বলে দুঃখ প্রকাশ করছি।
প্রকাশকালঃ ঢাকা, ৩১ মে ২০২২ইং
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০২২ বিকাল ৪:০৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



