আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, প্রতিরক্ষা সচিব, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব, কারা মহাপরিদর্শক, ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপারিনটেনডেন্টকে তিন সপ্তাহের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সোমবার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের বেঞ্চ একটি রিট আবেদনে এ আদেশ দেয়।
কর্নেল তাহেরের ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম আনোয়ার হোসেন, তাহেরের স্ত্রী লুৎফা তাহের এবং সামরিক আদালতের বিচারে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ফ্লাইট সার্জেন্ট আবু ইউসুফ খানের স্ত্রী ফাতেমা ইউসুফ সোমবার সকালে একই বেঞ্চে আবেদনটি দায়ের করেন।
আদেশের পর আবেদনকারীদের আইনজীবী শাহদীন মালিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কর্নেল তাহেরসহ ১৭ জনকে সামরিক আদালতের গোপন বিচারে ১৯৭৬ সালের ১৭ জুলাই সাজা দেওয়া হয়। এরপর ২১ জুলাই ভোররাতে কর্নেল তাহেরের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
শাহদীন মালিক আরো বলেন, "সংবিধানে গোপন বিচারের কোনো বিধান নেই। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না এমন বিধানও নেই। কিন্তু ১৯৭৬ সালে ওই সামরিক আইন আদেশের জন্য এই বিচারের বিরুদ্ধে আপিল করা যায়নি। বিচারের কোনো কাগজপত্র কেউ পায়নি। এটি ছিলো মধ্যযুগীয় বিচার।"
তিনি বলেন, আদালত এসব বিবেচনায় কর্নেল তাহেরসহ ১৭ জনের ওই বিচার সংক্রান্ত নথি তলব করেছে। পাশাপাশি গোপন বিচারের জন্য জারি করা সামরিক আইন আদেশ ও এই বিচার এবং সাজা কার্যকর করাকে কেনো অবৈধ ঘোষণা করা হবে তা জানতে চেয়েছে।
আবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৭৫ সালের ২০ অগাস্ট সামরিক আইন জারির মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশকে এর আওতায় আনা হয়। এরপর ১৯৭৬ সালে আরেকটি সামরিক আইন আদেশ জারি করে তাহেরের গোপন বিচারের জন্য সামরিক আইন আদালত গঠন করা হয়।
এর আগে ১৯৭৫ সালের ২৪ নভেম্বর তাহেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আবেদনে আরো বলা হয়, "ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাহেরসহ অন্যদের গোপন বিচার হয়। ওই বিচারের নথি কেউ পায়নি। এমনকি গ্রেপ্তারের পর বিচার পর্যন্ত কর্নেল তাহেরের সঙ্গে তার স্ত্রীর আর দেখা হয়নি। অনেক চেষ্টা করেও তিনি বিচার সংক্রান্ত কোনো কাগজ পাননি।"
আবেদনে আরো বলা হয়, রিট আবেদনকারী আনোয়ার হোসেনকেও বিচারে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ফ্লাইট সার্জেন্ট আবু ইফসুফ খানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া আরো ১৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড দেওয়া হয়।
শাহদীন মালিক জানান, আনোয়ার হোসেন ও আবু ইফসুফ খান ১৯৮০ সালে মুক্তি পান।
শুনানিতে শাহদীন মালিক বলেন, আপিল বিভাগ সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করেছে। এ সংশোধনীতে বৈধতা দেওয়া অনেক সামরিক আইন আদেশকে অবৈধ ঘোষণা করেছে উচ্চ আদালত। তবে আদালত অনেক বিষয় মার্জনাও করেছে।
শাহদীন মালিক আরো বলেন, আপিল বিভাগ যেসব বিষয় মার্জনা করেননি সেসব বিষয়ে হাইকোর্ট তার এখতিয়ার প্রয়োগ করতে পারবে। বিডিনিউজ
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:২৭