somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্ধের তো চোখ নেই আর যাদের চোখ থেকেও নেই তাদের জন্য।।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কয়েকবছর আগে আমার এলাকাতে জামাতের একজন রুকন তার মাদ্রাসার এক ছাত্রের সাথে সমকামিতা করেছিল। অতএব আমরা এখান থেকে কি এই সিধান্তে উপনীত হতে পারি না যে জামাত শিবির সমকামী?

আমি হিজবুত তাহ্রিরের এমন ছেলে দেখেছি যারা এক হাতে সিগারেট আর এক হাতে চায়ের কাপ নিয়ে মানুষকে খিলাফতের দাওয়াত দিচ্ছে। এখন কি আমরা এখান থেকে এই সিধান্তে উপনীত হব যে হিজবুতের ছেলেরা নেশাখোর?

সুস্থ জ্ঞান বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ এমন সিধান্তে উপনীত হবে না কিন্তু কিছু অন্ধ লোক আছে যাদের চোখ থাকতেও তারা কিছু দেখে না। তাই তারা হাত দিয়ে হাতির লেজ ধরে আর চিল্লায়ে উঠে যে পাইছি এবার হাতিরে! হাতি তো পুরাই দড়ির মত দেখতে!! আরেক জন অন্ধ আবার হাতির পিঠ দেখে এসে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেই হাতি তো দেখলাম পুরাই দেওয়ালের মত!!

আমাদের সমাজে এমন কিছু অন্ধ আছে যারা চোখ থাকতেও অন্ধ। এরা অন্ধের মত কোন একটি অংশ বা একজন ব্যাক্তির উপর ভিত্তি করে পুরা সমাজ বা জাতি বা দলের উপর মন্তব্য করে বসে।

জাঁকির নায়েক প্রায় সময় একটা কথা বলেন যে তোমরা ইসলাম কে জানতে বুঝতে চাইলে কোরআন পড় আর রাসুলের সাঃ এর সিরাত পড়, মুসলিমরা কি করে সেদিকে তাকিও না। কিন্তু একদল অন্ধ ব্যাক্তি আছে যারা কোন মুসলিমকে নাইট ক্লাবে মদ পান করতে দেখে এসে বলে আরে কে বলেছে মুসলিমরা সন্ত্রাসী? তারা অনেক ভাল (?) আমি দেখে এলাম তারা কত সুন্দর নাচা করে গানা করে!

তেমনি জামাত ইসলাম কে বুঝতে হলে জামাতের বই পুস্তক পড়তে হবে, জামাতের নেতাদের বক্তব্য কি শুনতে হবে। কোন এক জামাত নেতা বা কর্মীর কোন কাজের উপর ভিত্তি করে কোন মন্তব্য করা হবে অন্ধের হাতি দেখার মত। তবে এটা ঠিক যে মওলানা মওদুদি বা গোলাম আযম এর মত নীতিনির্ধারক নেতাদের কোন কাজ বা কথা দিয়ে সমগ্র জামাত কে মুলায়্যন করলে খুব বেশী ভুল হবে না। তবে কোন এক খুচরা নেতা বা কর্মীর কথা বা কাজের উপর ভিত্তি করে জামাত কে মুলায়্যন করা হলে তা হবে অন্ধের কাজ। যদিও অধিকাংশ লোকই সেটাই করে। তবে যারা মুসলিম তাদের এরকম টি কখনই করা উচিত নয়।

গতকাল শিবিরের এক ছেলে জেল থেকে ঘুরে এসে জিহাদের মাধ্যমে যারা খিলাফত কায়েমে বিশ্বাসী তাদের সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। সে নাকি সেই ধারণা পেয়েছে জেলের মধ্যে কিছু জিহাদি মনস্ক ব্যাক্তির সাথে কথা বলে। তারা তাকে বলেছে, তারা (জিহাদপন্থী) ছারা সবাই কাফের! আর সকল কাফের কে হত্যা করা তাদের জন্য ফরয। এমনকি তাকেও ( ঐ লেখক) হত্যা করতে পারে যদি সহজে তাদের কথা গুলো মেনে না নেই। উনি এক বা কয়েক জনের সাথে কথা বলে জিহাদিদের উগ্রতা ও ভ্রান্তির একটা নমুনা পেয়ে গেছেন!

আমি নিশ্চিত নয় সে কার সাথে কি কথা বলেছে। তবে যদি তার কথা সত্য ধরেও নেই তবুও সে দুই একজনের সাথে কথা বলে সমগ্র মুজাহিদদের ব্যাপারে যে মূল্যায়ন করেছে সেইটা অন্ধের হাতি দেখার চেয়েও বড় অন্ধামী হবে। কারণ অন্ধের তো চোখ নেই আর এদের চোখ থাকতেও এরা অন্ধ।

জিহাদ করে যারা খিলাফত কায়েম করতে চাই তাদের আদর্শিক গুরু হচ্ছেন সাইয়েদ কুতুব, আব্দুল্লাহ ইউসুফ আযযাম, আনোয়ার আল আওলাকি প্রমুখ। সেখানে তারা জিয়াদের পন্থা পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। বর্তমান বিশ্বে জিহাদের কর্মপন্থা নিয়ে লিখা যে বইটা সবচেয়ে বেশী সমাদৃত হয়েছে সেইটা হচ্ছে সাইয়েদ কুতুব রচিত Milestone বা আগামী বিপ্লবের ঘোষণা পত্র। জামাতের পক্ষ থেকে এই বইকে ইসলামী সমাজ বিপ্লবের ধারা নামে অনুবাদ করা হয়েছে। সেখানে পড়ে দেখুন উনি কি সবাই কে কাফির বলেছেন কিনা আর তাদের সবাইকে হত্যা করতে বলেছেন কিনা? হ্যাঁ, উনি যারা আল্লাহ্‌র আইন বাদ দিয়ে নিজেরা আইন তৈরি করে শাসন ও বিচার ব্যবস্থা পরিচালিত করেন তাদেরকে কাফির বলেছেন। কেন বলেছেন সেগুলোও বিস্তারিত দলিল প্রমাণ দিয়ে বর্ণনা করেছেন। এই দলিল প্রমাণগুলো কেউ অস্বীকার করে না ইঙ্কলুডিং জামাত ইসলামী। উনার এই বক্তব্যের বিরধীতাকরেন দুই শ্রেণীর মানুষ। এক, মুরজিয়া শ্রেণী। দুই, সৌদি সরকারের দালাল, স্কলার ফর ডলার, সালাফি নাম ধারি কিছু পেইড আলেম।

আর খিলাফতের ব্যাপারে উনাদের মতামত উনারা দাওয়াহ তথা গণ বিপ্লব এবং জিহাদ উভয় পথকেই সহিহ মনে করেন। তবে আক্রান্ত না হলে আগে থেকে আক্রমণ করার পরামর্শও দেন না।

অতএব জিহাদ মানে খালি মানুষ হত্যা, আর যত্র তত্র বোমা মারা এইটা যারা বলেন তারা আসলে হয় অন্ধ অথবা যুক্তি দলিল প্রমাণ না দিতে পেরে মিথ্যা প্রচারণার আশ্রয় নিয়েছেন। আর কবিরাগুনাহ কারি বা অন্যান্য ছোট খাট কুফরিতে যারা লিপ্ত তাদেরকে কখনই তাকফির করা হয় না, শুধুমাত্র যারা আল্লাহ্‌র সার্বভৌমত্বের বিধান বাতিল করে মানুষের সার্বভৌমত্বের বিধান প্রতিষ্ঠা করে তাদের ছারা।

এরপরেও যারা এই অন্ধামি বা মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালু রাখবে তাদেরকে সমকামী বা নেশাখোর বলা যেতে পারে তাদেরই যুক্তিতে। কিন্তু যারা আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির জন্য কাজ করে তারা মিথ্যার আশ্রয় নেয় না, যুক্তি ও দলিল প্রমাণই তাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল। ইনশাহ আল্লাহ, মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে, এবং ভবিষ্যতেও হবে কারণ মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল।

আবু সামির
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:১০
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×