somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সালমান শাহের জন্য শ্রদ্ধান্জলী এবং নিজের কিছু অভিজ্ঞতা। কতটা জনপ্রিয় ছিলেন তিনি?

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি ছুডুবেলা থিকাই জানি কিমুন কিমুন আছিলাম। মাইনষে কইত ব্রুস লি ভালা আমি কইতাম জ্যাকি চান। মাইনষে কইত টারজান ভালা আমি কইতাম র‌্যাম্বো। সবাই টম এন্ড জেরির ভক্ত হইলে ও আমি ছিলাম উডিউড পেকারের ভক্ত। এমনই বিদ্রোহী ছিলাম আমি সেইসময়। :( :( সবাই পূর্বে গেলে আমার পূর্বে পাছা ফেরানো ফরয ছিল (দেখছেন আমি কত পরহেজগার ;);))।

যাই হউক আমার সেই উত্তাল দিন গুলায় আমি মুখোমুখি হইলাম এক অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতার। বাংলাদেশের সব মাইয়াগুলাই এক পোলার উপর ক্রাশ খাইছে - সেইডা দেইখা ফেলাইলাম এক্কেবারেই ছুডবেলায়ই। আর সেই পোলাডা কেডা জানেন? সে হইল সালমান শাহ:|:|। আর ঐদিকে আমার আবার ভালো লাগে মৌসুমীরে। মৌসুমীর লগে নাকি সালমানের ঢিসুম ঢিসুম ব্যাপার। তার উপর আবার আমার বিদ্রোহী সত্ত্বা!!! সব মিলাইয়া আমি সাপোর্ট দিলাম ওমর সানিরে। তবে দুষ্ট লোকেরা বলে সেই সাপোর্টে নাকি প্রকৃত সাপোর্ট ছিলনা। আমি নাকি সূক্ষ্মভাবে সানিরে পচাইতাম।;);)


(এই সেই সালমান। )

যাই হোক সানির মত একটা চাদর নিয়া তারপর চাদর দুইপাশে ছড়াইয়া নিজের শার্ট (সানির মত বক্ষ প্রদর্শনে আমি অবশ্য লজ্জা পেতুম ;);)) প্রদর্শন করিয়া আমি সালমান ভক্তদের খেপাইতাম। খেপানোটা বেশী হইত আমার দুই কাজিনরে। দুইটাই বয়সে আমার বড় ছিল কিন্তু মগজে ছোট ছিল;););)। আমার নিরীহ সালমান বিদ্বেষকে তারা রীতিমতন সিরিয়াসলি নিত। আর তাহাদের সিরিয়াসনেস ছিল আমার সালমান বিদ্বেষের প্রধান অনুপ্রেরণাB-)B-)। আমি অবশ্য এইক্ষেত্রে সবসময় সাপোর্ট পাইতাম আমার চাচাতো ভাইয়ের কাছ থিকা। হি ওয়াজ সিম্পলি দ্যা বেস্ট ফাযিল পোলা আই হ্যাভ এভার সিন;);)। আমার চেয়ে বছর তের বড় এই ভাই সবসময় রোযার দিনে রোযাতো রাখতই না (সেইসময় আমি তো দূর আমার ছোডগুলাও রোযা রাখত তয় ওরা আসরের ওয়াক্তে ইফতারি করত আর আমি মাগরিবে ;);)) উল্টা দরজার সাথে দড়ি দিয়া কলা, আপেল ঝুলাইয়া রাখত। আইতে যাইতে একটা কইরা কলা ছিড়ত আর রোযাদারদের কইত আপনাগো রোযা পোক্ত করতাছি X(( X(( X(( । আমি এই রোযদারদের কস্ট দেয়া জিনিস পছন্দ না করলেও অন্য ব্যাপারে এই ফাযিল ভাইডারে অকূন্ঠ সমর্থন দিতাম;);) আর বিনিময়ে আমিও যে সমর্থন পাইতাম তা আর বলতে;);)

(সর্বদাই খালি গায়ে থাকতে পছন্দ করা বাংলা ছবির নায়ক ওমর সানি। অনেক সময় ধরে খুজেও চাদর গায়ে সানির সেই বিখ্যাত পোজ খুজে না পেয়ে এই ছবিযুক্ত করে দিলাম।)

যাই হোক গল্পে গল্পে বেলা গড়ি যায় এইবার আসেন আসল কথায়। হঠাৎ একদিন সালমান মারা গেল আর এই খবর আমিই আমার বলদা কাজিন দুইডারে দিলাম। দুই বলদিই বিশ্বাস করলনা। হাসিয়াই উড়াইয়া দিল যেন ইহা আমার ষড়যন্ত্র। কি আর করা পরবর্তীতে কনফার্ম হইয়া দুইজনেরই চোক্ষে বান নামিল:((:((। তাহারা বলিল তাহারা নাকি আর বাংলা সিনেমা দেখিবেনা:|:|। এক তালাক, দুই তালাক, বাইন তালাক বলতে বললাম তাহাদিগকে। উল্টা তাহারা আমার সহিত গলাছোলা মুরগীর মত ঘাড় বেকাইয়া ঝগড়া করিতে প্রবৃত্ত হইল। কি মনে করিয়া আমি যে সেদিন চুপ ছিলাম আমি নিজেও জানিনা/:)/:)

(এই ছবি দিয়েই আবির্ভাব বাংলা চলচ্চত্রের গত দুই দশকের সবচেয়ে সম্ভাবনাময়ী জুটির। কিন্তু জুটিটি টিকেনি।)

তবে খেইল শুরু হইল দুইদিন পর। সবাই প্রথমে সালমান শাহর মারে দোষারোপ করা শুরু করল। তাদের কথা তার মার অত্যাচারেই নাকি সালমান সুইসাইড খাইছে। আশ্চর্য আমি তার মার কোন দোষই দেখলামনা। কি জানি কি হইল হঠাৎ শোনা গেল আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের কথা। আমি পত্রিকায় তার ছবি দেখিয়া বলিলাম, " দিস জেন্টলম্যান লুকস ফার স্মার্টার দ্যান সুলেমান শা"। আর যায় কই আমার উপর তুফান নামিয়া আসিল। আমাকে পচানোর ব্যার্থ চেষ্টা করা হইল। কিন্তু আমি "কত নামাজি দুই পায়ের তলায় ভষ্ম হইয়া গেল আর আমি বেনামাজি খারাইয়াই রইলাম" প্রবাদখানি সত্য প্রমাণ করিয়া তাহাদের বানের জলে ভাসাইয়া নকআউট করিয়া দিলাম:):)। এরপরে আসিল আরো মজার তথ্য। দোষ খুজিয়া বাহির করা হইল সালমান স্ত্রী সামিরার। আমিও আমার পূর্ব ইতিহাস সমুন্নত রাখিয়া সামিরাকে ভালোবাসিয়ে ফেলিলাম;);) আর সালমানভক্তদের দু চোখের বিষে পরিণত হইলাম। আমিও পুরা শোধ তুলিতে চাইলাম। উহাদিগকে সালমান অভিনীত মুভি দেখার জন্য তিরষ্কৃত করিয়া বলিলাম বালিকাগণ তোমরা না বাংলা সিনেমা দেখিবেনা বলিয়া পণ করিয়াছ? এত তাড়াতাড়ি প্রতিজ্ঞা ভূলিলে কেমনে? উহারা রুদ্ররোষে আমার দিকে চাহিয়া ছবি দেখায় মন দিল। আমি পুনরায় খেপানি আরম্ভ করায় এইবার আমার মাতা স্বয়ং আমাকে তাড়াইয়া দিলেন। আমি দৌড়াইয়া ভাগিয়া নিরাপদ দুরত্বে যাইয়া সম্মানজনক পলায়ন করিলাম।

যাইহোক আমি তখন বালক আর বালকরা কখনো দমেনা। এক এক করিয়া নিউজ আসিতেছে তখন তরুণী হত্যার খবর। আমি শিউর ছিলাম আমাদের পাড়ায় কেউ কেউ না কেউ ঘ্যাচাং করিবে। যাউকগা আমার এক সহপাঠি (সে তার হস্ত কাটিয়া সালমান লিখিয়াছিল) ছাড়া কেহই আমার আশংকা সত্য প্রমাণ করিতে উদ্গ্রীব হইলনা। সব যে নকল প্রেমিকা আমি বুঝিতে পারিলাম;);)। আমি প্রায় সব সালমান ভক্ত নারীকূলকে আত্মহত্যা যে মহা পাপ তা স্মরণ করাইয়া দিতে লাগলাম। যাহারা বলিয়াছিল বাংলা সিনেমা দেখিবেনা তাহাদের শূক্রবারের বাংলা সিনামা দেখার সময় কৃত প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করাইয়া দিতাম। আমার ভয়ে আমার কাজিনদ্বয় অনেকদিন বাংলা সিনেমা দর্শন করিতে ভয় পাইত। আর একটা জিনিস অবশ্য এরপর শুরু করিয়াছিলাম তাহা হইল তাহাদের ঘুমানোর সময় হইলে আমি তাহাদের ঘরে গিয়া বলিয়া আসিতাম, "আত্মহত্যা করা মহাপাপ আর বেগানা পুরুষমানুষের জন্য করা তো আরো বড় পাপ। কসম কাটিয়া বল তোমরা আত্মহত্যা করিবেনা"।

ওহ এই আযাব আমি দীর্ঘ দুই বছর পর্যন্ত তাহাদের উপর চালু রাখিয়াছিলাম। তাহারা মাঝোমাঝে দাত কিড়মিড় করিতে করিতে বলিয়া উঠিত "হিংসা হয় তোর, হিংসা হয়"। আবার কখনো কাদিত ও। তবে একসময় আমি ক্ষ্যামা দিয়াছিলাম।

যাহা হোক এতক্ষণ ঘর বর্ণনা করিলাম এখন বাহির বর্ণনা করি। আমাদের স্কুলে একসময় মেয়ে ছেলে একসাথে অধ্যায়ন করিত। কিন্তু নানা চারিত্রিক স্খলনের কারণে এবং মেয়েদের উপুর্যুপরি অভিযোগে ত্যাক্তবিরক্ত হইয়া স্যাররা অভিভাবকদের সাথে ষড়যন্ত্র করিয়া আমাদের ক্ল্যাশ ভাগ করিয়া দিলেন। সালমান শা যখন মারা যায় তখন আমরা সেপারেট কিন্তু ঠিকই যোগাযোগ হইত। শুনিতাম উহারা আমাদের বড়ই মিস করে। কিন্তু আমরা পুরুষ জাতি খুব একটা পাত্তা দিতামনা;);)। তবে সবারই এক কথা ভাগ করিয়া দেয়ায় আমরা সালমান ভক্তবৃন্দের নাটিকা দেখা হইতে বন্চিত হইতেছি। তবে টিফিন পিরিয়েড বা ছুটির পরে উহার কিছু ঝলক দেখিতে পাইতাম। এমনিতে সালমান স্ত্রী সামিরাকে পছন্দ করায় আমার উপর সবার রাগ একটু বেশী তার উপর সালমান মৃত্যুর কারণে সুপার ডুপার হিট মুভি সত্যের মৃত্যু নেই ক্ল্যাশ পলাইয়া না দেখার কারণে আমি সবার টিজিংয়ের শিকার হইতাম। স্বীকার করি ছাত্ররা ছাত্রীদের টিজ করত কিন্তু আমি ছিলাম অতিশয় ভদ্র। কখনোই তাহাদের টিজ করিতাম না। কিন্তু এই ললনা জাতি আমারে উল্টা টিজ করিত। আমার কান, গাল একটু নরম নরম ছিল বলিয়া এই মাইয়াগুলা আমার গাল, কান টিপিয়া লাল করিয়া দিত। আফসোস করিত আমার কান কেন তাহাদের হইলনা!! তাইলে নাকি উহারা সানন্দে কান ফুটা করিয়া কানে দুল পড়িতে পারিত।X((X(( আমি বেশ কয়েকবার তাহাদের পিটাইয়াছি, গালি দিয়াছি কিন্তু উহাদের কোন বোধদয় হইতনা। উহারা যে কতখানি নির্লজ্জ ছিল তাহা বুঝাইতে আরো কিছু কথা না বললেই নয়।

(এই সেই ছবি সত্যের মৃত্যু নেই যেই ছবি বন্ধুরা ধরে বেধেও আমাকে স্কুল ফাকি দিয়ে দেখাতে পারেনি। যুক্তি দিয়েছিলাম হুজুগে ভালোবাসা দেখিয়ে কি লাভ?)

আমরা ছিলাম খুবই ফ্রি। আমরা উহাদের গিমা (পাঠক গণ গিমা শব্দটির বর্ণ গুলি একটু উল্টাইয়া লন তাহা হইলে ইহার আসল মিনিং জানিতে পারিবেন) বলিতাম কিন্তু উহারা কোন প্রতিবাদ করিতনা। উল্টা আমাদের বলিত ব্যাডা এবং পরে আরো অপদস্থ করিত মর্দা বলিত। কতটা নির্লজ্জ ছিল উহারা একবার চিন্তা করেন!!! যাহা হউক উহা আলাদা বিষয়। প্রসঙ্গান্তরে আসিয়া পড়িয়াছে। আমরা এইবার আবার সঠিক ট্র্যাকে ফিরিয়া যাই। আমাকে সালমান বিষয় লইয়া একদিন এক গিমা টিজ করিতে প্রবৃত্ত হইলে আমি বলিলাম, "এইরকম বাল্যপ্রেম ভালো না। পড়াশুনা কর। পরে অবৈধ প্রেমের কারণে একদিন আসল প্রেম মানে তোমারা নিকা করার সৌভাগ্য অর্জণে তুমি ব্যার্থ হইতে পার।"

আর যায় কোথায়!! যেন আস্ত মৌচাক আমার মাথায় ভাঙ্গিয়া পড়িল। একে একে অনেক গিমা আমায় ঘিরিয়া ধরিল। তাহার আমায় বলিল," হিংসা হয়? তোর হিংসা হয়? সব মেয়েরা সালমান শাহকে পছন্দ করে বলে তোর কি হিংসা হয়?"

ঘরে বাইরে এই অপবাদ শুনিতে শুনিতে আমার মাথায় তখন বজ্রপাত ঘটিল। আমি বুঝিতে পারিলামনা এই ঢাকা শহরের আলো বাতাসে বড় হইয়া ডিশ কালচারে বাড়িয়া উঠা ঢাকা শহরের সবচেয়ে স্মার্ট গিমাগুলা (সেইসময় ইংলিশ মিডিয়ামের এত জয়জয়কার ছিলনা) এইরকম খ্যাত কেমনে হইল? আমি তাই পাল্টা আঘাত ছুড়িলাম, খোমা দেখিয়াছিস কি তোদের?
উহারা পাল্টা কহিল, তোর খোমা আগে দেখিয়া আয়!
আমি বলিলাম, আমি কি বলিয়াছিলাম যে তোরা আমার উপর ক্র্যাশ খাইয়াছিস? তোরা অপবাদ দিয়াছিস তাই তোরা আগে যা খোমা দেখিতে।

জাবাবে উহারা বলিল উহাদের একুইজেশন নাকি সঠিক। আমি তাহাদিগকে পছন্দ করি আর উহারা সালমানকে পছন্দ করে বলিয়া আমি নাকি সালমানকে হিংসা করি। আমি অবাক হইয়া গেলাম ভালোবাসায় অন্ধ হইলে নারীরা কতটা হিতাহিত জ্ঞানশূণ্য হইতে পারে ইহা দেখিয়া।

আমার আর সহ্য হইলনা। ধাম করিয়া বলিয়া দিলাম, আমার মত এক গোবেচারা বালক কিভাবে তোদের মত এতগুলো কদাকার গিমাকে লাইক করিতে পারে?

ব্যাস এইবার ক্যাও ক্যাও শুরু হইয়া গেল ভয়াবহভাবে। এই কাউ কাউ শুনিয়া আমার বন্ধুদিগরাও না আসিয়া পারিলনা (উাহারা পাশেই ছিল অবশ্য;);))। উহারা ছিল আমার চেয়ে অনেক উচু জাতের বদ। আর তাছাড়া উহারা ছিল চিহ্ণিত ইভটিজার। কিভাবে ইভটিজিং করিতে হয় উহারা তা ভালো জানিত। দল বাধিয়া উহারা আসিয়া যখন সব শুনিতে চাহিল আমি তাহাদিগকে সব খুলিয়া বলিলাম। উহারা আমাকে বলিল আমি নাকি উহাদের কে যথাযথ উত্তর ফিরাইয়া দিতে পারিনাই। আমাকে উহারা বলিল আমার নাকি "আমার মত এক গোবেচারা বালক কিভাবে তোদের মত এতগুলো কদাকার গিমাকে লাইক করিতে পারে?" এর বদলে বলা উচিৎ ছিল "আমার মত এক গোবেচারা বালক কিভাবে তোদের মত এতগুলো কদাকার গিমাকে নিকা করিতে পারে?" শুধু এইটুকু বলিয়াই দুষ্টুকূল শিরোমণি দেবাশীষ খ্যান্ত না দিয়া অপু দশ বিশ ত্রিশ গূণিয়া অবশেষে আল্লাদিয়া ঢেপের খই এত আল্লাদ পাইলি কই সিনথির উপর আঙ্গুল নিবদ্ধ করিল।

আর যায় কই সিনথি আল্লাদি ফুপিয়া ফুপিয়া কাদিয়া উঠিল। কে তাহারে স্বান্তনা দিবে কে তাহারে ভরসা দিবে? আছে কি এমন কোন জন? না সেইরকম কেউ তখনো জন্মায়নাই। যা হওয়ার তাই হল অবশেষে। গিমাডা নালিশ করিয়া দিল।:|:|:|

কিন্তু ব্যাক্কল নালিশ করবি ভালো কথা কোন স্যাররে কর!!:):) না সে করল শাহিনা ম্যাডামরে;););)। শাহিনা ম্যাডাম রাম ধমক দিয়া ক্ল্যাশে চলিয়া যাইতে কহিল গিমাদের। ম্যাডামের ক্ল্যাশ ছিল ঠিক টিফিনের পরেই। তাই ম্যাডাম যাইয়াই উহাদের সালমান প্রেমের পরীক্ষা নিতে লাগিল। পড়া ধরিয়া ছেড়াবেড়া করিয়া দিল তাদের। গুটিকয়েক বাদে প্রায় সবগুলিকে বেন্চের উপরে দাড় করাইয়া ম্যাডাম সালমান প্রেমের কুপ্রভাব বর্ণনা করিতে লাগিলেন;););)। পড়াশুনা না করিয়া সালমান প্রেমে গদগদ হইলে যে ভাতার আইমিন সোয়ামী জুটিবেনা উহাও তিনি স্মরণ করাইয়া দিলেন:|:|। এমত অবস্থায় পরিস্তিতি আরো করুণ হইল দুই তিনজন অতি লক্ষী গিমার "ম্যাডাম আমরা তো সালমান সালমান করিনা, আমরা তো পড়া পেরেছি তাহলে আমাদেরকে কেন এসব বলছেন" বলে কান্না জুড়ে দেয়ায়। ম্যাডাম তখন ওদের দেখাইয়া দেখাইয়া বাকি গিমাদের আরো বেশী করে লজ্জা দিলেন (বুঝ ঠেলা;);))। ঐদিকে আমাদের তখন কৃষি টিচার হিন্দু এক স্যার (নাম মনে আসতেছেনা) ক্ল্যাশ নিচ্ছিলেন। উনি আবার ক্ল্যাশে ঢুকার আগে বেত চাইতে গিমাদের ক্ল্যাশে ঢুকিয়া সব আদি অন্ত জানিয়া ক্ল্যাশে পড়ানো বাদ দিয়া খোশ গল্পে মাতিয়া উঠিলেন। ক্ল্যাশ খুব আরামসে কাটিয়া গেল;);)। এইভাবে সালমান ভক্তদের আমি সবসময়েই দমাইয়াই আসিতেছিলাম।B-)B-)

আমার কথা:

আমাদের যুগে ছেলেদের মধ্যে সালমান নিয়ে লাফালাফি খুব বেশী ছিলনা। যা লাফালাফি তা মেয়েদের মধ্যেই বেশী ছিল। তবে সবাই একমত পোষণ করত যে বাংলা সিনেমা তার সর্বশ্রেষ্ঠ তারকাটিকে হারিয়েছে। কৈশোরের চপলতায় আমি হ্য়ত সালমানের মৃত্যুতে খুব আমোদ করেছি বলে মনে হতে পারে কিন্তু সত্যি হল আমি ভিতরে ভিতরে খুবই দুঃখ পেয়েছিলাম। সালমানের কেয়ামত থেকে কেয়ামত, স্নেহ, তুমি আমার, অন্তরে অন্তরে, বিক্ষোভ, দেনমোহর, এই ঘর এই সংসার এই সিনেমা গুলোর সবগুলো সম্ভবত আমি হলে গিয়ে দেখেছিলাম (আরো বেশী হতে পারে কারণ তখন অনেক সিনেমা দেখতাম)। তখন গুলশান একের জ্যোতি সিনেমা হলে আমরা ছবি দেখতাম সম্পূর্ণ বিনা পয়সায় (টাকা চাইলে ছুইলা ফেলাইতাম না নগদে!!!! এলাকার দাপট আছেনা একটা:P:P)।

(শাহরুখ খান আর তার স্ত্রী গৌরির সাথে সালমান এবং তার স্ত্রী সামিরা। সালমান শাহের মৃত্যুর জন্য পরিবারের তরফ থেকে তার স্ত্রীর দিকে আঙ্গুল তোলা হয়ছিল। জানিনা ভিতরে কি আছে?)

আজকে দিন পাল্টে গেছে। যারাই বাংলা সিনেমা নিয়ে চিন্তা করে তারাই সালমানকে ফিল করে। সালমানকে নিয়ে ভালো একটা পোস্ট দিয়ে যে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাবো সে সামর্থ্য আমার নেই। আমার মত সাধারণ একজন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয় শুদ্ধ ভাষায় যথাযথ বিশেষণ প্রয়োগে কিংবদন্তী সালমানকে যথার্থরূপে চিত্রিত করা। তাই আমার জীবনের সালমান স্মৃতি নিয়ে সাজালাম সালমান শ্রদ্ধান্জলী। সালমান যে মেয়েদের কাছে কতটুকু জনপ্রিয় ছিল - আমার বলা কাহিনীগুলোই তার প্রমাণ বহণ করে। এই কাহিনীগুলোতে হয়ত দূর্যোধনের প্রভাব থাকতে পারে কিন্তু প্রতিটি কাহিনীই বাস্তব। আমি জাফর ইকবালের পিক টাইমে তাকে দেখিনি তবে সালমানকে দেখেছি তার তারকাবেলার পুরোটা জুড়ে। আমার জীবদ্দশায় এত জনপ্রিয় নায়ক বাংলাদেশে যে আর একটিও দেখিনি এই সত্যটুকু স্বীকার না করলে বিবেকের কাছে দোষী থেকে যাব সারাটা জীবন। আমি নিজে বিশ্বাস করি সালমানকে খুন করা হয়েছে। সামিরা, ডন এবং আজিজ মোহাম্মাদ ভাইকে কষে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত সত্য বেড়িয়ে আসবে এই ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। পরিশেষে বলতে চাই সবার মত আমিও সালমানের হত্যার বিচার চাই।

(সালমানের হাত ধরে আসা তার বন্ধু খলনায়ক ডনের একাধিক ছবি তখন তুমুল শোরগোল তুলেছিল। আমার কাছে সেই ছবিগুলো অনেকদিন পর্যন্ত ছিল কিন্তু এখন আর নেই)
১০টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×