somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"চল্লিশটি বছর চলে গেছে, আরেকটি ষোলই ডিসেম্বরের দ্বারপ্রান্তে আমরা। আজও কি থেমেছে দেশের কান্না? সেরেছে তার বুকের ক্ষত? বিজয়ের শুভেচ্ছা সবাইকে"

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আরো একটি ষোলই ডিসেম্বর এসেছে। ভালোভাবে অনেক কিছু বুঝতে শেখার পর থেকেই যেমন খঁচ খঁচে একটা তীব্র যন্ত্রণা হত এই দিনের সামনে এসে, আজও হচ্ছে।
স্বাধীনতার চল্লিশটি বছর পেরিয়ে গেল। জাতিগত ভাবে অনেক কিছু আমরা অর্জন করেছি, আবার অনেক কিছু পারিও নি। আমরা পারিনি উন্নয়ন আর ভালো ভালো অবকাঠামো দিয়ে দেশটাকে সমৃদ্ধ করে তুলতে, খনিজ সম্পদ, জনসম্পদের সঠিক ব্যবহার করতে। পাশাপাশি পারিনি পরিবেশ ও তার স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে। পাওয়া না পাওয়ার গল্পগুলো সব বাঙালিই কম বেশি জানি আমরা, কারণ এর মাঝেই আমাদের জীবন আবর্তিত হয়। দুখের বিষয়, অনেক কিছু হারাতেও হয়েছে আমাদের। সবথেকে টাটকা হারানোর ক্ষতিগুলো মধ্যে রয়েছে তাজরীন গার্মেন্টস এর মৃত ভাই ও বোনেরা, চট্টগ্রামে গার্ডার ভেঙ্গে নিহত মানুষগুলো, হালের একজন বিশ্বজিত সহ আরো অনেক অনেক মৃত্যু ও ধ্বংসে জাতি অনেক হারিয়েছে, হারিয়ে চলেছে। এই জাতি একাত্তুরেও হারিয়েছিল, অনেক অনেক বেশি, আজকের যেকোনো ক্ষতির সামনে যা হয়ত নস্যি। তবে জাতির সবথেকে বড় ক্ষতিটা কখনো আমরা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে দেখিনি। কারণ দেশমাতৃকার অশ্রু দেখা গেলেও, তার অন্তরের দগ্ধ হতে থাকাটা সহজে চোখে পড়েনা।
এই এত এত দিন পরে এসেও দেশের বুকে হেটে চলে পাকিস্তানি চেতনা বুকে ধারণকরি মানুষেরা! হেঁটে বেড়ে নিজামী, মুজাহিদিন, গোলাম আজম, সাইদী থেকে শুরু করে আরো অনেকে, যারা কিনা কখনই বাংলা চায়নি। আর এখন তারা দাবি করে "প্রকৃত এই দেশপ্রেমিকরাই" দেশের ভালো সবথেকে বেশি চায়!! কি ভাবে? ওরাই তো সেইসব মুখোশধারী চেহারা, যারা ত্রিশ লক্ষের প্রতিটি প্রানের চিত্কারের নেপথ্যে!! লক্ষ মা-বোনের জীবন ধ্বংশকারী নামগুলো যে ওরাই! নিজামী সাহেব তখন নাকি "পাকিদের পেয়ারের লোক" ছিলেন। মেয়ে সাপ্লাই দিতেন উনি। এখন উনি আলেম। উনি মুসলমানি করিয়েছেন, এখন উনি মুসলমান, বুঝলাম। কিন্তু ওনার হৃদয়ে যে বাংলার প্রতি ঘৃনা ছিল তার দেশপ্রেমমানি(মুসলমানি থেকে) কি করে হবে? হয় ও নি। তার প্রমান তাদের কাজে কর্মে। সাইদী সাহেব, মহান পীর, বন্দুকের গুলি মিস হবে কিন্তু পীর সাহেবের কথা মিস নাই! এরা আমাদের দেশে ইসলামের ধারক-বাহক। যাদের আন্তর্জাতিক পরিচয় কিনা জঙ্গি সম্পৃক্ততা, একাত্তুরের খুনি, রাজাকার, ধর্ষক, পাকিস্তানের সাহায্যকারী, খুন ধর্ষণে মদদ দাতা ও সর্বপরি বুদ্ধিজীবী হত্যার মাস্টার মাইন্ড হিসেবে।
বিবেক বিবর্জিত আমার দেশের মানুষ। আজ কে আমরা তাদের পক্ষে ব্লগে-ফেসবুকে সাফাই গাই, রাস্তায় মিছিল করি(!!!!!!!!!!!!!!!!), তাদের পক্ষে স্লোগানের ঝড় তুলি, তাদের দেয়া ডান্ডাকে ইসলামের ঝান্ডা মনে করে নির্বিচারে মানুষের উপরে চালায়!! আহারে আমার বাংলাদেশীরা! মায়ের পায়ের নিচে নাকি সন্তানের বেহেস্ত, দেশটা কি মা নয়? সন্তানকে স্তন দান করে, দেখে শুনে বড় করেন মা.....দেশকি তার উল্টো করেছিল? দেশ কি দেয়নি তার বুকটা উজার করে ফসলের সমারোহ? দেয়নি আহারের তরে খাদ্য? নি:শ্বাসের তরে বায়ু?
জাময়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, ইসলাম ও বাংলাদেশের সাথে এই অঞ্চলের সবথেকে বড় বেইমানির নাম। ধর্মভীরু যুবসমাজে ক্যান্সারের মত ছড়িয়ে গেছে এই নামটি। ইসলাম বা বাংলাদেশের কল্যাণ এই দলের মূলমন্ত্র হতে পারেনা। কারণ না তো এরা ইসলামের নীতি মেনে চলছে, না এরা করছে দেশ প্রীতি!! বরং দুটোরই আংশিক ও সার্বিক অপব্যবহার করছে তারা। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের কোনো নেতা, মুসলমান ও বাংলাদেশী হতে পারেনা, আমি আবার বলছি হতে পারেনা। আর তাদের অনুসারী প্রতিটি সদস্য দেশ দ্রোহী শক্তির সাথে হাত মিলিয়ে দেশ, সর্বপরি ইসলামের ক্ষতি করছে। কারণ তারা ইসলামের অপব্যবহারকারীদের শক্তি যোগাচ্ছে।
দেশের কষ্ট এটাই। বেয়নেট দিয়ে দেশের বুক খুঁচিয়ে দিয়েছে ওরা, যেই ক্ষত থেকে আজও রক্ত ঝরছে অবিরাম। সে রক্তধারা বন্ধ হয়নি, কারণ হয়নি তাদের প্রকৃত বিচার, দেশ মাতা আজও করছে অপেক্ষা...চল্লিশ বছরের অপেক্ষা...... ওদের মৃত্য দেখার অপেক্ষা...

চল্লিশ বছরে দেশ শুধুই দিয়ে গেছে, নিজে অপুষ্ট থেকে খাইয়ে চলেছে সব সন্তানদের, নিরলস। তবে আমরা চল্লিশ বছরে চারজন ছাড় একজন নেতাও দিতে পারিনি এই দেশ মাকে। দিতে পারিনি এমন এখন যোগ্য মানুষকে এই দেশের ভার। এই কি আমাদের জাতিগত ব্যর্থতা নয়? দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের কাছে দেশটা আজ জিম্মি, তার দায় কি আমাদেরই সবথেকে বেশি নয়? আমরা কেন হতে দিলাম দেশটা দুই দলের চুলোচুলির ময়দান? কেন ভোট দিয়ে তাদের ক্ষমতায় আনি যার ছেলেরা বিশ্বের মধ্যে সেরা ধনী হয়ে যায়! কেন তাদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেই যারা ভারত পাকিস্তানের কাছে দেশ বেচে দেয়ার মনোভাব রাখে? যাদের মজ্জায় হাড়ে দুর্নীতি ও সন্ত্রাস কেন তাদেরকেই বারবার দেশ মাতার কর্তার আসনে অধিষ্টিত করি? তাদের আমরা পাঁচ বছর পর পর সুযোগ করে দেই, আমাদের জীবন অতিষ্ট করে দিতে, দেশকে আরকটু কাঁদার সুযোগ করে দেই, তার সন্তানদের দুখ: দেখে..........
ষোলই ডিসেম্বর সেদিনই শুধু উল্লাসে হারিয়ে যাবার হবে, যখন কেউ পাকিস্তান বা ভারত না, বাংলাদেশ কে ভালবাসবে.... যেখানে পায়ের চিন্হ পরবেনা "দেশের" খুনিদের!! যখন পিলখানার মত আরেকটি বুদ্ধিজীবী নিধন কর্মসূচি নেয়া হবে না ....দেশ হাসবে সেদিনই... সেদিন আমিও হাসব, গর্ব ভরে, কোনো এক ষোলই ডিসেম্বরে.....অপেক্ষা করে আছি।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×