আল্লাহর আমাদেরকে তার নিকট থেকে যা অবতীর্ণ করেছেন শুধু তাহাই অনুসরণ করতে আদেশ করেছেন; ইহা ছাড়া অন্য কিছু অনুসরণ নিষেধ। যাদের আল্লাহর আয়াতের প্রতি পরিপূর্ণ বিশ্বাস নেই তাদের প্রতি আল্লাহ বলেন: ঐ সমস্ত আল্লাহর আয়াত, যা সঠিকভাবে তোমার প্রতি আবৃত্তি করা হচ্ছে সুতরাং আল্লাহ ও তার আয়াতের পরিবর্তে তারা আর কার হাদিছে বিশ্বাস করতে চায়? [৪৫: ৬, ৭৭: ৫০]
তথাপিও হাদিছের সমর্থনে বলা হয়, ‘হাদিছও এক প্রকার অহি (অহি গায়রে মতলু) অর্থাৎ অপঠিতব্য বা পড়ার অযোগ্য অহি এবং তা আল্লাহ হতেই প্রেরিত।’ এর উত্তরও আল্লাহ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, আর তাদের মধ্যে একদল রয়েছে, যারা বিকৃত উচ্চারণে মুখ বাঁকিয়ে কিতাব পাঠ করে, যাতে তোমরা মনে কর যে, তার কিতাব থেকেই পাঠ করছে। অথচ তারা যা আবৃত্তি করছে তা আদৌ কিতাব নয়। এবং তারা বলে যে, এসব কথা আল্লাহর তরফ থেকে আগত। অথচ এসব আল্লাহর তরফ থেকে প্রেরিত নয়। তারা বলে যে, এটি আল্লাহর কথা অথচ এসব আল্লাহর কথা নয়। আর তারা জেনে শুনে আল্লাহরই প্রতি মিথ্যারোপ করে [3: 78]
কোন নবী রাছুলই মানুষকে তাদের নিজস্ব ছুন্নত (বিধান) এর দিকে আহ্বান বা আকর্ষণ করে না বরং আল্লাহর ছুন্নত (বিধান) এর দিকেই আহ্বান বা আকর্ষণ করে। কুরআন বলে রাছুলও যদি কুরআন ব্যতীত নিজে আল্লাহর নামে যেকোন কিছুই রচনা করত তবে তিনিও শাস্তির আওতাভুক্ত হবেন। তাইতো মহানবীর জীবদ্দশায় কোন হাদীছ লিখা হয়নি। মহানবী নিজে, তাঁর পরিবারের কেউ, সাহাবীরা কিংবা গোটা সৌদি আরবের কোন হাদীছ লেখক পাওয়া যায়না; হাদীছ লেখক সকলেই ভিনদেশী ইরানী যা মহানবীর ওফাতের দুই আড়াইশো বছর পরে লিখিত। কুরআন দেখুন:
কোন মানুষকে আল্লাহ কিতাব, হেকমত ও নবুওয়ত দান করার পর সে বলবে যে, "তোমরা আল্লাহকে পরিহার করে আমার বান্দা হয়ে যাও'-এটা সম্ভব নয়। বরং তারা বলবে, তোমরা আল্লাহওয়ালা হয়ে যাও, যেমন, তোমরা কিতাব শিখাতে এবং যেমন তোমরা নিজেরা ও পড়তে [3: 79] ।
সে (রাছুল) যদি আমার নামে নিজে কিছু রচনা করতো তবে অবশ্যই তার ডান হাত পাকড়াও করে জীবন ধমনী কেটে ফেলতাম; অতঃপর তোমাদের কারো সাধ্য থাকতো না তাকে রক্ষা করার। [৬৯: হাক্বা-৪৪-৪৭]
নবীর ওফাতের প্রায় ৩শ’ বছর পরে মানুষের রচিত কেতাবকে আল্লাহ প্রেরিত অহি হিসেবে বিশ্বাস করার অর্থই বোখারীদেরকে নবী/রাছুল হিসেবে স্বীকার করা। এবং এটাকে কোরানের ব্যাখ্যা বা সমতুল্য মনে করার অর্থই আল্লাহর সাথে শরীক করা; যা কুফুরি হেতু ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।
আল্লাহ বলেন, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তদনুসারে যারা বিধান দেয় না (বিচার-মীমাংসা করে না) তারাই কাফের, ফাছেক ও জালেম [৫:৪৪, ৪৫, ৪৭]।
বিনীত।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:৩৫