somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নানা গবেষণায় স্বাধীনতার ঘোষণা : ডা. এমএ হাসান

০৩ রা এপ্রিল, ২০১১ সকাল ১০:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২৭ মার্চ বিকেলের দিকে অচেনা কণ্ঠে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ শুনলাম। সেদিন সন্ধ্যার দিকে জিয়াউর রহমানের কণ্ঠে একবার স্বনামে এবং দু'বার বঙ্গবন্ধুর নামে স্বাধীনতার ঘোষণা শুনেছিলাম। ঘোষণা যেভাবেই দেওয়া হোক না কেন এটি দেশের অনেক জায়গা থেকেই শোনা গেছে এবং এর মধ্যে যুদ্ধের একটি আনুষ্ঠানিকতা ছিল। তবে এটিও ঠিক, ২৭ মার্চ, '৭১-এ মেজর জিয়া নিজস্ব উদ্যোগে ও পরিকল্পনায় ঘোষণাটি দেননি, বরং ওই সময় চট্টগ্রামে উপস্থিত নেতাদের অনুরোধে চট্টগ্রামের বাঙালি সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে ঘোষণাটি তিনি দিয়েছিলেন। তার আগে মেজর রফিককে ঘোষণা দিতে বলা হয়েছিল। তিনি যুদ্ধে ব্যস্ত থাকায় সময় করতে পারেননি। ওই সময় চট্টগ্রামে যেসব নেতা উপস্থিত থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার ব্যাপারে শেখ মুজিবের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিলেন তারা হলেন_ জহুর আহমেদ চৌধুরী (আওয়ামী লীগার), এমআর সিদ্দিকী (আওয়ামী লীগার), এমএ মান্নান, জনাব হান্নান প্রমুখ। এসব নেতার উদ্যোগে ২৬ মার্চ চট্টগ্রাম রেডিও থেকে আরও কয়েকটি ঘোষণা দেওয়া হয় বলে জানা যায়।
ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি পরিচালিত গবেষণায় দেখা যায়_ চট্টগ্রামে হান্নান সাহেবের ঘোষণাটি শুনেছে শতকরা ৭৫ ভাগ লোক, শোনেনি ২৫ ভাগ। রাজশাহীতে শুনেছে শতকরা ২০ ভাগ, শোনেনি ৮০ ভাগ। বরিশালে শুনেছে শতকরা ৬৭ ভাগ, শোনেনি ৩৩ ভাগ লোক। খুলনা, সিলেট ও ঢাকা বিভাগের কেউই ঘোষণাটি শোনেনি। চট্টগ্রামের প্রাথমিক ঘোষণাটি ভারতের গোপন ট্রান্সমিটার থেকে পুনঃপ্রচার করা হয় বলে ধারণা করা হয়। সামগ্রিকভাবে এসব ঘোষণার কোনোটি না শুনেই যারা দেশের অভ্যন্তরে থেকে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের সংখ্যাই বেশি। প্রতিরোধ যুদ্ধে বড় প্রেরণা হিসেবে কাজ করে পাকিস্তানিদের নিষ্ঠুর আঘাত। সবচেয়ে বড় উদ্দীপনা হিসেবে কাজ করে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ। ৭ মার্চের ভাষণ শুনে দেশের প্রায় ৬০ ভাগ তরুণ যুদ্ধের জন্য কোনো না কোনোভাবে প্রস্তুত হয়েছিল।
পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে যারা ঘোষণা দেন তারা হলেন_ জনাব হান্নান, জিয়াউর রহমান ও শমসের মবিন চৌধুরী। সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে যিনি সবার আগে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে স্বাধীন বাংলার জন্য অস্ত্র ও অন্যান্য সামরিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিলেন, তিনি হলেন জেনারেল আমিন আহমেদ চৌধুরী। এটা তিনি করেছিলেন ২৭, মার্চ ১৯৭১। সামরিক বাহিনীর মধ্যে যারা প্রথম থেকে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে অর্থাৎ মার্চের শুরুতে সামরিক প্রতিরোধ প্রস্তুতি গ্রহণ করেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ব্রিগেডিয়ার এমআর মজুমদার। কিন্তু নানা কারণে ইতিহাসের পাতায় তিনি স্থান পাননি। অন্য যেসব সামরিক কর্মকর্তা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে উত্তাল মার্চে যোগাযোগ রাখছিলেন এবং সেনা বিদ্রোহ সংগঠনে ভূমিকা রাখছিলেন তারা হলেন_ ব্রিগেডিয়ার এমআর মজুমদার, দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গলের কর্নেল মাসুদ, মেজর খালেদ মোশাররফ প্রমুখ।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ দুপুরে এমএ হান্নান চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ বেতার কেন্দ্র থেকে ২৫ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত লিখিত স্বাধীনতার ভাষণটি পাঠ করেন। তাকে সহযোগিতা করেন প্রকৌশলী আমিনুর রহমান ও রাখাল বণিক। যদিও তখন পর্যন্ত সেটিকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়নি। তবে স্বাধীন বাংলা বিপল্গবী বেতার কেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয় ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে। এখানেও ২৫ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত লিখিত স্বাধীনতার ভাষণটি পাঠ করেন বেতারের অনেকে। ২৭ মার্চ মেজর জিয়াউর রহমান সামরিক বাহিনী নিয়ে পটিয়া থেকে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে আসেন। তিনি ওইদিন সন্ধ্যায় প্রথমে সামরিক বাহিনীর পক্ষে পরে বঙ্গবন্ধুর বরাত দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণাটি ইংরেজিতে পাঠ করেন। মেজর জিয়াকে পটিয়া থেকে নিয়ে আসেন বেলাল মোহাম্মদ, আবদুল্লাহ আল ফারুক, আবুল কাশেম সন্দ্বীপ ও কাজী হাবিব উদ্দিন মনি।
২৮ মার্চ আবার জিয়াউর রহমান পঠিত বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত লিখিত স্বাধীনতার ভাষণটি পাঠ করেন সামরিক বাহিনীর শমসের মবিন চৌধুরী। ২৯ তারিখেও একই ভাষণ পাঠ করেন সামরিক বাহিনীর সুবিদ আলী ভূঁইয়া। প্রতিরোধ যুদ্ধে এই ঘোষণার অবদান গুরুত্বপূর্ণ। (সূত্র: Click This Link)


সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১১ সকাল ১০:৫৫
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×