somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বেচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত ক্রীতদাসী

২৫ শে জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষের ৫ টি ইন্দ্রিয়। চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা ও ত্বক। আরেকটি ইন্দ্রিয় যাকে আমরা ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলি। যা দেখা যায় না, ছোঁয়া যায় না। কিন্তু অনুভব করা যায়। এর অবস্থান কোথায় তাও জানি না। অনেকে বলবেন মস্তিস্কে , অনেকেই বলবেন হৃদয়ে। অবস্থান যেখানেই হোক এ যে আছে এ ব্যাপারে সবাই নিশ্চিত।

৫ টি ইন্দ্রিয় দিয়ে জাগতিক সাদৃশ্য সব কিছুর অনুভূতি পাওয়া যায়। অসাদৃশ্য কোন কিছুর অনুভূতি আমরা অনুভব করি এই ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় দিয়ে।
যেমন যদি কাউকে ভালোবাসি তবে এর অনুভূতি ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় দিয়েই হয়ে থাকে। কারো প্রতি তীব্র ভাবে অনুভূতি জাগে । সুস্পষ্ট ভাবে কোন জায়গায় অনুভব করি তা বলা মুশকিল। অথবা প্রতিটা ইন্দ্রিয় তাঁকে নিয়ে অনুভূতি সৃষ্টি করে। ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় দিয়ে অনুভব করা ভালোবাসা অন্যান্য ৫ টি ইন্দ্রিয়কে খুব দৃঢ় ভাবে , প্রবল ভাবে নিয়ন্ত্রন করে। কিভাবে যে এ হয় তা অতি বিস্ময়ের ব্যাপার।

যার সাথে আমার কোন রক্তের সম্পর্ক নেই, যে জীবনে হঠাৎ করে আবির্ভূত হয়, যে জীবনের শুরু থেকে থাকে না, মাঝ পথ থেকে আগমন ঘটিয়ে সব কিছু পালটে দেয়। যার জন্য চিরচেনা সকল পরিস্থিতি , পরিবেশ, চিন্তা ভাবনা, আবেগ অনুভূতি, বিশ্বাস অবিশ্বাস, ধ্যান ধারণা, পরিকল্পনা, সিদ্ধান্ত সব ... সব কিছু নিমিষেই পালটে যায়। হয়তো কারো জন্য ভালোর দিকে পালটে, কারো জন্য খারাপের দিকে। কিন্তু পালটে যায়, পরিবর্তনহীন ভাবে সব কিছু পরিবর্তন হয়ে যায়।

অনেক সময় খুব শোচনীয় ভাবেও জীবন পরিবর্তন হয়। ভালোবাসার অনুভূতি এতই তীব্র হয় বা তাঁর প্রতি আকর্ষণ এমনই দুর্বার রূপ নেয় যে নিজের আর কোন কিছু অনুভব করার ক্ষমতা থাকে না। নিজে কোন কিছু চিন্তা করে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার যোগ্যতা থাকে না। সময়িক ভাবে যদি কিছু চিন্তা করিও তবে তাঁর কথা, চিন্তা, ব্যবহার, মান, অভিমান, এড়িয়ে যাওয়া, ঝগড়া করা, ভুল বুঝা, ভয় দেখানো খুব চমৎকার ভাবে নিয়ন্ত্রন করে।

যেমন আমি জানি রাতে তুমি কারো সাথে কথা বলো। আমি এতে আহত হই, কষ্টে জর্জরিত হই। কিন্তু তোমার একটি মুখের কথা, “ কই আমি তো কথা বলি না” আমাকে আবার তোমার নিয়ন্ত্রনে আনে।
আমি জানি তুমি কারো সাথে কিছু করেছো। এতে আমি তীব্র ভাবে ভেঙে চুড়ে যাই, আমার শরীরের প্রতিটি শিরা উপশিরা ব্যাথায় নীল বর্ণ ধারন করে। কিন্তু তোমার হাঁসি মুখে একটি উচ্চারণ “ আমি তো তোমাকে ছাড়া অন্য কারো কাছে যাই না” আমাকে তোমার নিয়ন্ত্রনে আনে। আমার ভেঙে চুড়ে যাওয়া আমিকে আবার জোড়া লাগাই। ব্যাথায় নীল হয়ে যাওয়া শিরাগুলো আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়।
দীর্ঘ সময় তোমার কণ্ঠ শুনতে না পেলে সময় আমার অভাবিত ভাবে নষ্ট হয়ে যায়। আমার স্বাভাবিক কাজ কর্ম গুলো জমতে জমতে আমাকে শ্রেষ্ঠ রকম অলস করে তুলে। যেই তোমার কণ্ঠস্বর আমার শ্রবণ ইন্দ্রিয় স্পর্শ করবে আমার উপর যেন কোন অলৌকিক শক্তি ভর করে। আমি সাবলীল ভাবে স্বাভাবিক হয়ে যাই। আমার মুখে নির্মল হাঁসি লেপে থাকে। আমার কাজ করার স্পৃহা অফুরন্ত ভাবে বেড়ে যায়।

আমি জানি তোমার কোন কথা গুলো মিথ্যা, কোন কথা গুলো সত্য। কিন্তু আমার চিন্তা ভাবনা বেশিক্ষন আমার নিয়ন্ত্রনে থাকে না। আমি নিজে নিজে ভেবে যখন ক্লান্ত বিমর্ষ হয়ে যাই, ঠিক তখনই তোমার আগমন ঘটে। আমাকে হয়তো তুমি খুব গভীর ভাবে চিনে গেছো বা বুঝে গেছো বা জেনে গেছো আমি তোমার নিয়ন্ত্রনের বাইরে যেতে পারবো না কোনোদিন। তাই যেকোনো কথা, হোক সেটা মিথ্যা বা সত্য আমাকে আনন্দ দেয়। আমাকে তোমার বশে নিয়ে আসে। আমার সব চিন্তাকে তুমি অত্যন্ত দারুণ ভাবে অথবা নিদারুণ ভাবে নিয়ন্ত্রন করতে পারো।

প্রত্যেকটি মানুষের কিছু নিজস্ব চিন্তা ভাবনা থাকে। কিন্তু এখন আর আমার নিজস্ব বলে কিছু নেই। আমি আমাকে নিয়ে যদি কিছু ভাবি অথবা তোমাকে নিয়ে যদি কিছু ভাবি অথবা অন্য কিছু নিয়ে ভাবি তবে সেটা সাময়িক। তোমার আগমন আমার সব চিন্তাকে তোমার করে দেয়। আমার সব চিন্তার উপর আজ জেলের কারারক্ষীর নিয়ন্ত্রনের চেয়েও নিছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা মোতায়ন হয়েছে। আমার সত্ত্বা আজ তোমার কৃতদাসে পরিণত হয়েছে। তুমি ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে আমার সব অনুভূতি নিয়ন্ত্রন করতে পারো।

আর আমি এই স্বেচ্ছাকৃত দাসী হওয়া ভালোবাসি......
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×