রাজনৈতিক স্বার্থে ইসলামকে ব্যবহার করার ফলে একজন ইমানদার মুসলিমের যে পরিমান ক্ষতিসাধন এবং জাতি যে পরিমান ইসলামি আকিদা,বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বিভ্রান্ত হয় তা এখন চাক্ষুষ বিষয়।
এতদিন সবাই জানতো, সেটা ভাস্কর্য অথবা প্রতিমা হোক যে, অবয়ব তৈরি করা হারাম। এতদিন বিষয়টা ছিলো হারামকে হারাম জেনে করার ভেতরে আর এখন ইসলামের নামে অপরাজনীতির ফলে বিষয়টা হারামকে হালাল জানার বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
আপনি যদি হারামকে হারাম জেনে করেন সেক্ষেত্র সেই হারাম কাজটার সাথে যদি বান্দার অধিকারের বিষয় যুক্ত না থাকে তাহলে সেটা তাওবা করলে ক্ষমা পাবার যোগ্য।যদি সেই হারাম কাজের ভেতর বান্দার অধিকার সম্পর্কিত হয় সেক্ষেত্রে বান্দার ক্ষমাটা অগ্রাধিকার পাবে।অর্থাৎ বান্দার হক (হাক্কুল ইবাদ) এটা বান্দা মাফ না করলে আল্লাহ মাফ করবেন না।আরেকটা আল্লাহর অধিকার (হাক্কুল্লাহ) যেটা তাওবা করলে আল্লাহ মাফ করতে পারেন।
একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ভাস্কর্য থাকাটা স্বাভাবিক। প্রাণীর অবয়বের ভাস্কর্য হারাম।এখন যদি কেউ সেই হারাম কাজ করে সেক্ষেত্রে তাকে হারাম বিষয়টা মনে করিয়ে দেয়া যেতে পারে কিন্তু সেটা না করতে বাধ্য করা উগ্রবাদীতার সামিল। (হারামকে হালাল আরা হালালকে হারাম মনে করলে ঈমান থাকে না)
এতদিন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠা জাফরুল্লাহ সাহেব তাদেরও প্রিয় ছিলেন আজ থেকে হয়ত তিনিও নাস্তিকদের দলের ফতোয়াতে পড়বেন। জাফরুল্লাহ সাহেব বলেছেন "হুজুররা আমাদের দেশের সম্মানিত লোক,তাদের বিতর্কে জড়ানো উচিত না।আগে নিজেদেরকে সচ্ছ রাখতে হবে।মাদ্রাসায় শিশু বলাৎকার বন্ধ করতে হবে।"
এই বক্তব্য কখনই হেফাজত সহ উগ্রপন্থীরা ভাল চোখে নিবে না।
একদল আলেমের উগ্রবাদীতার ফলে অন্য আলেমগন বিভ্রান্তিতে পড়েন।যেমন বাংলাদেশে যারা সুফীবাদের চর্চা করেন। তারা এখন বক্তব্য রাখছেন ভাস্কর্য হারামের পক্ষে। কারণ একজন মুমিনের সবচেয়ে জরুরী বিষয় হলো হারামকে হারাম জানা ও হালালকে হালাল জানা। এরফলে মুমিনকে বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা করতে তারা হারাম বলতেছেন যেটা উগ্রপন্থীদের জন্য প্লাস পয়েন্ট হিসেবে কাজ করতেছে। অথচ এই বক্তব্য এড়িয়ে যাবারও কোন উপায় নেই।কারণ উম্মতের প্রতি তাদের দ্বায়িত্ববোধ।
জুনায়েদ সাকীর বক্তব্য ভালো লেগেছে। "ভাস্কর্য হারাম যে জানে সে এড়িয়ে গেলে হয়।যেহেতু এটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এখানে যিনি হারাম মনে করেন এবং যে শিল্পের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেন উভয়েরই অধিকার সমান।সুতরাং ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলা এটা অন্যায়।"
জাতিকে কিছুদিন পরপর রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্মের দোহাই দিয়ে বিভ্রান্ত করার কুফল একমাত্র একজন ইমানদারের জন্য সব থেকে কষ্টকর। বর্তমানে মুসলিম,ইমানদার ও তৌহিদি জনতা তিনটা প্রজাতি। কখনই এরা এক নয় বলে আমার অভিমত।
হারামকে হারাম এবং হালালকে হালাল জানাই এখন চ্যালেঞ্জিং বিষয়। আসুন আমরা আসল সত্যকে স্বীকার করে নিজের ইমান,দেশপ্রেম ও সংস্কৃতি চর্চাকে শুদ্ধ রাখি।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৬